চান্দিনায় পুলিশের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর মানববন্ধন

মিথ্যা প্রতিবেদন প্রদানের অভিযোগ

কুমিল্লার চান্দিনা থানায় কর্মরত এসআই আবদুস সুলতানকে প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টায় চান্দিনা থানার সামনে মানববন্ধন করে এলাকাবাসী। অভিযোগে বলা হয়- পুলিশ কর্মকর্তার এক লক্ষ টাকা ঘুষ দাবি এবং কাক্সিক্ষত টাকা দিতে না পারায় ভিকটিমের বিরুদ্ধে আদালতে মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিল করার অভিযোগ এনে ওই মানববন্ধন করে তারা। এ সময় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাকে দ্রুত অপসরণসহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানান হয়।

জানা যায়, গত ২৫ জুলাই চান্দিনার তুলাতলী গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধে প্রতিপক্ষের হামলায় মারাত্মক আহত হয় নূরুল আমিন সোহাগ, তার পিতা রুহুল আমিন ও ছোট ভাই নাঈম। ঘটনার পর সোহাগের স্ত্রী রোজিনা আক্তার বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই সময় প্রতিপক্ষরা থানায় কাউন্টার মামলা করতে গেলে থানার ওসিসহ তদন্ত কর্মকর্তারা তাদের অভিযোগের কোন সত্যতা না পাওয়ায় মামলা গ্রহণ করেননি। পরবর্তীতে প্রতিপক্ষরা আদালতে পৃথক ২টি মামলা দায়ের করেন। ওই ২টি মামলাই চান্দিনা থানাকে তদন্ত দেয় আদালত। এর মধ্যে একটি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আবদুস সুলতান সঠিক রিপোর্ট দেয়ার জন্য ভিকটিম সোহাগের কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা ঘুষ দাবি করেন। সোহাগ এক লক্ষ টাকা দিতে না পারলে প্রতিপক্ষের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে ভিকটিমের বিরুদ্ধেই আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।

আহত নূরুল আমিন সোহাগ জানান, আমার মাথায় ৪টি কোপ লাগে। আমাকে রাজধানীর শেখ হাসিনার বার্ণ ইউনিটে ২১২টি সেলাই দিয়ে প্রাণ বাঁচায়। এ পর্যন্ত আমার মামলায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি, আসামিরা আদালত থেকে জামিন নিয়ে আমার বিরুদ্ধে পরপর ২টি মিথ্যা মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় সঠিক রিপোর্ট দেয়ার জন্য এসআই সুলতান আমার কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা দাবি করে। আমি গত ১৪ অক্টোবর ২০ হাজার টাকা দেই।

তখন এসআই সুলতান বলেন, ‘ওই পক্ষ তো দুই লাখ দিতে রাজি’। আমি আর কোন টাকা দিতে পারব না বলে থানা থেকে চলে আসি।

গত ১৯ অক্টোবর এসআই সুলতান বলেন, ‘সঠিক রিপোর্ট দিয়েছি, আরও টাকা দিতে হবে’। আমি বাধ্য হয়ে ২০ অক্টোবর সকালে আরও ৫ হাজার টাকা দেই। পরবর্তীতে আদালত থেকে ওই রিপোর্ট এনে দেখি এসআই সুলতান আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা-বানোয়াট রিপোর্ট দেয়ায় বিজ্ঞ আদালত আমার নামে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করে! আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং এসআই সুলতানের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানাই।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত এসআই আবদুস সুলতান জানান, উভয় পক্ষের মারামারিতে সোহাগ মারাত্মক আহত হয় সেটা বাস্তব। তবে প্রতিপক্ষরাও আহত হয়। রিপোর্টটি তাদের পক্ষে যায়নি বলেই তারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে।

চান্দিনা থানার ওসি মোহাম্মদ আরিফুর রহমান জানান, এসআই সুলতানের বিরুদ্ধে ভিকটিম সোহাগের অভিযোগটি জেনেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

বৃহস্পতিবার, ২৮ অক্টোবর ২০২১ , ১২ কার্তিক ১৪২৮ ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

