জালে মিলছে না ইলিশ খায়েশ মিটছে পাঙ্গাশে

বরিশাল নগরীর পোর্টরোডের পাইকারী মৎস্য মোকামের আড়তদাররা বলেছেন, গত মঙ্গলবার থেকে ইলিশের ট্রলারে আসছে নদীর পাঙ্গাশ। দুুদিন ধরে পাঙ্গাশ বেশি আসছে মোকামে। ক্রেতারাও ইলিশের বদলে পাঙ্গাশ কিনছেন। জেলেদের বরাত দিয়ে আড়তদাররা বলেন, মেঘনা, আড়িয়াল খাঁ, কালাবদর ও লতা নদীতে এখন ধরা পড়ছে প্রচুর সুস্বাদু পাঙ্গাশ মাছ।

গত বুধবার সকালে পোর্টরোডের মোকামে গিয়ে দেখা যায় খুচরা বিক্রেতারা বড় বড় পাঙ্গাশ সাজিয়ে হাকডাক দিচ্ছেন বিক্রীর জন্য। খুচরা বিক্রেতা ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘অবরোধ শ্যাষ হওয়ার পর থেকে ইলিশের থেকে পাঙ্গাশ আইতেছে বেশি, দামও একটু কম’। পোর্টরোড মোকামের মৎস্য শ্রমিক শফিক বলেন, ইলিশের আড়তদাররা এখন পাঙ্গাশ কেনাবেচা করছেন। একাধিক ইলিশ জেলে জানিয়েছেন, ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে তারা নদীতে জাল পেতে ইলিশের চেয়ে পাঙ্গাশ বেশি পাচ্ছেন।

বুধবার সকালে পোর্টরোডের পরেশ দাসের আড়তে বড় সাইজের ২৮টি পাঙ্গাশ নিয়ে এসেছেন হিজলা উপজেলার মেঘনা তীরবর্তী চলকিল্লার জেলে শামীম ফকির। তিনি বলেন, ‘জাল পাতছিলাম ইলিশের লাইগ্যা, পাইছি ২৮ পিস পাঙ্গাশ। কার্তিক মাসের নিশির (শিশির) খাইতে পাঙ্গাশ মাছ চক (ঝাক) বাইন্দা নদীতে ভাসে’।

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিসারিজ, অ্যাকোয়াকালচার এ্যান্ড মেরিন সাইন্স অনুষদের সহকারী অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী বলেন, ইলিশ ব্যবস্থাপনায় সরকারের নানা উদ্যোগের ফলে নদ-নদীতে পাঙ্গাশ সহ অন্যান্য মাছের সুরক্ষা এবং প্রজনন বেড়েছে। শীতের শুরুতে পাঙ্গাশ মাছ ধরা পড়ে। ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার পর মেঘনা সহ বিভিন্ন শাখা নদীতে ইলিশের পাশাপাশি প্রচুর পাঙ্গাশ ধরা পড়ছে। আরও একমাস নদনদীতে পাঙ্গাশের আধিক্য থাকবে।

বরিশাল মৎস্য অধিদপ্তরের মৎস্য কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল চন্দ্র দাস বলেন, এখন পাঙ্গাশের মৌসুম। তাছাড়া জেলেরা আগের চেয়ে সচেতন হয়েছেন। এখন আর ছোট ফাঁসের জাল দিয়ে পাঙ্গাশের বাচ্চা নিধন করেন না। ইলিশ রক্ষার বিধিনিষেধ কার্যকর হওয়ায় পাঙ্গাশের প্রজনন বেড়েছে।

পোর্টরোড মৎস্য মোকামের সিকদার ফিসের স্বত্ত্বাধিকারী জহির সিকদার বলেন, কার্তিকের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বরিশাল অঞ্চলের মেঘনা ও শাখা নদীতে জেলেদের জালে প্রচুর পাঙ্গাশ ধরা পড়ে। মঙ্গলবার নিষেধাজ্ঞা শেষে আড়তে ইলিশের চেয়ে পাঙ্গাশ বেশি আসছে। দামও একটু কম। পাঙ্গাসের আমদানি এভাবে অব্যাহত থাকলে দাম আরও কমবে। জহির সিকদার জানান, বুধবার ৮-১০ কেজি ওজনের পাঙ্গাশ পাইকারি ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। খুচরা বিক্রি হয়েছে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা দরে।

বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের আড়তদার আরফান বেপারী জানান, বিষখালী ও বলেশ্বর নদে ধরা পড়ছে বিপুল পরিমান পাঙ্গাশ। তিনি বুধবার দেড়শ পিস পাঙ্গাশ ৫০০ টাকা দরে কিনে ঢাকায় চালান করেছেন। পাথরঘাটার বলেশ্বর তীরবর্তী হাজিরখাল গ্রামের জেলে সুলতান হাওলাদার জানান, ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার পর বিষখালী-বলেশ্বরে ইলিশ মিলছে না।

তবে প্রচুর পাঙ্গাশ ধরা পড়ছে। জেলেরা পাঙ্গাশ ধরা পড়ায় খুশি। কারণ দাম ভাল পাচ্ছেন।

image

বরিশাল : পোর্টরোডের আড়তে আড়তে জেলেদের জালে ধরা পড়া মেঘনার পাঙ্গাশ -সংবাদ

আরও খবর
কক্সবাজারে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাসহ গুলিবিদ্ধ ২
‘গত ৫০ বছরে চবিতে প্রশ্ন ফাঁসের রেকর্ড নেই’
চাঁদপুরে কাঙ্খিত ইলিশ না পেয়ে হতাশ জেলেরা
৪২ প্রধানসহ ১২৪ শিক্ষকের পদ শূন্য!
বেকারি উপকরণের মূল্য বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে কারখানা
নিকলীতে মাদকসহ ব্যবসায়ী আটক
সীতাকুন্ডে স্ত্রীকে হত্যা করে আত্মহত্যার চেষ্টা স্বামীর
ভোলা শহরে ৪০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার চুরি
জামিনে এসে মাকে হত্যা ছেলে আটক
দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর কাজ
১৪ শিক্ষার্থীর চুল কর্তন তদন্তে ইউজিসি
প্রথম জয়ের খোঁজে মুখোমুখি বাংলাদেশ-উইন্ডিজ

শুক্রবার, ২৯ অক্টোবর ২০২১ , ১৩ কার্তিক ১৪২৮ ২১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

জালে মিলছে না ইলিশ খায়েশ মিটছে পাঙ্গাশে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, বরিশাল

image

বরিশাল : পোর্টরোডের আড়তে আড়তে জেলেদের জালে ধরা পড়া মেঘনার পাঙ্গাশ -সংবাদ

বরিশাল নগরীর পোর্টরোডের পাইকারী মৎস্য মোকামের আড়তদাররা বলেছেন, গত মঙ্গলবার থেকে ইলিশের ট্রলারে আসছে নদীর পাঙ্গাশ। দুুদিন ধরে পাঙ্গাশ বেশি আসছে মোকামে। ক্রেতারাও ইলিশের বদলে পাঙ্গাশ কিনছেন। জেলেদের বরাত দিয়ে আড়তদাররা বলেন, মেঘনা, আড়িয়াল খাঁ, কালাবদর ও লতা নদীতে এখন ধরা পড়ছে প্রচুর সুস্বাদু পাঙ্গাশ মাছ।

গত বুধবার সকালে পোর্টরোডের মোকামে গিয়ে দেখা যায় খুচরা বিক্রেতারা বড় বড় পাঙ্গাশ সাজিয়ে হাকডাক দিচ্ছেন বিক্রীর জন্য। খুচরা বিক্রেতা ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘অবরোধ শ্যাষ হওয়ার পর থেকে ইলিশের থেকে পাঙ্গাশ আইতেছে বেশি, দামও একটু কম’। পোর্টরোড মোকামের মৎস্য শ্রমিক শফিক বলেন, ইলিশের আড়তদাররা এখন পাঙ্গাশ কেনাবেচা করছেন। একাধিক ইলিশ জেলে জানিয়েছেন, ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে তারা নদীতে জাল পেতে ইলিশের চেয়ে পাঙ্গাশ বেশি পাচ্ছেন।

বুধবার সকালে পোর্টরোডের পরেশ দাসের আড়তে বড় সাইজের ২৮টি পাঙ্গাশ নিয়ে এসেছেন হিজলা উপজেলার মেঘনা তীরবর্তী চলকিল্লার জেলে শামীম ফকির। তিনি বলেন, ‘জাল পাতছিলাম ইলিশের লাইগ্যা, পাইছি ২৮ পিস পাঙ্গাশ। কার্তিক মাসের নিশির (শিশির) খাইতে পাঙ্গাশ মাছ চক (ঝাক) বাইন্দা নদীতে ভাসে’।

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিসারিজ, অ্যাকোয়াকালচার এ্যান্ড মেরিন সাইন্স অনুষদের সহকারী অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী বলেন, ইলিশ ব্যবস্থাপনায় সরকারের নানা উদ্যোগের ফলে নদ-নদীতে পাঙ্গাশ সহ অন্যান্য মাছের সুরক্ষা এবং প্রজনন বেড়েছে। শীতের শুরুতে পাঙ্গাশ মাছ ধরা পড়ে। ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার পর মেঘনা সহ বিভিন্ন শাখা নদীতে ইলিশের পাশাপাশি প্রচুর পাঙ্গাশ ধরা পড়ছে। আরও একমাস নদনদীতে পাঙ্গাশের আধিক্য থাকবে।

বরিশাল মৎস্য অধিদপ্তরের মৎস্য কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল চন্দ্র দাস বলেন, এখন পাঙ্গাশের মৌসুম। তাছাড়া জেলেরা আগের চেয়ে সচেতন হয়েছেন। এখন আর ছোট ফাঁসের জাল দিয়ে পাঙ্গাশের বাচ্চা নিধন করেন না। ইলিশ রক্ষার বিধিনিষেধ কার্যকর হওয়ায় পাঙ্গাশের প্রজনন বেড়েছে।

পোর্টরোড মৎস্য মোকামের সিকদার ফিসের স্বত্ত্বাধিকারী জহির সিকদার বলেন, কার্তিকের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বরিশাল অঞ্চলের মেঘনা ও শাখা নদীতে জেলেদের জালে প্রচুর পাঙ্গাশ ধরা পড়ে। মঙ্গলবার নিষেধাজ্ঞা শেষে আড়তে ইলিশের চেয়ে পাঙ্গাশ বেশি আসছে। দামও একটু কম। পাঙ্গাসের আমদানি এভাবে অব্যাহত থাকলে দাম আরও কমবে। জহির সিকদার জানান, বুধবার ৮-১০ কেজি ওজনের পাঙ্গাশ পাইকারি ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। খুচরা বিক্রি হয়েছে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা দরে।

বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের আড়তদার আরফান বেপারী জানান, বিষখালী ও বলেশ্বর নদে ধরা পড়ছে বিপুল পরিমান পাঙ্গাশ। তিনি বুধবার দেড়শ পিস পাঙ্গাশ ৫০০ টাকা দরে কিনে ঢাকায় চালান করেছেন। পাথরঘাটার বলেশ্বর তীরবর্তী হাজিরখাল গ্রামের জেলে সুলতান হাওলাদার জানান, ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার পর বিষখালী-বলেশ্বরে ইলিশ মিলছে না।

তবে প্রচুর পাঙ্গাশ ধরা পড়ছে। জেলেরা পাঙ্গাশ ধরা পড়ায় খুশি। কারণ দাম ভাল পাচ্ছেন।