এডিস মশার উপদ্রব কমছে না

ডেঙ্গুজ্বরের বাহক এডিস মশার উপদ্রব থামছে না। বাসাবাড়ি থেকে শুরু করে সর্বত্র এ মশার উপদ্রব। মশার কামড় থেকে বাঁচতে নগরবাসী বাসা ও অফিসে দেশি-বিদেশি অ্যারোসলসহ বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ব্যবহার করলেও মশার উপদ্রব ঠেকানো যাচ্ছে না।

বৃষ্টির কারণে ভাইরাস বহনকারী পূর্ণাঙ্গ মশা ডিম পাড়ে। সেই ডিম থেকে নতুন করে আবার ভাইরাস বহনকারী মশার বিস্তার ঘটে। ফলে সহজেই ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা কমছে না। আসছে শীত মৌসুমে বেশি শীত পড়তে শুরু করলে এডিস উপদ্রব কিছুটা কমবে বলে আশাবাদী কীটতত্ত্ব¡ বিশেষজ্ঞরা।

গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে আরও ১৯০ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ১৫৪ জন ও ঢাকার বাইরে ৩৬ জন ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে গতকাল পর্যন্ত মোট ২২ হাজার ৬৮৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে চিকিৎসা শেষে ছাড়পত্র নিয়েছেন ২১ হাজার ৭৪০ জন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ৮৭ জন। এখনও ভর্তি আছেন ৮৬১ জন। মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম এ সব তথ্য জানিয়েছেন।

ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর ডা. সৈয়দ সফি আহমেদ বলেছেন, শিশু হাসপাতালে এখনও ৩৮ জন শিশু ভর্তি আছে। এর মধ্যে তিনজন আইসিইউতে আছে। ডেঙ্গুজ্বরের চিকিৎসাধীন অবস্থায় এ বছর শিশু হাসপাতালে ১২ জন শিশু মারা গেছে।

চলতি বছর ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে শিশু হাসপাতালে ৮৮০ জন শিশু ভর্তি হয়েছে। এ ছাড়াও বহির্বিভাগে এখনও ডেঙ্গুজ্বরসহ অনেকেই মৌসুমি জ্বর, সর্দি নিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞদের মতে, এখনও থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। এ বৃষ্টিতে জমে থাকা পানিতে ডেঙ্গুজ্বরের ভাইরাস বহনকারী পূর্ণাঙ্গ এডিস মশা ডিম পাড়ে। ডিম ফুটে যে নতুন মশার জন্ম হয়। সেই মশাও ভাইরাস বহন করে। ফলে সহজে ডেঙ্গুজ্বর কমার কোন সম্ভাবনা নেই। তবে আসছে শীত মৌসুমে বেশি শীত পড়লে এডিস মশার উপদ্রব কিছুটা হলেও কমবে বলে আশাবাদী। আর বৃষ্টি থাকলে আক্রান্তের সংখ্যা কখনও কমবে আবার কখনও বাড়বে। মশা দমনে মশার ওষুধ দেয়া ও লার্ভা ধ্বংস করতে হবে।

এ বিশেষজ্ঞ বলেন, বিশ্বের অনেক দেশে এডিস মশা দমনে আলাদা বিভাগ রয়েছে। ওই বিভাগের পক্ষ থেকে বছরজুড়ে মশা দমনে কাজ করা হয়। যে এলাকায় মশার উপদ্রব বেশি, সেখানে ওষুধ ছিটানোসহ মশা দমনে কাজ করে। বাংলাদেশে দ্রুত আলাদা বিভাগ চালু না করলে প্রতিবছর পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার, ২৬ অক্টোবর ২০২১ , ১০ কার্তিক ১৪২৮ ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

এডিস মশার উপদ্রব কমছে না

বিশেষ বার্তা পরিবেশক

ডেঙ্গুজ্বরের বাহক এডিস মশার উপদ্রব থামছে না। বাসাবাড়ি থেকে শুরু করে সর্বত্র এ মশার উপদ্রব। মশার কামড় থেকে বাঁচতে নগরবাসী বাসা ও অফিসে দেশি-বিদেশি অ্যারোসলসহ বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ব্যবহার করলেও মশার উপদ্রব ঠেকানো যাচ্ছে না।

বৃষ্টির কারণে ভাইরাস বহনকারী পূর্ণাঙ্গ মশা ডিম পাড়ে। সেই ডিম থেকে নতুন করে আবার ভাইরাস বহনকারী মশার বিস্তার ঘটে। ফলে সহজেই ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা কমছে না। আসছে শীত মৌসুমে বেশি শীত পড়তে শুরু করলে এডিস উপদ্রব কিছুটা কমবে বলে আশাবাদী কীটতত্ত্ব¡ বিশেষজ্ঞরা।

গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে আরও ১৯০ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ১৫৪ জন ও ঢাকার বাইরে ৩৬ জন ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে গতকাল পর্যন্ত মোট ২২ হাজার ৬৮৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে চিকিৎসা শেষে ছাড়পত্র নিয়েছেন ২১ হাজার ৭৪০ জন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ৮৭ জন। এখনও ভর্তি আছেন ৮৬১ জন। মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম এ সব তথ্য জানিয়েছেন।

ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর ডা. সৈয়দ সফি আহমেদ বলেছেন, শিশু হাসপাতালে এখনও ৩৮ জন শিশু ভর্তি আছে। এর মধ্যে তিনজন আইসিইউতে আছে। ডেঙ্গুজ্বরের চিকিৎসাধীন অবস্থায় এ বছর শিশু হাসপাতালে ১২ জন শিশু মারা গেছে।

চলতি বছর ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে শিশু হাসপাতালে ৮৮০ জন শিশু ভর্তি হয়েছে। এ ছাড়াও বহির্বিভাগে এখনও ডেঙ্গুজ্বরসহ অনেকেই মৌসুমি জ্বর, সর্দি নিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞদের মতে, এখনও থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। এ বৃষ্টিতে জমে থাকা পানিতে ডেঙ্গুজ্বরের ভাইরাস বহনকারী পূর্ণাঙ্গ এডিস মশা ডিম পাড়ে। ডিম ফুটে যে নতুন মশার জন্ম হয়। সেই মশাও ভাইরাস বহন করে। ফলে সহজে ডেঙ্গুজ্বর কমার কোন সম্ভাবনা নেই। তবে আসছে শীত মৌসুমে বেশি শীত পড়লে এডিস মশার উপদ্রব কিছুটা হলেও কমবে বলে আশাবাদী। আর বৃষ্টি থাকলে আক্রান্তের সংখ্যা কখনও কমবে আবার কখনও বাড়বে। মশা দমনে মশার ওষুধ দেয়া ও লার্ভা ধ্বংস করতে হবে।

এ বিশেষজ্ঞ বলেন, বিশ্বের অনেক দেশে এডিস মশা দমনে আলাদা বিভাগ রয়েছে। ওই বিভাগের পক্ষ থেকে বছরজুড়ে মশা দমনে কাজ করা হয়। যে এলাকায় মশার উপদ্রব বেশি, সেখানে ওষুধ ছিটানোসহ মশা দমনে কাজ করে। বাংলাদেশে দ্রুত আলাদা বিভাগ চালু না করলে প্রতিবছর পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।