চান্দিনায় পুলিশের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর মানববন্ধন

মিথ্যা প্রতিবেদন প্রদানের অভিযোগ

প্রতিনিধি, চান্দিনা (কুমিল্লা

কুমিল্লার চান্দিনা থানায় কর্মরত এসআই আবদুস সুলতানকে প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টায় চান্দিনা থানার সামনে মানববন্ধন করে এলাকাবাসী। অভিযোগে বলা হয়- পুলিশ কর্মকর্তার এক লক্ষ টাকা ঘুষ দাবি এবং কাক্সিক্ষত টাকা দিতে না পারায় ভিকটিমের বিরুদ্ধে আদালতে মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিল করার অভিযোগ এনে ওই মানববন্ধন করে তারা। এ সময় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাকে দ্রুত অপসরণসহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানান হয়।

জানা যায়, গত ২৫ জুলাই চান্দিনার তুলাতলী গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধে প্রতিপক্ষের হামলায় মারাত্মক আহত হয় নূরুল আমিন সোহাগ, তার পিতা রুহুল আমিন ও ছোট ভাই নাঈম। ঘটনার পর সোহাগের স্ত্রী রোজিনা আক্তার বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই সময় প্রতিপক্ষরা থানায় কাউন্টার মামলা করতে গেলে থানার ওসিসহ তদন্ত কর্মকর্তারা তাদের অভিযোগের কোন সত্যতা না পাওয়ায় মামলা গ্রহণ করেননি। পরবর্তীতে প্রতিপক্ষরা আদালতে পৃথক ২টি মামলা দায়ের করেন। ওই ২টি মামলাই চান্দিনা থানাকে তদন্ত দেয় আদালত। এর মধ্যে একটি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আবদুস সুলতান সঠিক রিপোর্ট দেয়ার জন্য ভিকটিম সোহাগের কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা ঘুষ দাবি করেন। সোহাগ এক লক্ষ টাকা দিতে না পারলে প্রতিপক্ষের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে ভিকটিমের বিরুদ্ধেই আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।

আহত নূরুল আমিন সোহাগ জানান, আমার মাথায় ৪টি কোপ লাগে। আমাকে রাজধানীর শেখ হাসিনার বার্ণ ইউনিটে ২১২টি সেলাই দিয়ে প্রাণ বাঁচায়। এ পর্যন্ত আমার মামলায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি, আসামিরা আদালত থেকে জামিন নিয়ে আমার বিরুদ্ধে পরপর ২টি মিথ্যা মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় সঠিক রিপোর্ট দেয়ার জন্য এসআই সুলতান আমার কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা দাবি করে। আমি গত ১৪ অক্টোবর ২০ হাজার টাকা দেই।

তখন এসআই সুলতান বলেন, ‘ওই পক্ষ তো দুই লাখ দিতে রাজি’। আমি আর কোন টাকা দিতে পারব না বলে থানা থেকে চলে আসি।

গত ১৯ অক্টোবর এসআই সুলতান বলেন, ‘সঠিক রিপোর্ট দিয়েছি, আরও টাকা দিতে হবে’। আমি বাধ্য হয়ে ২০ অক্টোবর সকালে আরও ৫ হাজার টাকা দেই। পরবর্তীতে আদালত থেকে ওই রিপোর্ট এনে দেখি এসআই সুলতান আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা-বানোয়াট রিপোর্ট দেয়ায় বিজ্ঞ আদালত আমার নামে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করে! আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং এসআই সুলতানের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানাই।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত এসআই আবদুস সুলতান জানান, উভয় পক্ষের মারামারিতে সোহাগ মারাত্মক আহত হয় সেটা বাস্তব। তবে প্রতিপক্ষরাও আহত হয়। রিপোর্টটি তাদের পক্ষে যায়নি বলেই তারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে।

চান্দিনা থানার ওসি মোহাম্মদ আরিফুর রহমান জানান, এসআই সুলতানের বিরুদ্ধে ভিকটিম সোহাগের অভিযোগটি জেনেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।