একদিনে বিসিএসসহ ১৩ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পরীক্ষা, বিপাকে পরীক্ষার্থীরা

৪৩তম বিসিএসসহ মোট ১৩টি প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ পরীক্ষা একই দিনে অনুষ্ঠিত হওয়ায় বিপাকে পড়েন পরীক্ষার্থীরা, তার জন্য তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

১৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিসিএস ছাড়াও সকাল ১০টায় পরীক্ষা হয় বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, সাতক্ষীরার বিভিন্ন পদের পরীক্ষা। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ এবং মহিলা ও শিশু-বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পরীক্ষা হয় বেলা সাড়ে ১১টায়। বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের দুটি পদের মৌখিক পরীক্ষা শুরু হয় বেলা আড়াইটায়। এছাড়া শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের পরীক্ষা বেলা ৩টায় ও ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড ও বেবিচকের পরীক্ষা বেলা সাড়ে ৩টায় শুরু হয়।

এর মধ্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, সাতক্ষীরার পরীক্ষা ছাড়া বাকি সব প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ঢাকায়। এর মধ্যে বিআরটিএ’র একটি পদে ব্যবহারিক পরীক্ষা হয়। এর আগে, গত ৮ অক্টোবর একদিনে ১৪ পরীক্ষা ও ২৩ অক্টোবর একদিনে ১৫টি প্রতিষ্ঠানের চাকরির পরীক্ষা ছিল। একই দিনে একাধিক প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা থাকায় বিপাকে পড়তে হচ্ছে পরীক্ষার্থীদের। অনেকে এটি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

একদিনে অনেক পরীক্ষা থাকায় চাকরিপ্রত্যাশীরা বলেন, ‘করোনার সময় অনেক কষ্টে আমরা আবেদন করেছি। আর এখন একদিনে অনেক পরীক্ষা থাকায় দু’তিনটা পরীক্ষা দিতে পারছি না। আমাদের টাকা, সুযোগ দুটোই নষ্ট হচ্ছে। আবার চাকরির বয়সও শেষ হয়ে যাচ্ছে। স্কুলগুলোতো দুপুরের পর ফাঁকা থাকে। সপ্তাহের সাতদিনই পরীক্ষা নেয়া যেতো।’ রংপুর থেকে পরীক্ষা দিতে ঢাকায় এসেছিলেন আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘সকালে একটা পরীক্ষা দিলাম। এখন আরেকটা দেব। প্রতিষ্ঠানগুলো চাইলে বিভাগীয় পর্যায়ে নিয়োগ পরীক্ষাগুলো নিতে পারতো। একদিনে অনেক পরীক্ষা থাকায় বাধ্য হয়েই দু-একটা দিতে হচ্ছে। কিন্তু সবগুলোরই আবেদন ফি তো পরিশোধ করতে হয়েছে।’ তবে পরীক্ষা জট কমাতে আগের ঘোষিত সময় অনুযায়ী এই মুহূর্তে এভাবে পরীক্ষা নেয়া ছাড়া উপায় নেই বলে জানাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। সেইসময় জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘদিন করোনাভাইরাস সৃষ্ট মহামারীর কারণে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ আটকে থাকায় এখন সাপ্তাহিক বন্ধের দিনগুলোতে একই সঙ্গে একাধিক নিয়োগ পরীক্ষা নিতে হচ্ছে। চাকরিপ্রার্থীদের আপাতত একটু ছাড় দিয়ে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।

বিসিএসএ প্রায় সাড়ে ৪ লাখ চাকরিপ্রত্যাশী

সরকারি চাকরির প্রত্যাশায় ৪৩তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন ৪ লাখ ৪২ হাজার ৮৩২ জন প্রার্থী। গতকাল সকাল ১০টায় পরীক্ষা শুরু হয়ে শেষ হবে বেলা ১২টায়। প্রার্থীদের বাংলা, ইংরেজি, বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিকসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর ২০০ নম্বরের এমসিকিউ প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগে একযোগে অনুষ্ঠিত হয়।

সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) জানায়, ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে বিভিন্ন ক্যাডারে এক হাজার ৮১৪ জন কর্মকর্তা নেয়া হবে। এর মধ্যে প্রশাসন ক্যাডারে ৩০০ জন, পুলিশ ক্যাডারে ১০০ জন, পররাষ্ট্র ক্যাডারে ২৫ জন, শিক্ষা ক্যাডারের জন্য ৮৪৩ জন, অডিটে ৩৫ জন, তথ্যে ২২ জন, ট্যাক্সে ১৯ জন, কাস্টমসে ১৪ জন ও সমবায় ক্যাডারে ১৯ জন নিয়োগ দেয়া হবে। প্রার্থীদের বই-পুস্তক, সব প্রকার ঘড়ি, মোবাইল ফোন, ক্যালকুলেটর, সব ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস, ব্যাংক/ক্রেডিট কার্ড সদৃশ কোন ডিভাইস, গয়না ও ব্যাগসহ অন্যান্য জিনিসপত্র বাইরে রেখে প্রার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয়া হয়।

পরীক্ষা কেন্দ্রের গেটে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট-পুলিশের উপস্থিতিতে প্রবেশপত্র এবং মেটাল ডিটেক্টরের সাহায্যে মোবাইল ফোন, ঘড়ি, ইলেকট্রনিক ডিভাইসসহ নিষিদ্ধ সামগ্রী তল্লাশির মধ্যদিয়ে প্রার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয়া হয়।

লঞ্চ বিলম্বে পৌঁছায়

বিসিএস দেয়া হলো না শতাধিক পরীক্ষার্থীর

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

ভোলা-মনপুরা-হাতিয়া-ঢাকা রুটের যাত্রীবাহী লঞ্চ তাসরিফ-২ এর স্টাফদের গাফিলতির কারণে বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা দেয়া হলো না প্রায় শতাধিক পরীক্ষার্থীর। এসব পরীক্ষার্থীর ঢাকার সদরঘাট পৌঁছতেই সকাল প্রায় ১০টা বেজে যায়। ফলে তারা নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষার হলে পৌঁছতে পারেননি। পরে ওই লঞ্চে করেই তারা আবার হতাশা আর আফসোস নিয়ে যার যার গন্তব্যে ফিরে যান।

বিসিএস পরীক্ষার্থী আবদুস সামাদসহ বেশ কয়েকজন পরীক্ষার্থীর অভিযোগ, গতকাল ৪৩তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা দেয়ার জন্য গত বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) বিকেল ৩টার দিকে তারা ভোলার মনপুরা লঞ্চঘাট থেকে ঢাকার উদ্দেশে তাসরিফ-২ লঞ্চে উঠেন। লঞ্চটি মনপুরা থেকে ছেড়ে ভোলার তজুমদ্দিন, হাকিমউদ্দিন, দৌলতখান ও সদরের ইলিশা বিশ্বরোড ঘাটে ভিড়ে যাত্রী উঠিয়ে সন্ধ্যার দিকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়। লঞ্চে হাতিয়া, মনপুরা, তজুমদ্দিন, হাকিমউদ্দিন, দৌলতখান ও ভোলা সদরের শতাধিক বিসিএস পরীক্ষার্থী ছিলেন।

বিসিএস পরীক্ষার্থী সামাদ বলেন, রাত সাড়ে ১০টার দিকে চাঁদপুর জেলার কাছাকাছি পৌঁছে লঞ্চটি আবার ঘুরিয়ে হাকিমউদ্দিন লঞ্চঘাটে চলে আসে। হাকিমউদ্দিন ঘাটে যখন পৌঁছে তখন রাত ১২টার বেশি বেজে যায়। বিষয়টি টের পেয়ে আমরা লঞ্চ স্টাফ ও সুপারভাইজারদের সঙ্গে কথা বলি। তখন তারা আমাদের বলেন, তাদের আরেকটি লঞ্চ তাসরিফ-৪ এ সমস্যা হয়েছে। আমরা ওই লঞ্চের যাত্রীদের নিতে এসেছি।

