বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা দিবস উদযাপিত

বৈজ্ঞানিক অধিবেশনসহ নানা আয়োজনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় গবেষণা দিবস উদযাপিত হয়েছে। ‘মুজিব বর্ষের আহ্বান, গবেষণায় উত্তরণ’-এ প্রতিপাদ্য নিয়ে দিবসটি পালিত হয়েছে। দিবস উপলক্ষে নতুন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছেন, আগামী ১ নভেম্বর থেকেই সাধারণ জরুরি বিভাগ চালু করা হবে।

গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি দিবসটির কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ইউজিসির মাননীয় চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ, বিএম-এর সভাপতি ডা. মোস্তাফা জালাল মহিউদ্দিন।

শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. এ কে এম মোশাররফ হোসেন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. জাহিদ হোসেন। গুরুত্বপূর্ণ এই অনুষ্ঠানে সিন্ডিকেটের সদস্যরা, ডিনরা, বিভাগীয় চেয়ারম্যানরা, শিক্ষক, চিকিৎসক ও ছাত্রছাত্রী এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন অনুষদের ১৫ জন শিক্ষক, চিকিৎসককে গবেষণার জন্য রিসার্চ অ্যাওয়ার্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়াও চারজন শিক্ষক, চিকিৎসককে ভাইস-চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড ২০২১ দেয়া হয়েছে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, দেশকে এগিয়ে নিতে গবেষণার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। চিকিৎসা বিজ্ঞানে প্রতিনিয়ত নতুন করে শিখতে হয়। ফলে চিকিৎসা বিজ্ঞানে আরও বেশি করে গবেষণার দরকার। সব চিকিৎসককেই গবেষণা চর্চায় মনোযোগী হতে হবে। গবেষণায় দেয়া অর্থ যাতে ফেরত না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আমাদের অর্জিত পুরানো জ্ঞান যাতে হারিয়ে না যায়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারমান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণা মানুষের জীবনের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত হওয়ায় অত্যন্ত দায়িত্বশীলতার সঙ্গে এই গবেষণা কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। গবেষণা কার্যক্রম আরও তরান্বিত করতে বেসরকারি খাতের এগিয়ে আসা উচিত। তবে, শুধু গবেষণার বরাদ্দ গ্রহণ করলেই হবে না, কি কি গবেষণা করা হলো- তাও মানুষকে জানাতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ে বিভিন্ন রোগ ও চিকিৎসা বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। গবেষণা করার জন্য ২০২০-২০২১ সালে ৭ শতাধিক শিক্ষক, চিকিৎসক ও ছাত্রছাত্রীদের গবেষণা কর্ম অনুমোদন দেয়াসহ অনেককে গবেষণা মঞ্জুরি, থিসিস গ্র্যান্ট দেয়া হয়েছে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাকর্ম ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। ইতোমধ্যে কোভিড-১৯ এর জেনোম সিকোয়েন্সিং গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছি।

গবেষণায় দেখা গেছে, মোট সংক্রমণের প্রায় ৯৮ শতাংশ হচ্ছে ইন্ডিয়ান বা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। কোভিড-১৯ এর টিকা গ্রহীতাদের ওপর গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছি। সেখানে দেখা গেছে, টিকা গ্রহীতাদের ৯৮ শতাংশের শরীরে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ভারতের অ্যাস্ট্রেজেনেকার টিকা নিয়েছেন ৬ মাস পরে তাদের শরীরে এন্টিবডি উপস্থিতির হার পূর্বের তুলনায় মাত্র ৫ শতাংশ কমেছে। করোনা ভাইরাসের টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার পরে বুস্টার ডোজ নিতে হবে কি না, সে বিষয়ে গবেষণা চলছে।

সাধারণ রোগীদের দীর্ঘদিনের দাবি হলো, জেনারেল ইমারজেন্সি অর্থাৎ সাধারণ জরুরি বিভাগ চালু করা। এ বিষয়ে একটি সুখবর দিচ্ছি তা হলো, আগামী ১ নভেম্বর থেকেই সাধারণ জরুরি বিভাগ চালু করা হবে।

