পেটে ডিম নিয়ে বরগুনায় ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ

বেশিরভাগের পেটে ডিম নিয়ে বরগুনায় ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষে বরগুনার সাগর ও নদীতে চলছে দেদারসে ইলিশ শিকার। স্থানীয় বাজারগুলো ক্রেতা-বিক্রেতাদের আনাগোনায় জমজমাট।

প্রজনন মৌসুম নিরাপদ রাখতে সরকারঘোষিত ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে বরগুনা জেলা সংলগ্ন সাগর ও বিশখালী, পায়রা ও বলেশ^র নদীতে আবার ইলিশ ধরা শুরু হয়েছে। সোমবার মধ্যরাত থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর জেলেরা ট্রলার ও ইঞ্জিন চালিত নৌকা নিয়ে ফের মাছ শিকারে নেমেছে।

জেলেরা জানায়, আগের তুলনায় জালে এখন অনেক বেশি ইলিশ ধরা পড়ছে। ইলিশের দামও বর্তমানে বাজারে আগের তুলনায় বেশি থাকায় জেলেরা আনন্দিত। তারা বলেন, ইলিশের প্রকৃত মৌসুমে তেমন ইলিশ ধরা না পড়লেও এভাবে ইলিশ ধরা পড়লে পুশিয়ে নেয়া যাবে। তবে কযেকজন জেলে এও জানান, ধরা পড়া বেশিরভাগ মাছেই ডিম পাওয়া যাচ্ছে। এর কারণ হিসেবে তারা বলছেন, যথাসময়ে নিষেধাজ্ঞা না দেয়ায় মা ইলিশ ডিম ছাড়তে পারেনি। তাই শিকার করা প্রতিটি ইলিশের পেটেই ডিম রয়ে গেছে।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজারে প্রচুর ইলিশের সরবরাহ রয়েছে। ক্রেতাও অনেক বেশি। তবে বিক্রি কম হচ্ছে। এজন্য তারা জাটকা ও মাছের পেটে ডিম থাকাকে দায়ী করছেন।

বর্তমানে বরগুনার বাজারে জাটকা প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, ৫০০ থেকে ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৭০০ থেকে ৮৫০ এবং এক কেজি থেকে তার বেশি ওজনের ইলিশ ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিক্রেতা আবদুল মান্নান বলেন, ইলিশে বাজার সয়লাব থাকলেও বেশিরভাগ জাটকা এবং পেটে ডিম রয়েছে। তাই ক্রেতাদের চাহিদাও কম।

বরগুনা বাজারে মাছ কিনতে এসে ওহিদুল ইসলাম ইসলাম বলেন, গতকাল এক কেজি ওজনের একটি ইলিশ তিনি কিনেছেন বাসায় নিয়ে দেখেন পেটভরা ডিম।

সাইফুল ইসলাম রাফিন নামের আরেক ক্রেতা বলেন, আগের তুলনায় ইলিশের দাম অনেক বেশি। আমি দর-দাম করে ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের দুই কেজি ইলিশ কিনেছি ১ হাজার ৭০০ টাকায়।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, খবর পেয়েছি জেলেদের জালে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। গত বছর শীতে নদীতে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ পাওয়া গেছে। সে অনুযায়ী এবার আরও বেশি পরিমাণে ইলিশ ধরা পড়বে বলে আশা করছি।

নিষেধাজ্ঞা মৌসুম শেষেও ইলিশের পেটে ডিম থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রধান প্রজনন মৌসুমের পরও প্রজনন মৌসুম থাকে। অনেক মা ইলিশ এরই মধ্যে প্রজনন করেছে। আবার অনেক ইলিশের পেটে এখনও ডিম রয়েছে। অনেক সময় ইলিশের প্রজননের জন্য প্রধান প্রজনন মৌসুমের পরেও দুই মাস বা তারও বেশি সময় লেগে যেতে পারে।

‘নদীতে বেশিরভাগ মা ইলিশ এখনও প্রজনন করতে পারেনি। প্রজননের জন্য হয়তো আরও কিছুদিন সময় লাগবে। তাই জেলেদের জালে ডিমওয়ালা ইলিশ ধরা পড়ছে।’

শনিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২১ , ১৪ কার্তিক ১৪২৮ ২২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

