কূটনৈতিকদের সঙ্গে ডিএমপির নিরাপত্তা সমন্বয়সভায় সন্ত্রাস বৈশ্বিক সমস্যা

ঢাকায় নিযুক্ত বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে এক নিরাপত্তা সমন্বয় সভা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ডিএমপি। গুলশানে একটি রেস্টুরেন্টে ওই সভায় বিদেশী কূটনেতিকদের সঙ্গে মিলিত হন ডিএমপির কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম। সন্ধ্যায় ওই সভা শেষে পুলিশ কমকর্তারা এবং কূনৈতিকরা ডিনারেও অংশ নেন।

ডিএমপি সূত্র জানিয়েছে রোববার সন্ধ্যায় ডিএমপির ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি বিভাগের উদ্যোগে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম, ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার ও কনসাল জেনারেলরা অংশগ্রহণ করেন।

সভায় ডিএমপি কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, সন্ত্রাস ও উগ্রবাদ বৈশ্বিক সমস্যা এবং শান্তি, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের জন্য হুমকি স্বরূপ। সন্ত্রাসবাদ কোন ধর্ম, জাতি, বিশ্বাস, সংস্কৃতি, নৃগোষ্ঠী বা সমাজের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে না এবং তা হওয়া উচিৎ ও নয়। সন্ত্রাসবাদ মানবতার বিরুদ্ধে জঘন্য অপরাধ। বাংলাদেশ সরকার সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে।

কমিশনার বলেন, বাংলাদেশে সব ধরনের সন্ত্রাসবাদ, সহিংস জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে কঠোর ও সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে পুলিশ। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশের সাফল্য বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত।

ধন্যবাদ জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে ঢাকা মহানগরবাসীর জানমাল ও সম্পত্তি রক্ষায় বাংলাদেশ পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। পুলিশের সবচেয়ে বড় ইউনিট ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। এ ইউনিটে ৩ শতাধিক বিসিএস ক্যাডারসহ ৩২ হাজারের অধিক পুলিশ সদস্য অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছেন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিটের মধ্যে সাইবার ইউনিট, সোয়াট, বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট, স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপ, সাইবার সিকিউরিটি টিম, ওয়ান স্টপ পুলিশ সার্ভিস ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য ইউনিট।

তিনি আরও বলেন, কূটনীতিকদের নিরাপত্তায় ২০১৩ সাল থেকে ডিএমপি কমিশনারের নিবিড় তত্ত্বাবধানে একজন ডেপুটি পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে ৯৭৯ জন পুলিশ সদস্য নিয়ে গঠিত ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি বিভাগের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সবসময় কূটনীতিকদের সুরক্ষা নিশ্চিতে কাজ করছে। সম্মানিত কূটনীতিকদের বিভিন্ন স্থাপনাসহ কূটনৈতিক এলাকার সার্বিক নিরাপত্তার জন্য কাজ করছে ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি বিভাগ। এ বিভাগের অফিসার ও ফোর্স ২৪ ঘণ্টা কূটনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আন্তরিকতা এবং পেশাগতভাবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।

ঢাকার মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার কূটনীতিকদের নিরাপত্তায় পুলিশ যেভাবে কাজ করছে তার জন্য ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি বিভাগ তথা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে ধন্যবাদ জানান। ঢাকা মহানগরকে নিরাপদ রাখতে পুলিশ দিন-রাত কঠোর পরিশ্রম করছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তাছাড়াও কোভিড-১৯ মহামারীর সময় ফ্রন্টলাইন যোদ্ধা হিসেবে পুলিশ অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছে বলে উল্লেখ করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।

জাপানের রাষ্ট্রদূত নাওকি আইটিও বলেন, ডিএমপির পক্ষ থেকে দৃঢ় নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করায় বিগত ৫ বছরে কূটনীতিক নিরাপত্তায় কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। ২০১৬ সালের ঘটনার পর সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে গৃহীত কার্যক্রমের জন প্রধানমন্ত্রীকেও ধন্যবাদ জানান তিনি।

