বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেল টাইগারদের

স্কোর : ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০ ওভারে ১৪২/৭ ষ বাংলাদেশ ২০ ওভারে ১৩৯/৫।

ফল : ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩ রানে জয়ী।

আবারও সেই ব্যর্থতার গল্প। আবারও ক্যাচ মিসের মহড়া। বোলাররা ক্যারিবিয়ানদের ১৪২ রানে আটকে ফেলার পর ওপেনিংয়ে ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙার চেষ্টায় নাঈম শেখের সঙ্গে সাকিব আল হাসানকে পাঠিয়েও লাভ হলোনা। ব্যর্থ হলো লিটন কুমার দাসের সঙ্গে অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের লড়াই। ২০০৭ সালের টি-২০ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পরাজিত করার স্মৃতি ফিরিয়ে আনা গেলনা শারজায়। তীরে এসে ডুবল বাংলাদেশ দলের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে তিন রানের পরাজয়ে টি-২০ বিশ্বকাপের সপ্তম আসর থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেল টাইগারদের।

অথচ, টস জিতে ফিল্ডিংয়ে নামা বাংলাদেশ দলের বোলাররা ক্যারিবিয়ানদের ওপর শুরু থেকেই চেপে বসেছিলেন। প্রথম পাওয়ার প্লে’তে মাত্র ২৯ রান দেয়ার পাশাপাশি দুটো উইকেটের পতনও ঘটানো গিয়েছিল। এরপর নিয়মিত বিরতিতে ক্যারিবিয়ান ব্যাটিং লাইন আপের ওপর আঘাত করেছিলেন বাংলাদেশের বোলাররা। কিন্তু লিটন কুমার দাসের ব্যর্থতায় জীবন পাওয়া নিকোলাস পুরানের ২২ বলে ৪০ রানের ইনিংসটা দলের স্কোর নিয়ে যায় ১৪২-এ। শারজা’র পিচে এই রান টপকানো বাংলাদেশের জন্য খুব কঠিন কিছু ছিলনা। লড়াই করলেও মুশফিকুর রহিমের ‘বদভ্যাসে’ পরিণত হওয়া দায়িত্বজ্ঞানহীন স্কুপ শটের মাশুল দিতে হয়েছে বাংলাদেশ দলকে। সৌম্য সরকার আবারও পাওয়া সুযোগটা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছেন। ফলে পরাজয়ই সঙ্গী হয়েছে বাংলাদেশ দলের। জয়ের জন্য ১৪৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামা টাইগারদের ইনিংস উদ্বোধনে নাঈমের সঙ্গে আসা সাকিব সতর্কতার সঙ্গে ব্যাট চালিয়েও বড় স্কোর গড়তে পারেনি। ১২ বলে ৯ রান করে ফেরেন সাকিব, ১৯ বলে ১৭ রান করে আউট হন নাঈম শেখ। ক্যারিবিয়ানদের মতোই প্রথম পাওয়ার প্লে’তে দুই উইকেটে ২৯ রান যোগ হয় টাইগারদের ইনিংসে। লিট-সৌম্য’র জুটিটা দলের স্কোর ৬০ পর্যন্ত নিয়ে যায়। আকিল হোসেনের বলে অযথা ব্যাট ছুঁইয়ে থার্ড ম্যানে গেইলের হাতে ধরা পড়েন সৌম্য। দলীয় ৬০ রানে তৃতীয় উইকেট হারানো বাংলাদেশ দলের বিপদ বাড়িয়ে অযথা ‘স্কুপ’ করতে গিয়ে স্টাম্প খোয়ান মুশফিকুর রহিম (৮)। অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে দলের স্কোর ১৩০ পর্যন্ত টেনে নিয়ে সাজঘরের পথ ধরেন লিটন কুমার দাস। ফেরার আগে তার ৪৩ বলে চার বাউন্ডারিতে তোলা ৪৪ রানই গতকালকের ম্যাচে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ স্কোর। ব্র্র্যাভোর করা ১৯তম ওভারের শেষ বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে একেবারেই বাউন্ডারি সীমানার কাছে জেসন হোল্ডারের হাতে ধরা পড়েন লিটন। আফিফ হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে শেষ ১২ বলে জয়ের জন্য ১৩ রান যোগ করতে পারেননি মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। পাঁচ উইকেটে ১৩৯ রানে থেমে যায় বাংলাদেশের ইনিংস, টি-২০ ফরম্যাটে বাংলাদেশ দলের পাশে লেখা হয় আরও একটা পরাজয়ের লজ্জা।

