সুপার টুয়েলভের প্রথম ম্যাচে অজিদের চেয়ে এগিয়ে প্রোটিয়ারা

বাছাইপর্ব শেষে মরুর বুকে অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ দিয়ে আজ শুরু হচ্ছে সপ্তম টি-২০ বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্ব। গ্রুপ-১-এর এই ম্যাচটা আজ বিকেল চারটায় অনুষ্ঠিত হবে আবুধাবি স্টেডিয়ামে।

অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার বিকেলের ম্যাচে উভয় দলেরই চাওয়া প্রথমবারের মতো টি-২০ বিশ্বকাপের শিরোপা জয়। স্বাভাবিকভাবেই দুটো দলই চাইবে জয় দিয়ে শুরু করতে।

বৈশ্বিক আসরগুলোতে ‘চোকার’ হিসেবে নাম লেখানো প্রোটিয়ারা কাগজে কলমে এবারের টি-২০ বিশ্বকাপে অজিদের চেয়ে সামান্য হলেও এগিয়ে থেকে মাঠে নামবে।

কিছুটা আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি নিয়েই এবারের বিশ্বকাপে খেলতে নামছে অস্ট্রেলিয়া। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে সর্বশেষ টি-২০ সিরিজ জিতেছে অজিরা। এরপর টানা পাঁচটি সিরিজে তাদের সঙ্গী হয় পরাজয়। সর্বশেষ গত আগস্টে বাংলাদেশের মাটিতে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ ৪-১ ব্যবধানে হারে অস্ট্রেলিয়া।

শুধুমাত্র দলীয় পারফরমেন্সই নয়, দলের খেলোয়াড়ের ফর্মহীনতাও চিন্তায় রেখেছে অস্ট্রেলিয়াকে। রান খরায় ভুগছে অস্ট্রেলিয়ার টপ-অর্ডার। বিশেষভাবে দলের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান ডেভিড ওয়ার্নারের পড়তি ফর্ম দুশ্চিন্তার কারণ। সংযুক্ত আরব আমিরাতে দুটো অফিসিয়াল প্রস্তুতি ম্যাচে ওয়ার্নারের স্কোর যথাক্রমে ০ ও ১ রান। তবে ওই দুটো ম্যাচেই যথাক্রমে ৩৫ ও ৫৭ রান আসে স্টিভেন স্মিথের ব্যাট থেকে। অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং লাইন-আপে সেরা ফর্মে আছেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর হয়ে ১৪ ইনিংসে ৪২ দশমিক ৭৫ গড়ে এবং ১৪৪ দশমিক ১০ স্ট্রাইক রেটে ৫১৩ রান করেছেন তিনি। ভারতের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে ২৮ বলে ৩৭ রান করেন ম্যাক্সওয়েল।

এছাড়া অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ, মিচেল মার্শ, মার্কাস স্টয়নিস ও ম্যাথু ওয়েডের ব্যাটের দিকে তাকিয়ে থাকবে অস্ট্রেলিয়া। বিশ্বকাপের আগে অফিসিয়াল দুটি প্রস্তুতিমূলক ম্যাচে ভারতের কাছে ৮ উইকেটে হারলেও, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩ উইকেটে জয় পায় অজিরা।  

বোলিং লাইন-আপে অস্ট্রেলিয়ার শক্তি মিচেল স্টার্ক, কেইন রিচার্ডসন, প্যাট কামিন্স ও এডাম জাম্পা। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে রিচার্ডসন ৩টি ও জাম্পা ২টি উইকেট নেন। উইকেট পেয়েছিলেন আরেক স্পিনার অ্যাস্টন অ্যাগারও। তবে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে পুরোপুরিই ব্যর্থ ছিল অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা। ভারতের পতন হওয়া (আরেকটি আহত অবসর) একটি উইকেট নেন অ্যাগার।

সাম্প্রতিক ফর্মের বিচারে অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে বেশ এগিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। সর্বশেষ তিন সিরিজের সবগুলোতেই জিতেছে প্রোটিয়ারা। এ বছরের শুরুতে পাকিস্তানের কাছে দু’বার  হারলেও, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আয়ারল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

টুর্নামেন্ট শুরুর আগে প্রস্তুতিমূলক  দুই ম্যাচেও দুর্দান্ত জয় তুলে নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৪১ রানে ও পাকিস্তানের বিপক্ষে ৬ উইকেটে জয় পায় প্রোটিয়ারা। পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৮৭ রানের জয়ের টার্গেট পৌঁছার পথে ভ্যান ডার ডুসেন ৫১ বলে অপরাজিত ১০১ রানের ইনিংস খেলেন।

দুই ম্যাচে রান পেয়েছেন অধিনায়ক টেম্বা বাভুমাও। দুই ম্যাচে তার ব্যাট থেকে আসে ৩১ ও ৪৬ রান। দলের ব্যাটিং লাইন-আপের প্রধান ব্যাটার আইডেন মার্করাম। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৩৫ বলে ৪৮ রান করা মার্করাম পাকিস্তানের বিপক্ষে ব্যাট হাতে নামারই সুযোগ পাননি। তবে প্রস্তুতিমূলক ম্যাচে নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি দুই ওপেনার কুইন্টন ডি কক ও রেজা হেনরিক্স। ডি কক দুই ম্যাচে যথাক্রমে ৭ ও ৬ রান করেন। শুধুমাত্র পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলা হেনরিক্সের ব্যাট থেকে আসে ৭ রান।

বোলিং বিভাগে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধান ভরসার নাম পেসার কাগিসো রাবাদা। পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩৮ রানে ৩ উইকেট শিকার করেছেন তিনি। তার সঙ্গে বোলিং ডিপার্টমেন্টে আছেন লুঙ্গি এনগিডি, এনরিচ নর্টজে, কেশব মহারাজ ও টি-২০ র‌্যাংকিংয়ের সেরা বোলার তাবরেজ শামসি।

টি-২০ বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত  মাত্র একবার ফাইনাল খেলেছে অস্ট্রেলিয়া। ২০১০ সালের ফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে রানার্স-আপ হয় তারা।  অন্যদিকে এখনও বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। ২০০৯ ও ২০১৪ সালে সেমিফাইনাল খেলার রেকর্ড আছে প্রোটিয়াদের।

টি-২০তে এ পর্যন্ত  ২১ বারের সাক্ষাতে অজিদের ১৩টি জয়ের বিপরীতে প্রোটিয়াদের জয় ৮টি। তবে রেকর্ড যাই হোক প্রোটিয়াদের সাম্প্রতিক ফর্ম ক্যাঙারুদেরকে প্রথম ম্যাচে যে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে, তা বলা বাহুল্য। ওয়েবসাইট।

শনিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২১ , ০৭ কার্তিক ১৪২৮ ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

সুপার টুয়েলভের প্রথম ম্যাচে অজিদের চেয়ে এগিয়ে প্রোটিয়ারা

সংবাদ স্পোর্টস ডেস্ক

image

সুপার টুয়েলভের উদ্বোধনী ম্যাচে মাঠে নামার চূড়ান্ত প্রস্তুতি অস্ট্রেলিয়া দলের - ক্রিকইনফো

বাছাইপর্ব শেষে মরুর বুকে অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ দিয়ে আজ শুরু হচ্ছে সপ্তম টি-২০ বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্ব। গ্রুপ-১-এর এই ম্যাচটা আজ বিকেল চারটায় অনুষ্ঠিত হবে আবুধাবি স্টেডিয়ামে।

অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার বিকেলের ম্যাচে উভয় দলেরই চাওয়া প্রথমবারের মতো টি-২০ বিশ্বকাপের শিরোপা জয়। স্বাভাবিকভাবেই দুটো দলই চাইবে জয় দিয়ে শুরু করতে।

বৈশ্বিক আসরগুলোতে ‘চোকার’ হিসেবে নাম লেখানো প্রোটিয়ারা কাগজে কলমে এবারের টি-২০ বিশ্বকাপে অজিদের চেয়ে সামান্য হলেও এগিয়ে থেকে মাঠে নামবে।

কিছুটা আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি নিয়েই এবারের বিশ্বকাপে খেলতে নামছে অস্ট্রেলিয়া। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে সর্বশেষ টি-২০ সিরিজ জিতেছে অজিরা। এরপর টানা পাঁচটি সিরিজে তাদের সঙ্গী হয় পরাজয়। সর্বশেষ গত আগস্টে বাংলাদেশের মাটিতে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ ৪-১ ব্যবধানে হারে অস্ট্রেলিয়া।