‘এ সময় আমরা পরীক্ষার্থীরা বিষয়টির প্রতিবাদ করলে লঞ্চ স্টাফ ও সুপারভাইজার শুক্রবার সকাল ৭টার মধ্যে ঢাকায় পৌঁছে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু লঞ্চটি ঢাকার সদরঘাটে পৌঁছে সকাল প্রায় ১০টার দিকে। পরে আমরা লঞ্চ মালিকদের সঙ্গে তর্কে না জড়িয়ে পরীক্ষা দেয়ার জন্য দ্রুত লঞ্চ থেকে নেমে পড়ি। কিন্তু আমাদের পরীক্ষার্থীদের একেক জনের হল একেক স্থানে হওয়ায় পরীক্ষা দিতে পারেনি। পরে আমরা দুপুরের দিকে তাসরিফ-২ লঞ্চে উঠে লঞ্চের স্টাফ ও সুপারভাইজারদের সঙ্গে কথা বললে তারা আমাদের বিনা খরচে গন্তব্যে পৌঁছে দেয়ার আশ্বাস দেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তাসরিফ-২ লঞ্চের সুপারভাইজার মো. জামাল দোষ স্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, ভোলার হাকিমউদ্দিন ঘাটে আমাদের আরেকটি লঞ্চ তাসরিফ-৪ চরে আটকে যায়। ওই লঞ্চে অনেক বিসিএস পরীক্ষার্থী ও কয়েকজন গুরুতর রোগী ছিলেন। ওই লঞ্চটি সমস্যা হওয়ায় আমরা বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার কালিগঞ্জ ঘাট থেকে লঞ্চ ঘুরিয়ে হাকিমউদ্দিন ঘাটের উদ্দেশে রওনা হই। দুপুরের দিকে পরীক্ষার্থীরা আমাদের কাছে এসে বলেন, তারা বিসিএস পরীক্ষা দিতে পারেননি। পরে আমরা বিনা টাকায় তাদের গন্তব্যে পৌঁছে দিয়েছি।

শনিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২১ , ১৪ কার্তিক ১৪২৮ ২২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

একদিনে বিসিএসসহ ১৩ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পরীক্ষা, বিপাকে পরীক্ষার্থীরা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

কেন্দ্রে কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের উপচেপড়া ভিড়

৪৩তম বিসিএসসহ মোট ১৩টি প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ পরীক্ষা একই দিনে অনুষ্ঠিত হওয়ায় বিপাকে পড়েন পরীক্ষার্থীরা, তার জন্য তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

১৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিসিএস ছাড়াও সকাল ১০টায় পরীক্ষা হয় বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, সাতক্ষীরার বিভিন্ন পদের পরীক্ষা। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ এবং মহিলা ও শিশু-বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পরীক্ষা হয় বেলা সাড়ে ১১টায়। বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের দুটি পদের মৌখিক পরীক্ষা শুরু হয় বেলা আড়াইটায়। এছাড়া শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের পরীক্ষা বেলা ৩টায় ও ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড ও বেবিচকের পরীক্ষা বেলা সাড়ে ৩টায় শুরু হয়।

এর মধ্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, সাতক্ষীরার পরীক্ষা ছাড়া বাকি সব প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ঢাকায়। এর মধ্যে বিআরটিএ’র একটি পদে ব্যবহারিক পরীক্ষা হয়। এর আগে, গত ৮ অক্টোবর একদিনে ১৪ পরীক্ষা ও ২৩ অক্টোবর একদিনে ১৫টি প্রতিষ্ঠানের চাকরির পরীক্ষা ছিল। একই দিনে একাধিক প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা থাকায় বিপাকে পড়তে হচ্ছে পরীক্ষার্থীদের। অনেকে এটি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

