মির্জাগঞ্জে উদ্বোধনের ৪ মাস পরই বিদ্যালয় ভবনে ফাটল

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার আবু ইউসুফ আলী মোল্লা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২ কোটি ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত নতুন ভবন উদ্বোধনের চার মাসের মধ্যেই ফাটল দেখা দিয়েছে। বৃষ্টি হলেই ভবনের বিভিন্ন কক্ষের ছাদ চুঁয়ে পানি পরে। এরকম অবস্থার কারনে যে কোন সময় দৃষ্টিনন্দন স্কুল ভবন কাম সাইক্লোন শেল্টারটি বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করেছেন বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষসহ এলাকাবাসী। উপজেলার মাধবখালী ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চল চৈতা গ্রামসহ এর আশপাশের গ্রাম এবং পার্শ^বর্তী বারেকগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি গ্রামের মানুষের শিক্ষার মানোন্নয়নের কথা চিন্তা করে ১৯৯৯ সালে স্থাপিত হয় আবু ইউসুফ আলী মোল্লা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালটি।

জানা যায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আবু ইউসুফ আলী মোল্লা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রটি নির্মাণ কাজ শুরু হলে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে কাজ শেষ হয়। চলতি বছরের গত ২৩ মে বিদ্যালয়টি উদ্বোধন করা হয়। কিছুদিন পর ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দেয়। এত শিক্ষার্থীদের আতঙ্কের মধ্যে পাঠদান করান শিক্ষকরা। অপরদিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে নির্মিত কুদবারচর আদর্শ বালিকা নিম্নœ মাধ্যমিক বিদ্যালয়টিতে ফাটল দেখা দেয়ায় প্রধান শিক্ষক মোঃ তৈয়বুর রহমান উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়ে অভিযোগ করলে পিআইও অফিস থেকে বিদ্যালয়ের ফাটল মেরামত করে দেয়া হয় বলে তিনি জানান।

আবু ইউসুফ আলী মোল্লা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোতাহার উদ্দিন গাজী বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে এ বছর ২৩ মে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভবনটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর আমরা বিদ্যালয় ভবনটি বুঝে পাই। ১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয় ভবনটি। নতুন ভবন পেয়ে শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থীসহ সবার মধ্যেই খুশির আমেজ ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু ভবনের কাজ নিম্নœমানের হওয়ায় কিছুদিন পরই এটি মেরামতের প্রয়োজন পড়ে। নামসর্বস্ব মেরামতও করা হয় ভবনের কিছু অংশে। তারপরও ভারি বৃষ্টিতে ভবনের ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে। ভবনের বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে ফাটল। সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে আতঙ্ক। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন (পিআইও) কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আবু ইউসুফ আলী মোল্লা বালিকা মাধ্যমিক বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়। ৮টি কক্ষ ও ২টি চিলেকোঠা বিশিষ্ট দ্বিতল ভবনটি নির্মাণে বরাদ্দ ছিল ২ কোটি ১৮ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। এটি বাস্তবায়ন করে বরগুনার বেতাগীর মেসার্স খান এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভবনটির সামনের ডান পাশের দিকের দেয়ালের বিভিন্ন অংশে বড় বড় ফাটল, দোতালায় উঠার শিড়ির আস্তর উঠে গেছে, প্রধান শিক্ষকের কক্ষ, করিডর, শ্রেণীকক্ষের দেয়াল ও পলেস্তারায় ফাটল। ভেতরে কয়েকটি শ্রেণীকক্ষের ছাদ চুইয়ে পানি পরায় ভবনের ভেতরের রং নষ্ট হয়ে শেওলা পড়ে গেছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স খান এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. খলিলুর রহমান বলেন, আমার লাইসেন্স নিয়ে এক ব্যাক্তি কাজ করেছে। পিআইও সাহেব এব্যাপাপরে আমার সাথে আলাপ করেছে। আমি এর বেশি কিছু জানি না। বিদ্যালয়ের কাজ নেয়া লাইসেন্সের সাব ঠিকাদার মো. মামুন বলেন, বিদ্যালয়ের যে স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে সেসব স্থানে আমি দ্রুত মেরামত করে দিবো। 

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের ভবনে যে ফাটল দেখা দিয়েছে, তাতে ভয়ের কিছু নেই। নির্মাণের সময় ভালো কিউরিং না হওয়ায় এ ধরনের ফাটল দেখা দিতে পারে। আমি সরেজমিনে পরিদর্শন করে উর্ধ্বতন কৃর্তপক্ষতে অবহিত করবো এবং সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ভবন মেরামতের ব্যবস্থা করা হবে।

বুধবার, ১৩ অক্টোবর ২০২১ , ২৮ আশ্বিন ১৪২৮ ০৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

