মিথ্যা মামলায় হয়রানি করার প্রতিবাদ

ভুক্তভোগী পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় সংঘটিত একটি মিথ্যা হত্যা মামলায় অন্য ইউনিয়নের ব্যবসায়ী, আইনজীবী, কৃষিবিদ ও চাকরিজীবীসহ ১০ জন নিরীহ মানুষকে আসামি করে এলাকা ছাড়া করার প্রতিবাদে গত রোববার সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব এস রহমান হলে সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগীর পরিবার। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষে সেলিনা বেগম বলেন- আমার স্বামী, তার দুই ভাই আইনজীবী, কৃষিবিদসহ ১০ জন নিরীহ মানুষকে একটি হত্যা মামলায় পরিকল্পিতভাবে আসামি করে এলাকাছাড়া করা হয়েছে। প্রকৃত সত্য উদঘাটনের জন্য আমি একজন সাধারণ গৃহবধূ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়েছি।

তিনি বলেন, আমার স্বামী- মনিরুল আলম, পিতা- বীরমুক্তিযোদ্ধা কলিম উল্লাহ, সাং- গুনাগরী, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম শহরের একজন স্বনামধন্য ব্যবসায়ী। তার দুই ভাই চট্টগ্রাম শহরে চাকরিজীবী। গত ১২ মে ২০২০ ইং বাঁশখালী উপজেলাধীন ২নং সাধনপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের সাদেক আলীর বাড়িতে জায়গা-জমির বিরোধ নিয়ে প্রতিপক্ষের আনিসকে নিহত জহির ড্রাইভারসহ তার পরিবারের লোকজন অতর্কিত হামলা করার সময় জহির ড্রাইভার নিহত হয়। ঘটনাস্থল ছিল সাধনপুর ইউনিয়নের সাদেক আলীর বাড়িতে।

ঘটনার তিন দিন পর বাঁশখালী থানায় দায়েরকৃত বাঁশখালী থানার ২৩(৫)২০২০ নম্বর মামলায় আমার স্বামী মনিরুল আলম তার ভাই নেজাম উদ্দিন, শহিদুল আলম ও প্রতিবেশী আইনজীবী মোহাম্মদ ইয়াসিন তার ভাই মহিউদ্দীন হাসান, সরকারি কৃষি কর্মকর্তা নুর উল্লাহ, মোস্তফা, রাশেদ, মুবিন ও কালু দশজন নিরীহ মানুষসহ ২৩ জনকে আসামি করা হয়।

তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় নিজেদের বাড়ির পাশে অ্যাম্বুলেন্স থামিয়ে আহত জহির ড্রাইভারকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। প্রকৃতপক্ষে আমার স্বামী, তার ভাই ও প্রতিবেশী নিরীহ আসামিদের বাড়ি ঘটনাস্থল সাধনপুর ইউনিয়ন থেকে এক কিলোমিটার দক্ষিণে কালীপুর ইউনিয়নে। কালীপুর ইউনিয়ন সাধনপুর ইউনিয়নের দক্ষিণে অবস্থিত।

ঘটনাস্থলে নিহত জহির ড্রাইভারের মরদেহ উত্তরের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে না নিয়ে নিরীহ মানুষদের ফাসানোর জন্য দক্ষিণের গুনাগরী এলাকায় নিয়ে অভিযুক্ত আসামিদের ঘরের সামনের মহাসড়ক দিয়ে সিএনজি অটোরিক্সাতে করে বাঁশখালী মা ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা সাজানো হয়। সেলিনা বেগম বলেন, নিহত জহির ড্রাইভারকে বাঁশখালী মা ও শিশু হাসপাতালে নেয়ার কথা বলা হলেও তাকে হাসপাতালে ভর্তি বা কোন ডাক্তারকে দেখানো হয়নি।

হাসপাতালের সামনে নিহত ব্যক্তিকে মৃত অবস্থায় নিয়ে উক্ত মা ও শিশু হাসপাতালের সামনে প্রতিক্ষারত অ্যাম্বুলেন্সে তুলে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরের দিন থানায় দায়েরকৃত এজাহারে উল্লেখ করা হয় আহত জহির ড্রাইভারকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে আসার সময় নেজামের বাড়ির সামনে দ্বিতীয় দফা অ্যাম্বুলেন্সে হামলা করে আহত জহির ড্রাইভারকে হত্যা করা হয় বলে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়।

বিনাদোষে নিরীহ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তানদের আসামি করা হয়। অথচ আমার স্বামী চট্টগ্রাম শহরের একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। তিনি দীর্ঘ ২ যুগ ধরে শহরে বসবাস করেন। আমার দেবর নেজাম উদ্দিন চট্টগ্রাম শহরের আছাদগঞ্জে এসএম চৌধুরী এন্ড ব্রাদার্সে ২০ বছর ধরে কর্মরত ও আমার দেবর জাফর আহমদ ইয়ং ওয়ানে কর্মরত ছিলেন। তারা সবাই শহরে বসবাস করেন। তাছাড়া আমার স্বামী ও দেবররা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। অথচ নিহত জহির ড্রাইভার ও তার পরিবারের সঙ্গে আমার স্বামী ও দেবরদের কোন ধরনের পূর্ব শত্রুতা নেই এবং ছিল না। ৩য় পক্ষ উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে গরিব জহির ড্রাইভার পরিবারকে ব্যবহার করে মিথ্যা এজাহার তৈরি করে বাদীকে মিথ্যা প্ররোচনা দিয়ে আমার স্বামীসহ নিরপরাধ কালিপুরের উচ্চ শিক্ষিত লোকদেরকে আসামি করা হয়েছে। এমতাবস্থায় পরিবারের উপার্জনক্ষম আমার স্বামী ও তার দুই ভাইসহ একই পরিবারের তিনজনকে হত্যা মামলার আসামি করায় তারা ব্যবসা ও চাকরি করতে পারছে না।

বীর মুক্তিযোদ্ধা কলিমুল্লাহর তিন সন্তান একটি সাজানো মিথ্যা মামলায় পুরো পরিবারটি অসহায়। ভুক্তভোগী নারী সেলিনা বেগম আরও জানান, থানায় দায়েরকৃত অভিযোগের আগে আমার স্বামী, তার ভাই, প্রতিবেশীগণ ঘটনা সম্পর্কে অবগত ছিল না। আসামি হিসেবে থানায় এজাহার দায়ের করার পর স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের থেকে জানতে পারি পূর্ব শত্রুতার ধারাবাহিকতায় বাকবিত-া ও হাতাহাতির ঘটনার রেশ ধরে বিগত ১২-০৫-২০২০ তারিখ আনুমানিক সকাল ৭:৩০টার দিকে নিহত জহির ড্রাইভারের নেতৃত্বে তাদের ১২-১৪ জন লোক একই পিকাপ চালক আনিসকে অতর্কিতভাবে এলোপাতারি জখম করে।

প্রতিপক্ষের আনিসের সঙ্গে মারামারির সময় নিহত জহির ড্রাইভার ঘটনার কিছুক্ষণ পরে নিজ বাড়ির আঙিনায় মারা যান। আমরাও চাই জহির ড্রাইভার হত্যা মামলার প্রকৃত আসামিদের সাজা হোক। নিরাপরাধ মানুষ সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে নিরাপরাধ প্রমাণ হোক। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষে আবদুল মালেক, মোহাম্মদ ইসহাক, রাজিয়া সুলতানা, নিজাম উদ্দিন, নিহত জহির ড্রাইভারকে হাসপাতালে নিতে পরিবহনকারী অ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভার পারভেজ প্রমুখ।

শনিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২১ , ১৪ কার্তিক ১৪২৮ ২২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

মিথ্যা মামলায় হয়রানি করার প্রতিবাদ

ভুক্তভোগী পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

প্রতিনিধি, বাঁশখালী (চট্টগ্রাম)

চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় সংঘটিত একটি মিথ্যা হত্যা মামলায় অন্য ইউনিয়নের ব্যবসায়ী, আইনজীবী, কৃষিবিদ ও চাকরিজীবীসহ ১০ জন নিরীহ মানুষকে আসামি করে এলাকা ছাড়া করার প্রতিবাদে গত রোববার সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব এস রহমান হলে সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগীর পরিবার। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষে সেলিনা বেগম বলেন- আমার স্বামী, তার দুই ভাই আইনজীবী, কৃষিবিদসহ ১০ জন নিরীহ মানুষকে একটি হত্যা মামলায় পরিকল্পিতভাবে আসামি করে এলাকাছাড়া করা হয়েছে। প্রকৃত সত্য উদঘাটনের জন্য আমি একজন সাধারণ গৃহবধূ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়েছি।

তিনি বলেন, আমার স্বামী- মনিরুল আলম, পিতা- বীরমুক্তিযোদ্ধা কলিম উল্লাহ, সাং- গুনাগরী, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম শহরের একজন স্বনামধন্য ব্যবসায়ী। তার দুই ভাই চট্টগ্রাম শহরে চাকরিজীবী। গত ১২ মে ২০২০ ইং বাঁশখালী উপজেলাধীন ২নং সাধনপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের সাদেক আলীর বাড়িতে জায়গা-জমির বিরোধ নিয়ে প্রতিপক্ষের আনিসকে নিহত জহির ড্রাইভারসহ তার পরিবারের লোকজন অতর্কিত হামলা করার সময় জহির ড্রাইভার নিহত হয়। ঘটনাস্থল ছিল সাধনপুর ইউনিয়নের সাদেক আলীর বাড়িতে।

ঘটনার তিন দিন পর বাঁশখালী থানায় দায়েরকৃত বাঁশখালী থানার ২৩(৫)২০২০ নম্বর মামলায় আমার স্বামী মনিরুল আলম তার ভাই নেজাম উদ্দিন, শহিদুল আলম ও প্রতিবেশী আইনজীবী মোহাম্মদ ইয়াসিন তার ভাই মহিউদ্দীন হাসান, সরকারি কৃষি কর্মকর্তা নুর উল্লাহ, মোস্তফা, রাশেদ, মুবিন ও কালু দশজন নিরীহ মানুষসহ ২৩ জনকে আসামি করা হয়।

তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় নিজেদের বাড়ির পাশে অ্যাম্বুলেন্স থামিয়ে আহত জহির ড্রাইভারকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। প্রকৃতপক্ষে আমার স্বামী, তার ভাই ও প্রতিবেশী নিরীহ আসামিদের বাড়ি ঘটনাস্থল সাধনপুর ইউনিয়ন থেকে এক কিলোমিটার দক্ষিণে কালীপুর ইউনিয়নে। কালীপুর ইউনিয়ন সাধনপুর ইউনিয়নের দক্ষিণে অবস্থিত।

ঘটনাস্থলে নিহত জহির ড্রাইভারের মরদেহ উত্তরের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে না নিয়ে নিরীহ মানুষদের ফাসানোর জন্য দক্ষিণের গুনাগরী এলাকায় নিয়ে অভিযুক্ত আসামিদের ঘরের সামনের মহাসড়ক দিয়ে সিএনজি অটোরিক্সাতে করে বাঁশখালী মা ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা সাজানো হয়। সেলিনা বেগম বলেন, নিহত জহির ড্রাইভারকে বাঁশখালী মা ও শিশু হাসপাতালে নেয়ার কথা বলা হলেও তাকে হাসপাতালে ভর্তি বা কোন ডাক্তারকে দেখানো হয়নি।

হাসপাতালের সামনে নিহত ব্যক্তিকে মৃত অবস্থায় নিয়ে উক্ত মা ও শিশু হাসপাতালের সামনে প্রতিক্ষারত অ্যাম্বুলেন্সে তুলে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরের দিন থানায় দায়েরকৃত এজাহারে উল্লেখ করা হয় আহত জহির ড্রাইভারকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে আসার সময় নেজামের বাড়ির সামনে দ্বিতীয় দফা অ্যাম্বুলেন্সে হামলা করে আহত জহির ড্রাইভারকে হত্যা করা হয় বলে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়।

বিনাদোষে নিরীহ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তানদের আসামি করা হয়। অথচ আমার স্বামী চট্টগ্রাম শহরের একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। তিনি দীর্ঘ ২ যুগ ধরে শহরে বসবাস করেন। আমার দেবর নেজাম উদ্দিন চট্টগ্রাম শহরের আছাদগঞ্জে এসএম চৌধুরী এন্ড ব্রাদার্সে ২০ বছর ধরে কর্মরত ও আমার দেবর জাফর আহমদ ইয়ং ওয়ানে কর্মরত ছিলেন। তারা সবাই শহরে বসবাস করেন। তাছাড়া আমার স্বামী ও দেবররা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। অথচ নিহত জহির ড্রাইভার ও তার পরিবারের সঙ্গে আমার স্বামী ও দেবরদের কোন ধরনের পূর্ব শত্রুতা নেই এবং ছিল না। ৩য় পক্ষ উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে গরিব জহির ড্রাইভার পরিবারকে ব্যবহার করে মিথ্যা এজাহার তৈরি করে বাদীকে মিথ্যা প্ররোচনা দিয়ে আমার স্বামীসহ নিরপরাধ কালিপুরের উচ্চ শিক্ষিত লোকদেরকে আসামি করা হয়েছে। এমতাবস্থায় পরিবারের উপার্জনক্ষম আমার স্বামী ও তার দুই ভাইসহ একই পরিবারের তিনজনকে হত্যা মামলার আসামি করায় তারা ব্যবসা ও চাকরি করতে পারছে না।

বীর মুক্তিযোদ্ধা কলিমুল্লাহর তিন সন্তান একটি সাজানো মিথ্যা মামলায় পুরো পরিবারটি অসহায়। ভুক্তভোগী নারী সেলিনা বেগম আরও জানান, থানায় দায়েরকৃত অভিযোগের আগে আমার স্বামী, তার ভাই, প্রতিবেশীগণ ঘটনা সম্পর্কে অবগত ছিল না। আসামি হিসেবে থানায় এজাহার দায়ের করার পর স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের থেকে জানতে পারি পূর্ব শত্রুতার ধারাবাহিকতায় বাকবিত-া ও হাতাহাতির ঘটনার রেশ ধরে বিগত ১২-০৫-২০২০ তারিখ আনুমানিক সকাল ৭:৩০টার দিকে নিহত জহির ড্রাইভারের নেতৃত্বে তাদের ১২-১৪ জন লোক একই পিকাপ চালক আনিসকে অতর্কিতভাবে এলোপাতারি জখম করে।

প্রতিপক্ষের আনিসের সঙ্গে মারামারির সময় নিহত জহির ড্রাইভার ঘটনার কিছুক্ষণ পরে নিজ বাড়ির আঙিনায় মারা যান। আমরাও চাই জহির ড্রাইভার হত্যা মামলার প্রকৃত আসামিদের সাজা হোক। নিরাপরাধ মানুষ সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে নিরাপরাধ প্রমাণ হোক। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষে আবদুল মালেক, মোহাম্মদ ইসহাক, রাজিয়া সুলতানা, নিজাম উদ্দিন, নিহত জহির ড্রাইভারকে হাসপাতালে নিতে পরিবহনকারী অ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভার পারভেজ প্রমুখ।