বঙ্গবন্ধু শিল্প পুরস্কার পাচ্ছে ২৩ প্রতিষ্ঠান

বঙ্গবন্ধুর স্মরণে এবং শিল্প উদ্যোক্তা বা প্রতিষ্ঠানকে শিল্পখাতের অবদানের স্বীকৃতি প্রদান, প্রণোদনা সৃষ্টি ও সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে এ বছর প্রথমবারের মতো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প পুরস্কার ২০২০ প্রদান করা হচ্ছে। পুরস্কার পাচ্ছে ২৩ প্রতিষ্ঠান। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা। আজ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে নির্বাচিত শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহকে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প পুরস্কার ২০২০’ প্রদান করা হবে।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৬ সালে যুক্তফ্রন্ট সরকারের শিল্প, বাণিজ্য, শ্রম, দুর্নীতি দমন ও ভিলেজ এইড দপ্তরের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি পূর্ব পাকিস্তানে ক্ষুদ্র শিল্প বিকাশের মাধ্যমে দেশের জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থা উন্নয়নের জন্য ১৯৫৭ সালে তৎকালীন গণপরিষদে পূর্ব পাকিস্তান ক্ষুদ্র শিল্প করপোরেশন (ইপসিক) প্রতিষ্ঠান বিল উত্থাপন করেন যা ৩০ মে, ১৯৫৭ সাল থেকে কার্যকর হয়। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ইপসিক বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। সে সময় বঙ্গবন্ধু এ অঞ্চলে শিল্পায়নের বীজ বপন করেছিলেন। তাই বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া বিসিকের মাধ্যমে গ্রাম-গঞ্জে হাজার হাজার শিল্প স্থাপিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর সুদূরপ্রসারী উদ্যোগের জন্যই শিল্পখাত বর্তমানে জাতীয় অর্থনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। তাই ঐতিহাসিকভাবেই এ মন্ত্রণালয়ের গুরুত্ব বাঙালি জাতির নিকট অনন্য।’

এ বছর পুরস্কার দেয়া হচ্ছে কয়েকটি ক্যাটাগরিতে। ক্যাটাগরিগুলো হলো, বৃহৎ শিল্প, মাঝারি শিল্প, ক্ষুদ্র শিল্প, মাইক্রো শিল্প, হাইটেক শিল্প, হস্ত ও কারু শিল্প এবং কুটির শিল্পের সাথে জড়িত নির্বাচিত শিল্প উদ্যোক্তা বা শিল্প প্রতিষ্ঠান।

বিদ্যমান জাতীয় শিল্পনীতিতে বর্ণিত শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রেণীবিন্যাস অনুযায়ী মোট সাত ক্যাটাগরির শিল্পের প্রতিটিতে তিন জন করে মোট ২১ জন শিল্প উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানকে প্রতিবছর এ পুরস্কার প্রদান করা হবে।

এ বছর দু’টি ক্যাটাগরিতে যৌথভাবে দু’টি করে প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত হওয়ায় মোট ২৩টি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দেয়া হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে, বৃহৎ শিল্প ক্যাটাগরিতে ৪টি, মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরিতে ৪টি, ক্ষুদ্র শিল্প ক্যাটাগরিতে ৩টি, মাইক্রো শিল্প ক্যাটাগরিতে ৩টি, হাইটেক শিল্প ক্যাটাগরিতে ৩টি, হস্ত ও কারু শিল্প ক্যাটাগরিতে ৩টি এবং কুটির শিল্প ক্যাটাগরিতে ৩টি।

১ম পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেককে ৩ লাখ টাকা ও ২৫ গ্রাম স্বর্ণখচিত ক্রেস্ট, ২য় পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেককে ২ লাখ টাকা ও ২০ গ্রাম স্বর্ণখচিত ক্রেস্ট এবং ৩য় পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা ও ১৫ গ্রাম স্বর্ণখচিত ক্রেস্ট দেয়া হবে। স্বর্ণের ক্রেস্টগুলো ১৮ ক্যারেট মানের স্বর্ণ দ্বারা নির্মিত। ক্রেস্টগুলো ইতোমধ্যে তৈরি করে বাংলাদেশ আনবিক শক্তি কমিশন কর্তৃক স্বর্ণের মান যাচাই করে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রাখা হয়েছে। এছাড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত সকলকেই সম্মাননাপত্র প্রদান করা হবে।

এ বছর বৃহৎ ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পাচ্ছে চারটি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে প্রথম স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড এবং দ্বিতীয় পুরস্কার পাচ্ছে জজ ভূঞা টেক্সটাইল মিলস। যৌথভাবে তৃতীয় হয়েছে আদুরি অ্যাপারেলস লিমিটেড ও ইউনিভার্সাল জিন্স লিমিটেড। মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরিতে প্রথম পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছে যৌথভাবে অকো-টেক্স লিমিটেড এবং ফরচুন সুজ লিমিটেড। দ্বিতীয় পুরস্কার পাচ্ছে রহিম আফরোজ রিনিউঅ্যাবল এনার্জি লিমিটেড এবং তৃতীয় মাধবদী ডাইং ফিনিশিং মিলস লিমিটেড।

ক্ষুদ্রশিল্পের জন্য মনোনীত তিনটি প্রতিষ্ঠান যথাক্রমে আমান প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রি, এসআর হ্যান্ডিক্যাফটস এবং আলীম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। অতিক্ষুদ্র বা মাইক্রো ইন্ডাস্ট্রির জন্য পুরস্কার পাচ্ছে মেসার্স কারুকলা, ট্রিম টেক্স বাংলাদেশ ও জনতা ইঞ্জিনিয়ারিং। হাইটেক শিল্পের জন্য মনোনীত তিন প্রতিষ্ঠান হলো- সার্ভিস ইঞ্জিন লিমিটেড, সুপারস্টার ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড ও মীর টেলিকম লিমিটেড।

এছাড়া হস্ত ও কারুশিল্প ক্যাটাগরিতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছে যথাক্রমে ক্লাসিক্যাল হ্যান্ডমেড প্রোডাক্ট বিডি, আয়োজন এবং সোনারগাঁ নকশি কাঁথা মহিলা উন্নয়ন সংস্থা। কুটিরশিল্প ক্যাটাগরিতে কুমিল্লা আর্ট অ্যান্ড ক্রাফটস, রংমেলা নারী কল্যাণ সংস্থা এবং অগ্রজ পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার, ২৮ অক্টোবর ২০২১ , ১২ কার্তিক ১৪২৮ ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

বঙ্গবন্ধু শিল্প পুরস্কার পাচ্ছে ২৩ প্রতিষ্ঠান

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

বঙ্গবন্ধুর স্মরণে এবং শিল্প উদ্যোক্তা বা প্রতিষ্ঠানকে শিল্পখাতের অবদানের স্বীকৃতি প্রদান, প্রণোদনা সৃষ্টি ও সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে এ বছর প্রথমবারের মতো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প পুরস্কার ২০২০ প্রদান করা হচ্ছে। পুরস্কার পাচ্ছে ২৩ প্রতিষ্ঠান। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা। আজ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে নির্বাচিত শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহকে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প পুরস্কার ২০২০’ প্রদান করা হবে।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৬ সালে যুক্তফ্রন্ট সরকারের শিল্প, বাণিজ্য, শ্রম, দুর্নীতি দমন ও ভিলেজ এইড দপ্তরের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি পূর্ব পাকিস্তানে ক্ষুদ্র শিল্প বিকাশের মাধ্যমে দেশের জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থা উন্নয়নের জন্য ১৯৫৭ সালে তৎকালীন গণপরিষদে পূর্ব পাকিস্তান ক্ষুদ্র শিল্প করপোরেশন (ইপসিক) প্রতিষ্ঠান বিল উত্থাপন করেন যা ৩০ মে, ১৯৫৭ সাল থেকে কার্যকর হয়। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ইপসিক বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। সে সময় বঙ্গবন্ধু এ অঞ্চলে শিল্পায়নের বীজ বপন করেছিলেন। তাই বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া বিসিকের মাধ্যমে গ্রাম-গঞ্জে হাজার হাজার শিল্প স্থাপিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর সুদূরপ্রসারী উদ্যোগের জন্যই শিল্পখাত বর্তমানে জাতীয় অর্থনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। তাই ঐতিহাসিকভাবেই এ মন্ত্রণালয়ের গুরুত্ব বাঙালি জাতির নিকট অনন্য।’