মির্জাগঞ্জে উদ্বোধনের ৪ মাস পরই বিদ্যালয় ভবনে ফাটল

প্রতিনিধি, মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী)

image

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার আবু ইউসুফ আলী মোল্লা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২ কোটি ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত নতুন ভবন উদ্বোধনের চার মাসের মধ্যেই ফাটল দেখা দিয়েছে। বৃষ্টি হলেই ভবনের বিভিন্ন কক্ষের ছাদ চুঁয়ে পানি পরে। এরকম অবস্থার কারনে যে কোন সময় দৃষ্টিনন্দন স্কুল ভবন কাম সাইক্লোন শেল্টারটি বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করেছেন বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষসহ এলাকাবাসী। উপজেলার মাধবখালী ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চল চৈতা গ্রামসহ এর আশপাশের গ্রাম এবং পার্শ^বর্তী বারেকগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি গ্রামের মানুষের শিক্ষার মানোন্নয়নের কথা চিন্তা করে ১৯৯৯ সালে স্থাপিত হয় আবু ইউসুফ আলী মোল্লা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালটি।

জানা যায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আবু ইউসুফ আলী মোল্লা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রটি নির্মাণ কাজ শুরু হলে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে কাজ শেষ হয়। চলতি বছরের গত ২৩ মে বিদ্যালয়টি উদ্বোধন করা হয়। কিছুদিন পর ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দেয়। এত শিক্ষার্থীদের আতঙ্কের মধ্যে পাঠদান করান শিক্ষকরা। অপরদিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে নির্মিত কুদবারচর আদর্শ বালিকা নিম্নœ মাধ্যমিক বিদ্যালয়টিতে ফাটল দেখা দেয়ায় প্রধান শিক্ষক মোঃ তৈয়বুর রহমান উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়ে অভিযোগ করলে পিআইও অফিস থেকে বিদ্যালয়ের ফাটল মেরামত করে দেয়া হয় বলে তিনি জানান।

আবু ইউসুফ আলী মোল্লা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোতাহার উদ্দিন গাজী বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে এ বছর ২৩ মে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভবনটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর আমরা বিদ্যালয় ভবনটি বুঝে পাই। ১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয় ভবনটি। নতুন ভবন পেয়ে শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থীসহ সবার মধ্যেই খুশির আমেজ ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু ভবনের কাজ নিম্নœমানের হওয়ায় কিছুদিন পরই এটি মেরামতের প্রয়োজন পড়ে। নামসর্বস্ব মেরামতও করা হয় ভবনের কিছু অংশে। তারপরও ভারি বৃষ্টিতে ভবনের ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে। ভবনের বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে ফাটল। সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে আতঙ্ক। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন (পিআইও) কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আবু ইউসুফ আলী মোল্লা বালিকা মাধ্যমিক বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়। ৮টি কক্ষ ও ২টি চিলেকোঠা বিশিষ্ট দ্বিতল ভবনটি নির্মাণে বরাদ্দ ছিল ২ কোটি ১৮ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। এটি বাস্তবায়ন করে বরগুনার বেতাগীর মেসার্স খান এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভবনটির সামনের ডান পাশের দিকের দেয়ালের বিভিন্ন অংশে বড় বড় ফাটল, দোতালায় উঠার শিড়ির আস্তর উঠে গেছে, প্রধান শিক্ষকের কক্ষ, করিডর, শ্রেণীকক্ষের দেয়াল ও পলেস্তারায় ফাটল। ভেতরে কয়েকটি শ্রেণীকক্ষের ছাদ চুইয়ে পানি পরায় ভবনের ভেতরের রং নষ্ট হয়ে শেওলা পড়ে গেছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স খান এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. খলিলুর রহমান বলেন, আমার লাইসেন্স নিয়ে এক ব্যাক্তি কাজ করেছে। পিআইও সাহেব এব্যাপাপরে আমার সাথে আলাপ করেছে। আমি এর বেশি কিছু জানি না। বিদ্যালয়ের কাজ নেয়া লাইসেন্সের সাব ঠিকাদার মো. মামুন বলেন, বিদ্যালয়ের যে স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে সেসব স্থানে আমি দ্রুত মেরামত করে দিবো। 

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের ভবনে যে ফাটল দেখা দিয়েছে, তাতে ভয়ের কিছু নেই। নির্মাণের সময় ভালো কিউরিং না হওয়ায় এ ধরনের ফাটল দেখা দিতে পারে। আমি সরেজমিনে পরিদর্শন করে উর্ধ্বতন কৃর্তপক্ষতে অবহিত করবো এবং সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ভবন মেরামতের ব্যবস্থা করা হবে।