পেটে ডিম নিয়ে বরগুনায় ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, বরগুনা

image

বেশিরভাগের পেটে ডিম নিয়ে বরগুনায় ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষে বরগুনার সাগর ও নদীতে চলছে দেদারসে ইলিশ শিকার। স্থানীয় বাজারগুলো ক্রেতা-বিক্রেতাদের আনাগোনায় জমজমাট।

প্রজনন মৌসুম নিরাপদ রাখতে সরকারঘোষিত ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে বরগুনা জেলা সংলগ্ন সাগর ও বিশখালী, পায়রা ও বলেশ^র নদীতে আবার ইলিশ ধরা শুরু হয়েছে। সোমবার মধ্যরাত থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর জেলেরা ট্রলার ও ইঞ্জিন চালিত নৌকা নিয়ে ফের মাছ শিকারে নেমেছে।

জেলেরা জানায়, আগের তুলনায় জালে এখন অনেক বেশি ইলিশ ধরা পড়ছে। ইলিশের দামও বর্তমানে বাজারে আগের তুলনায় বেশি থাকায় জেলেরা আনন্দিত। তারা বলেন, ইলিশের প্রকৃত মৌসুমে তেমন ইলিশ ধরা না পড়লেও এভাবে ইলিশ ধরা পড়লে পুশিয়ে নেয়া যাবে। তবে কযেকজন জেলে এও জানান, ধরা পড়া বেশিরভাগ মাছেই ডিম পাওয়া যাচ্ছে। এর কারণ হিসেবে তারা বলছেন, যথাসময়ে নিষেধাজ্ঞা না দেয়ায় মা ইলিশ ডিম ছাড়তে পারেনি। তাই শিকার করা প্রতিটি ইলিশের পেটেই ডিম রয়ে গেছে।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজারে প্রচুর ইলিশের সরবরাহ রয়েছে। ক্রেতাও অনেক বেশি। তবে বিক্রি কম হচ্ছে। এজন্য তারা জাটকা ও মাছের পেটে ডিম থাকাকে দায়ী করছেন।

বর্তমানে বরগুনার বাজারে জাটকা প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, ৫০০ থেকে ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৭০০ থেকে ৮৫০ এবং এক কেজি থেকে তার বেশি ওজনের ইলিশ ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিক্রেতা আবদুল মান্নান বলেন, ইলিশে বাজার সয়লাব থাকলেও বেশিরভাগ জাটকা এবং পেটে ডিম রয়েছে। তাই ক্রেতাদের চাহিদাও কম।

বরগুনা বাজারে মাছ কিনতে এসে ওহিদুল ইসলাম ইসলাম বলেন, গতকাল এক কেজি ওজনের একটি ইলিশ তিনি কিনেছেন বাসায় নিয়ে দেখেন পেটভরা ডিম।

সাইফুল ইসলাম রাফিন নামের আরেক ক্রেতা বলেন, আগের তুলনায় ইলিশের দাম অনেক বেশি। আমি দর-দাম করে ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের দুই কেজি ইলিশ কিনেছি ১ হাজার ৭০০ টাকায়।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, খবর পেয়েছি জেলেদের জালে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। গত বছর শীতে নদীতে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ পাওয়া গেছে। সে অনুযায়ী এবার আরও বেশি পরিমাণে ইলিশ ধরা পড়বে বলে আশা করছি।

নিষেধাজ্ঞা মৌসুম শেষেও ইলিশের পেটে ডিম থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রধান প্রজনন মৌসুমের পরও প্রজনন মৌসুম থাকে। অনেক মা ইলিশ এরই মধ্যে প্রজনন করেছে। আবার অনেক ইলিশের পেটে এখনও ডিম রয়েছে। অনেক সময় ইলিশের প্রজননের জন্য প্রধান প্রজনন মৌসুমের পরেও দুই মাস বা তারও বেশি সময় লেগে যেতে পারে।

‘নদীতে বেশিরভাগ মা ইলিশ এখনও প্রজনন করতে পারেনি। প্রজননের জন্য হয়তো আরও কিছুদিন সময় লাগবে। তাই জেলেদের জালে ডিমওয়ালা ইলিশ ধরা পড়ছে।’