মানসিক প্রতিবন্ধী হাসান যা বলে তা বোঝা যায় না। খেতে দিলে খায়। দেখতে শান্ত প্রকৃতির। তাকে চোখ রাঙালে রেগে যায়। তার ওপর নিমিষেই বিষমভাবে চটে যায়। নাগালে পেলে মারধর করে। সুযোগ পেলেই যেদিকে মন চায় চলে যায়। তখন পরিবারের সদস্যদের ভোগান্তির শেষ থাকে না। কয়েক দফা হারিয়েও গিয়েছিল। এজন্য তার পায়ে শিকল বেঁধে দেয়া হয়েছে। এভাবে চলছে প্রায় ১৯ বছর। শিশুকালের ভুল চিকিৎসায় তার এ অবস্থা। আর ভালো হয়নি হাসান।
সরেজমিনে হাসানের বাড়িতে গেলে দেখা যায়, একটি ঘরের বারান্দায় ঘরের পিলারের সঙ্গে শিকলে বাধা রয়েছে। ভালোমন্দ জ্ঞান নেই তার। তাই সারা শরীরে ধুলা, বালি মাখা। এ মানসিক প্রতিবন্ধী হাসান ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের নাকোবাড়িয়া গ্রামের কৃষক রেজাউল ইসলামের ছেলে।
অসহায় হাসানের বাবা রেজাউল ইসলাম জানান, তিনি একজন হতদরিদ্র কৃষক। অনেক আদরের বড় সন্তান হাসানের বয়স যখন মাত্র ২ থেকে আড়াই বছর তখন শিশু হাসানের ঠান্ডা লাগে। সে সময়ে চিকিৎসকের কাছে নিয়েও গিয়েছিলেন। ওই থেকে শুরু। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে ভালো হয়নি হাসান। এখন হাসান ২৫ বছর । তিনি বলেন, ২ ছেলে ১ মেয়ে তার। হাসান সবার বড়।
ছোট ছেলে তরিকুল ইসলাম মালয়েশিয়া প্রবাসী। আর মেয়ে তানজিলা মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। হাসানের চিকিৎসায় সংসারের সবকিছু শেষ করেছেন। এখন অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটে তাদের। শৈশব থেকে এ এলাকার অনেক ডাক্তারকে হাসানকে দেখিয়েছেন। কিন্তু ভালো হয়নি হাসান। অনেক চিকিৎসক বলেছেন উন্নত চিকিৎসা করাতে পারলে হয়ত হাসানের অবস্থার উন্নতি হতে পারে। কিন্তু কোথায় পাবো টাকা।
মা শুকুরন নেছা জানান, নিজের গর্ভের বড় সন্তানটির পেছনে সবকিছু বেচাকেনা করে শেষ করেছেন। সন্তানের মা বাবা হয়ে সহ্য করা যায় না। অসহায় সন্তানের মুখের দিকে তাকালে কষ্টে বুক ফেটে যায়।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলার জামাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোদাচ্ছের হোসেন মন্ডল বলেন, ছেলেটির কষ্ট দেখলে খারাপ লাগে। তাই গতবছর তার একটি প্রতিবন্ধী কার্ড করে দিয়েছি। অস্বচ্ছল পরিবারে একটা প্রতিবন্ধী সন্তান থাকলে কষ্টের আর সীমা থাকে না। আবার কোন সুযোগ সুবিধা আসলে তার ব্যাপারটা অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
শুক্রবার, ২২ অক্টোবর ২০২১ , ০৬ কার্তিক ১৪২৮ ১৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩
প্রতিনিধি, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ)
মানসিক প্রতিবন্ধী হাসান যা বলে তা বোঝা যায় না। খেতে দিলে খায়। দেখতে শান্ত প্রকৃতির। তাকে চোখ রাঙালে রেগে যায়। তার ওপর নিমিষেই বিষমভাবে চটে যায়। নাগালে পেলে মারধর করে। সুযোগ পেলেই যেদিকে মন চায় চলে যায়। তখন পরিবারের সদস্যদের ভোগান্তির শেষ থাকে না। কয়েক দফা হারিয়েও গিয়েছিল। এজন্য তার পায়ে শিকল বেঁধে দেয়া হয়েছে। এভাবে চলছে প্রায় ১৯ বছর। শিশুকালের ভুল চিকিৎসায় তার এ অবস্থা। আর ভালো হয়নি হাসান।
সরেজমিনে হাসানের বাড়িতে গেলে দেখা যায়, একটি ঘরের বারান্দায় ঘরের পিলারের সঙ্গে শিকলে বাধা রয়েছে। ভালোমন্দ জ্ঞান নেই তার। তাই সারা শরীরে ধুলা, বালি মাখা। এ মানসিক প্রতিবন্ধী হাসান ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের নাকোবাড়িয়া গ্রামের কৃষক রেজাউল ইসলামের ছেলে।
অসহায় হাসানের বাবা রেজাউল ইসলাম জানান, তিনি একজন হতদরিদ্র কৃষক। অনেক আদরের বড় সন্তান হাসানের বয়স যখন মাত্র ২ থেকে আড়াই বছর তখন শিশু হাসানের ঠান্ডা লাগে। সে সময়ে চিকিৎসকের কাছে নিয়েও গিয়েছিলেন। ওই থেকে শুরু। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে ভালো হয়নি হাসান। এখন হাসান ২৫ বছর । তিনি বলেন, ২ ছেলে ১ মেয়ে তার। হাসান সবার বড়।
ছোট ছেলে তরিকুল ইসলাম মালয়েশিয়া প্রবাসী। আর মেয়ে তানজিলা মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। হাসানের চিকিৎসায় সংসারের সবকিছু শেষ করেছেন। এখন অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটে তাদের। শৈশব থেকে এ এলাকার অনেক ডাক্তারকে হাসানকে দেখিয়েছেন। কিন্তু ভালো হয়নি হাসান। অনেক চিকিৎসক বলেছেন উন্নত চিকিৎসা করাতে পারলে হয়ত হাসানের অবস্থার উন্নতি হতে পারে। কিন্তু কোথায় পাবো টাকা।
মা শুকুরন নেছা জানান, নিজের গর্ভের বড় সন্তানটির পেছনে সবকিছু বেচাকেনা করে শেষ করেছেন। সন্তানের মা বাবা হয়ে সহ্য করা যায় না। অসহায় সন্তানের মুখের দিকে তাকালে কষ্টে বুক ফেটে যায়।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলার জামাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোদাচ্ছের হোসেন মন্ডল বলেন, ছেলেটির কষ্ট দেখলে খারাপ লাগে। তাই গতবছর তার একটি প্রতিবন্ধী কার্ড করে দিয়েছি। অস্বচ্ছল পরিবারে একটা প্রতিবন্ধী সন্তান থাকলে কষ্টের আর সীমা থাকে না। আবার কোন সুযোগ সুবিধা আসলে তার ব্যাপারটা অগ্রাধিকার দেয়া হবে।