১২-১৭ বছরের শিক্ষার্থীদের টিকা ১ নভেম্বর থেকে

স্কুল শিক্ষার্থীদের দেয়া হবে ফাইজারের টিকা, প্রতিদিন দেয়া হবে ৪০ হাজার ডোজ

আগামী ১ নভেম্বর থেকে ঢাকায় ১২-১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের করোনার টিকা দেয়ার কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। গতকাল মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান। প্রথমে ঢাকার শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়া হবে। এ জন্য ১২টি কেন্দ্র ঠিক করা হয়েছে এবং সেগুলো শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কেন্দ্র বলে জানান তিনি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘১২-১৭ বছরের শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার জন্য তালিকা শেষের দিকে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় আমাদের তালিকা দিয়েছে, সেই তালিকা আমরা আইসিটি মন্ত্রণালয়কে দিয়েছি। উনারা আজকে আমাদের জানিয়েছেন, সবকিছু সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন করে দিয়েছেন।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ‘স্কুলশিক্ষার্থীদের ফাইজারের টিকা দেয়া হবে। প্রথমে ঢাকায় ১২টি কেন্দ্র থেকে টিকা দেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কেন্দ্র যেন আরও বাড়ানো হয়। আমরা সেদিকে নজর দেব। ঢাকার বাইরে স্কুলশিক্ষার্থীদের কবে থেকে টিকা কার্যক্রম শুরু করা হবে এমন প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকার বাইরে টিকা কার্যক্রম শুরু করতে একটু সময় লাগবে। আমরা তো সবকিছু করতে পারি না। শিক্ষা মন্ত্রণালয় তালিকা তৈরি করছে। সেই তালিকা আমরা আবার আইসিটি মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। উনারা নিবন্ধন করার পর আমাদের কার্যক্রম।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিটি জেলায় টিকা দেয়ার কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। যেখানে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা নেই, সেখানে শীততাপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হবে।’

দৈনিক কত সংখ্যক শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়া হবে এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এখন যেটা হাতে নিয়েছি, তাতে প্রতিদিন প্রায় ৪০ হাজার টিকা দেয়া যাবে। টিকা যতদিন মজুত থাকবে, এ কার্যক্রম চালু থাকবে। আমাদের কাছে যথেষ্ট টিকা মজুত আছে।’ গতকাল রাতে সিনোফার্মের আরও ৫৫ লাখ টিকা এসেছে। বর্তমানে দুই কোটি ডোজ করোনার টিকা সরকারের হাতে রয়েছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, নভেম্বরে আরও ৪৫ লাখ টিকা আসবে।

গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রীপরিষদ সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, শিক্ষার্থীদের টিকা দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঢাকায় ১২টি স্থান নির্দিষ্ট করেছে। আপাতত সেখান থেকেই শুরু হবে এ কার্যক্রম। এর সঙ্গে পরবর্তী সময়ে আরও যুক্ত হবে সিটি করপোরেশনের কমিউনিটি সেন্টারগুলো। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘ঢাকায় শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ৩ লাখ ৪৪ হাজার। এর মধ্যে ৩ লাখ শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়েছে।’

এর আগে, গত ১০ অক্টোব রোববার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছিলেন, তারা ১২-১৭ বছর বয়সী স্কুলশিক্ষার্থীদের এই টিকা দেয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন। শুরুতে দেশের ৩০ লাখ ছেলেমেয়েকে এই টিকা দেয়া হবে। ওইদিন জানানো হয়, জন্মনিবন্ধন সনদের মাধ্যমে শিশুরা এই টিকার জন্য নিবন্ধন করতে পারবে।

বাংলাদেশে এখন ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের টিকা দেয়া হচ্ছে। ১৮ বছরের কম বয়সীদের টিকা দেয়ার ব্যাপারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সরাসরি কোন নির্দেশনা নেই। সেপ্টেম্বরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সময় অপ্রাপ্তবয়সীদের টিকা দেয়ার ইস্যুটি সামনে আসে। সেসময় সরকার বলেছিল বিষয়টি নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে তারা। সেদিনের ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছি আমরা।’ ওইদিন তিনি বলেছেন, ‘১২-১৭ বছরের শিক্ষার্থীদের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করার কথা বলে যখন জানতে চেয়েছি, তখন উনি বললেন, সংক্রমণ রোধে এবং কোমরবিডিটি রয়েছে এমন ছেলেমেয়েদের টিকা দিতে পারেন আপনারা।’

