সুন্দরবনঘেরা সাতক্ষীরা মুন্সিগঞ্জকে পর্যটনকেন্দ্র ঘোষণার দাবি

দীর্ঘ লকডাউনের পরে সুন্দরবন ভ্রমণের অনুমতি মিললেও কাক্সিক্ষতভাবে বাড়ছে না পর্যটকের সংখ্যা। অবকাঠামোগত সংকটই অফুরন্ত সম্ভাবনাময় সুন্দরবন পর্যটনে প্রধান বাধা বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। পর্যটনকেন্দ্র ঘোষিত হলে সরকারিভাবে তৈরি হতো ভ্রমণবান্ধব অবকাঠামো। সুন্দরবনকে ঘিরে মুন্সিগঞ্জ এলাকায় তাই পর্যটনকেন্দ্র ঘোষণার দাবি স্থানীয়দের।

পূর্ব-পশ্চিম সুন্দরবন, সাতক্ষীরা রেঞ্জ সূত্রে জানা যায়, লকডাউনে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পরে ১ সেপ্টেম্বর থেকে সুন্দরবন ভ্রমণে অনুমতি দেয় সরকার। তবে পুরো সেপ্টেম্বরে সুন্দরবন ভ্রমণে গিয়েছেন মাত্র এক হাজার ৪শ ৬৯ জন ভ্রমণপিপাসু মানুষ।

তথ্যসূত্রে আরও জানা যায়, মুন্সিগঞ্জ থেকে সুন্দরবনের দুটি পয়েন্টে ভ্রমণের সুযোগ পান পর্যটকরা। পয়েন্ট দুটি হলো, দোবেকি ও কলাগাছি। এ দুটি পয়েন্টে বানর, হরিণসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী ও বহুজাতের গাছগাছালি দেখতে পান পর্যটকরা। কলাগাছি যেতে প্রতিজনকে পরিশোধ করতে হয় ২০ টাকা আর দোবেকি যেতে গুনতে হয় ৭০ টাকা। এছাড়া তিনদিনের ভ্রমণে প্রতিজনকে পরিশোধ করতে হয় ৪শ ৫০ টাকা। এছাড়া নিরাপত্তার জন্য সশস্ত্র বনরক্ষী পেতে প্রত্যেককে প্রতিদিন ৩শ টাকা করে বাড়তি গুনতে হয়। তবে পরিবহন থেকে নেমেই সুন্দরবনের কাছাকাছি আসতে পারলেও অবকাঠামোগত সংকটে বাড়ছে না পর্যটকের সংখ্যা।

স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী বেলাল হোসেন জানান, ‘সড়ক পথে সুন্দরবন-সাতক্ষীরার আকর্ষণ’-এই সেøাগানে সরকারিভাবে প্রচারণা চালানো হলেও সুন্দরবনে বাড়ছে না পর্যটকের সংখ্যা। জলযানে ওঠার জন্য নেই কোন পন্টুন। নেই ভালোমানের হোটেল-মোটেল। ভাঙাচোরা রাস্তায় ভ্রমণের আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন পর্যটকরা। তিনি দাবি করেন, সরকারিভাবে পর্যটনবান্ধব অবকাঠামো নির্মাণ হোক মুন্সিগঞ্জে।

কুমিল্লা থেকে বেড়াতে আসা মাহবুবুর রহমান জানান, এখানে নৌকা বা অন্য যানবাহনের যে সিন্ডিকেটটা আছে, তা কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে আসা উচিত। তাছাড়া জরযানগুলো আরও উন্নতমানের হওয়া উচিত। টুরিস্টরা যাতে ভালো সেপটি পায়, সেদিকে উদ্যোগে নেয়া প্রয়োজন। এছাড়া এখানে আরও ভালো হোটেল-মোটেল আশা করি আমরা। এছাড়া সুন্দরবনের জঙ্গল যেন আরও বৈজ্ঞানিকভাবে রক্ষিত হয়, সেদিকে খেয়াল রাখবে সরকার, সেই আশা করি। ময়লা-আবর্জনা যেখানে সেখানে না ফেলে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলা উচিত।

