সমুদ্র অর্থনীতির সম্ভাবনা

এসএম জাহাঙ্গীর আলম

বাংলাদেশের রয়েছে বিশাল সমুদ্রাঞ্চল। সমুদ্রের তলদেশে রয়েছে তেল-গ্যাসসহ প্রাণিজসম্পদ। অফুরন্ত এই সম্পদকে সঠিক ভাবে কাজে লাগাতে পারলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক চিত্র পাল্টে যাবে, এটাই বাস্তব। সুষ্ঠু পরিকল্পনা নিয়ে এই সম্পদকে কাজে লাগানোর জন্যে যথাযথ উদ্যোগ নেই। তেল-গ্যাস উত্তোলন, মৎস্য সম্পদ আহরণ, সমুদ্র বন্দরগুলোর সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন করতে পারলে চলমান অর্থনৈতিক গতি আরও দ্রুততর এগিয়ে যাবে। আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ প্রায় আড়াই লাখ কোটি ডলার আয় করা বলে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা।

দেশের স্থলভাগে যে পরিমাণ সম্পদ আছে তার প্রায় সমভাগ ভাগ আছে সমুদ্র তলদেশে। আধুনিক বিশ্বে ব্লু-ইকোনমি বা নীল অর্থনীতি হিসেবে সমুদ্র অর্থনীতিকে সম্ভাবনা বলে বিবেচনায় নিয়ে বিশ্বের অনেক দেশ কাজ করছে এবং অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হচ্ছে। ভারত মহাসাগরের ব-দ্বীপ বাংলাদেশের জন্য ব্লু-ইকোনমি খুবই সম্ভাবনাময় বটে। সমুদ্রসীমা নিয়ে প্রতিবেশী ভারত ও মায়ানমারের সঙ্গে যে বিরোধ ছিল তা বর্তমান সরকার মিটিয়ে ফেলেছে। গত ২০১২ সালে আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ে এবং ২০১৪ সালে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা চিহ্নত করা হয়েছে। শেখ হাসিনার সরকার সমুদ্র বিজয় একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটারের বেশি টেলিটোরিয়াল সমুদ্র, ২০০ নটিক্যাল মাইল একচ্ছত্র অর্থনৈতি অঞ্চল এবং চট্টগ্রাম উপকূল থেকে ৩৫৪ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মহীসোপানের তলদেশে অবস্থিত সব ধরণের প্রানিজ ও অপ্রাণিজ সম্পদের ওপর বাংলাদেশের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

সমুদ্রে বাংলাদেশের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হলেও সুষ্ঠু পরিকল্পনামাফিক সম্পদ আহরণের তেমন কোনো উদ্যোগ নেই বললেই চলে। প্রতিবেশী ভারত ও মায়ানমার সমুদ্র তলদেশ থেকে প্রাণিজ ও অপ্রাণিজ সম্পদ আহরণ করছে। এই দুটি দেশ সমুদ্র তলদেশ থেকে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের কাজ শুরু করেছে। আহরণ করছে প্রাণিজ সম্পদও। বাংলাদেশ সমুদ্র জয় করার প্রায় ৮ বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত সম্পদ আহরণের তেমন কোনো উদ্যোগই নেয়া হয়নি। আমরা যদি গত দেড় বা দুই দশকের হিসাব করি তাহলে দেখতে পাওয়া যায় যে, জিডিপির প্রায় ৪ শতাংশের কিছুটা বেশি আসে ব্লু-ইকোনমি থেকে। বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য এখন তৈরি পোশাক যা থেকে বছরে প্রায় ৪০/৪২ হাজার কোটি টাকা আয় হয়। অপরদিকে মাছ রপ্তানি থেকে আয় হয় বছরে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা। ভারত-মায়ানমার সমুদ্র অঞ্চল থেকে প্রচুর পরিমাণ মৎস্য সম্পদ আহরণ করছে। সে তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থান খুবই কম। বাংলাদেশের সমুদ্রের তলদেশের সম্পদ নিয়ে দেশি-বিদেশিদের ধারণা একেবারেই কম। যার ফলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগও এখাতে নেই বললেই চলে।

অপরদিকে সমুদ্র যোগাযোগ পথ ও সমুদ্র পরিবহণ, খনিজ সম্পদ, জ্বালানি নিরাপত্তা, জাহাজ নির্মাণ ও জাহাজ ভাঙা শিল্প, দক্ষ জনবল সরবরাহ, পর্যটন ও পরিবেশ সংরক্ষণ করে সমুদ্র সম্পদ আহরণের রয়েছে অনেক সম্ভাবনা। বাংলাদেশের বার্ষিক বৈদেশিক বাণিজ্যের প্রায় ৯০ শতাংশ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ হতে আসে যা বাণিজ্যিক জাহাজের সাহায্যে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরের মাধ্যমে। বিদেশি জাহাজগুলোকে প্রায় সাড়ে ছয়শত কোটি ডলার ভাড়া পরিশোধ করতে হচ্ছে। সমুগ্রগামী বাণিজ্যিক জাহাজের সংখ্যা বৃদ্ধি করে এই ব্যয় কমানো অনেকটাই সহজ। সমুদ্রের মিঠাপানিতে প্রায় আড়াইশ’ প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। তবে বাংলাদেশের সমুদ্রাঞ্চলে পাওয়া যায় ৪৭৫ প্রজাতির মাছ। এর মধ্যে ৩৬ প্রজাতির চিংড়ি রয়েছে। মাছ আহরণ করে বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় ৪০ লাখ মানুষ জীবিকা নির্বাহ করেন। উপকূলীয় জেলেরাও অভাবী। মাছ আহরণ করার মতো তাদের তেমন কোনো সরঞ্জামাদি নেই। তাদের নেই বড় ট্রলার যার কারণে গভীর সমুদ্রে গিয়ে মাছ ধরতে পারেন না। যেমন ধরা যাক টুনা মাছের কথা। এই প্রজাতির মাছ দ্রুত বিভিন্ন সাগরে ঘোরাফেরা করে। যার ফলে গভীর সমুদ্র থেকে এই প্রজাতির মাছ আহরণ করতে হয়। যদিও এই মাছে রয়েছে প্রচুর চাহিদা। লবণ উৎপাদনের প্রধান উৎস্য হচ্ছে সমুদ্র তীরবর্তী এলাকা।

সেভ আওয়ার পি’র এর এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বে ব্যবহারকৃত মোট ম্যাগনেশিয়ামের ৫০ শতাংশই আসে সামুদ্রিক উৎস থেকে। সমুদ্র থেকে আহরিত ম্যাগনেশিয়াম লবণ এয়ারক্রাফট নির্মাণে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া পটাশিয়াম লবণ সার ও নানা ধরনের রাসায়নিক শিল্পে ব্যবহার করা হয়। ওষুধ তৈরিতে ব্রোমিন এবং ওয়াল বোর্ড নির্মাণে জিপসাম ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সমুদ্র থেকে জীবন রক্ষাকারী বিভিন্ন ধরনের ওষুধ আমরা পেতে পারি। এখন পর্যন্ত ১০ হাজার কম্পাউন্ড সমুদ্র থেকে পাওয়া গেছে। এ সম্পর্কিত গবেষকরা মনে করেনÑ আগামী প্রজন্মের ওষুধের জোগান আসবে সমুদ্র থেকে। বর্তমান বিশ্বে ৪৩০ কোটি মানুষের ১৫ ভাগ প্রোটিনের জোগান আসে সামুদ্রিক মাছ, উদ্ভিদ ও জীবজন্তু থেকে। ৩০ ভাগ গ্যাস ও জ্বালানি তেল সরবরাহ হচ্ছে সমতলের বিভিন্ন গ্যাস ও তেলক্ষেত্র থেকে। বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত থেকে দেখা যায়, ন্যূনতম ১ দশমিক ২৪ মিলিয়ন টন খনিজ বালুর সমাহার রয়েছে বাংলাদেশের সমুদ্র সৈকতে। এখানে ১৭ প্রকার খনিজ বালুর সন্ধান পাওয়া গেছে। এগুলোর মধ্যে ইলমেনাইট, জিরকন, রুটাইল, লিউকোক্সিন, কিয়ানাইট, মোনাজাইট দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সক্ষমতা রাখে। সমুদ্রে বাতাস ব্যবহার করে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনে বাংলাদেশের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এক কথায় বলতে গেলে সমুদ্রে ও তার তীরবর্তী এলাকায় রয়েছে প্রচুর সম্পদ। এই সম্পদ আমাদের যথাযথ ভাবে কাজে লাগাতে হবে। এ লক্ষ্যে সুষ্ঠু পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে। বাড়াতে হবে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ। তাহলে দেশের অর্থনীতির গতি অনেক বেড়ে যাবে।

[লেখক : সাবেক কর কমিশনার; পরিচালক, বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কো. লি.]

বৃহস্পতিবার, ২৮ অক্টোবর ২০২১ , ১২ কার্তিক ১৪২৮ ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

সমুদ্র অর্থনীতির সম্ভাবনা

এসএম জাহাঙ্গীর আলম

বাংলাদেশের রয়েছে বিশাল সমুদ্রাঞ্চল। সমুদ্রের তলদেশে রয়েছে তেল-গ্যাসসহ প্রাণিজসম্পদ। অফুরন্ত এই সম্পদকে সঠিক ভাবে কাজে লাগাতে পারলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক চিত্র পাল্টে যাবে, এটাই বাস্তব। সুষ্ঠু পরিকল্পনা নিয়ে এই সম্পদকে কাজে লাগানোর জন্যে যথাযথ উদ্যোগ নেই। তেল-গ্যাস উত্তোলন, মৎস্য সম্পদ আহরণ, সমুদ্র বন্দরগুলোর সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন করতে পারলে চলমান অর্থনৈতিক গতি আরও দ্রুততর এগিয়ে যাবে। আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ প্রায় আড়াই লাখ কোটি ডলার আয় করা বলে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা।

দেশের স্থলভাগে যে পরিমাণ সম্পদ আছে তার প্রায় সমভাগ ভাগ আছে সমুদ্র তলদেশে। আধুনিক বিশ্বে ব্লু-ইকোনমি বা নীল অর্থনীতি হিসেবে সমুদ্র অর্থনীতিকে সম্ভাবনা বলে বিবেচনায় নিয়ে বিশ্বের অনেক দেশ কাজ করছে এবং অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হচ্ছে। ভারত মহাসাগরের ব-দ্বীপ বাংলাদেশের জন্য ব্লু-ইকোনমি খুবই সম্ভাবনাময় বটে। সমুদ্রসীমা নিয়ে প্রতিবেশী ভারত ও মায়ানমারের সঙ্গে যে বিরোধ ছিল তা বর্তমান সরকার মিটিয়ে ফেলেছে। গত ২০১২ সালে আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ে এবং ২০১৪ সালে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা চিহ্নত করা হয়েছে। শেখ হাসিনার সরকার সমুদ্র বিজয় একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটারের বেশি টেলিটোরিয়াল সমুদ্র, ২০০ নটিক্যাল মাইল একচ্ছত্র অর্থনৈতি অঞ্চল এবং চট্টগ্রাম উপকূল থেকে ৩৫৪ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মহীসোপানের তলদেশে অবস্থিত সব ধরণের প্রানিজ ও অপ্রাণিজ সম্পদের ওপর বাংলাদেশের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

সমুদ্রে বাংলাদেশের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হলেও সুষ্ঠু পরিকল্পনামাফিক সম্পদ আহরণের তেমন কোনো উদ্যোগ নেই বললেই চলে। প্রতিবেশী ভারত ও মায়ানমার সমুদ্র তলদেশ থেকে প্রাণিজ ও অপ্রাণিজ সম্পদ আহরণ করছে। এই দুটি দেশ সমুদ্র তলদেশ থেকে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের কাজ শুরু করেছে। আহরণ করছে প্রাণিজ সম্পদও। বাংলাদেশ সমুদ্র জয় করার প্রায় ৮ বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত সম্পদ আহরণের তেমন কোনো উদ্যোগই নেয়া হয়নি। আমরা যদি গত দেড় বা দুই দশকের হিসাব করি তাহলে দেখতে পাওয়া যায় যে, জিডিপির প্রায় ৪ শতাংশের কিছুটা বেশি আসে ব্লু-ইকোনমি থেকে। বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য এখন তৈরি পোশাক যা থেকে বছরে প্রায় ৪০/৪২ হাজার কোটি টাকা আয় হয়। অপরদিকে মাছ রপ্তানি থেকে আয় হয় বছরে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা। ভারত-মায়ানমার সমুদ্র অঞ্চল থেকে প্রচুর পরিমাণ মৎস্য সম্পদ আহরণ করছে। সে তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থান খুবই কম। বাংলাদেশের সমুদ্রের তলদেশের সম্পদ নিয়ে দেশি-বিদেশিদের ধারণা একেবারেই কম। যার ফলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগও এখাতে নেই বললেই চলে।

