তদন্তে নেমে ঘুষ দাবি, দুদক কর্মকর্তাকে হাইকোর্টে তলব

তদন্ত করতে গিয়ে অনৈতিক সুবিধা দাবি করার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেনকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ৭ নভেম্বর তাকে সশরীরে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে অনৈতিক সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করায় তার বিরুদ্ধে রুল জারি করেছেন আদালত। সেই রুল শুনানি না হওয়া পর্যন্ত ওই কর্মকর্তাকে তদন্ত কাজ বন্ধ রাখতেও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এক আবেদনের শুনানি নিয়ে গতকাল বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন, আইনজীবী মো. কামাল হোসেন। দুদকের পক্ষে ছিলেন, আইনজীবী মো. আসিফ হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আন্না খানম কলি ও মো. সাইফুর রহমান সিদ্দিকী সাইফ।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, দুদকের কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেনকে আগামী ৭ নভেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় সশরীরে হাজির হয়ে হলফ আকারে বিষয়টি তাকে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে অনৈতিক সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করায় তার বিরুদ্ধে রুল জারি করেছেন আদালত। এছাড়া রিটকারীদের বিরুদ্ধে রুল শুনানি না হওয়া পর্যন্ত তদন্তকাজ বন্ধ রাখতেও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এর আগে সম্পদের তথ্য গোপন এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের ঘটনায় এক দম্পতির বিরুদ্ধে তদন্তে নামে দুদক। কিন্তু তদন্তের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনৈতিক সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে। এ কারণে তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন চেয়ে দুদকে বারবার আবেদন জানিয়েও কোন প্রতিকার পাননি মামলার দুই আসামি। ফলে ন্যায় বিচারের স্বার্থে দুদকের তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন আসামিরা।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য জানাতে ২০১৯ সালের ৩ মার্চ মো. আবদুল কুদ্দুস হাওলাদার ও তার স্ত্রী মাহিনুর বেগমকে নোটিশ দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন। আবদুল কুদ্দুস হাওলাদার ঢাকা সদরের সাবেক সাব রেজিস্ট্রার এবং বর্তমানে তিনি পিরোজপুরের জেলা রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত আছেন। দুদকের (ঢাকা-১) উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম ওই নোটিশ দেন। তবে নোটিশের উপযুক্ত জবাব না মেলায় জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর ওই দম্পতিকে আসামি করে ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিচারিক আদালতে মামলা করে দুদক। ২৪ লাখ ৭০ হাজার ৫৪৩ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন, ৯০ লাখ ১২ হাজার ৭৯৬ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও তা দখল রাখার অভিযোগে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

মামলায় অভিযোগে বলা হয়, আবদুল কুদ্দুস হাওলাদার সাবরেজিস্ট্রার ও জেলা রেজিস্ট্রার হিসেবে চাকরি করার সুবাদে দুর্নীতিমূলক কর্মকা-ের মাধ্যমে উপার্জিত অবৈধ অর্থ দিয়ে তার নিজ নামে সম্পদ অর্জন করেন। এই সম্পদ নিজ দখলে রেখে আসামি দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪-এর ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। মামলা দায়েরের পর তদন্তে নামেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর হোসেন।

মঙ্গলবার, ২৬ অক্টোবর ২০২১ , ১০ কার্তিক ১৪২৮ ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

তদন্তে নেমে ঘুষ দাবি, দুদক কর্মকর্তাকে হাইকোর্টে তলব

আদালত বার্তা পরিবেশক

তদন্ত করতে গিয়ে অনৈতিক সুবিধা দাবি করার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেনকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ৭ নভেম্বর তাকে সশরীরে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে অনৈতিক সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করায় তার বিরুদ্ধে রুল জারি করেছেন আদালত। সেই রুল শুনানি না হওয়া পর্যন্ত ওই কর্মকর্তাকে তদন্ত কাজ বন্ধ রাখতেও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এক আবেদনের শুনানি নিয়ে গতকাল বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন, আইনজীবী মো. কামাল হোসেন। দুদকের পক্ষে ছিলেন, আইনজীবী মো. আসিফ হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আন্না খানম কলি ও মো. সাইফুর রহমান সিদ্দিকী সাইফ।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, দুদকের কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেনকে আগামী ৭ নভেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় সশরীরে হাজির হয়ে হলফ আকারে বিষয়টি তাকে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে অনৈতিক সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করায় তার বিরুদ্ধে রুল জারি করেছেন আদালত। এছাড়া রিটকারীদের বিরুদ্ধে রুল শুনানি না হওয়া পর্যন্ত তদন্তকাজ বন্ধ রাখতেও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এর আগে সম্পদের তথ্য গোপন এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের ঘটনায় এক দম্পতির বিরুদ্ধে তদন্তে নামে দুদক। কিন্তু তদন্তের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনৈতিক সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে। এ কারণে তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন চেয়ে দুদকে বারবার আবেদন জানিয়েও কোন প্রতিকার পাননি মামলার দুই আসামি। ফলে ন্যায় বিচারের স্বার্থে দুদকের তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন আসামিরা।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য জানাতে ২০১৯ সালের ৩ মার্চ মো. আবদুল কুদ্দুস হাওলাদার ও তার স্ত্রী মাহিনুর বেগমকে নোটিশ দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন। আবদুল কুদ্দুস হাওলাদার ঢাকা সদরের সাবেক সাব রেজিস্ট্রার এবং বর্তমানে তিনি পিরোজপুরের জেলা রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত আছেন। দুদকের (ঢাকা-১) উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম ওই নোটিশ দেন। তবে নোটিশের উপযুক্ত জবাব না মেলায় জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর ওই দম্পতিকে আসামি করে ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিচারিক আদালতে মামলা করে দুদক। ২৪ লাখ ৭০ হাজার ৫৪৩ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন, ৯০ লাখ ১২ হাজার ৭৯৬ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও তা দখল রাখার অভিযোগে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

মামলায় অভিযোগে বলা হয়, আবদুল কুদ্দুস হাওলাদার সাবরেজিস্ট্রার ও জেলা রেজিস্ট্রার হিসেবে চাকরি করার সুবাদে দুর্নীতিমূলক কর্মকা-ের মাধ্যমে উপার্জিত অবৈধ অর্থ দিয়ে তার নিজ নামে সম্পদ অর্জন করেন। এই সম্পদ নিজ দখলে রেখে আসামি দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪-এর ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। মামলা দায়েরের পর তদন্তে নামেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর হোসেন।