এ বছর পুরস্কার দেয়া হচ্ছে কয়েকটি ক্যাটাগরিতে। ক্যাটাগরিগুলো হলো, বৃহৎ শিল্প, মাঝারি শিল্প, ক্ষুদ্র শিল্প, মাইক্রো শিল্প, হাইটেক শিল্প, হস্ত ও কারু শিল্প এবং কুটির শিল্পের সাথে জড়িত নির্বাচিত শিল্প উদ্যোক্তা বা শিল্প প্রতিষ্ঠান।

বিদ্যমান জাতীয় শিল্পনীতিতে বর্ণিত শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রেণীবিন্যাস অনুযায়ী মোট সাত ক্যাটাগরির শিল্পের প্রতিটিতে তিন জন করে মোট ২১ জন শিল্প উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানকে প্রতিবছর এ পুরস্কার প্রদান করা হবে।

এ বছর দু’টি ক্যাটাগরিতে যৌথভাবে দু’টি করে প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত হওয়ায় মোট ২৩টি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দেয়া হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে, বৃহৎ শিল্প ক্যাটাগরিতে ৪টি, মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরিতে ৪টি, ক্ষুদ্র শিল্প ক্যাটাগরিতে ৩টি, মাইক্রো শিল্প ক্যাটাগরিতে ৩টি, হাইটেক শিল্প ক্যাটাগরিতে ৩টি, হস্ত ও কারু শিল্প ক্যাটাগরিতে ৩টি এবং কুটির শিল্প ক্যাটাগরিতে ৩টি।

১ম পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেককে ৩ লাখ টাকা ও ২৫ গ্রাম স্বর্ণখচিত ক্রেস্ট, ২য় পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেককে ২ লাখ টাকা ও ২০ গ্রাম স্বর্ণখচিত ক্রেস্ট এবং ৩য় পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা ও ১৫ গ্রাম স্বর্ণখচিত ক্রেস্ট দেয়া হবে। স্বর্ণের ক্রেস্টগুলো ১৮ ক্যারেট মানের স্বর্ণ দ্বারা নির্মিত। ক্রেস্টগুলো ইতোমধ্যে তৈরি করে বাংলাদেশ আনবিক শক্তি কমিশন কর্তৃক স্বর্ণের মান যাচাই করে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রাখা হয়েছে। এছাড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত সকলকেই সম্মাননাপত্র প্রদান করা হবে।

এ বছর বৃহৎ ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পাচ্ছে চারটি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে প্রথম স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড এবং দ্বিতীয় পুরস্কার পাচ্ছে জজ ভূঞা টেক্সটাইল মিলস। যৌথভাবে তৃতীয় হয়েছে আদুরি অ্যাপারেলস লিমিটেড ও ইউনিভার্সাল জিন্স লিমিটেড। মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরিতে প্রথম পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছে যৌথভাবে অকো-টেক্স লিমিটেড এবং ফরচুন সুজ লিমিটেড। দ্বিতীয় পুরস্কার পাচ্ছে রহিম আফরোজ রিনিউঅ্যাবল এনার্জি লিমিটেড এবং তৃতীয় মাধবদী ডাইং ফিনিশিং মিলস লিমিটেড।

ক্ষুদ্রশিল্পের জন্য মনোনীত তিনটি প্রতিষ্ঠান যথাক্রমে আমান প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রি, এসআর হ্যান্ডিক্যাফটস এবং আলীম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। অতিক্ষুদ্র বা মাইক্রো ইন্ডাস্ট্রির জন্য পুরস্কার পাচ্ছে মেসার্স কারুকলা, ট্রিম টেক্স বাংলাদেশ ও জনতা ইঞ্জিনিয়ারিং। হাইটেক শিল্পের জন্য মনোনীত তিন প্রতিষ্ঠান হলো- সার্ভিস ইঞ্জিন লিমিটেড, সুপারস্টার ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড ও মীর টেলিকম লিমিটেড।

এছাড়া হস্ত ও কারুশিল্প ক্যাটাগরিতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছে যথাক্রমে ক্লাসিক্যাল হ্যান্ডমেড প্রোডাক্ট বিডি, আয়োজন এবং সোনারগাঁ নকশি কাঁথা মহিলা উন্নয়ন সংস্থা। কুটিরশিল্প ক্যাটাগরিতে কুমিল্লা আর্ট অ্যান্ড ক্রাফটস, রংমেলা নারী কল্যাণ সংস্থা এবং অগ্রজ পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছে।