কয়লা প্রকল্প হলে এশিয়ার অন্যতম দূষণকারী হবে বাংলাদেশ : টিআইবি

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বলছে, সরকার রামপাল, মাতারবাড়ী, বাঁশখালীসহ দেশের মোট ১৯টি বড় কয়লা ও এলএনজিভিত্তিক প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে উপকূলীয় জেলাগুলোতে দেড় লাখ মানুষের জীবন-জীবিকা আরও হুমকির মুখে পড়বে। সেইসঙ্গে পরিবেশেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ এশিয়ার অন্যতম কয়লা দূষণকারী দেশে রূপান্তরিত হবে। যা কার্বন নিঃসরণ কমানো সংক্রান্ত সরকারের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গীকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। টিআইবির গবেষণায় এমন আশঙ্কাই প্রকাশ করা হয়েছে।

এছাড়া, বাংলাদেশ সংশোধিত ইন্টেন্ডেড ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশন (আইএনডিসি) জমা দিলেও সেখানে কার্বন হ্রাসের বাড়তি কোন কার্যক্রম ও পরিকল্পনা করা হয়নি। গতকাল সংস্থাটির পক্ষ থেকে ‘আসন্ন কপ-২৬ জলবায়ু সম্মেলন উপলক্ষে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) অবস্থান ও সুপারিশপত্র’ প্রকাশের জন্য আয়োজিত ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য উঠে আসে।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, জীবাশ্ম জ্বালানি বৈশ্বিক মোট কার্বনের তিন-চতুর্থাংশ নিঃসরণ করে, যা বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধির জন্য দায়ী। ইউরোপের ৫০টি দেশ ২০৫০ সালের মধ্যে ‘নেট-জিরো’ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং সংশোধিত আইএনডিসি বাস্তবায়নের ঘোষণা দিলেও তারা ভারী শিল্পগুলো যেমন- পরিবহন, ইস্পাত ও ভারী শিল্পখাত থেকে অপর্যাপ্ত কার্বন নিঃসরণ কমানোর পরিকল্পনা দিয়েছে। তাদের দেয়া সংশোধিত প্রতিশ্রুতি কার্বন হ্রাসে বৈশ্বিক মোট ঘাটতির মাত্র ২০ শতাংশ পুষিয়ে দিতে পারবে। সৌদি আরব, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও ভারতসহ প্রভাবশালী দেশগুলো দ্রুত সময়ে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার হ্রাসের সরাসরি বিরোধিতা করছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ সংশোধিত আইএনডিসি জমা দিলেও সেখানে কার্বন হ্রাসের বাড়তি কোন কার্যক্রম ও পরিকল্পনা দেয়নি। প্রস্তাবিত ১০টি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নিলেও নতুন কয়লা প্রকল্প গ্রহণ বন্ধের ঘোষণা সরকার দেয়নি। রামপাল, মাতারবাড়ী, বাঁশখালী প্রকল্পসহ মোট ১৯টি কয়লা ও এলএনজিভিত্তিক প্রকল্প বাস্তবায়নের বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৬৩ গুণ বাড়বে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে বছরে ১১৫ মিলিয়ন টন বাড়তি কার্বন ডাইঅক্সাইড নিঃসরণ করবে। ফলে বাংলাদেশ এশিয়ার অন্যতম কয়লা দূষণকারী দেশে রূপান্তরিত হবে, যা কার্বন নিঃসরণ কমানো সংক্রান্ত সরকারের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গীকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা ঠিক করতে ৩১ অক্টোবর ২০২১ যুক্তরাজ্যের গ্লাসগোতে শুরু হতে যাচ্ছে বৈশ্বিক জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৬। সম্মেলনকে প্যারিস চুক্তিপরবর্তী সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জলবায়ু সম্মেলন হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। ছয় বছর আগে প্রাক-শিল্পায়ন সময় থেকে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার জন্য ১৯৬টি দেশ প্যারিস চুক্তিতে সম্মত হয়। এর মধ্যেই তাপমাত্রা প্রাক-শিল্প যুগ থেকে ১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। এতে বিশ্বব্যাপী বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড়, দাবানলসহ নানা প্রাকৃতিক বিপর্যয় বেড়েছে অস্বাভাবিকভাবে।

প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী শিল্পোন্নত দেশগুলোকে প্রতিবছর ক্ষতিপূরণ বাবদ ১০০ বিলিয়ন ডলার দেয়ার কথা থাকলেও, তারা তা দিচ্ছে না। এর জের ধরে জলবায়ুর পরিবর্তনের বড় শিকার বাংলাদেশও ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে না। টিআইবি বলছে, প্যারিস চুক্তিপরবর্তী সময়ে এই বিষয়গুলো নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছানোর জন্য এই সম্মেলনই শেষ সুযোগ।

সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, শিল্পোন্নত দেশগুলো কীভাবে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎসে যাবে, সে জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। এটি করতে অনেকেই ব্যর্থ হচ্ছে। অন্যদিকে উন্নত দেশগুলোকে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে থাকা দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রতিবছর ১০০ বিলিয়ন ডলার দেয়ার কথা রয়েছে। সেই অর্থ যথাযথভাবে ছাড় করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। তিনি মনে করেন, পরিবেশ সুরক্ষা করার জন্য সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে। এই সম্মেলনে বাংলাদেশ বেশি সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে আসন্ন কপ-২৬ জলবায়ু সম্মেলনে কয়লাভিত্তিক জ্বালানি ব্যবহার বন্ধ, নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসার, প্রতিশ্রুত জলবায়ু অর্থায়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতের জন্য মোট ১৪টি দাবি তুলে ধরেছে টিআইবি। সংস্থাটির পক্ষ থেকে করা দাবিগুলো হলো- জলবায়ু বিষয়ক নীতি নির্ধারণে জীবাশ্ম জ্বালানি কোম্পানিগুলোর অনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে, ২০৫০ সালের মধ্যে ‘নেট জিরো’ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আইএনডিসিসহ প্রশমন বিষয়ক সব কার্যক্রমে উন্নত দেশগুলোর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে, ২০৫০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে শতভাগ জ্বালানি উৎপাদনে উন্নত দেশগুলোকে পর্যাপ্ত জলবায়ু তহবিল ও প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং কারিগরি সহায়তা প্রদানে সিভিএফ-এর পক্ষ থেকে সমন্বিতভাবে দাবি উত্থাপন করতে হবে, দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় একটি ক্ষয়ক্ষতি বিষয়ক আলাদা তহবিল গঠন করতে হবে।

এছাড়া বাংলাদেশের জন্য বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশের মধ্যে রয়েছে, বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎপাদন বৃদ্ধিতে এখাতের জন্য স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি সময়াবদ্ধ পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। সুনির্দিষ্ট রূপরখা প্রণয়ন করে প্রশমন বিষয়ক কার্যক্রম স্বচ্ছতার সঙ্গে বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশেষ করে, এখাতে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি সহায়ক নীতিমালা প্রণয়ন ও অবিলম্বে সেগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে।

শুক্রবার, ২৯ অক্টোবর ২০২১ , ১৩ কার্তিক ১৪২৮ ২১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

কয়লা প্রকল্প হলে এশিয়ার অন্যতম দূষণকারী হবে বাংলাদেশ : টিআইবি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বলছে, সরকার রামপাল, মাতারবাড়ী, বাঁশখালীসহ দেশের মোট ১৯টি বড় কয়লা ও এলএনজিভিত্তিক প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে উপকূলীয় জেলাগুলোতে দেড় লাখ মানুষের জীবন-জীবিকা আরও হুমকির মুখে পড়বে। সেইসঙ্গে পরিবেশেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ এশিয়ার অন্যতম কয়লা দূষণকারী দেশে রূপান্তরিত হবে। যা কার্বন নিঃসরণ কমানো সংক্রান্ত সরকারের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গীকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। টিআইবির গবেষণায় এমন আশঙ্কাই প্রকাশ করা হয়েছে।

এছাড়া, বাংলাদেশ সংশোধিত ইন্টেন্ডেড ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশন (আইএনডিসি) জমা দিলেও সেখানে কার্বন হ্রাসের বাড়তি কোন কার্যক্রম ও পরিকল্পনা করা হয়নি। গতকাল সংস্থাটির পক্ষ থেকে ‘আসন্ন কপ-২৬ জলবায়ু সম্মেলন উপলক্ষে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) অবস্থান ও সুপারিশপত্র’ প্রকাশের জন্য আয়োজিত ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য উঠে আসে।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, জীবাশ্ম জ্বালানি বৈশ্বিক মোট কার্বনের তিন-চতুর্থাংশ নিঃসরণ করে, যা বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধির জন্য দায়ী। ইউরোপের ৫০টি দেশ ২০৫০ সালের মধ্যে ‘নেট-জিরো’ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং সংশোধিত আইএনডিসি বাস্তবায়নের ঘোষণা দিলেও তারা ভারী শিল্পগুলো যেমন- পরিবহন, ইস্পাত ও ভারী শিল্পখাত থেকে অপর্যাপ্ত কার্বন নিঃসরণ কমানোর পরিকল্পনা দিয়েছে। তাদের দেয়া সংশোধিত প্রতিশ্রুতি কার্বন হ্রাসে বৈশ্বিক মোট ঘাটতির মাত্র ২০ শতাংশ পুষিয়ে দিতে পারবে। সৌদি আরব, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও ভারতসহ প্রভাবশালী দেশগুলো দ্রুত সময়ে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার হ্রাসের সরাসরি বিরোধিতা করছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ সংশোধিত আইএনডিসি জমা দিলেও সেখানে কার্বন হ্রাসের বাড়তি কোন কার্যক্রম ও পরিকল্পনা দেয়নি। প্রস্তাবিত ১০টি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নিলেও নতুন কয়লা প্রকল্প গ্রহণ বন্ধের ঘোষণা সরকার দেয়নি। রামপাল, মাতারবাড়ী, বাঁশখালী প্রকল্পসহ মোট ১৯টি কয়লা ও এলএনজিভিত্তিক প্রকল্প বাস্তবায়নের বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৬৩ গুণ বাড়বে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে বছরে ১১৫ মিলিয়ন টন বাড়তি কার্বন ডাইঅক্সাইড নিঃসরণ করবে। ফলে বাংলাদেশ এশিয়ার অন্যতম কয়লা দূষণকারী দেশে রূপান্তরিত হবে, যা কার্বন নিঃসরণ কমানো সংক্রান্ত সরকারের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গীকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা ঠিক করতে ৩১ অক্টোবর ২০২১ যুক্তরাজ্যের গ্লাসগোতে শুরু হতে যাচ্ছে বৈশ্বিক জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৬। সম্মেলনকে প্যারিস চুক্তিপরবর্তী সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জলবায়ু সম্মেলন হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। ছয় বছর আগে প্রাক-শিল্পায়ন সময় থেকে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার জন্য ১৯৬টি দেশ প্যারিস চুক্তিতে সম্মত হয়। এর মধ্যেই তাপমাত্রা প্রাক-শিল্প যুগ থেকে ১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। এতে বিশ্বব্যাপী বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড়, দাবানলসহ নানা প্রাকৃতিক বিপর্যয় বেড়েছে অস্বাভাবিকভাবে।

প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী শিল্পোন্নত দেশগুলোকে প্রতিবছর ক্ষতিপূরণ বাবদ ১০০ বিলিয়ন ডলার দেয়ার কথা থাকলেও, তারা তা দিচ্ছে না। এর জের ধরে জলবায়ুর পরিবর্তনের বড় শিকার বাংলাদেশও ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে না। টিআইবি বলছে, প্যারিস চুক্তিপরবর্তী সময়ে এই বিষয়গুলো নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছানোর জন্য এই সম্মেলনই শেষ সুযোগ।

সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, শিল্পোন্নত দেশগুলো কীভাবে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎসে যাবে, সে জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। এটি করতে অনেকেই ব্যর্থ হচ্ছে। অন্যদিকে উন্নত দেশগুলোকে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে থাকা দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রতিবছর ১০০ বিলিয়ন ডলার দেয়ার কথা রয়েছে। সেই অর্থ যথাযথভাবে ছাড় করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। তিনি মনে করেন, পরিবেশ সুরক্ষা করার জন্য সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে। এই সম্মেলনে বাংলাদেশ বেশি সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে আসন্ন কপ-২৬ জলবায়ু সম্মেলনে কয়লাভিত্তিক জ্বালানি ব্যবহার বন্ধ, নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসার, প্রতিশ্রুত জলবায়ু অর্থায়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতের জন্য মোট ১৪টি দাবি তুলে ধরেছে টিআইবি। সংস্থাটির পক্ষ থেকে করা দাবিগুলো হলো- জলবায়ু বিষয়ক নীতি নির্ধারণে জীবাশ্ম জ্বালানি কোম্পানিগুলোর অনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে, ২০৫০ সালের মধ্যে ‘নেট জিরো’ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আইএনডিসিসহ প্রশমন বিষয়ক সব কার্যক্রমে উন্নত দেশগুলোর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে, ২০৫০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে শতভাগ জ্বালানি উৎপাদনে উন্নত দেশগুলোকে পর্যাপ্ত জলবায়ু তহবিল ও প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং কারিগরি সহায়তা প্রদানে সিভিএফ-এর পক্ষ থেকে সমন্বিতভাবে দাবি উত্থাপন করতে হবে, দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় একটি ক্ষয়ক্ষতি বিষয়ক আলাদা তহবিল গঠন করতে হবে।

এছাড়া বাংলাদেশের জন্য বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশের মধ্যে রয়েছে, বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎপাদন বৃদ্ধিতে এখাতের জন্য স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি সময়াবদ্ধ পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। সুনির্দিষ্ট রূপরখা প্রণয়ন করে প্রশমন বিষয়ক কার্যক্রম স্বচ্ছতার সঙ্গে বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশেষ করে, এখাতে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি সহায়ক নীতিমালা প্রণয়ন ও অবিলম্বে সেগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে।