মণ্ডপে কোরআন রাখার কথা স্বীকার ইকবালের

কুমিল্লা নগরীর নানুয়ারদীঘিরপাড়ে অস্থায়ী পূজামণ্ডপে ধর্ম অবমাননার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ইকবাল হোসেনসহ ৪ জনের সাতদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। গতকাল পুলিশ কড়া পাহারায় পুলিশ লাইন্স থেকে তাদের কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম মিথিলা জাহান নিপার আদালতে হাজির করে পুলিশ তাদের ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত প্রত্যেকের ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আলোচিত ইকবাল কুমিল্লা নগরীর ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের সুজানগরসংলগ্ন দ্বিতীয় মুরাদপুর (লস্করপুকুরপাড়) এলাকার নুর আহমেদ আলমের ছেলে। অপর আসামিরা হচ্ছে, পুলিশকে ৯৯৯-এ ফোনকারী ব্যক্তি ইকরাম, দারোগাবাড়ি মাজার মসজিদের সহকারী খাদেম ফয়সাল ও হুমায়ুন।

আদালত প্রাঙ্গণে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) এম. তানভীর আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাথমিকভাবে ইকবাল হোসেন পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ রাখা এবং হনুমানের গদাটি পুকুরের পানিতে ফেলে দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। সে ঘটনার বিষয়ে পুলিশকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে, এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাই বিস্তারিত জানতে ও অধিকতর তদন্তের স্বার্থে ইকবালসহ ৪ জনকে পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করতে সাতদিনের রিমান্ডে নেয়া হচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে প্রয়োজন হলে রিমান্ডে তাদের মুখোমুখি করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। জেলা পুলিশের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, গত শুক্রবার দুপুরে ইকবালকে কক্সবাজার থেকে কুমিল্লায় আনার পর ঢাকা থেকে আসা উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত টিম তাকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করে। এ সময় সে দারোগাবাড়ি মসজিদ থেকে পবিত্র কোরআন নিয়ে নানুয়ারদীঘিরপাড় পূজামণ্ডপে রেখে ছিল বলে স্বীকার করে এবং মণ্ডপ থেকে হনুমানের গদা নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরাফেরার পর পুকুরে ফেলে দেয় বলে স্বীকার করেছে। তবে নেপথ্যের ইন্ধনদাতাদের বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য প্রদান করছে। ঘটনার দিন কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই হারুন অর রশীদ বাদী হয়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা ও অবমাননা করার অপরাধে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় যে মামলাটি দায়ের করেন- ইকবালকে আটকের পর ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এছাড়াও পুলিশকে ৯৯৯-এ ফোন করা ইকরাম, দারোগাবাড়ি মাজার মসজিদের সহকারী খাদেম ফয়সাল ও হুমায়ুনকেও একই মামলায় আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এর আগে ঘটনার সঙ্গে ইকবাল হোসেনের সম্পৃক্ততার বিষয়টি সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা নিশ্চিত হয়। গত বুধবার রাত থেকে গণমাধ্যমে ইকবাল হোসেনের নাম আসায় দেশব্যাপী বেশ তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে কক্সবাজারে সমুদ্র সৈকত থেকে ইকবালকে আটক করে পুলিশ। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতেই তাকে আনতে কুমিল্লা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সোহান সরকারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল কক্সবাজারে যায় এবং শুক্রবার দুপুরে কড়া পুলিশ প্রহরায় তাকে কুমিল্লায় নিয়ে আসা হয়।

* যা ঘটেছিল সেদিন

১২ অক্টোবর রাত ১০টা ৫৮ মিনিট। ইকবাল হোসেন কুমিল্লা নগরীর পার্শ্ববর্তী দারোগাবাড়ি মসজিদে প্রবেশ করেন। এসময় মসজিদে থাকা একজনের সঙ্গে কথা বলেন। পরে রাত ১১টার দিকে সেখান থেকে চলে যান। পরে রাত ২টা ১২ মিনিটে (১৩ অক্টোবর) পুনরায় ওই মসজিদে আসেন ইকবাল। পরবর্তীতে সেখান থেকে পবিত্র কোরআন সংগ্রহ করে নানুয়ারদীঘিরপাড় পূজামণ্ডপে যান। এ সময় কোরআন রাখার জন্য জায়গা খুঁজে না পেয়ে হনুমান প্রতিমার মূর্তিটি খুলে ফেলেন এবং প্রতিমার পায়ের কাছে মূর্তিটি রেখে যান। পরে সেখান থেকে গদাটি নিয়ে নানুয়ারদীঘিরপাড় দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। ওইদিন সকালে পূজামণ্ডপে কোরআন দেখতে পেয়ে ইকরাম নামে এক ব্যক্তি ৯৯৯-এ ফোন দেন। পরে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. আনওয়ারুল আজিম ঘটনাস্থলে গিয়ে পবিত্র কোরআন শরিফ সেখান থেকে উদ্ধার করেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় লোকজনসহ আবেগপ্রবণ কিছু মুসলমান উত্তেজিত হয়ে পড়ে। খবর পেয়ে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. মনিরুল হক সাক্কু, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান ও পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পূজামণ্ডপ বন্ধ ঘোষণা করেন। পরে উত্তেজিত জনতা ওই মণ্ডপটি ভাঙচুর করে। এছাড়া নগরীর ৮টি পূজামণ্ডপ ও মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। পরে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবিসহ প্রশাসনের যৌথ মহড়ায় বিকেল নাগাদ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

* যা বললেন তদন্তকারী কর্মকর্তা

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই মফিজুল ইসলাম খান জানান, ইকবালসহ ৪ আসামিকে এ মামলায় অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে শনিবার কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম মিথিলা জাহান নিপার আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাদের প্রত্যেকের ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে ৯৯৯-এ কল দেয়া ইকরামের সঙ্গে ঘটনার আগে-পরে ইকবালের কি কথা হয়েছিল তা জানতে চাওয়া হবে। সিসিটিভি ফুটেজে দারোগাবাড়ি মাজার মসজিদ থেকে কোরআন শরিফ নেয়ার বিষয়ে মসজিদের সহকারী খাদেম দ্বয়ের কোন যোগসূত্র ছিল কি-না তাও রিমান্ডে তথ্য বের হয়ে আসতে পারে বলে ধারণা পুলিশের।

* যেভাবে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে ইকবাল

জেলা পুলিশের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানান, কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে কোরআন শরিফ রাখার পর অস্থিরতা সৃষ্টিতে ইকবাল সম্পৃক্ত ছিলেন। সে ঘটনার দিন সকালেও মণ্ডপে হামলার সময় ঘটনাস্থলে ছিল, কিন্তু পরবর্তীতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে এলে সে নগরীর শাসনগাছায় যায় এবং সেখান থেকে ট্রেনযোগে কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রামে যায়। পরে পায়ে হেঁটে ও বাসসহ বিভিন্ন পরিবহন পরিবর্তন করে কক্সবাজার চলে যায়। ওই কর্মকর্তা আরও জানান, ঘটনার পর কুমিল্লা থেকে কক্সবাজার যাওয়া, হোটেলে অবস্থান ও খাওয়ার অর্থ ও পরামর্শ তাকে কে দিয়েছে তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কেউ অর্থ সরবরাহ করে থাকলে তাকেও আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। এছাড়া তার এ অপরাধ সংগঠিত করার নেপথ্যে মোটিভ কি ছিল এবং এর সঙ্গে কোন ব্যক্তি, সংগঠন কিংবা গোষ্ঠী জড়িত কিনা সবকিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

রবিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২১ , ০৮ কার্তিক ১৪২৮ ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

মণ্ডপে কোরআন রাখার কথা স্বীকার ইকবালের

জেলা বার্তা পরিবেশক, কুমিল্লা

কুমিল্লা নগরীর নানুয়ারদীঘিরপাড়ে অস্থায়ী পূজামণ্ডপে ধর্ম অবমাননার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ইকবাল হোসেনসহ ৪ জনের সাতদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। গতকাল পুলিশ কড়া পাহারায় পুলিশ লাইন্স থেকে তাদের কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম মিথিলা জাহান নিপার আদালতে হাজির করে পুলিশ তাদের ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত প্রত্যেকের ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আলোচিত ইকবাল কুমিল্লা নগরীর ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের সুজানগরসংলগ্ন দ্বিতীয় মুরাদপুর (লস্করপুকুরপাড়) এলাকার নুর আহমেদ আলমের ছেলে। অপর আসামিরা হচ্ছে, পুলিশকে ৯৯৯-এ ফোনকারী ব্যক্তি ইকরাম, দারোগাবাড়ি মাজার মসজিদের সহকারী খাদেম ফয়সাল ও হুমায়ুন।

আদালত প্রাঙ্গণে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) এম. তানভীর আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাথমিকভাবে ইকবাল হোসেন পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ রাখা এবং হনুমানের গদাটি পুকুরের পানিতে ফেলে দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। সে ঘটনার বিষয়ে পুলিশকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে, এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাই বিস্তারিত জানতে ও অধিকতর তদন্তের স্বার্থে ইকবালসহ ৪ জনকে পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করতে সাতদিনের রিমান্ডে নেয়া হচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে প্রয়োজন হলে রিমান্ডে তাদের মুখোমুখি করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। জেলা পুলিশের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, গত শুক্রবার দুপুরে ইকবালকে কক্সবাজার থেকে কুমিল্লায় আনার পর ঢাকা থেকে আসা উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত টিম তাকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করে। এ সময় সে দারোগাবাড়ি মসজিদ থেকে পবিত্র কোরআন নিয়ে নানুয়ারদীঘিরপাড় পূজামণ্ডপে রেখে ছিল বলে স্বীকার করে এবং মণ্ডপ থেকে হনুমানের গদা নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরাফেরার পর পুকুরে ফেলে দেয় বলে স্বীকার করেছে। তবে নেপথ্যের ইন্ধনদাতাদের বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য প্রদান করছে। ঘটনার দিন কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই হারুন অর রশীদ বাদী হয়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা ও অবমাননা করার অপরাধে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় যে মামলাটি দায়ের করেন- ইকবালকে আটকের পর ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এছাড়াও পুলিশকে ৯৯৯-এ ফোন করা ইকরাম, দারোগাবাড়ি মাজার মসজিদের সহকারী খাদেম ফয়সাল ও হুমায়ুনকেও একই মামলায় আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এর আগে ঘটনার সঙ্গে ইকবাল হোসেনের সম্পৃক্ততার বিষয়টি সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা নিশ্চিত হয়। গত বুধবার রাত থেকে গণমাধ্যমে ইকবাল হোসেনের নাম আসায় দেশব্যাপী বেশ তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে কক্সবাজারে সমুদ্র সৈকত থেকে ইকবালকে আটক করে পুলিশ। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতেই তাকে আনতে কুমিল্লা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সোহান সরকারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল কক্সবাজারে যায় এবং শুক্রবার দুপুরে কড়া পুলিশ প্রহরায় তাকে কুমিল্লায় নিয়ে আসা হয়।

* যা ঘটেছিল সেদিন

১২ অক্টোবর রাত ১০টা ৫৮ মিনিট। ইকবাল হোসেন কুমিল্লা নগরীর পার্শ্ববর্তী দারোগাবাড়ি মসজিদে প্রবেশ করেন। এসময় মসজিদে থাকা একজনের সঙ্গে কথা বলেন। পরে রাত ১১টার দিকে সেখান থেকে চলে যান। পরে রাত ২টা ১২ মিনিটে (১৩ অক্টোবর) পুনরায় ওই মসজিদে আসেন ইকবাল। পরবর্তীতে সেখান থেকে পবিত্র কোরআন সংগ্রহ করে নানুয়ারদীঘিরপাড় পূজামণ্ডপে যান। এ সময় কোরআন রাখার জন্য জায়গা খুঁজে না পেয়ে হনুমান প্রতিমার মূর্তিটি খুলে ফেলেন এবং প্রতিমার পায়ের কাছে মূর্তিটি রেখে যান। পরে সেখান থেকে গদাটি নিয়ে নানুয়ারদীঘিরপাড় দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। ওইদিন সকালে পূজামণ্ডপে কোরআন দেখতে পেয়ে ইকরাম নামে এক ব্যক্তি ৯৯৯-এ ফোন দেন। পরে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. আনওয়ারুল আজিম ঘটনাস্থলে গিয়ে পবিত্র কোরআন শরিফ সেখান থেকে উদ্ধার করেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় লোকজনসহ আবেগপ্রবণ কিছু মুসলমান উত্তেজিত হয়ে পড়ে। খবর পেয়ে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. মনিরুল হক সাক্কু, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান ও পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পূজামণ্ডপ বন্ধ ঘোষণা করেন। পরে উত্তেজিত জনতা ওই মণ্ডপটি ভাঙচুর করে। এছাড়া নগরীর ৮টি পূজামণ্ডপ ও মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। পরে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবিসহ প্রশাসনের যৌথ মহড়ায় বিকেল নাগাদ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

* যা বললেন তদন্তকারী কর্মকর্তা

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই মফিজুল ইসলাম খান জানান, ইকবালসহ ৪ আসামিকে এ মামলায় অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে শনিবার কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম মিথিলা জাহান নিপার আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাদের প্রত্যেকের ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে ৯৯৯-এ কল দেয়া ইকরামের সঙ্গে ঘটনার আগে-পরে ইকবালের কি কথা হয়েছিল তা জানতে চাওয়া হবে। সিসিটিভি ফুটেজে দারোগাবাড়ি মাজার মসজিদ থেকে কোরআন শরিফ নেয়ার বিষয়ে মসজিদের সহকারী খাদেম দ্বয়ের কোন যোগসূত্র ছিল কি-না তাও রিমান্ডে তথ্য বের হয়ে আসতে পারে বলে ধারণা পুলিশের।

* যেভাবে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে ইকবাল

জেলা পুলিশের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানান, কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে কোরআন শরিফ রাখার পর অস্থিরতা সৃষ্টিতে ইকবাল সম্পৃক্ত ছিলেন। সে ঘটনার দিন সকালেও মণ্ডপে হামলার সময় ঘটনাস্থলে ছিল, কিন্তু পরবর্তীতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে এলে সে নগরীর শাসনগাছায় যায় এবং সেখান থেকে ট্রেনযোগে কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রামে যায়। পরে পায়ে হেঁটে ও বাসসহ বিভিন্ন পরিবহন পরিবর্তন করে কক্সবাজার চলে যায়। ওই কর্মকর্তা আরও জানান, ঘটনার পর কুমিল্লা থেকে কক্সবাজার যাওয়া, হোটেলে অবস্থান ও খাওয়ার অর্থ ও পরামর্শ তাকে কে দিয়েছে তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কেউ অর্থ সরবরাহ করে থাকলে তাকেও আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। এছাড়া তার এ অপরাধ সংগঠিত করার নেপথ্যে মোটিভ কি ছিল এবং এর সঙ্গে কোন ব্যক্তি, সংগঠন কিংবা গোষ্ঠী জড়িত কিনা সবকিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।