৪০ বছর পর মা-বাবার সান্নিধ্যে হারানো মিনতি

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের রানীগ্রাম এলাকার মো.বাছের আলীর হারিয়ে যাওয়া সেই ৬ বছরের শিশু মিনতি ৪০ বছর পর ফিরে পেলেন তার পরিবারকে। জানা যায়, মিনতিরা চার ভাই-বোন। তার মধ্যে মিনতি ছোট। ৬ বছর বয়সে চাচাতো বোন ও দুলাভাইয়ের সাথে ময়মনসিংহে বেড়াতে যায়। দুলাভাইয়ের সাথে ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ স্টেশনে হারিয়ে যায় মিনতি। অনেক খোঁজ-খবর করে না পেয়ে বোন ও দুলাভাই হতাশ হয়ে ফিরে আসেন।

মিনতি জানান, আমাকে কান্না অবস্থায় পেয়ে মসলেম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি তার বাসায় নিয়ে যান। তার বাড়িতেই মেয়ের মতো বড় হতে থাকি। প্রাপ্তবয়স্ক হলে গাজীপুরের শ্রীপুর এলাকার ব্যবসায়ী বুরহান উদ্দিনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বর্তমানে তিনি চার কন্যার জননী। তিন মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। তার বড় মেয়ে জামাই ঢাকায় থাকে। তাদের সাথে পরিচয় হয় গুরুদাসপুর উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের মকিমপুর গ্রামের উদ্যোক্তা শাহরুখ নয়নের সঙ্গে। মিনতির মেয়ে জামাইয়ের তথ্য অনুযায়ী নয়নের প্রচেষ্টায় ফিরে পেয়েছেন তার হারানো পরিবারকে। নিজের মা-বাবা আত্মীয় স্বজনদের কাছে পেয়ে অনেক আনন্দিত মিনতি। শাহরুখ নয়ন জানান, পড়াশোনারত অবস্থায় পরিচয় হয় মিনতির মেয়ে জামাইয়ের সাথে। তার কাছেই শোনেন মিনতির জীবনের গল্প। মিনতির সঙ্গে কথা বলে তিনি জানতে পারেন রাজশাহী জেলার কাছিকাটা গ্রামে তার বাপ দাদার বাড়ি। সেই সূত্র ধরেই নয়ন ওই এলাকায় বার বার যান এবং লিফলেট বিতরণ করেন। এভাবে খুঁজতে খুঁজতে রানীগ্রাম এলাকা থেকে ফোন আসে তার কাছে। মিনতি মোবাইল ফোনে তাদের সাথে কথা বলে এবং ছোট বেলার কিছু চিহ্ন ও স্মৃতি রয়েছে সেই সূত্র ধরেই আপন ঠিকানার সন্ধান পান। গত রোববার রাত আটটার দিকে তার পরিবারকে ফিরে পান। নিজের আপন ঠিকানা মা-বাবা ও স্বজনদের কাছে পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন মিনতি ও তার পরিবারের লোকজন।

মঙ্গলবার, ১৯ অক্টোবর ২০২১ , ০৩ কার্তিক ১৪২৮ ১১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

৪০ বছর পর মা-বাবার সান্নিধ্যে হারানো মিনতি

প্রতিনিধি, গুরুদাসপুর (নাটোর)

image

গুরুদাসপুর (নাটোর) : পরিবারে সদস্যদের সঙ্গে মিনতি (বাম থেকে দ্বিতীয়) -সংবাদ

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের রানীগ্রাম এলাকার মো.বাছের আলীর হারিয়ে যাওয়া সেই ৬ বছরের শিশু মিনতি ৪০ বছর পর ফিরে পেলেন তার পরিবারকে। জানা যায়, মিনতিরা চার ভাই-বোন। তার মধ্যে মিনতি ছোট। ৬ বছর বয়সে চাচাতো বোন ও দুলাভাইয়ের সাথে ময়মনসিংহে বেড়াতে যায়। দুলাভাইয়ের সাথে ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ স্টেশনে হারিয়ে যায় মিনতি। অনেক খোঁজ-খবর করে না পেয়ে বোন ও দুলাভাই হতাশ হয়ে ফিরে আসেন।

মিনতি জানান, আমাকে কান্না অবস্থায় পেয়ে মসলেম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি তার বাসায় নিয়ে যান। তার বাড়িতেই মেয়ের মতো বড় হতে থাকি। প্রাপ্তবয়স্ক হলে গাজীপুরের শ্রীপুর এলাকার ব্যবসায়ী বুরহান উদ্দিনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বর্তমানে তিনি চার কন্যার জননী। তিন মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। তার বড় মেয়ে জামাই ঢাকায় থাকে। তাদের সাথে পরিচয় হয় গুরুদাসপুর উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের মকিমপুর গ্রামের উদ্যোক্তা শাহরুখ নয়নের সঙ্গে। মিনতির মেয়ে জামাইয়ের তথ্য অনুযায়ী নয়নের প্রচেষ্টায় ফিরে পেয়েছেন তার হারানো পরিবারকে। নিজের মা-বাবা আত্মীয় স্বজনদের কাছে পেয়ে অনেক আনন্দিত মিনতি। শাহরুখ নয়ন জানান, পড়াশোনারত অবস্থায় পরিচয় হয় মিনতির মেয়ে জামাইয়ের সাথে। তার কাছেই শোনেন মিনতির জীবনের গল্প। মিনতির সঙ্গে কথা বলে তিনি জানতে পারেন রাজশাহী জেলার কাছিকাটা গ্রামে তার বাপ দাদার বাড়ি। সেই সূত্র ধরেই নয়ন ওই এলাকায় বার বার যান এবং লিফলেট বিতরণ করেন। এভাবে খুঁজতে খুঁজতে রানীগ্রাম এলাকা থেকে ফোন আসে তার কাছে। মিনতি মোবাইল ফোনে তাদের সাথে কথা বলে এবং ছোট বেলার কিছু চিহ্ন ও স্মৃতি রয়েছে সেই সূত্র ধরেই আপন ঠিকানার সন্ধান পান। গত রোববার রাত আটটার দিকে তার পরিবারকে ফিরে পান। নিজের আপন ঠিকানা মা-বাবা ও স্বজনদের কাছে পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন মিনতি ও তার পরিবারের লোকজন।