মায়ানমারের বাদ দিয়েই পর্দা উঠলো আসিয়ান সম্মেলনে

মায়ানমারের জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং-কে বাদ দিয়েই মঙ্গলবার পর্দা উঠলো আসিয়ান সম্মেলনের। ভার্চুয়াল এই সম্মেলন থেকে তার বাদ পড়াকে তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে আলজাজিরা।

প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের এই শীর্ষ সম্মেলনে আমন্ত্রণ পাননি বার্মিজ জান্তাপ্রধান। জোটের পক্ষ থেকে মিয়ানমারকে জান্তাপ্রধানের বদলে একজন অরাজনৈতিক প্রতিনিধির নাম দিতে বলা হয়েছিল। তবে ওই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে সম্মেলনে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নেন মিয়ানমার।

সদস্য দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা বা সম্পৃক্ত না হওয়ার জন্য আসিয়ানের পরিচিতি থাকলেও বিদ্যমান পরিস্থিতিতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে তাদের এই পদক্ষেপকে বিরল ও অত্যন্ত কড়া বলেই মনে করা হচ্ছে। আসিয়ানের বিশ্বাসযোগ্যতা ধরে রাখতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সেসময় সংস্থাটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল।

তবে আসিয়ানের শীর্ষ সম্মেলনে মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লেইং আমন্ত্রণ না পাওয়ার পেছনে ‘বিদেশি হস্তক্ষেপ’কে দায়ী করেছিল দেশটির সরকারের একজন মুখপাত্র। এছাড়া আঞ্চলিক নেতাদের এই সম্মেলনে মিয়ানমারের প্রতিনিধি না রাখার এই সিদ্ধান্তকে ‘বিরল’, তবে ‘প্রয়োজনীয়’ বলে সেসময় অনেকেই মন্তব্য করেছিলেন।

জোটটি জানায়, গত ফেব্রুয়ারিতে ক্ষমতাশীল এনএলডিকে সরিয়ে ক্ষমতা দখলের পর দেশটিতে শান্তি ফিরিয়ে আনা ও ভবিষ্যত পরিকল্পনার বিষয়ে আসিয়ানের সাথে যে আলোচনা হয়েছিল তা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে জান্তা সরকার। আর এ কারণেই এমন সিদ্ধান্ত আসিয়ানের।

রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্থা আসিয়ান দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দশটি রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত। এর সদস্য রাষ্ট্রগুলো হচ্ছে- ব্রুনাই, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম।

১৯৬৭ সালের ৮ আগস্ট ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডের সমন্বয়ে আসিয়ান প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর সাবেক জান্তা সরকারের আমলে ১৯৯৭ সালে মিয়ানমার আঞ্চলিক এই সংস্থাটিতে যুক্ত হয়।

২৬ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত তিন দিনের এই ভার্চুয়াল সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-ও অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। সম্মেলনের প্রথম দিনে আলোচ্যসূচির শীর্ষে রয়েছে মিয়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থান এবং পরবর্তী সময়ে বিরোধীদের ওপর ব্যাপক মাত্রায় দমনপীড়নের বিষয়টি।

গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সেনাবাহিনী অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতের পর থেকেই দেশটিতে বিশৃঙ্খলা চলছে। ওই সময়ে দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেন সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং।

বুধবার, ২৭ অক্টোবর ২০২১ , ১১ কার্তিক ১৪২৮ ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

মায়ানমারের বাদ দিয়েই পর্দা উঠলো আসিয়ান সম্মেলনে

image

মায়ানমারের জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং-কে বাদ দিয়েই মঙ্গলবার পর্দা উঠলো আসিয়ান সম্মেলনের। ভার্চুয়াল এই সম্মেলন থেকে তার বাদ পড়াকে তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে আলজাজিরা।

প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের এই শীর্ষ সম্মেলনে আমন্ত্রণ পাননি বার্মিজ জান্তাপ্রধান। জোটের পক্ষ থেকে মিয়ানমারকে জান্তাপ্রধানের বদলে একজন অরাজনৈতিক প্রতিনিধির নাম দিতে বলা হয়েছিল। তবে ওই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে সম্মেলনে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নেন মিয়ানমার।

সদস্য দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা বা সম্পৃক্ত না হওয়ার জন্য আসিয়ানের পরিচিতি থাকলেও বিদ্যমান পরিস্থিতিতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে তাদের এই পদক্ষেপকে বিরল ও অত্যন্ত কড়া বলেই মনে করা হচ্ছে। আসিয়ানের বিশ্বাসযোগ্যতা ধরে রাখতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সেসময় সংস্থাটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল।

তবে আসিয়ানের শীর্ষ সম্মেলনে মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লেইং আমন্ত্রণ না পাওয়ার পেছনে ‘বিদেশি হস্তক্ষেপ’কে দায়ী করেছিল দেশটির সরকারের একজন মুখপাত্র। এছাড়া আঞ্চলিক নেতাদের এই সম্মেলনে মিয়ানমারের প্রতিনিধি না রাখার এই সিদ্ধান্তকে ‘বিরল’, তবে ‘প্রয়োজনীয়’ বলে সেসময় অনেকেই মন্তব্য করেছিলেন।

জোটটি জানায়, গত ফেব্রুয়ারিতে ক্ষমতাশীল এনএলডিকে সরিয়ে ক্ষমতা দখলের পর দেশটিতে শান্তি ফিরিয়ে আনা ও ভবিষ্যত পরিকল্পনার বিষয়ে আসিয়ানের সাথে যে আলোচনা হয়েছিল তা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে জান্তা সরকার। আর এ কারণেই এমন সিদ্ধান্ত আসিয়ানের।

রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্থা আসিয়ান দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দশটি রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত। এর সদস্য রাষ্ট্রগুলো হচ্ছে- ব্রুনাই, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম।

১৯৬৭ সালের ৮ আগস্ট ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডের সমন্বয়ে আসিয়ান প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর সাবেক জান্তা সরকারের আমলে ১৯৯৭ সালে মিয়ানমার আঞ্চলিক এই সংস্থাটিতে যুক্ত হয়।

২৬ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত তিন দিনের এই ভার্চুয়াল সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-ও অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। সম্মেলনের প্রথম দিনে আলোচ্যসূচির শীর্ষে রয়েছে মিয়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থান এবং পরবর্তী সময়ে বিরোধীদের ওপর ব্যাপক মাত্রায় দমনপীড়নের বিষয়টি।

গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সেনাবাহিনী অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতের পর থেকেই দেশটিতে বিশৃঙ্খলা চলছে। ওই সময়ে দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেন সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং।