তিন জেলায় হামলা ভাঙচুর অস্ত্রের মহড়া

রূপগঞ্জ

প্রতিনিধি, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)

রূপগঞ্জের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা ভাঙচুর ও পোস্টার ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া দিয়ে এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি করার অভিযোগও উঠেছে। গত বুধবার রাত ১টার দিকে উপজেলার ভোলাব ইউনিয়নের চারিতালুক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থক মনিরুল ইসলাম সবুজ অভিযোগ করেন, আলমগীর হোসেন টিটু আনারস প্রতীকে ভোলাব ইউনিয়নে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নৌকা প্রতীক পেয়েছেন তায়েবুর রহমান। টিটুর নির্বাচন করায় সবুজকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা বিভিন্ন সময় হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল।

গত বুধবার রাত ১টার দিকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মোটরসাইকেলে করে সবুজের চারিতালুক এলাকার বসতবাড়িতে হামলা ভাঙচুর চালিয়ে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেন। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়। এসময় টিটুর পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়।

এর আগে রাত ১২টার দিকে টিটুর দুই সমর্থক রিপন ও নাঈমকে হকস্টিক ও ইট দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার দুপুরেও তারা ভোলাব ইউনিয়নের সামনে আতলাপুর বাজারে নৌকা প্রতীকের সমর্থকরা অস্ত্রের মহড়া দিয়েছে। এ ব্যাপারে তায়েবুর রহমান বলেন, এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি। আমাকে হয়রানি করার জন্য এরকম করছেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাহ্ নূসরাত জাহান বলেন, আলমগীর হোসেন টিটু বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। আমরা ভ্রাম্যমাণ আদালত পাঠিয়ে ব্যবস্থা নিব। উপজেলা নির্বাচন অফিসার মাহাবুবুর রহমান বলেন, কোন হামলা ভাঙচুরের অভিযোগ পাইনি। তবে পোষ্টার ছেড়ার একটি অভিযোগ পেয়েছি মুঠোফোনে। যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।

ভোলা

জেলা বার্তা পরিবেশক, ভোলা

ভোলার দৌলতখান উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নে ইউপি নির্বাচন নিয়ে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর শক্তির মহড়া চলছে। আওয়ামী লীগ অফিস ও বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংসদে হামলা চালিয়ে আসবাবপত্রের পাশাপাশি, বঙ্গবন্ধুর ছবি, প্রধানমন্ত্রীর ছবি, এমপি মুকুলের ছবি ভাঙচুর ঘটনাকে দুই ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভোটের মহড়া বলে উল্লেখ করেন স্থানীয়রা। এ নিয়ে দুই প্রার্থী গত বৃহস্পতিবার একে অপরকে দোষারোপ করে সভা সমাবেশ করেছেন। নির্বাচনী সুবিধা নিতে এমন ঘটনা সাজানোরও অভিযোগ তোলা হয়। গত বৃহস্পতিবার এ ঘটনার বিচার দাবিতে ইউনিয়নের পাটোয়ারি বাজারে প্রতিবাদ সভা করেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন নান্নু (নান্নু ডাক্তার)। তার দাবি, প্রতিপক্ষ আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী জামাল উদ্দিন ছকেটের নেতৃত্বে গত বুধবার রাত সাড়ে ৮টায় হামলা চালানো হয়। হামলায় অংশ নেয় হোসেন মাল, সাদ্দাম মাল, মফিজ মাঝিসহ ৬০/৭০ জন। এ সময় ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী আলাউদ্দিনের ঘর লুট করা হয়। রাতভর অস্ত্র নিয়ে ছকেটের লোকজন স্পিডবোট নিয়ে নদীতে অবস্থান করছিল।