সুন্দরবন ভ্রমণে আসা একই এলাকার আলমগীর হোসেন জানান, আমরা কুমিল্লা থেকে এসেছি। সুন্দরবন দেখব বলে। তবে রাস্তাঘাটের অবস্থা খুব খারাপ। জলযানে ওঠার পন্টুন ভালো হতে হবে। যদি এসব ভালো হয়, তবে পর্যটকদেরও সুবিধা হবে। সরকার যদি এখানে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়, তবে পর্যটকরা সুন্দরবন দেখে মজা পাবে।

স্থানীয় মনোহরি সামগ্রী বিক্রেতা আনোয়ার হোসেন জানান, এখানে পর্যটনকেন্দ্র হলে ব্যবসা-বাণিজ্য, দোকান-পাট প্রসারিত হতো। এলাকায় বেকারত্ব কমত।

ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে অভাব-অনটন নিত্যসঙ্গী উপকূলবাসীর। মুন্সিগঞ্জে পর্যটনকেন্দ্র ঘোষণা হলে এলাকার চেহারাই পাল্টে যাবে বলে মনে করেন মুন্সিগঞ্জ ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি ও স্থানীয় চেয়ারম্যান ভবতোষ ম-ল।

তিনি জানান, সুন্দরবন নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি। অঞ্চলটি খুবই দারিদ্র্যপীড়িত। এ অঞ্চলে সুযোগ ও সম্ভাবনার একটা বিষয় যদি চলে আসে, সেটা হলো সুন্দরবন। এ অঞ্চলের মানুষের দাবি, মুন্সিগঞ্জকে পর্যটনকেন্দ্র করা হোক। এই অঞ্চলের কমপক্ষে ১০ হাজার মানুষ পর্যটনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। যারা ক্ষুদ্র ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, তারাও উপকৃত হবে। কমিউনিটি বেজড বিভিন্ন গোষ্ঠী উপকৃত হবে। এছাড়া যোগাযোগ ব্যবস্থারও উন্নতি হবে। তাই দাবি জানাচ্ছি, এলাকাটি পর্যটনকেন্দ্র ঘোষণা করা হোক।

সুন্দরবন সড়ক পথে সুন্দরবন ভ্রমণের একমাত্র জায়গা মুন্সিগঞ্জ। সেই সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে এই এলাকা হতে পারে সুন্দরবন ভ্রমণের প্রাণকেন্দ্র। এমনটাই মনে করেন, চিত্র নির্মাতা দীপঙ্কর দীপন।

তিনি বলেন, মুন্সিগঞ্জ পর্যটনের জন্য অনন্য একটা জায়গা। আমি বহুবার সুন্দরবনে এসেছি। আমি পর্যবেক্ষণ করেছি, যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই নাজুক। আর মুন্সিগঞ্জ এমন একটা জায়গা, যেখানে পর্যটকরা গাড়িতে করে সুন্দরবনের পাশে আসতে পারবেন। সেই সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে সুন্দরবন হতে পারত, পর্যটনের প্রাণকেন্দ্র। তবে তা হয়নি। আমি দশ বছর আগে এসে যা দেখেছি, এখনও তাই দেখছি। সুন্দরবনের ক্ষতি না করে ভালো একটি পর্যটনকেন্দ্র গড়ে উঠলে এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন হবে।

এ বিষয়ে পশ্চিম সুন্দরবনের সহকারী বন সংরক্ষক আবু হাসান বলেন, বনবিভাগের পক্ষ থেকে সরকার নির্দেশিত সব সেবাই সুন্দরবন ঘুরতে যাওয়া মানুষদের দেয়া হয়। লকডাউন উঠে যাওয়ার পরে ধীরে ধীরে পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