শুক্রবার, ২৯ অক্টোবর ২০২১ , ১৩ কার্তিক ১৪২৮ ২১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

১২-১৭ বছরের শিক্ষার্থীদের টিকা ১ নভেম্বর থেকে

স্কুল শিক্ষার্থীদের দেয়া হবে ফাইজারের টিকা, প্রতিদিন দেয়া হবে ৪০ হাজার ডোজ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

আগামী ১ নভেম্বর থেকে ঢাকায় ১২-১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের করোনার টিকা দেয়ার কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। গতকাল মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান। প্রথমে ঢাকার শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়া হবে। এ জন্য ১২টি কেন্দ্র ঠিক করা হয়েছে এবং সেগুলো শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কেন্দ্র বলে জানান তিনি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘১২-১৭ বছরের শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার জন্য তালিকা শেষের দিকে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় আমাদের তালিকা দিয়েছে, সেই তালিকা আমরা আইসিটি মন্ত্রণালয়কে দিয়েছি। উনারা আজকে আমাদের জানিয়েছেন, সবকিছু সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন করে দিয়েছেন।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ‘স্কুলশিক্ষার্থীদের ফাইজারের টিকা দেয়া হবে। প্রথমে ঢাকায় ১২টি কেন্দ্র থেকে টিকা দেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কেন্দ্র যেন আরও বাড়ানো হয়। আমরা সেদিকে নজর দেব। ঢাকার বাইরে স্কুলশিক্ষার্থীদের কবে থেকে টিকা কার্যক্রম শুরু করা হবে এমন প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকার বাইরে টিকা কার্যক্রম শুরু করতে একটু সময় লাগবে। আমরা তো সবকিছু করতে পারি না। শিক্ষা মন্ত্রণালয় তালিকা তৈরি করছে। সেই তালিকা আমরা আবার আইসিটি মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। উনারা নিবন্ধন করার পর আমাদের কার্যক্রম।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিটি জেলায় টিকা দেয়ার কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। যেখানে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা নেই, সেখানে শীততাপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হবে।’

দৈনিক কত সংখ্যক শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়া হবে এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এখন যেটা হাতে নিয়েছি, তাতে প্রতিদিন প্রায় ৪০ হাজার টিকা দেয়া যাবে। টিকা যতদিন মজুত থাকবে, এ কার্যক্রম চালু থাকবে। আমাদের কাছে যথেষ্ট টিকা মজুত আছে।’ গতকাল রাতে সিনোফার্মের আরও ৫৫ লাখ টিকা এসেছে। বর্তমানে দুই কোটি ডোজ করোনার টিকা সরকারের হাতে রয়েছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, নভেম্বরে আরও ৪৫ লাখ টিকা আসবে।

গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রীপরিষদ সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, শিক্ষার্থীদের টিকা দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঢাকায় ১২টি স্থান নির্দিষ্ট করেছে। আপাতত সেখান থেকেই শুরু হবে এ কার্যক্রম। এর সঙ্গে পরবর্তী সময়ে আরও যুক্ত হবে সিটি করপোরেশনের কমিউনিটি সেন্টারগুলো। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘ঢাকায় শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ৩ লাখ ৪৪ হাজার। এর মধ্যে ৩ লাখ শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়েছে।’

এর আগে, গত ১০ অক্টোব রোববার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছিলেন, তারা ১২-১৭ বছর বয়সী স্কুলশিক্ষার্থীদের এই টিকা দেয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন। শুরুতে দেশের ৩০ লাখ ছেলেমেয়েকে এই টিকা দেয়া হবে। ওইদিন জানানো হয়, জন্মনিবন্ধন সনদের মাধ্যমে শিশুরা এই টিকার জন্য নিবন্ধন করতে পারবে।

বাংলাদেশে এখন ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের টিকা দেয়া হচ্ছে। ১৮ বছরের কম বয়সীদের টিকা দেয়ার ব্যাপারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সরাসরি কোন নির্দেশনা নেই। সেপ্টেম্বরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সময় অপ্রাপ্তবয়সীদের টিকা দেয়ার ইস্যুটি সামনে আসে। সেসময় সরকার বলেছিল বিষয়টি নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে তারা। সেদিনের ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছি আমরা।’ ওইদিন তিনি বলেছেন, ‘১২-১৭ বছরের শিক্ষার্থীদের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করার কথা বলে যখন জানতে চেয়েছি, তখন উনি বললেন, সংক্রমণ রোধে এবং কোমরবিডিটি রয়েছে এমন ছেলেমেয়েদের টিকা দিতে পারেন আপনারা।’