বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় এক দরিদ্র পরিবারকে মামলা দিয়ে হয়রানি

বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলায় এক ব্যক্তি পুলিশী নির্যাতনের প্রতিবাদ করায় ওই ব্যক্তিসহ তার পরিবারকে মামলা দিয়ে নানাভাবে হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি ওই পরিবারের ৪ ভাইয়ের বিরুদ্ধে ভাঙচুর, নারী নির্যাতন ও ধর্ষণ মামলা দেয়া হয়েছে। দুপচাঁচিয়া থানার ওসি এবং এক এসআই’র বিরুদ্ধে থানায় ডেকে এনে নির্যাতানের পর অর্থ আদায়ের প্রতিবাদ করায় পরিবারটি হেনস্তার শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ। সংবাদ সন্মেলনের মাধ্যমে এই অভিযোগ জানিয়েছেন, দুপচাঁচিয়া উপজেলার চকসুখানগাড়ি এলাকার মটরসাইকেল মেকার দরিদ্র নুরে আলমের পরিবার।

নুরে আলম পুলিশের নির্যাতনের প্রতিবাদ করেছিলেন। তিনি এখন কারাগারে রয়েছেন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়। তার স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা গতকাল সাংবাদিকদের নিকট নির্যাতনের ঘটনা তুলে পুরো পরিবারের অসহায়ত্ব বর্ণনা করেন। তবে দুপচাঁচিয়া থানার ওসি জানিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। মহল বিশেষের স্বার্থের ব্যাঘাত ঘটায় এ ধরনের অভিযোগ করা হচ্ছে।

নির্যাতনের শিকার নুরে আলমের পরিবারের পক্ষ থেকে তার স্ত্রী জানান, তারা অসহায়, দরিদ্র। তার স্বামী মটরসাইকেল মেরামতের কাজ করেন। তার দেবর একজন অটোরিক্সা চালক। গত ২৯ আগস্ট নুরে আলমকে থানার এক এসআই থানায় ডেকে নিয়ে যান। সেখানে তাকে ‘মিথ্যা মামলার হুমকি’ দিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাওয়া হয়। এ সময় তাকে নির্যাতন করা হয়। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনা হয়।

এর কয়েকদিন পরে নুরে আলম পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিকট এর বিচার চেয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। এর পরেই তারা হেনস্তার শিকার হন। নুরে আলমের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, এ ঘটনার পর অভিযোগ তুলে নেয়ার জন্য ওসির পক্ষ থেকে নানা চাপ ও হুমকি দেয়া হয়। পরবর্তীতে ১৬ অক্টোবর দুপচাঁচিয়ার মিনিট্রাক অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় নুরে আলমসহ তার ৪ ভাইকে অভিযুক্ত করা হয়। এরপর ১৯ অক্টোবর আদালতে এই ৪ জনসহ নুরে আলমের চাচা বেলাল হোসেনের বিরুদ্ধে দায়ের হয় ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন মামলা।

নির্যাতিত পরিবারের অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার কারণেই তাদের বিরুদ্ধে থানার ওসির প্রভাবে মামলা ও হয়রানি করা হচ্ছে। এতে এক বালু ব্যবসায়ীকে ব্যবহার করা হয়েছে বলে তারা অভিযোগ করেন। নুরে আলমের স্ত্রী তাদের হেনস্তাকারী ও তার স্বামীকে নির্যাতনকারীদের বিচার দাবি করে ন্যায় বিচার কামনা করেন। পরিবারের অন্য সদস্যরাও একই দাবি জানিয়েছেন। অভিযোগের বিষয়ে দুপচাঁচিয়া থানার ওসি জানান, তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। অভিযুক্ত নুরে আলম একটি গ্যাং-এর সদস্য। তবে তার বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে আর কোন মামলার বিষয় তার জানা নেই বলে জানান।

মঙ্গলবার, ২৬ অক্টোবর ২০২১ , ১০ কার্তিক ১৪২৮ ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