একদিনে অনেক পরীক্ষা থাকায় চাকরিপ্রত্যাশীরা বলেন, ‘করোনার সময় অনেক কষ্টে আমরা আবেদন করেছি। আর এখন একদিনে অনেক পরীক্ষা থাকায় দু’তিনটা পরীক্ষা দিতে পারছি না। আমাদের টাকা, সুযোগ দুটোই নষ্ট হচ্ছে। আবার চাকরির বয়সও শেষ হয়ে যাচ্ছে। স্কুলগুলোতো দুপুরের পর ফাঁকা থাকে। সপ্তাহের সাতদিনই পরীক্ষা নেয়া যেতো।’ রংপুর থেকে পরীক্ষা দিতে ঢাকায় এসেছিলেন আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘সকালে একটা পরীক্ষা দিলাম। এখন আরেকটা দেব। প্রতিষ্ঠানগুলো চাইলে বিভাগীয় পর্যায়ে নিয়োগ পরীক্ষাগুলো নিতে পারতো। একদিনে অনেক পরীক্ষা থাকায় বাধ্য হয়েই দু-একটা দিতে হচ্ছে। কিন্তু সবগুলোরই আবেদন ফি তো পরিশোধ করতে হয়েছে।’ তবে পরীক্ষা জট কমাতে আগের ঘোষিত সময় অনুযায়ী এই মুহূর্তে এভাবে পরীক্ষা নেয়া ছাড়া উপায় নেই বলে জানাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। সেইসময় জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘদিন করোনাভাইরাস সৃষ্ট মহামারীর কারণে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ আটকে থাকায় এখন সাপ্তাহিক বন্ধের দিনগুলোতে একই সঙ্গে একাধিক নিয়োগ পরীক্ষা নিতে হচ্ছে। চাকরিপ্রার্থীদের আপাতত একটু ছাড় দিয়ে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।

বিসিএসএ প্রায় সাড়ে ৪ লাখ চাকরিপ্রত্যাশী

সরকারি চাকরির প্রত্যাশায় ৪৩তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন ৪ লাখ ৪২ হাজার ৮৩২ জন প্রার্থী। গতকাল সকাল ১০টায় পরীক্ষা শুরু হয়ে শেষ হবে বেলা ১২টায়। প্রার্থীদের বাংলা, ইংরেজি, বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিকসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর ২০০ নম্বরের এমসিকিউ প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগে একযোগে অনুষ্ঠিত হয়।

সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) জানায়, ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে বিভিন্ন ক্যাডারে এক হাজার ৮১৪ জন কর্মকর্তা নেয়া হবে। এর মধ্যে প্রশাসন ক্যাডারে ৩০০ জন, পুলিশ ক্যাডারে ১০০ জন, পররাষ্ট্র ক্যাডারে ২৫ জন, শিক্ষা ক্যাডারের জন্য ৮৪৩ জন, অডিটে ৩৫ জন, তথ্যে ২২ জন, ট্যাক্সে ১৯ জন, কাস্টমসে ১৪ জন ও সমবায় ক্যাডারে ১৯ জন নিয়োগ দেয়া হবে। প্রার্থীদের বই-পুস্তক, সব প্রকার ঘড়ি, মোবাইল ফোন, ক্যালকুলেটর, সব ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস, ব্যাংক/ক্রেডিট কার্ড সদৃশ কোন ডিভাইস, গয়না ও ব্যাগসহ অন্যান্য জিনিসপত্র বাইরে রেখে প্রার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয়া হয়।

পরীক্ষা কেন্দ্রের গেটে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট-পুলিশের উপস্থিতিতে প্রবেশপত্র এবং মেটাল ডিটেক্টরের সাহায্যে মোবাইল ফোন, ঘড়ি, ইলেকট্রনিক ডিভাইসসহ নিষিদ্ধ সামগ্রী তল্লাশির মধ্যদিয়ে প্রার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয়া হয়।

লঞ্চ বিলম্বে পৌঁছায়

বিসিএস দেয়া হলো না শতাধিক পরীক্ষার্থীর

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

ভোলা-মনপুরা-হাতিয়া-ঢাকা রুটের যাত্রীবাহী লঞ্চ তাসরিফ-২ এর স্টাফদের গাফিলতির কারণে বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা দেয়া হলো না প্রায় শতাধিক পরীক্ষার্থীর। এসব পরীক্ষার্থীর ঢাকার সদরঘাট পৌঁছতেই সকাল প্রায় ১০টা বেজে যায়। ফলে তারা নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষার হলে পৌঁছতে পারেননি। পরে ওই লঞ্চে করেই তারা আবার হতাশা আর আফসোস নিয়ে যার যার গন্তব্যে ফিরে যান।