শুধুমাত্র দলীয় পারফরমেন্সই নয়, দলের খেলোয়াড়ের ফর্মহীনতাও চিন্তায় রেখেছে অস্ট্রেলিয়াকে। রান খরায় ভুগছে অস্ট্রেলিয়ার টপ-অর্ডার। বিশেষভাবে দলের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান ডেভিড ওয়ার্নারের পড়তি ফর্ম দুশ্চিন্তার কারণ। সংযুক্ত আরব আমিরাতে দুটো অফিসিয়াল প্রস্তুতি ম্যাচে ওয়ার্নারের স্কোর যথাক্রমে ০ ও ১ রান। তবে ওই দুটো ম্যাচেই যথাক্রমে ৩৫ ও ৫৭ রান আসে স্টিভেন স্মিথের ব্যাট থেকে। অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং লাইন-আপে সেরা ফর্মে আছেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর হয়ে ১৪ ইনিংসে ৪২ দশমিক ৭৫ গড়ে এবং ১৪৪ দশমিক ১০ স্ট্রাইক রেটে ৫১৩ রান করেছেন তিনি। ভারতের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে ২৮ বলে ৩৭ রান করেন ম্যাক্সওয়েল।

এছাড়া অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ, মিচেল মার্শ, মার্কাস স্টয়নিস ও ম্যাথু ওয়েডের ব্যাটের দিকে তাকিয়ে থাকবে অস্ট্রেলিয়া। বিশ্বকাপের আগে অফিসিয়াল দুটি প্রস্তুতিমূলক ম্যাচে ভারতের কাছে ৮ উইকেটে হারলেও, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩ উইকেটে জয় পায় অজিরা।  

বোলিং লাইন-আপে অস্ট্রেলিয়ার শক্তি মিচেল স্টার্ক, কেইন রিচার্ডসন, প্যাট কামিন্স ও এডাম জাম্পা। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে রিচার্ডসন ৩টি ও জাম্পা ২টি উইকেট নেন। উইকেট পেয়েছিলেন আরেক স্পিনার অ্যাস্টন অ্যাগারও। তবে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে পুরোপুরিই ব্যর্থ ছিল অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা। ভারতের পতন হওয়া (আরেকটি আহত অবসর) একটি উইকেট নেন অ্যাগার।

সাম্প্রতিক ফর্মের বিচারে অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে বেশ এগিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। সর্বশেষ তিন সিরিজের সবগুলোতেই জিতেছে প্রোটিয়ারা। এ বছরের শুরুতে পাকিস্তানের কাছে দু’বার  হারলেও, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আয়ারল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

টুর্নামেন্ট শুরুর আগে প্রস্তুতিমূলক  দুই ম্যাচেও দুর্দান্ত জয় তুলে নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৪১ রানে ও পাকিস্তানের বিপক্ষে ৬ উইকেটে জয় পায় প্রোটিয়ারা। পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৮৭ রানের জয়ের টার্গেট পৌঁছার পথে ভ্যান ডার ডুসেন ৫১ বলে অপরাজিত ১০১ রানের ইনিংস খেলেন।

দুই ম্যাচে রান পেয়েছেন অধিনায়ক টেম্বা বাভুমাও। দুই ম্যাচে তার ব্যাট থেকে আসে ৩১ ও ৪৬ রান। দলের ব্যাটিং লাইন-আপের প্রধান ব্যাটার আইডেন মার্করাম। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৩৫ বলে ৪৮ রান করা মার্করাম পাকিস্তানের বিপক্ষে ব্যাট হাতে নামারই সুযোগ পাননি। তবে প্রস্তুতিমূলক ম্যাচে নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি দুই ওপেনার কুইন্টন ডি কক ও রেজা হেনরিক্স। ডি কক দুই ম্যাচে যথাক্রমে ৭ ও ৬ রান করেন। শুধুমাত্র পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলা হেনরিক্সের ব্যাট থেকে আসে ৭ রান।

বোলিং বিভাগে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধান ভরসার নাম পেসার কাগিসো রাবাদা। পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩৮ রানে ৩ উইকেট শিকার করেছেন তিনি। তার সঙ্গে বোলিং ডিপার্টমেন্টে আছেন লুঙ্গি এনগিডি, এনরিচ নর্টজে, কেশব মহারাজ ও টি-২০ র‌্যাংকিংয়ের সেরা বোলার তাবরেজ শামসি।

টি-২০ বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত  মাত্র একবার ফাইনাল খেলেছে অস্ট্রেলিয়া। ২০১০ সালের ফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে রানার্স-আপ হয় তারা।  অন্যদিকে এখনও বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। ২০০৯ ও ২০১৪ সালে সেমিফাইনাল খেলার রেকর্ড আছে প্রোটিয়াদের।

টি-২০তে এ পর্যন্ত  ২১ বারের সাক্ষাতে অজিদের ১৩টি জয়ের বিপরীতে প্রোটিয়াদের জয় ৮টি। তবে রেকর্ড যাই হোক প্রোটিয়াদের সাম্প্রতিক ফর্ম ক্যাঙারুদেরকে প্রথম ম্যাচে যে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে, তা বলা বাহুল্য। ওয়েবসাইট।