নয়াপল্টনে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষ : আটক ৩০

রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির ডাকা ‘সম্প্রীতি সমাবেশ’ শেষে দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ওই সমাবেশ শেষে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে কাকরাইলের দিকে এগোলে নাইটিঙ্গেল মোড়ের কাছে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় বিএনপি কর্মীরা রাস্তার দুই পাশের গলিতে ঢুকে পড়ে পুলিশের দিকে ঢিল ছুড়তে থাকেন। পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস ছুড়ে ও লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে ৬ পুলিশসহ বিএনপির বেশকয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে বিএনপির ৩০ জন নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এদিকে, সংঘর্ষের পর সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপির সিনিয়র যগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেছেন, দলের পূর্বঘোষিত শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলা ও গুলি চালিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে আটককৃতদের নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানান তিনি। যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যাচাই-বাছাই শেষে আটককৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে শোভাযাত্রা ও সমাবেশের কর্মসূচি দেয় বিএনপি। তাতে অংশ নিতে গতকাল সকাল থেকেই নেতাকর্মীরা নয়াপল্টানে দলীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিতে শুরু করেন। তাদের অবস্থানের কারণে সড়কের এক পাশে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে বিএনপির এ কর্মসূচি ঘিরে সকাল থেকেই বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। কাছেই দেখা যায় পুলিশের সাঁজোয়া যান। পুলিশের উপস্থিতির মধ্যে বিএনপি নেতাকর্মীরা কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ শুরু করলে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। ‘এক হও লড়াই করো,’ ‘জিয়ার সৈনিক হও, এক হও’ ‘মুক্তি মুক্তি মুক্তি চাই, খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই’- ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্য শেষ হওয়ার পর মিছিল শুরু হতেই নাইটিঙ্গেল মোড়ে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে বিএনপি নেতাকর্মীদের পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে দেখা যায়। পুলিশও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। এতে নয়াপল্টন ও এর আশপাশের এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। জানা গেছে, বিএনপির এ সমাবেশে পৃথক দুটি মিছিলে যোগ দেয় জামায়াতের নেতাকর্মীরাও।

ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) আবদুল আহাদ বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে বের হয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। তখন পুলিশ তাদের প্রতিহত করে, ছত্রভঙ্গ করে দেয়। লাঠিচার্জ, রাবার বুলেট, টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করা হয়। মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের ইটপাটকেলের আঘাতে অন্তত ছয়জন পুলিশ আহত হয়েছেন। মিছিল ও আশপাশ থেকে ৩০ জনের বেশি নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে জানান ডিসি আহাদ। পল্টন মডেল থানার ওসি সালাহ উদ্দিন মিয়া জানান, যাচাই-বাছাই শেষে আটককৃত ৩০ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ঘটনায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান ওসি।

বুধবার, ২৭ অক্টোবর ২০২১ , ১১ কার্তিক ১৪২৮ ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

নয়াপল্টনে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষ : আটক ৩০

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

গতকাল পুরানাপল্টনে বিএনপি কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ

রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির ডাকা ‘সম্প্রীতি সমাবেশ’ শেষে দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ওই সমাবেশ শেষে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে কাকরাইলের দিকে এগোলে নাইটিঙ্গেল মোড়ের কাছে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় বিএনপি কর্মীরা রাস্তার দুই পাশের গলিতে ঢুকে পড়ে পুলিশের দিকে ঢিল ছুড়তে থাকেন। পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস ছুড়ে ও লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে ৬ পুলিশসহ বিএনপির বেশকয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে বিএনপির ৩০ জন নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এদিকে, সংঘর্ষের পর সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপির সিনিয়র যগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেছেন, দলের পূর্বঘোষিত শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলা ও গুলি চালিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে আটককৃতদের নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানান তিনি। যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যাচাই-বাছাই শেষে আটককৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে শোভাযাত্রা ও সমাবেশের কর্মসূচি দেয় বিএনপি। তাতে অংশ নিতে গতকাল সকাল থেকেই নেতাকর্মীরা নয়াপল্টানে দলীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিতে শুরু করেন। তাদের অবস্থানের কারণে সড়কের এক পাশে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে বিএনপির এ কর্মসূচি ঘিরে সকাল থেকেই বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। কাছেই দেখা যায় পুলিশের সাঁজোয়া যান। পুলিশের উপস্থিতির মধ্যে বিএনপি নেতাকর্মীরা কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ শুরু করলে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। ‘এক হও লড়াই করো,’ ‘জিয়ার সৈনিক হও, এক হও’ ‘মুক্তি মুক্তি মুক্তি চাই, খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই’- ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্য শেষ হওয়ার পর মিছিল শুরু হতেই নাইটিঙ্গেল মোড়ে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে বিএনপি নেতাকর্মীদের পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে দেখা যায়। পুলিশও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। এতে নয়াপল্টন ও এর আশপাশের এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। জানা গেছে, বিএনপির এ সমাবেশে পৃথক দুটি মিছিলে যোগ দেয় জামায়াতের নেতাকর্মীরাও।

ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) আবদুল আহাদ বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে বের হয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। তখন পুলিশ তাদের প্রতিহত করে, ছত্রভঙ্গ করে দেয়। লাঠিচার্জ, রাবার বুলেট, টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করা হয়। মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের ইটপাটকেলের আঘাতে অন্তত ছয়জন পুলিশ আহত হয়েছেন। মিছিল ও আশপাশ থেকে ৩০ জনের বেশি নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে জানান ডিসি আহাদ। পল্টন মডেল থানার ওসি সালাহ উদ্দিন মিয়া জানান, যাচাই-বাছাই শেষে আটককৃত ৩০ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ঘটনায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান ওসি।