পুলিশের নির্যাতনের প্রতিবাদ করায়

বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় এক দরিদ্র পরিবারকে মামলা দিয়ে হয়রানি

প্রতিনিধি, বগুড়া

বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলায় এক ব্যক্তি পুলিশী নির্যাতনের প্রতিবাদ করায় ওই ব্যক্তিসহ তার পরিবারকে মামলা দিয়ে নানাভাবে হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি ওই পরিবারের ৪ ভাইয়ের বিরুদ্ধে ভাঙচুর, নারী নির্যাতন ও ধর্ষণ মামলা দেয়া হয়েছে। দুপচাঁচিয়া থানার ওসি এবং এক এসআই’র বিরুদ্ধে থানায় ডেকে এনে নির্যাতানের পর অর্থ আদায়ের প্রতিবাদ করায় পরিবারটি হেনস্তার শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ। সংবাদ সন্মেলনের মাধ্যমে এই অভিযোগ জানিয়েছেন, দুপচাঁচিয়া উপজেলার চকসুখানগাড়ি এলাকার মটরসাইকেল মেকার দরিদ্র নুরে আলমের পরিবার।

নুরে আলম পুলিশের নির্যাতনের প্রতিবাদ করেছিলেন। তিনি এখন কারাগারে রয়েছেন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়। তার স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা গতকাল সাংবাদিকদের নিকট নির্যাতনের ঘটনা তুলে পুরো পরিবারের অসহায়ত্ব বর্ণনা করেন। তবে দুপচাঁচিয়া থানার ওসি জানিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। মহল বিশেষের স্বার্থের ব্যাঘাত ঘটায় এ ধরনের অভিযোগ করা হচ্ছে।

নির্যাতনের শিকার নুরে আলমের পরিবারের পক্ষ থেকে তার স্ত্রী জানান, তারা অসহায়, দরিদ্র। তার স্বামী মটরসাইকেল মেরামতের কাজ করেন। তার দেবর একজন অটোরিক্সা চালক। গত ২৯ আগস্ট নুরে আলমকে থানার এক এসআই থানায় ডেকে নিয়ে যান। সেখানে তাকে ‘মিথ্যা মামলার হুমকি’ দিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাওয়া হয়। এ সময় তাকে নির্যাতন করা হয়। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনা হয়।

এর কয়েকদিন পরে নুরে আলম পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিকট এর বিচার চেয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। এর পরেই তারা হেনস্তার শিকার হন। নুরে আলমের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, এ ঘটনার পর অভিযোগ তুলে নেয়ার জন্য ওসির পক্ষ থেকে নানা চাপ ও হুমকি দেয়া হয়। পরবর্তীতে ১৬ অক্টোবর দুপচাঁচিয়ার মিনিট্রাক অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় নুরে আলমসহ তার ৪ ভাইকে অভিযুক্ত করা হয়। এরপর ১৯ অক্টোবর আদালতে এই ৪ জনসহ নুরে আলমের চাচা বেলাল হোসেনের বিরুদ্ধে দায়ের হয় ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন মামলা।

নির্যাতিত পরিবারের অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার কারণেই তাদের বিরুদ্ধে থানার ওসির প্রভাবে মামলা ও হয়রানি করা হচ্ছে। এতে এক বালু ব্যবসায়ীকে ব্যবহার করা হয়েছে বলে তারা অভিযোগ করেন। নুরে আলমের স্ত্রী তাদের হেনস্তাকারী ও তার স্বামীকে নির্যাতনকারীদের বিচার দাবি করে ন্যায় বিচার কামনা করেন। পরিবারের অন্য সদস্যরাও একই দাবি জানিয়েছেন। অভিযোগের বিষয়ে দুপচাঁচিয়া থানার ওসি জানান, তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। অভিযুক্ত নুরে আলম একটি গ্যাং-এর সদস্য। তবে তার বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে আর কোন মামলার বিষয় তার জানা নেই বলে জানান।