পরাজয় নিশ্চিত জেনেই তালেবানের সঙ্গে সমঝোতা সাবেক মার্কিন দূত

আফগানিস্তানের যুদ্ধে তালেবানের কাছে হেরে যাচ্ছিল যুক্তরাষ্ট্র। অনেক চেষ্টা করেও যুদ্ধক্ষেত্রে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে ব্যর্থ হয়েছে মার্কিন বাহিনী। এমন বাস্তবতায় তালেবানের সঙ্গে আলোচনা বা সমঝোতার পথ বেছে নেয় ওয়াশিংটন। সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজের সঙ্গে আলাপকালে এমন মন্তব্য করেছেন আফগানিস্তান বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক বিশেষ দূত জালমে খলিলজাদ। তার মধ্যস্থতাতেই কাতারের রাজধানী দোহায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিল তালেবান। জালমে খলিলজাদ বলেন, ‘যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র জিতছে নাÑ এমন বাস্তবতার আলোকেই তালেবানের সঙ্গে সমঝোতার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সময় আমাদের পক্ষে ছিল না। তাই দেরি না করে আগেভাগেই চুক্তি করাটা ছিল উত্তম কাজ।’

২০২১ সালের ১৫ আগস্ট প্রায় বিনাবাধায় কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। প্লেনভর্তি অর্থ নিয়ে পালিয়ে দেশ ছাড়েন যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গণি। আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আজমল আহমদিও পালিয়ে যান। পরে এক টুইটে তিনি জানান, ‘তালেবানের ওপর একের পর এক আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা জারি হচ্ছে। বেশিরভাগ অর্থকড়ি দেশের বাইরে রাখা। সেগুলো তালেবানের হাতে পৌঁছানোর কোন সম্ভাবনাও নেই।’ একদিকে অর্থনৈতিক সংকট অন্যদিকে ভঙ্গুর নিরাপত্তা ব্যবস্থা মোকাবিলায় হিমশিম খেতে হয় সদ্য দেশের দায়িত্ব নেওয়া নতুন তালেবান সরকারকে। নিরাপত্তা পরিস্থিতি এভাবে ভেঙে পড়ার জন্য আশরাফ গণির দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়াকেই দায়ী করেন খলিলজাদ। তিনি বলেন, গণি পালিয়ে যাওয়ায় দেশটিতে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। জালমে খলিলজাদ বলেন, তালেবান ক্ষমতা ভাগাভাগির মাধ্যমে সরকার গঠন এবং পরবর্তী সরকারে গণি প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা রাখা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করছিল। কিন্তু আশরাফ গণি পালিয়ে যাওয়ায় এর সবকিছুই ভেস্তে যায়।

তিনি বলেন, যে আল কায়েদাকে দমনে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে গিয়েছিল সেটি অনেকাংশে সফল হয়েছে। কিন্তু সেখানে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র তৈরিতে ওয়াশিংটন ব্যর্থ হয়েছে। প্রবীণ এই কূটনীতিক বলেন, দুই দশকের মার্কিন উপস্থিতি আফগানিস্তানকে বদলে দিয়েছে। ১৯৯০-এর দশকে তালেবান আফগানদের যে জায়গায় রেখেছিল এখন নাগরিকদের সেই জায়গায় ফিরিয়ে নিতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।

মঙ্গলবার, ২৬ অক্টোবর ২০২১ , ১০ কার্তিক ১৪২৮ ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

পরাজয় নিশ্চিত জেনেই তালেবানের সঙ্গে সমঝোতা সাবেক মার্কিন দূত

আফগানিস্তানের যুদ্ধে তালেবানের কাছে হেরে যাচ্ছিল যুক্তরাষ্ট্র। অনেক চেষ্টা করেও যুদ্ধক্ষেত্রে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে ব্যর্থ হয়েছে মার্কিন বাহিনী। এমন বাস্তবতায় তালেবানের সঙ্গে আলোচনা বা সমঝোতার পথ বেছে নেয় ওয়াশিংটন। সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজের সঙ্গে আলাপকালে এমন মন্তব্য করেছেন আফগানিস্তান বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক বিশেষ দূত জালমে খলিলজাদ। তার মধ্যস্থতাতেই কাতারের রাজধানী দোহায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিল তালেবান। জালমে খলিলজাদ বলেন, ‘যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র জিতছে নাÑ এমন বাস্তবতার আলোকেই তালেবানের সঙ্গে সমঝোতার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সময় আমাদের পক্ষে ছিল না। তাই দেরি না করে আগেভাগেই চুক্তি করাটা ছিল উত্তম কাজ।’

২০২১ সালের ১৫ আগস্ট প্রায় বিনাবাধায় কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। প্লেনভর্তি অর্থ নিয়ে পালিয়ে দেশ ছাড়েন যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গণি। আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আজমল আহমদিও পালিয়ে যান। পরে এক টুইটে তিনি জানান, ‘তালেবানের ওপর একের পর এক আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা জারি হচ্ছে। বেশিরভাগ অর্থকড়ি দেশের বাইরে রাখা। সেগুলো তালেবানের হাতে পৌঁছানোর কোন সম্ভাবনাও নেই।’ একদিকে অর্থনৈতিক সংকট অন্যদিকে ভঙ্গুর নিরাপত্তা ব্যবস্থা মোকাবিলায় হিমশিম খেতে হয় সদ্য দেশের দায়িত্ব নেওয়া নতুন তালেবান সরকারকে। নিরাপত্তা পরিস্থিতি এভাবে ভেঙে পড়ার জন্য আশরাফ গণির দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়াকেই দায়ী করেন খলিলজাদ। তিনি বলেন, গণি পালিয়ে যাওয়ায় দেশটিতে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। জালমে খলিলজাদ বলেন, তালেবান ক্ষমতা ভাগাভাগির মাধ্যমে সরকার গঠন এবং পরবর্তী সরকারে গণি প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা রাখা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করছিল। কিন্তু আশরাফ গণি পালিয়ে যাওয়ায় এর সবকিছুই ভেস্তে যায়।

তিনি বলেন, যে আল কায়েদাকে দমনে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে গিয়েছিল সেটি অনেকাংশে সফল হয়েছে। কিন্তু সেখানে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র তৈরিতে ওয়াশিংটন ব্যর্থ হয়েছে। প্রবীণ এই কূটনীতিক বলেন, দুই দশকের মার্কিন উপস্থিতি আফগানিস্তানকে বদলে দিয়েছে। ১৯৯০-এর দশকে তালেবান আফগানদের যে জায়গায় রেখেছিল এখন নাগরিকদের সেই জায়গায় ফিরিয়ে নিতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।