পর্যটনকেন্দ্র ঘোষণার সম্ভাব্যতা দেখতে ২০১৬ সালে মুন্সিগঞ্জ ভ্রমণ করেন তৎকালীন পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। এরপর দীর্ঘদিন কোন উদ্যোগ দেখা যায়নি। তবে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সুন্দরবনকে পর্যটনকেন্দ্র ঘোষণার দাবি পাঠানো হয়েছে বলে জানান, শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আ ন ম আবুজার গিফারী।

তিনি জানান, পর্যটনকেন্দ্র ঘোষণার জন্য আমরা উপজেলা প্রশাসন থেকে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি।

তিনি আরও জানান, সুন্দরবনভিত্তিক তিন ধরনের মানবসম্পদ গড়ে তোলা যায়। প্রথমত, গাইড করার জন্য জনবল দরকার হয়। তারা পর্যটকদের সুন্দরবন ঘুরে দেখাতে পারবে। দ্বিতীয়ত, হোটেল-মোটেল নির্মাণ। তৃতীয়ত, মানসম্মত জলযান। এসব নিশ্চিত করা গেলে পর্যটনভিত্তিক কর্মসংস্থান ব্যাপক বৃদ্ধি পাবে এই এলাকায়।

পর্যটনে সুন্দরবনকে অপার সম্ভাবনাময় বলছেন সাতক্ষীরা-২ আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। তিনি বলেন, আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি, ট্যুরিজমে যদি আমরা এগোতে পারি, তবে হাজার হাজার কোটি টাকা আমরা উপার্জন করতে পারব। সুন্দরবনে ক্যাবল কার দিলে সারা সুন্দরবন ঘুরে ঘুরে দেখতে পারবে পর্যটকরা। তবে ট্যুরিজমে দুটি বিষয় থাকে। একটি হলো কমিউনিকেশন, অন্যটা সিকিউরিটি। এসব বিষয় নিশ্চিত হলে সুন্দরবনে ট্যুরিস্ট বাড়বে।

মঙ্গলবার, ২৬ অক্টোবর ২০২১ , ১০ কার্তিক ১৪২৮ ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

সুন্দরবনঘেরা সাতক্ষীরা মুন্সিগঞ্জকে পর্যটনকেন্দ্র ঘোষণার দাবি

প্রতিনিধি, সাতক্ষীরা

image

দীর্ঘ লকডাউনের পরে সুন্দরবন ভ্রমণের অনুমতি মিললেও কাক্সিক্ষতভাবে বাড়ছে না পর্যটকের সংখ্যা। অবকাঠামোগত সংকটই অফুরন্ত সম্ভাবনাময় সুন্দরবন পর্যটনে প্রধান বাধা বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। পর্যটনকেন্দ্র ঘোষিত হলে সরকারিভাবে তৈরি হতো ভ্রমণবান্ধব অবকাঠামো। সুন্দরবনকে ঘিরে মুন্সিগঞ্জ এলাকায় তাই পর্যটনকেন্দ্র ঘোষণার দাবি স্থানীয়দের।

পূর্ব-পশ্চিম সুন্দরবন, সাতক্ষীরা রেঞ্জ সূত্রে জানা যায়, লকডাউনে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পরে ১ সেপ্টেম্বর থেকে সুন্দরবন ভ্রমণে অনুমতি দেয় সরকার। তবে পুরো সেপ্টেম্বরে সুন্দরবন ভ্রমণে গিয়েছেন মাত্র এক হাজার ৪শ ৬৯ জন ভ্রমণপিপাসু মানুষ।

