চৌমুহনীতে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার ‘স্বীকারোক্তি’, বিএনপি নেতা বুলু ও ১৪ জনের নাম, বলেছে পুলিশ

চৌমুহনীতে সাম্প্রদায়িক হামলায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও নোয়াখালী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বরকত উল্লাহ বুলু এবং আরও কয়েকজন জড়িত বলে বলছে পুলিশ। ওই ঘটনায় আটক স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন এবং কিছু নাম প্রকাশ করেছেন বলে দাবি করছে পুলিশ। তবে, তদন্ত এবং আসামিদের গ্রেপ্তারের স্বার্থে অন্যদের নাম প্রকাশে অপারগতা প্রকাশ করে পুলিশ।

নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম জানিয়েছেন, চৌমুহনীতে হিন্দুদের মন্দির, পূজাম-প, দোকানপাট ও বাড়িঘরে হামলার ঘটনায় আটক জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়সাল ইমাম কমল ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। গত সোমবার রাতে নোয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফয়সাল জবানবন্দি দেন। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাঈদীন নাহী জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

জবানবন্দিতে তিনি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের চৌমুহনীতে হিন্দুদের মন্দির, পূজাম-প, দোকানপাট ও বাড়িঘরে হামলার ঘটনায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান বুলু ছাড়াও আরও ১৪ জন জড়িত বলে জানিয়েছেন।

গত রোববার ফয়সাল ইমামকে বেগমগঞ্জ উপজেলার রাজুল্যাপুর গ্রামের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ফয়সালের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি কুমিল্লায় পূজাম-পে কোরআন শরীফ রাখার ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুকে আপলোড করেন। পুলিশের অভিযোগ তিনি উসকানিমূলক বিভিন্ন পোস্ট দিয়েছেন। আর তার ফলশ্রুতিতেই চৌমুহনীতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটে। তার বিরুদ্ধে বেগমগঞ্জ থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করা হয়। জবানবন্দির পর আদালতের নির্দেশে ফয়সালকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে, ভাঙচুর ও লুটপাটের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গত সোমবার জেলার বিভিন্ন থানার পুলিশ, জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও র‌্যাব-১১ বিএনপির দুই নেতা-সমর্থকসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সুধারাম থানার ৮নং ধর্মপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. সুমন (৩৩) বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের ইমরান হোসেন নিশান (২০) একই ওয়ার্ডের মো. রনি (২০) চৌমুহনী পৌরসভার মীরওয়ারিশ গ্রামের বিএনপির সমর্থক মো. ইউসুফ (৩০), চৌমুহনী পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের আক্তারুজ্জামান (৫০), সোনাইমুড়ী উপজেলার রবিউল হোসেন ওরফে রনি (৩২) লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার সাহেদুল ইসলাম (২২) হাতিয়া পৌর বিএনপির প্রচার সম্পাদক ছেরাজুল হক বেচু (৪২)।

গ্রেপ্তারের তথ্য নিশ্চিত করে নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, আসামি ইমরান হোসেন নিশান পূর্বে গ্রেপ্তার আবদুর রহিম সুজনসহ কয়েকজন মন্দিরে লুটপাট করে ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ভাগ বাটোয়ারা করে। আসামি নিশান ৮ হাজার টাকা ভাগে পায়। এর মধ্যে ৫ হাজার ৫০০ টাকা সে খরচ করে। বাকি ২ হাজার ৫০০ টাকা তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে ১১ বিএনপির নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন আগেই ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। সর্বশেষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় কমল।

বুধবার, ২৭ অক্টোবর ২০২১ , ১১ কার্তিক ১৪২৮ ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

চৌমুহনীতে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার ‘স্বীকারোক্তি’, বিএনপি নেতা বুলু ও ১৪ জনের নাম, বলেছে পুলিশ

প্রতিনিধি, নোয়াখালী

চৌমুহনীতে সাম্প্রদায়িক হামলায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও নোয়াখালী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বরকত উল্লাহ বুলু এবং আরও কয়েকজন জড়িত বলে বলছে পুলিশ। ওই ঘটনায় আটক স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন এবং কিছু নাম প্রকাশ করেছেন বলে দাবি করছে পুলিশ। তবে, তদন্ত এবং আসামিদের গ্রেপ্তারের স্বার্থে অন্যদের নাম প্রকাশে অপারগতা প্রকাশ করে পুলিশ।

নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম জানিয়েছেন, চৌমুহনীতে হিন্দুদের মন্দির, পূজাম-প, দোকানপাট ও বাড়িঘরে হামলার ঘটনায় আটক জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়সাল ইমাম কমল ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। গত সোমবার রাতে নোয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফয়সাল জবানবন্দি দেন। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাঈদীন নাহী জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

জবানবন্দিতে তিনি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের চৌমুহনীতে হিন্দুদের মন্দির, পূজাম-প, দোকানপাট ও বাড়িঘরে হামলার ঘটনায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান বুলু ছাড়াও আরও ১৪ জন জড়িত বলে জানিয়েছেন।

গত রোববার ফয়সাল ইমামকে বেগমগঞ্জ উপজেলার রাজুল্যাপুর গ্রামের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ফয়সালের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি কুমিল্লায় পূজাম-পে কোরআন শরীফ রাখার ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুকে আপলোড করেন। পুলিশের অভিযোগ তিনি উসকানিমূলক বিভিন্ন পোস্ট দিয়েছেন। আর তার ফলশ্রুতিতেই চৌমুহনীতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটে। তার বিরুদ্ধে বেগমগঞ্জ থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করা হয়। জবানবন্দির পর আদালতের নির্দেশে ফয়সালকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে, ভাঙচুর ও লুটপাটের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গত সোমবার জেলার বিভিন্ন থানার পুলিশ, জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও র‌্যাব-১১ বিএনপির দুই নেতা-সমর্থকসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সুধারাম থানার ৮নং ধর্মপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. সুমন (৩৩) বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের ইমরান হোসেন নিশান (২০) একই ওয়ার্ডের মো. রনি (২০) চৌমুহনী পৌরসভার মীরওয়ারিশ গ্রামের বিএনপির সমর্থক মো. ইউসুফ (৩০), চৌমুহনী পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের আক্তারুজ্জামান (৫০), সোনাইমুড়ী উপজেলার রবিউল হোসেন ওরফে রনি (৩২) লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার সাহেদুল ইসলাম (২২) হাতিয়া পৌর বিএনপির প্রচার সম্পাদক ছেরাজুল হক বেচু (৪২)।

গ্রেপ্তারের তথ্য নিশ্চিত করে নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, আসামি ইমরান হোসেন নিশান পূর্বে গ্রেপ্তার আবদুর রহিম সুজনসহ কয়েকজন মন্দিরে লুটপাট করে ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ভাগ বাটোয়ারা করে। আসামি নিশান ৮ হাজার টাকা ভাগে পায়। এর মধ্যে ৫ হাজার ৫০০ টাকা সে খরচ করে। বাকি ২ হাজার ৫০০ টাকা তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে ১১ বিএনপির নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন আগেই ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। সর্বশেষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় কমল।