বিসিএস পরীক্ষার্থী আবদুস সামাদসহ বেশ কয়েকজন পরীক্ষার্থীর অভিযোগ, গতকাল ৪৩তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা দেয়ার জন্য গত বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) বিকেল ৩টার দিকে তারা ভোলার মনপুরা লঞ্চঘাট থেকে ঢাকার উদ্দেশে তাসরিফ-২ লঞ্চে উঠেন। লঞ্চটি মনপুরা থেকে ছেড়ে ভোলার তজুমদ্দিন, হাকিমউদ্দিন, দৌলতখান ও সদরের ইলিশা বিশ্বরোড ঘাটে ভিড়ে যাত্রী উঠিয়ে সন্ধ্যার দিকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়। লঞ্চে হাতিয়া, মনপুরা, তজুমদ্দিন, হাকিমউদ্দিন, দৌলতখান ও ভোলা সদরের শতাধিক বিসিএস পরীক্ষার্থী ছিলেন।

বিসিএস পরীক্ষার্থী সামাদ বলেন, রাত সাড়ে ১০টার দিকে চাঁদপুর জেলার কাছাকাছি পৌঁছে লঞ্চটি আবার ঘুরিয়ে হাকিমউদ্দিন লঞ্চঘাটে চলে আসে। হাকিমউদ্দিন ঘাটে যখন পৌঁছে তখন রাত ১২টার বেশি বেজে যায়। বিষয়টি টের পেয়ে আমরা লঞ্চ স্টাফ ও সুপারভাইজারদের সঙ্গে কথা বলি। তখন তারা আমাদের বলেন, তাদের আরেকটি লঞ্চ তাসরিফ-৪ এ সমস্যা হয়েছে। আমরা ওই লঞ্চের যাত্রীদের নিতে এসেছি।

‘এ সময় আমরা পরীক্ষার্থীরা বিষয়টির প্রতিবাদ করলে লঞ্চ স্টাফ ও সুপারভাইজার শুক্রবার সকাল ৭টার মধ্যে ঢাকায় পৌঁছে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু লঞ্চটি ঢাকার সদরঘাটে পৌঁছে সকাল প্রায় ১০টার দিকে। পরে আমরা লঞ্চ মালিকদের সঙ্গে তর্কে না জড়িয়ে পরীক্ষা দেয়ার জন্য দ্রুত লঞ্চ থেকে নেমে পড়ি। কিন্তু আমাদের পরীক্ষার্থীদের একেক জনের হল একেক স্থানে হওয়ায় পরীক্ষা দিতে পারেনি। পরে আমরা দুপুরের দিকে তাসরিফ-২ লঞ্চে উঠে লঞ্চের স্টাফ ও সুপারভাইজারদের সঙ্গে কথা বললে তারা আমাদের বিনা খরচে গন্তব্যে পৌঁছে দেয়ার আশ্বাস দেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তাসরিফ-২ লঞ্চের সুপারভাইজার মো. জামাল দোষ স্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, ভোলার হাকিমউদ্দিন ঘাটে আমাদের আরেকটি লঞ্চ তাসরিফ-৪ চরে আটকে যায়। ওই লঞ্চে অনেক বিসিএস পরীক্ষার্থী ও কয়েকজন গুরুতর রোগী ছিলেন। ওই লঞ্চটি সমস্যা হওয়ায় আমরা বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার কালিগঞ্জ ঘাট থেকে লঞ্চ ঘুরিয়ে হাকিমউদ্দিন ঘাটের উদ্দেশে রওনা হই। দুপুরের দিকে পরীক্ষার্থীরা আমাদের কাছে এসে বলেন, তারা বিসিএস পরীক্ষা দিতে পারেননি। পরে আমরা বিনা টাকায় তাদের গন্তব্যে পৌঁছে দিয়েছি।