তথ্যসূত্রে আরও জানা যায়, মুন্সিগঞ্জ থেকে সুন্দরবনের দুটি পয়েন্টে ভ্রমণের সুযোগ পান পর্যটকরা। পয়েন্ট দুটি হলো, দোবেকি ও কলাগাছি। এ দুটি পয়েন্টে বানর, হরিণসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী ও বহুজাতের গাছগাছালি দেখতে পান পর্যটকরা। কলাগাছি যেতে প্রতিজনকে পরিশোধ করতে হয় ২০ টাকা আর দোবেকি যেতে গুনতে হয় ৭০ টাকা। এছাড়া তিনদিনের ভ্রমণে প্রতিজনকে পরিশোধ করতে হয় ৪শ ৫০ টাকা। এছাড়া নিরাপত্তার জন্য সশস্ত্র বনরক্ষী পেতে প্রত্যেককে প্রতিদিন ৩শ টাকা করে বাড়তি গুনতে হয়। তবে পরিবহন থেকে নেমেই সুন্দরবনের কাছাকাছি আসতে পারলেও অবকাঠামোগত সংকটে বাড়ছে না পর্যটকের সংখ্যা।

স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী বেলাল হোসেন জানান, ‘সড়ক পথে সুন্দরবন-সাতক্ষীরার আকর্ষণ’-এই সেøাগানে সরকারিভাবে প্রচারণা চালানো হলেও সুন্দরবনে বাড়ছে না পর্যটকের সংখ্যা। জলযানে ওঠার জন্য নেই কোন পন্টুন। নেই ভালোমানের হোটেল-মোটেল। ভাঙাচোরা রাস্তায় ভ্রমণের আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন পর্যটকরা। তিনি দাবি করেন, সরকারিভাবে পর্যটনবান্ধব অবকাঠামো নির্মাণ হোক মুন্সিগঞ্জে।

কুমিল্লা থেকে বেড়াতে আসা মাহবুবুর রহমান জানান, এখানে নৌকা বা অন্য যানবাহনের যে সিন্ডিকেটটা আছে, তা কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে আসা উচিত। তাছাড়া জরযানগুলো আরও উন্নতমানের হওয়া উচিত। টুরিস্টরা যাতে ভালো সেপটি পায়, সেদিকে উদ্যোগে নেয়া প্রয়োজন। এছাড়া এখানে আরও ভালো হোটেল-মোটেল আশা করি আমরা। এছাড়া সুন্দরবনের জঙ্গল যেন আরও বৈজ্ঞানিকভাবে রক্ষিত হয়, সেদিকে খেয়াল রাখবে সরকার, সেই আশা করি। ময়লা-আবর্জনা যেখানে সেখানে না ফেলে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলা উচিত।

সুন্দরবন ভ্রমণে আসা একই এলাকার আলমগীর হোসেন জানান, আমরা কুমিল্লা থেকে এসেছি। সুন্দরবন দেখব বলে। তবে রাস্তাঘাটের অবস্থা খুব খারাপ। জলযানে ওঠার পন্টুন ভালো হতে হবে। যদি এসব ভালো হয়, তবে পর্যটকদেরও সুবিধা হবে। সরকার যদি এখানে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়, তবে পর্যটকরা সুন্দরবন দেখে মজা পাবে।

স্থানীয় মনোহরি সামগ্রী বিক্রেতা আনোয়ার হোসেন জানান, এখানে পর্যটনকেন্দ্র হলে ব্যবসা-বাণিজ্য, দোকান-পাট প্রসারিত হতো। এলাকায় বেকারত্ব কমত।

ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে অভাব-অনটন নিত্যসঙ্গী উপকূলবাসীর। মুন্সিগঞ্জে পর্যটনকেন্দ্র ঘোষণা হলে এলাকার চেহারাই পাল্টে যাবে বলে মনে করেন মুন্সিগঞ্জ ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি ও স্থানীয় চেয়ারম্যান ভবতোষ ম-ল।

তিনি জানান, সুন্দরবন নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি। অঞ্চলটি খুবই দারিদ্র্যপীড়িত। এ অঞ্চলে সুযোগ ও সম্ভাবনার একটা বিষয় যদি চলে আসে, সেটা হলো সুন্দরবন। এ অঞ্চলের মানুষের দাবি, মুন্সিগঞ্জকে পর্যটনকেন্দ্র করা হোক। এই অঞ্চলের কমপক্ষে ১০ হাজার মানুষ পর্যটনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। যারা ক্ষুদ্র ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, তারাও উপকৃত হবে। কমিউনিটি বেজড বিভিন্ন গোষ্ঠী উপকৃত হবে। এছাড়া যোগাযোগ ব্যবস্থারও উন্নতি হবে। তাই দাবি জানাচ্ছি, এলাকাটি পর্যটনকেন্দ্র ঘোষণা করা হোক।