মঙ্গলবার, ২৬ অক্টোবর ২০২১ , ১০ কার্তিক ১৪২৮ ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

কূটনৈতিকদের সঙ্গে ডিএমপির নিরাপত্তা সমন্বয়সভায় সন্ত্রাস বৈশ্বিক সমস্যা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

ঢাকায় নিযুক্ত বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে এক নিরাপত্তা সমন্বয় সভা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ডিএমপি। গুলশানে একটি রেস্টুরেন্টে ওই সভায় বিদেশী কূটনেতিকদের সঙ্গে মিলিত হন ডিএমপির কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম। সন্ধ্যায় ওই সভা শেষে পুলিশ কমকর্তারা এবং কূনৈতিকরা ডিনারেও অংশ নেন।

ডিএমপি সূত্র জানিয়েছে রোববার সন্ধ্যায় ডিএমপির ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি বিভাগের উদ্যোগে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম, ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার ও কনসাল জেনারেলরা অংশগ্রহণ করেন।

সভায় ডিএমপি কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, সন্ত্রাস ও উগ্রবাদ বৈশ্বিক সমস্যা এবং শান্তি, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের জন্য হুমকি স্বরূপ। সন্ত্রাসবাদ কোন ধর্ম, জাতি, বিশ্বাস, সংস্কৃতি, নৃগোষ্ঠী বা সমাজের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে না এবং তা হওয়া উচিৎ ও নয়। সন্ত্রাসবাদ মানবতার বিরুদ্ধে জঘন্য অপরাধ। বাংলাদেশ সরকার সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে।

কমিশনার বলেন, বাংলাদেশে সব ধরনের সন্ত্রাসবাদ, সহিংস জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে কঠোর ও সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে পুলিশ। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশের সাফল্য বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত।

ধন্যবাদ জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে ঢাকা মহানগরবাসীর জানমাল ও সম্পত্তি রক্ষায় বাংলাদেশ পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। পুলিশের সবচেয়ে বড় ইউনিট ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। এ ইউনিটে ৩ শতাধিক বিসিএস ক্যাডারসহ ৩২ হাজারের অধিক পুলিশ সদস্য অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছেন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিটের মধ্যে সাইবার ইউনিট, সোয়াট, বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট, স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপ, সাইবার সিকিউরিটি টিম, ওয়ান স্টপ পুলিশ সার্ভিস ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য ইউনিট।

তিনি আরও বলেন, কূটনীতিকদের নিরাপত্তায় ২০১৩ সাল থেকে ডিএমপি কমিশনারের নিবিড় তত্ত্বাবধানে একজন ডেপুটি পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে ৯৭৯ জন পুলিশ সদস্য নিয়ে গঠিত ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি বিভাগের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সবসময় কূটনীতিকদের সুরক্ষা নিশ্চিতে কাজ করছে। সম্মানিত কূটনীতিকদের বিভিন্ন স্থাপনাসহ কূটনৈতিক এলাকার সার্বিক নিরাপত্তার জন্য কাজ করছে ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি বিভাগ। এ বিভাগের অফিসার ও ফোর্স ২৪ ঘণ্টা কূটনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আন্তরিকতা এবং পেশাগতভাবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।

ঢাকার মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার কূটনীতিকদের নিরাপত্তায় পুলিশ যেভাবে কাজ করছে তার জন্য ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি বিভাগ তথা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে ধন্যবাদ জানান। ঢাকা মহানগরকে নিরাপদ রাখতে পুলিশ দিন-রাত কঠোর পরিশ্রম করছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তাছাড়াও কোভিড-১৯ মহামারীর সময় ফ্রন্টলাইন যোদ্ধা হিসেবে পুলিশ অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছে বলে উল্লেখ করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।

জাপানের রাষ্ট্রদূত নাওকি আইটিও বলেন, ডিএমপির পক্ষ থেকে দৃঢ় নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করায় বিগত ৫ বছরে কূটনীতিক নিরাপত্তায় কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। ২০১৬ সালের ঘটনার পর সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে গৃহীত কার্যক্রমের জন প্রধানমন্ত্রীকেও ধন্যবাদ জানান তিনি।