৩ লাখ ৪১ হাজার ৭২৩ শিক্ষার্থী টিকার জন্য তথ্য দিয়েছে : মাউশি

করোনার টিকাদানের জন্য ঢাকা মহানগরীর স্কুল-কলেজের ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী তিন লাখ ৪১ হাজার ৭২৩ জন শিক্ষার্থীর তথ্য পেয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। তবে প্রথমদিকে একটি মাত্র কেন্দ্রে টিকাদানের পরিকল্পনা নেয়া হলেও এখন কেন্দ্র বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে শিক্ষা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

তালিকাভুক্ত শিক্ষার্থীর যাবতীয় তথ্য ‘সুরক্ষা অ্যাপে’ অন্তর্ভুক্তির জন্য সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগে পাঠিয়েছে মাউশি। টিকা নেয়ার উপযোগী ওই শিক্ষার্থীদের সব তথ্য ‘সুরক্ষা অ্যাপে’ অন্তর্ভুক্তির পর শিক্ষার্থীরা অনলাইনে নিবন্ধন করতে পারবে।

মাউশি পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী গতকাল বিকেলে সংবাদকে জানান, এখন পর্যন্ত টিকা নেয়ার উপযোগী এমন তিন লাখ ৪১ হাজার সাত শতাধিক শিক্ষার্থীর তথ্য পাওয়া গেছে।

মাউশির আওতাধীন ঢাকা মহানগরের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যায়নরত ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সের শিক্ষার্থীদের তথ্য ছক আকারে গত ১৯ অক্টোবরের মধ্যে student.vaccination2021@gmail.com ই-মেইল ঠিকানায় পাঠাতে নির্দেশনা জারি করা হয়। তথ্য ছকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর নাম, প্রতিষ্ঠানের নাম, প্রতিষ্ঠানের কোড, জন্ম তারিখ, ১৭ ডিজিটের জন্ম-নিবন্ধন নম্বর ও অভিভাবকের মোবাইল নম্বর দিতে বলা হয়।

তথ্য দেয়ার সময় শেষ হলেও যারা নানা কারণে ‘ডাটা’ বা তথ্য দিতে পারেনি সেসব শিক্ষার্থীর তথ্য এখনও নেয়া হচ্ছে জানিয়ে অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, ‘আরও হয়তো ৩০-৩৫ হাজার শিক্ষার্থীর ডাটা পাওয়া যায়নি, সেগুলো নেয়া হচ্ছে।’

টিকা নিতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের ব্যবস্থা কীভাবে করা হচ্ছে- জানতে চাইলে মাউশি পরিচালক বলেন, ‘ঢাকায় এমনিতেই যানজট সমস্যা রয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে একটি কেন্দ্রে গিয়ে টিকা নেয়া কষ্টসাধ্য কাজ। তবে কেন্দ্রের বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। কেন্দ্র বাড়তে পারে; সেটি নির্ভর করছে স্বাস্থ্য বিভাগের সক্ষমতার ওপর। কারণ শিক্ষার্থীদের ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা দেয়া হবে। এই টিকার ব্যবস্থাপনায় কোল্ড চেইন মেনে চলার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক গত ১০ অক্টোবর মহাখালীর বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান অ্যান্ড সার্জনসে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধানের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা সংক্রমণ রোধে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের (১২ থেকে ১৭ বছর) ফাইজার ও মডার্নার টিকা দেয়ার বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছে।’

এরপর গত ১৪ অক্টোবর শিক্ষার্থীদের টিকাদানের লক্ষ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়া হবে। পরবর্তীতে দেশের ২১টি জেলায় টিকা দেয়ার পরিকল্পনা আছে। ফাইজারের টিকার কোল্ড চেইন সীমাবদ্ধতার কারণে একসঙ্গে সব জেলায় তা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। ৩০ অক্টোবর থেকে ১৫ দিনের মধ্যে ঢাকা মহানগরীর স্কুল-কলেজের ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী সব শিক্ষার্থীকে করোনার টিকা দেয়ার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। তবে একটিমাত্র কেন্দ্রে টিকাদানের পরিকল্পনায় নেয়া মহানগরীরর বিভিন্ন এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা অসন্তোষ প্রকাশ করেন। মাউশির এক সভায়ও প্রতিষ্ঠান প্রধানরা নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেন।

মাউশির তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা মহানগরীর স্কুল এবং কলেজ মিলিয়ে ৭৮৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এখানে শিক্ষার্থী সংখ্যা সাত-আট লাখের মতো হবে।

গত ১৪ অক্টোবর পরীক্ষামূলকভাবে মানিকগঞ্জের ১২০ স্কুল শিক্ষার্থীকে করোনার টিকা দেয়া হয়। তাদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে ১৪ দিন পর রাজধানী ও পরবর্তীতে ২১ জেলায় টিকার মূল কর্মসূচি শুরু করার কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, দেশের এক কোটি স্কুল শিক্ষার্থীকে করোনার টিকা দেয়া হবে।