সুন্দরবন সড়ক পথে সুন্দরবন ভ্রমণের একমাত্র জায়গা মুন্সিগঞ্জ। সেই সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে এই এলাকা হতে পারে সুন্দরবন ভ্রমণের প্রাণকেন্দ্র। এমনটাই মনে করেন, চিত্র নির্মাতা দীপঙ্কর দীপন।

তিনি বলেন, মুন্সিগঞ্জ পর্যটনের জন্য অনন্য একটা জায়গা। আমি বহুবার সুন্দরবনে এসেছি। আমি পর্যবেক্ষণ করেছি, যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই নাজুক। আর মুন্সিগঞ্জ এমন একটা জায়গা, যেখানে পর্যটকরা গাড়িতে করে সুন্দরবনের পাশে আসতে পারবেন। সেই সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে সুন্দরবন হতে পারত, পর্যটনের প্রাণকেন্দ্র। তবে তা হয়নি। আমি দশ বছর আগে এসে যা দেখেছি, এখনও তাই দেখছি। সুন্দরবনের ক্ষতি না করে ভালো একটি পর্যটনকেন্দ্র গড়ে উঠলে এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন হবে।

এ বিষয়ে পশ্চিম সুন্দরবনের সহকারী বন সংরক্ষক আবু হাসান বলেন, বনবিভাগের পক্ষ থেকে সরকার নির্দেশিত সব সেবাই সুন্দরবন ঘুরতে যাওয়া মানুষদের দেয়া হয়। লকডাউন উঠে যাওয়ার পরে ধীরে ধীরে পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

পর্যটনকেন্দ্র ঘোষণার সম্ভাব্যতা দেখতে ২০১৬ সালে মুন্সিগঞ্জ ভ্রমণ করেন তৎকালীন পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। এরপর দীর্ঘদিন কোন উদ্যোগ দেখা যায়নি। তবে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সুন্দরবনকে পর্যটনকেন্দ্র ঘোষণার দাবি পাঠানো হয়েছে বলে জানান, শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আ ন ম আবুজার গিফারী।

তিনি জানান, পর্যটনকেন্দ্র ঘোষণার জন্য আমরা উপজেলা প্রশাসন থেকে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি।

তিনি আরও জানান, সুন্দরবনভিত্তিক তিন ধরনের মানবসম্পদ গড়ে তোলা যায়। প্রথমত, গাইড করার জন্য জনবল দরকার হয়। তারা পর্যটকদের সুন্দরবন ঘুরে দেখাতে পারবে। দ্বিতীয়ত, হোটেল-মোটেল নির্মাণ। তৃতীয়ত, মানসম্মত জলযান। এসব নিশ্চিত করা গেলে পর্যটনভিত্তিক কর্মসংস্থান ব্যাপক বৃদ্ধি পাবে এই এলাকায়।

পর্যটনে সুন্দরবনকে অপার সম্ভাবনাময় বলছেন সাতক্ষীরা-২ আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। তিনি বলেন, আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি, ট্যুরিজমে যদি আমরা এগোতে পারি, তবে হাজার হাজার কোটি টাকা আমরা উপার্জন করতে পারব। সুন্দরবনে ক্যাবল কার দিলে সারা সুন্দরবন ঘুরে ঘুরে দেখতে পারবে পর্যটকরা। তবে ট্যুরিজমে দুটি বিষয় থাকে। একটি হলো কমিউনিকেশন, অন্যটা সিকিউরিটি। এসব বিষয় নিশ্চিত হলে সুন্দরবনে ট্যুরিস্ট বাড়বে।