অপরদিকে সমুদ্র যোগাযোগ পথ ও সমুদ্র পরিবহণ, খনিজ সম্পদ, জ্বালানি নিরাপত্তা, জাহাজ নির্মাণ ও জাহাজ ভাঙা শিল্প, দক্ষ জনবল সরবরাহ, পর্যটন ও পরিবেশ সংরক্ষণ করে সমুদ্র সম্পদ আহরণের রয়েছে অনেক সম্ভাবনা। বাংলাদেশের বার্ষিক বৈদেশিক বাণিজ্যের প্রায় ৯০ শতাংশ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ হতে আসে যা বাণিজ্যিক জাহাজের সাহায্যে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরের মাধ্যমে। বিদেশি জাহাজগুলোকে প্রায় সাড়ে ছয়শত কোটি ডলার ভাড়া পরিশোধ করতে হচ্ছে। সমুগ্রগামী বাণিজ্যিক জাহাজের সংখ্যা বৃদ্ধি করে এই ব্যয় কমানো অনেকটাই সহজ। সমুদ্রের মিঠাপানিতে প্রায় আড়াইশ’ প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। তবে বাংলাদেশের সমুদ্রাঞ্চলে পাওয়া যায় ৪৭৫ প্রজাতির মাছ। এর মধ্যে ৩৬ প্রজাতির চিংড়ি রয়েছে। মাছ আহরণ করে বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় ৪০ লাখ মানুষ জীবিকা নির্বাহ করেন। উপকূলীয় জেলেরাও অভাবী। মাছ আহরণ করার মতো তাদের তেমন কোনো সরঞ্জামাদি নেই। তাদের নেই বড় ট্রলার যার কারণে গভীর সমুদ্রে গিয়ে মাছ ধরতে পারেন না। যেমন ধরা যাক টুনা মাছের কথা। এই প্রজাতির মাছ দ্রুত বিভিন্ন সাগরে ঘোরাফেরা করে। যার ফলে গভীর সমুদ্র থেকে এই প্রজাতির মাছ আহরণ করতে হয়। যদিও এই মাছে রয়েছে প্রচুর চাহিদা। লবণ উৎপাদনের প্রধান উৎস্য হচ্ছে সমুদ্র তীরবর্তী এলাকা।

সেভ আওয়ার পি’র এর এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বে ব্যবহারকৃত মোট ম্যাগনেশিয়ামের ৫০ শতাংশই আসে সামুদ্রিক উৎস থেকে। সমুদ্র থেকে আহরিত ম্যাগনেশিয়াম লবণ এয়ারক্রাফট নির্মাণে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া পটাশিয়াম লবণ সার ও নানা ধরনের রাসায়নিক শিল্পে ব্যবহার করা হয়। ওষুধ তৈরিতে ব্রোমিন এবং ওয়াল বোর্ড নির্মাণে জিপসাম ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সমুদ্র থেকে জীবন রক্ষাকারী বিভিন্ন ধরনের ওষুধ আমরা পেতে পারি। এখন পর্যন্ত ১০ হাজার কম্পাউন্ড সমুদ্র থেকে পাওয়া গেছে। এ সম্পর্কিত গবেষকরা মনে করেনÑ আগামী প্রজন্মের ওষুধের জোগান আসবে সমুদ্র থেকে। বর্তমান বিশ্বে ৪৩০ কোটি মানুষের ১৫ ভাগ প্রোটিনের জোগান আসে সামুদ্রিক মাছ, উদ্ভিদ ও জীবজন্তু থেকে। ৩০ ভাগ গ্যাস ও জ্বালানি তেল সরবরাহ হচ্ছে সমতলের বিভিন্ন গ্যাস ও তেলক্ষেত্র থেকে। বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত থেকে দেখা যায়, ন্যূনতম ১ দশমিক ২৪ মিলিয়ন টন খনিজ বালুর সমাহার রয়েছে বাংলাদেশের সমুদ্র সৈকতে। এখানে ১৭ প্রকার খনিজ বালুর সন্ধান পাওয়া গেছে। এগুলোর মধ্যে ইলমেনাইট, জিরকন, রুটাইল, লিউকোক্সিন, কিয়ানাইট, মোনাজাইট দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সক্ষমতা রাখে। সমুদ্রে বাতাস ব্যবহার করে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনে বাংলাদেশের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এক কথায় বলতে গেলে সমুদ্রে ও তার তীরবর্তী এলাকায় রয়েছে প্রচুর সম্পদ। এই সম্পদ আমাদের যথাযথ ভাবে কাজে লাগাতে হবে। এ লক্ষ্যে সুষ্ঠু পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে। বাড়াতে হবে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ। তাহলে দেশের অর্থনীতির গতি অনেক বেড়ে যাবে।

[লেখক : সাবেক কর কমিশনার; পরিচালক, বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কো. লি.]