এর আগে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নামা ক্যারিবিয়ান দলের ওপর শুরুর দুই ওভারে মাহেদি হাসান ও তাসকিন যে চাপটা তৈরি করেছিলেন, তার সুবিধা নেন তৃতীয় ওভারেই আক্রমণে আসা কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। ওই ওভারের তৃতীয় বলেই ক্রিস গেইলকে রান আউটের সুযোগ হাতছাড়া হয় টাইগারদের, সাকিবের থ্রো স্টাম্পে আঘাত করতে পারেনি। তবে ওভারের শেষ বলেই এভিন লুইসকে (৬) স্কয়ার লেগে তালুবন্দী করেন মুশফিকুর রহিম।

তৃতীয় ওভারে জীবন পাওয়া ক্রিস গেইল চতুর্থ ওভারে বিদায় নেন। স্পিনার মাহেদি হাসানের বল গেইলের স্টাম্পে আঘাত করার সময়ে তার নামের পাশে মাত্র ৪ রান। ততক্ষণে স্বঘোষিত ‘ইউনিভার্স বস’ খরচ করেছেন ১০ বল, যা কোনমতেই গেইলের ব্যাটিং স্টাইলের সঙ্গে মানানসই নয়। বুঝাই যাচ্ছে যে, তার ব্যাটে বয়সের ছাপ পড়েছে। টাইগার বোলাররা প্রথম পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারে খরচ করেন মাত্র ২৯ রান।

পরের দুটো ওভার কোনমতে কাটালেও সপ্তম ওভারে আবারও উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মাহেদির বলে লং-অফে সৌম্য’র হাতে ধরা পড়েন ৭ বলে ৯ রান করা  শিমরন হেটমায়ার। হেটমায়ার চতুর্থ বলে সৌম্য সরকারের তালুবন্দী হওয়ার আগের বলটাতেই রোস্টন চেজের ফিরতি ক্যাচ ধরতে ব্যর্থ হয়েছিলেন বোলার মাহেদি।

দ্রুত ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে লড়াইয়ে ফেরানোর চেষ্টায় অধিনায়ক কাইরন পোলার্ড ও রোস্টন চেজ সর্তকতার সঙ্গে ব্যাট চালান। একটা পর্যায়ে ১৬ বলে ৮ রান করা ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান অধিনায়ক পোলার্ড অবসরে গেলে ক্রিজে নামা আন্দ্রে রাসেল রান আউট হয়ে যান কোন বল মোকাবিলা না করেই। আগের বলে পোলার্ড ১ রান নেয়ায় নন-স্ট্রাইকেই থাকতে হয় রাসেলকে। দুভার্গ্য সেখানেই পেয়ে বসে রাসেলকে। তাসকিনের ডেলিভারিতে বোলার্স ব্যাক-ড্রাইভ করেছিলেন রোস্টন চেজ। সেই শটে বল পায়ে লাগিয়ে নন-স্ট্রাইকিং প্রান্তের উইকেট ভাঙেন তাসকিন। তখন লাইনের বাইরে ছিলেন রাসেল। তাতে রান আউট হন রাসেল। তাই কোন বল না খেলেই খালি হাতে ফিরেন বিগ হিটার রাসেল। দলের স্কোর তখন চার উইকেটের বিনিময়ে মাত্র ৬২ রান।

পরের ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের চাপ আরও বাড়ানোর সুযোগ তৈরি করেছিলেন সাকিব। দ্বিতীয় ডেলিভারিতে স্লগ-সুইপ করেছিলেন চেজ। বল হাওয়ায় ভাসলেও মিড উইকেটে সেই ক্যাচ ফেলেন মাহেদি। তখন ২৮ রানে ছিলেন চেজ। একই ওভারে আবারও উইকেট পাওয়ার সুযোগ হাতছাড়া হয় সাকিবের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের নিকোলাস পুরান উইকেটে ছেড়ে আসায় চতুর্থ ডেলিভারিটি ওয়াইড দিয়েছিলেন সাকিব। এতে স্টাম্পিংয়ের সুযোগ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি উইকেটরক্ষক লিটন দাস। ব্যক্তিগত ৩ রানে জীবন পাওয়া পুরানই শেষ পর্যন্ত ক্যারিবিয়ানদের জয়ের নায়ক তথা ম্যাচসেরা ক্রিকেটার।

জীবন পেয়ে মারমুখী হয়ে উঠেন পুরান। সাকিবের করা ১৬তম ওভারের প্রথম দুই বলে ছক্কা মারেন তিনি। ১৮তম ওভারে মাহেদিকেও দুটি ছক্কা হাঁকান পুরান। ১৯তম ওভারের প্রথম দুই বলে পুরান ও চেজের বিদায় নিশ্চিত করেন বাংলাদেশের বাঁ-হাতি পেসার শরিফুল ইসলাম। ডিপ কভারে নাঈমকে ক্যাচ দেন পুরান। আর বোল্ড হন চেজ। ততক্ষণে ২২ বলে ১টি বাউন্ডারি ও ৪টি ছক্কায় পুরানের নামের পাশে ৪০ রান, ৪৬ বলে ২টি বাউন্ডারিতে চেজের সংগ্রহ ৩৯ রান। পঞ্চম উইকেটে ৫৭ রান যোগ করেন তারা।

ইনিংসের শেষ ওভারে বল হাতে নিয়েছিলেন মুস্তাফিজ। প্রথম বলে ডোয়াইন ব্রাভোকে শিকার করেন ফিজ। কিন্তু পরের দুই বলে ছক্কা আদায় করে নেন জেসন হোল্ডার। ব্রাভোর আউটে উইকেটে আসেন আহত অবসর নেয়া পোলার্ড। শেষ বলে ছক্কায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস শেষ করেন পোলার্ড। এতে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৪২ রানের লড়াকু স্কোর পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

শনিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২১ , ১৪ কার্তিক ১৪২৮ ২২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেল টাইগারদের

ক্রীড়া বার্তা পরিবেশক

image

শেষ বলে চার রান করতে ব্যর্থ হয়ে সতীর্থ আফিফকে নিয়ে মাঠ ছাড়ছেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ - ইদ্রিস আলী

স্কোর : ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০ ওভারে ১৪২/৭ ষ বাংলাদেশ ২০ ওভারে ১৩৯/৫।

ফল : ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩ রানে জয়ী।

আবারও সেই ব্যর্থতার গল্প। আবারও ক্যাচ মিসের মহড়া। বোলাররা ক্যারিবিয়ানদের ১৪২ রানে আটকে ফেলার পর ওপেনিংয়ে ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙার চেষ্টায় নাঈম শেখের সঙ্গে সাকিব আল হাসানকে পাঠিয়েও লাভ হলোনা। ব্যর্থ হলো লিটন কুমার দাসের সঙ্গে অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের লড়াই। ২০০৭ সালের টি-২০ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পরাজিত করার স্মৃতি ফিরিয়ে আনা গেলনা শারজায়। তীরে এসে ডুবল বাংলাদেশ দলের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে তিন রানের পরাজয়ে টি-২০ বিশ্বকাপের সপ্তম আসর থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেল টাইগারদের।

অথচ, টস জিতে ফিল্ডিংয়ে নামা বাংলাদেশ দলের বোলাররা ক্যারিবিয়ানদের ওপর শুরু থেকেই চেপে বসেছিলেন। প্রথম পাওয়ার প্লে’তে মাত্র ২৯ রান দেয়ার পাশাপাশি দুটো উইকেটের পতনও ঘটানো গিয়েছিল। এরপর নিয়মিত বিরতিতে ক্যারিবিয়ান ব্যাটিং লাইন আপের ওপর আঘাত করেছিলেন বাংলাদেশের বোলাররা। কিন্তু লিটন কুমার দাসের ব্যর্থতায় জীবন পাওয়া নিকোলাস পুরানের ২২ বলে ৪০ রানের ইনিংসটা দলের স্কোর নিয়ে যায় ১৪২-এ। শারজা’র পিচে এই রান টপকানো বাংলাদেশের জন্য খুব কঠিন কিছু ছিলনা। লড়াই করলেও মুশফিকুর রহিমের ‘বদভ্যাসে’ পরিণত হওয়া দায়িত্বজ্ঞানহীন স্কুপ শটের মাশুল দিতে হয়েছে বাংলাদেশ দলকে। সৌম্য সরকার আবারও পাওয়া সুযোগটা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছেন। ফলে পরাজয়ই সঙ্গী হয়েছে বাংলাদেশ দলের। জয়ের জন্য ১৪৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামা টাইগারদের ইনিংস উদ্বোধনে নাঈমের সঙ্গে আসা সাকিব সতর্কতার সঙ্গে ব্যাট চালিয়েও বড় স্কোর গড়তে পারেনি। ১২ বলে ৯ রান করে ফেরেন সাকিব, ১৯ বলে ১৭ রান করে আউট হন নাঈম শেখ। ক্যারিবিয়ানদের মতোই প্রথম পাওয়ার প্লে’তে দুই উইকেটে ২৯ রান যোগ হয় টাইগারদের ইনিংসে। লিট-সৌম্য’র জুটিটা দলের স্কোর ৬০ পর্যন্ত নিয়ে যায়। আকিল হোসেনের বলে অযথা ব্যাট ছুঁইয়ে থার্ড ম্যানে গেইলের হাতে ধরা পড়েন সৌম্য। দলীয় ৬০ রানে তৃতীয় উইকেট হারানো বাংলাদেশ দলের বিপদ বাড়িয়ে অযথা ‘স্কুপ’ করতে গিয়ে স্টাম্প খোয়ান মুশফিকুর রহিম (৮)। অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে দলের স্কোর ১৩০ পর্যন্ত টেনে নিয়ে সাজঘরের পথ ধরেন লিটন কুমার দাস। ফেরার আগে তার ৪৩ বলে চার বাউন্ডারিতে তোলা ৪৪ রানই গতকালকের ম্যাচে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ স্কোর। ব্র্র্যাভোর করা ১৯তম ওভারের শেষ বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে একেবারেই বাউন্ডারি সীমানার কাছে জেসন হোল্ডারের হাতে ধরা পড়েন লিটন। আফিফ হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে শেষ ১২ বলে জয়ের জন্য ১৩ রান যোগ করতে পারেননি মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। পাঁচ উইকেটে ১৩৯ রানে থেমে যায় বাংলাদেশের ইনিংস, টি-২০ ফরম্যাটে বাংলাদেশ দলের পাশে লেখা হয় আরও একটা পরাজয়ের লজ্জা।

এর আগে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নামা ক্যারিবিয়ান দলের ওপর শুরুর দুই ওভারে মাহেদি হাসান ও তাসকিন যে চাপটা তৈরি করেছিলেন, তার সুবিধা নেন তৃতীয় ওভারেই আক্রমণে আসা কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। ওই ওভারের তৃতীয় বলেই ক্রিস গেইলকে রান আউটের সুযোগ হাতছাড়া হয় টাইগারদের, সাকিবের থ্রো স্টাম্পে আঘাত করতে পারেনি। তবে ওভারের শেষ বলেই এভিন লুইসকে (৬) স্কয়ার লেগে তালুবন্দী করেন মুশফিকুর রহিম।

তৃতীয় ওভারে জীবন পাওয়া ক্রিস গেইল চতুর্থ ওভারে বিদায় নেন। স্পিনার মাহেদি হাসানের বল গেইলের স্টাম্পে আঘাত করার সময়ে তার নামের পাশে মাত্র ৪ রান। ততক্ষণে স্বঘোষিত ‘ইউনিভার্স বস’ খরচ করেছেন ১০ বল, যা কোনমতেই গেইলের ব্যাটিং স্টাইলের সঙ্গে মানানসই নয়। বুঝাই যাচ্ছে যে, তার ব্যাটে বয়সের ছাপ পড়েছে। টাইগার বোলাররা প্রথম পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারে খরচ করেন মাত্র ২৯ রান।

পরের দুটো ওভার কোনমতে কাটালেও সপ্তম ওভারে আবারও উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মাহেদির বলে লং-অফে সৌম্য’র হাতে ধরা পড়েন ৭ বলে ৯ রান করা  শিমরন হেটমায়ার। হেটমায়ার চতুর্থ বলে সৌম্য সরকারের তালুবন্দী হওয়ার আগের বলটাতেই রোস্টন চেজের ফিরতি ক্যাচ ধরতে ব্যর্থ হয়েছিলেন বোলার মাহেদি।

দ্রুত ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে লড়াইয়ে ফেরানোর চেষ্টায় অধিনায়ক কাইরন পোলার্ড ও রোস্টন চেজ সর্তকতার সঙ্গে ব্যাট চালান। একটা পর্যায়ে ১৬ বলে ৮ রান করা ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান অধিনায়ক পোলার্ড অবসরে গেলে ক্রিজে নামা আন্দ্রে রাসেল রান আউট হয়ে যান কোন বল মোকাবিলা না করেই। আগের বলে পোলার্ড ১ রান নেয়ায় নন-স্ট্রাইকেই থাকতে হয় রাসেলকে। দুভার্গ্য সেখানেই পেয়ে বসে রাসেলকে। তাসকিনের ডেলিভারিতে বোলার্স ব্যাক-ড্রাইভ করেছিলেন রোস্টন চেজ। সেই শটে বল পায়ে লাগিয়ে নন-স্ট্রাইকিং প্রান্তের উইকেট ভাঙেন তাসকিন। তখন লাইনের বাইরে ছিলেন রাসেল। তাতে রান আউট হন রাসেল। তাই কোন বল না খেলেই খালি হাতে ফিরেন বিগ হিটার রাসেল। দলের স্কোর তখন চার উইকেটের বিনিময়ে মাত্র ৬২ রান।

পরের ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের চাপ আরও বাড়ানোর সুযোগ তৈরি করেছিলেন সাকিব। দ্বিতীয় ডেলিভারিতে স্লগ-সুইপ করেছিলেন চেজ। বল হাওয়ায় ভাসলেও মিড উইকেটে সেই ক্যাচ ফেলেন মাহেদি। তখন ২৮ রানে ছিলেন চেজ। একই ওভারে আবারও উইকেট পাওয়ার সুযোগ হাতছাড়া হয় সাকিবের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের নিকোলাস পুরান উইকেটে ছেড়ে আসায় চতুর্থ ডেলিভারিটি ওয়াইড দিয়েছিলেন সাকিব। এতে স্টাম্পিংয়ের সুযোগ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি উইকেটরক্ষক লিটন দাস। ব্যক্তিগত ৩ রানে জীবন পাওয়া পুরানই শেষ পর্যন্ত ক্যারিবিয়ানদের জয়ের নায়ক তথা ম্যাচসেরা ক্রিকেটার।

জীবন পেয়ে মারমুখী হয়ে উঠেন পুরান। সাকিবের করা ১৬তম ওভারের প্রথম দুই বলে ছক্কা মারেন তিনি। ১৮তম ওভারে মাহেদিকেও দুটি ছক্কা হাঁকান পুরান। ১৯তম ওভারের প্রথম দুই বলে পুরান ও চেজের বিদায় নিশ্চিত করেন বাংলাদেশের বাঁ-হাতি পেসার শরিফুল ইসলাম। ডিপ কভারে নাঈমকে ক্যাচ দেন পুরান। আর বোল্ড হন চেজ। ততক্ষণে ২২ বলে ১টি বাউন্ডারি ও ৪টি ছক্কায় পুরানের নামের পাশে ৪০ রান, ৪৬ বলে ২টি বাউন্ডারিতে চেজের সংগ্রহ ৩৯ রান। পঞ্চম উইকেটে ৫৭ রান যোগ করেন তারা।

ইনিংসের শেষ ওভারে বল হাতে নিয়েছিলেন মুস্তাফিজ। প্রথম বলে ডোয়াইন ব্রাভোকে শিকার করেন ফিজ। কিন্তু পরের দুই বলে ছক্কা আদায় করে নেন জেসন হোল্ডার। ব্রাভোর আউটে উইকেটে আসেন আহত অবসর নেয়া পোলার্ড। শেষ বলে ছক্কায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস শেষ করেন পোলার্ড। এতে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৪২ রানের লড়াকু স্কোর পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।