বৃহস্পতিবার, ২৮ অক্টোবর ২০২১ , ১২ কার্তিক ১৪২৮ ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা দিবস উদযাপিত

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

বৈজ্ঞানিক অধিবেশনসহ নানা আয়োজনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় গবেষণা দিবস উদযাপিত হয়েছে। ‘মুজিব বর্ষের আহ্বান, গবেষণায় উত্তরণ’-এ প্রতিপাদ্য নিয়ে দিবসটি পালিত হয়েছে। দিবস উপলক্ষে নতুন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছেন, আগামী ১ নভেম্বর থেকেই সাধারণ জরুরি বিভাগ চালু করা হবে।

গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি দিবসটির কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ইউজিসির মাননীয় চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ, বিএম-এর সভাপতি ডা. মোস্তাফা জালাল মহিউদ্দিন।

শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. এ কে এম মোশাররফ হোসেন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. জাহিদ হোসেন। গুরুত্বপূর্ণ এই অনুষ্ঠানে সিন্ডিকেটের সদস্যরা, ডিনরা, বিভাগীয় চেয়ারম্যানরা, শিক্ষক, চিকিৎসক ও ছাত্রছাত্রী এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন অনুষদের ১৫ জন শিক্ষক, চিকিৎসককে গবেষণার জন্য রিসার্চ অ্যাওয়ার্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়াও চারজন শিক্ষক, চিকিৎসককে ভাইস-চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড ২০২১ দেয়া হয়েছে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, দেশকে এগিয়ে নিতে গবেষণার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। চিকিৎসা বিজ্ঞানে প্রতিনিয়ত নতুন করে শিখতে হয়। ফলে চিকিৎসা বিজ্ঞানে আরও বেশি করে গবেষণার দরকার। সব চিকিৎসককেই গবেষণা চর্চায় মনোযোগী হতে হবে। গবেষণায় দেয়া অর্থ যাতে ফেরত না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আমাদের অর্জিত পুরানো জ্ঞান যাতে হারিয়ে না যায়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারমান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণা মানুষের জীবনের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত হওয়ায় অত্যন্ত দায়িত্বশীলতার সঙ্গে এই গবেষণা কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। গবেষণা কার্যক্রম আরও তরান্বিত করতে বেসরকারি খাতের এগিয়ে আসা উচিত। তবে, শুধু গবেষণার বরাদ্দ গ্রহণ করলেই হবে না, কি কি গবেষণা করা হলো- তাও মানুষকে জানাতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ে বিভিন্ন রোগ ও চিকিৎসা বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। গবেষণা করার জন্য ২০২০-২০২১ সালে ৭ শতাধিক শিক্ষক, চিকিৎসক ও ছাত্রছাত্রীদের গবেষণা কর্ম অনুমোদন দেয়াসহ অনেককে গবেষণা মঞ্জুরি, থিসিস গ্র্যান্ট দেয়া হয়েছে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাকর্ম ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। ইতোমধ্যে কোভিড-১৯ এর জেনোম সিকোয়েন্সিং গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছি।

গবেষণায় দেখা গেছে, মোট সংক্রমণের প্রায় ৯৮ শতাংশ হচ্ছে ইন্ডিয়ান বা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। কোভিড-১৯ এর টিকা গ্রহীতাদের ওপর গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছি। সেখানে দেখা গেছে, টিকা গ্রহীতাদের ৯৮ শতাংশের শরীরে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ভারতের অ্যাস্ট্রেজেনেকার টিকা নিয়েছেন ৬ মাস পরে তাদের শরীরে এন্টিবডি উপস্থিতির হার পূর্বের তুলনায় মাত্র ৫ শতাংশ কমেছে। করোনা ভাইরাসের টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার পরে বুস্টার ডোজ নিতে হবে কি না, সে বিষয়ে গবেষণা চলছে।

সাধারণ রোগীদের দীর্ঘদিনের দাবি হলো, জেনারেল ইমারজেন্সি অর্থাৎ সাধারণ জরুরি বিভাগ চালু করা। এ বিষয়ে একটি সুখবর দিচ্ছি তা হলো, আগামী ১ নভেম্বর থেকেই সাধারণ জরুরি বিভাগ চালু করা হবে।