নান্নু ডাক্তারের এমন অভিযোগ অস্বীকার করে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী জামাল উদ্দিন ছকেট জানান, রাত ৮টা থেকে তিনি ভোলা শহরে পোস্টার ছাপানোর জন্য অবস্থান করছিলেন। প্রেসের মালিক ভোলা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক নজরুল ইসলাম গোলদার। ফলে তার নেতৃত্বে এমন হামলা হয়েছে যারা অভিযোগ তুলেছেন, মূলত তারাই অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়ে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। নির্বাচনী অফিস করার জন্য যে ঘরটি জামাল উদ্দিন ছকেট ভাড়া নিয়েছিলেন, ওই ঘরটি দখল করেন নান্নু ডাক্তারের লোকজন। একই সময় ওই গ্রুপ বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংসদে হামলা ও ছবি ভাঙচুর করে।

এদিকে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী ঘটনার বিচার দাবি করেন। একই সঙ্গে সুষ্ঠু নির্বাচন দাবি করেন তারা।

এ ছাড়া গত বুধবার রাতে একই উপজেলার চরখলিফা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী রায়হাদ ও ইয়ার হোসেন গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে কম পক্ষে ৪০ জন আহত হয়েছেন। এতের ভোলা ও দৌলতখান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

মাদারীপুর

জেলা বার্তা পরিবেশক, মাদারীপুর

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর ও নেতা-কর্মীদের উপর হামলার অভিযোগ এনেছেন আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী। গতকাল শুক্রবার সকালে আলীনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়।

লিখিত বক্তব্যে প্রার্থী সাহীদ পারভেজ বলেন, আমার নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর ও নেতাকর্মীদের ওপর স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হাফিজুর রহমান মিলনের শতাধিক সর্মক হামলা চালায়। আমার নির্বাচনী অফিস, ব্যানারসহ চেয়ার ভাঙচুর করেন হামলাকারীরা। হামলায় বেশ কিছু নেতাকর্মী আহত হন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মাষ্টার, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান হাওলাদার, পৌর কাউন্সিলর আসাদুজ্জান লাবু তালুকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক মনির হোসেন, যুবলীগের সভাপতি ইলিয়াস হাওলাদার, কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হাওলাদার ও মনির সরদার প্রমুখ।

শনিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২১ , ১৪ কার্তিক ১৪২৮ ২২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

ইউপি নির্বাচনে বাড়ছে সহিংসতা

তিন জেলায় হামলা ভাঙচুর অস্ত্রের মহড়া

রূপগঞ্জ

প্রতিনিধি, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)

রূপগঞ্জের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা ভাঙচুর ও পোস্টার ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া দিয়ে এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি করার অভিযোগও উঠেছে। গত বুধবার রাত ১টার দিকে উপজেলার ভোলাব ইউনিয়নের চারিতালুক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থক মনিরুল ইসলাম সবুজ অভিযোগ করেন, আলমগীর হোসেন টিটু আনারস প্রতীকে ভোলাব ইউনিয়নে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নৌকা প্রতীক পেয়েছেন তায়েবুর রহমান। টিটুর নির্বাচন করায় সবুজকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা বিভিন্ন সময় হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল।

গত বুধবার রাত ১টার দিকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মোটরসাইকেলে করে সবুজের চারিতালুক এলাকার বসতবাড়িতে হামলা ভাঙচুর চালিয়ে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেন। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়। এসময় টিটুর পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়।

এর আগে রাত ১২টার দিকে টিটুর দুই সমর্থক রিপন ও নাঈমকে হকস্টিক ও ইট দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার দুপুরেও তারা ভোলাব ইউনিয়নের সামনে আতলাপুর বাজারে নৌকা প্রতীকের সমর্থকরা অস্ত্রের মহড়া দিয়েছে। এ ব্যাপারে তায়েবুর রহমান বলেন, এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি। আমাকে হয়রানি করার জন্য এরকম করছেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাহ্ নূসরাত জাহান বলেন, আলমগীর হোসেন টিটু বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। আমরা ভ্রাম্যমাণ আদালত পাঠিয়ে ব্যবস্থা নিব। উপজেলা নির্বাচন অফিসার মাহাবুবুর রহমান বলেন, কোন হামলা ভাঙচুরের অভিযোগ পাইনি। তবে পোষ্টার ছেড়ার একটি অভিযোগ পেয়েছি মুঠোফোনে। যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।

ভোলা

জেলা বার্তা পরিবেশক, ভোলা

ভোলার দৌলতখান উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নে ইউপি নির্বাচন নিয়ে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর শক্তির মহড়া চলছে। আওয়ামী লীগ অফিস ও বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংসদে হামলা চালিয়ে আসবাবপত্রের পাশাপাশি, বঙ্গবন্ধুর ছবি, প্রধানমন্ত্রীর ছবি, এমপি মুকুলের ছবি ভাঙচুর ঘটনাকে দুই ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভোটের মহড়া বলে উল্লেখ করেন স্থানীয়রা। এ নিয়ে দুই প্রার্থী গত বৃহস্পতিবার একে অপরকে দোষারোপ করে সভা সমাবেশ করেছেন। নির্বাচনী সুবিধা নিতে এমন ঘটনা সাজানোরও অভিযোগ তোলা হয়। গত বৃহস্পতিবার এ ঘটনার বিচার দাবিতে ইউনিয়নের পাটোয়ারি বাজারে প্রতিবাদ সভা করেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন নান্নু (নান্নু ডাক্তার)। তার দাবি, প্রতিপক্ষ আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী জামাল উদ্দিন ছকেটের নেতৃত্বে গত বুধবার রাত সাড়ে ৮টায় হামলা চালানো হয়। হামলায় অংশ নেয় হোসেন মাল, সাদ্দাম মাল, মফিজ মাঝিসহ ৬০/৭০ জন। এ সময় ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী আলাউদ্দিনের ঘর লুট করা হয়। রাতভর অস্ত্র নিয়ে ছকেটের লোকজন স্পিডবোট নিয়ে নদীতে অবস্থান করছিল।

নান্নু ডাক্তারের এমন অভিযোগ অস্বীকার করে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী জামাল উদ্দিন ছকেট জানান, রাত ৮টা থেকে তিনি ভোলা শহরে পোস্টার ছাপানোর জন্য অবস্থান করছিলেন। প্রেসের মালিক ভোলা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক নজরুল ইসলাম গোলদার। ফলে তার নেতৃত্বে এমন হামলা হয়েছে যারা অভিযোগ তুলেছেন, মূলত তারাই অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়ে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। নির্বাচনী অফিস করার জন্য যে ঘরটি জামাল উদ্দিন ছকেট ভাড়া নিয়েছিলেন, ওই ঘরটি দখল করেন নান্নু ডাক্তারের লোকজন। একই সময় ওই গ্রুপ বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংসদে হামলা ও ছবি ভাঙচুর করে।

এদিকে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী ঘটনার বিচার দাবি করেন। একই সঙ্গে সুষ্ঠু নির্বাচন দাবি করেন তারা।

এ ছাড়া গত বুধবার রাতে একই উপজেলার চরখলিফা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী রায়হাদ ও ইয়ার হোসেন গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে কম পক্ষে ৪০ জন আহত হয়েছেন। এতের ভোলা ও দৌলতখান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

মাদারীপুর

জেলা বার্তা পরিবেশক, মাদারীপুর

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর ও নেতা-কর্মীদের উপর হামলার অভিযোগ এনেছেন আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী। গতকাল শুক্রবার সকালে আলীনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়।

লিখিত বক্তব্যে প্রার্থী সাহীদ পারভেজ বলেন, আমার নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর ও নেতাকর্মীদের ওপর স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হাফিজুর রহমান মিলনের শতাধিক সর্মক হামলা চালায়। আমার নির্বাচনী অফিস, ব্যানারসহ চেয়ার ভাঙচুর করেন হামলাকারীরা। হামলায় বেশ কিছু নেতাকর্মী আহত হন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মাষ্টার, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান হাওলাদার, পৌর কাউন্সিলর আসাদুজ্জান লাবু তালুকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক মনির হোসেন, যুবলীগের সভাপতি ইলিয়াস হাওলাদার, কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হাওলাদার ও মনির সরদার প্রমুখ।