মঙ্গলবার, ২৬ অক্টোবর ২০২১ , ১০ কার্তিক ১৪২৮ ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী

৩ লাখ ৪১ হাজার ৭২৩ শিক্ষার্থী টিকার জন্য তথ্য দিয়েছে : মাউশি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

করোনার টিকাদানের জন্য ঢাকা মহানগরীর স্কুল-কলেজের ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী তিন লাখ ৪১ হাজার ৭২৩ জন শিক্ষার্থীর তথ্য পেয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। তবে প্রথমদিকে একটি মাত্র কেন্দ্রে টিকাদানের পরিকল্পনা নেয়া হলেও এখন কেন্দ্র বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে শিক্ষা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

তালিকাভুক্ত শিক্ষার্থীর যাবতীয় তথ্য ‘সুরক্ষা অ্যাপে’ অন্তর্ভুক্তির জন্য সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগে পাঠিয়েছে মাউশি। টিকা নেয়ার উপযোগী ওই শিক্ষার্থীদের সব তথ্য ‘সুরক্ষা অ্যাপে’ অন্তর্ভুক্তির পর শিক্ষার্থীরা অনলাইনে নিবন্ধন করতে পারবে।

মাউশি পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী গতকাল বিকেলে সংবাদকে জানান, এখন পর্যন্ত টিকা নেয়ার উপযোগী এমন তিন লাখ ৪১ হাজার সাত শতাধিক শিক্ষার্থীর তথ্য পাওয়া গেছে।

মাউশির আওতাধীন ঢাকা মহানগরের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যায়নরত ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সের শিক্ষার্থীদের তথ্য ছক আকারে গত ১৯ অক্টোবরের মধ্যে student.vaccination2021@gmail.com ই-মেইল ঠিকানায় পাঠাতে নির্দেশনা জারি করা হয়। তথ্য ছকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর নাম, প্রতিষ্ঠানের নাম, প্রতিষ্ঠানের কোড, জন্ম তারিখ, ১৭ ডিজিটের জন্ম-নিবন্ধন নম্বর ও অভিভাবকের মোবাইল নম্বর দিতে বলা হয়।

তথ্য দেয়ার সময় শেষ হলেও যারা নানা কারণে ‘ডাটা’ বা তথ্য দিতে পারেনি সেসব শিক্ষার্থীর তথ্য এখনও নেয়া হচ্ছে জানিয়ে অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, ‘আরও হয়তো ৩০-৩৫ হাজার শিক্ষার্থীর ডাটা পাওয়া যায়নি, সেগুলো নেয়া হচ্ছে।’

টিকা নিতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের ব্যবস্থা কীভাবে করা হচ্ছে- জানতে চাইলে মাউশি পরিচালক বলেন, ‘ঢাকায় এমনিতেই যানজট সমস্যা রয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে একটি কেন্দ্রে গিয়ে টিকা নেয়া কষ্টসাধ্য কাজ। তবে কেন্দ্রের বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। কেন্দ্র বাড়তে পারে; সেটি নির্ভর করছে স্বাস্থ্য বিভাগের সক্ষমতার ওপর। কারণ শিক্ষার্থীদের ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা দেয়া হবে। এই টিকার ব্যবস্থাপনায় কোল্ড চেইন মেনে চলার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক গত ১০ অক্টোবর মহাখালীর বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান অ্যান্ড সার্জনসে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধানের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা সংক্রমণ রোধে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের (১২ থেকে ১৭ বছর) ফাইজার ও মডার্নার টিকা দেয়ার বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছে।’

এরপর গত ১৪ অক্টোবর শিক্ষার্থীদের টিকাদানের লক্ষ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়া হবে। পরবর্তীতে দেশের ২১টি জেলায় টিকা দেয়ার পরিকল্পনা আছে। ফাইজারের টিকার কোল্ড চেইন সীমাবদ্ধতার কারণে একসঙ্গে সব জেলায় তা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। ৩০ অক্টোবর থেকে ১৫ দিনের মধ্যে ঢাকা মহানগরীর স্কুল-কলেজের ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী সব শিক্ষার্থীকে করোনার টিকা দেয়ার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। তবে একটিমাত্র কেন্দ্রে টিকাদানের পরিকল্পনায় নেয়া মহানগরীরর বিভিন্ন এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা অসন্তোষ প্রকাশ করেন। মাউশির এক সভায়ও প্রতিষ্ঠান প্রধানরা নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেন।

মাউশির তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা মহানগরীর স্কুল এবং কলেজ মিলিয়ে ৭৮৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এখানে শিক্ষার্থী সংখ্যা সাত-আট লাখের মতো হবে।

গত ১৪ অক্টোবর পরীক্ষামূলকভাবে মানিকগঞ্জের ১২০ স্কুল শিক্ষার্থীকে করোনার টিকা দেয়া হয়। তাদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে ১৪ দিন পর রাজধানী ও পরবর্তীতে ২১ জেলায় টিকার মূল কর্মসূচি শুরু করার কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, দেশের এক কোটি স্কুল শিক্ষার্থীকে করোনার টিকা দেয়া হবে।