সড়ক মেরামতে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

নওগাঁর মহাদেবপুরে সড়ক জনপদ বিভাগের মেরামত কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে।

জানা যায়, গত বর্ষা মওসুমে নওগাঁ-মহাদেবপুর-পতœীতলা-ধামইরহাট-জয়পুরহাট আঞ্চলিক মহাসড়কের স্থানে স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। সেগুলোতে পানি জমে কাদাপানিতে সয়লাব হয়ে থাকে। মহাদেবপুর উপজেলা সদরের আখেড়া, বাসস্ট্যান্ড, ঘোষপাড়া মোড়, হাসপাতাল মোড়, লিচুতলা থেকে ব্র্যাকমোড় পর্যন্ত দীর্ঘ রাস্তার অবস্থা ছিল অত্যন্ত করুণ। এই সড়কে প্রায়ই যানবাহন উল্টে দুর্ঘটনা ঘটতো।

সম্প্রতি সড়ক ও জনপথ বিভাগ এই সড়কের ভাঙ্গা অংশে মাটি ফেলে উঁচু করে ইট দিয়ে হেরিং বোন বন্ড করার কাজ শুরু করে। এ কাজে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা। গত শুক্রবার বিকেলে উপজেলা সদরের বরেন্দ্র মোড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, হেরিং বোন বন্ড করার জন্য যে ইট ব্যবহার করা হচ্ছে তা নিম্নœমানের। নিচের এক ইটের যে সোলিং দেয়া হচ্ছে তা গায়ে গায়ে না লাগিয়ে কয়েক ইঞ্চি ফাঁক ফাঁক স্থাপন করা হয়েছে। ইট সাজানোর কাজ করছিলেন অসংখ্য লেবার। তাদের মধ্যে নিজেকে সরদার বলে পরিচয় দিলেন নওগাঁ শহরের কোমাইগাড়ী এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে চঞ্চল ম-ল। তিনি জানালেন, ভাঁটায় ১নং ইটের যোগান না থাকায় তারা এই ইট ব্যাবহার করছেন।

অপর মিস্ত্রি নওগাঁ সদর উপজেলার বাচারীগ্রাম গ্রামের বছির উদ্দিনের ছেলে আনোয়ার হোসেন জানালেন, সোলিংয়ে বালু দিয়ে জয়েন্টের জন্য প্রতিটি ইটের মাঝে ২ ইঞ্চি করে ফাঁকা রাখতে বলা হয়েছে। কিন্তু তারা ভুল করে ৩ ইঞ্চি করে ফাঁকা রেখেছেন। তিনি জানান, ঠিকাদার যে ইট সরবরাহ করেছে, তাই দিয়ে তারা কাজ করছেন। তবে যারা দেখবেন তারাই বলবেন যে এটা ১নং ইট নয়।

মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে ঠিকাদার মাসুদ জানান, কাজে যেগুলো ভুল হয়েছে সেগুলো ঠিক করা হবে। সওজ পতœীতলা উপবিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নুর আহমেদ জানান, এই উপবিভাগের আওতায় বেশ কয়েক জায়গায় কাজ চলছে। ফলে তিনি ইচ্ছা করলেও সব জায়গায় উপস্থিত থাকতে পারেন না।

তবে ঠিকাদার কাজ খারাপ করলে তার বিল দেয়া হবে না বলে তিনি জানান। নওগাঁ জেলা সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজেদুর রহমান জানান, বিষয়টি তিনি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

স্থানীয়রা জানান, নিম্নœমানের কাজের অভিযোগে গত শুক্রবার বিকেলে তারা কাজ বন্ধ করে দেন। কিন্তু ঠিকাদারের লোকেরা কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে নিম্নœমানের সামগ্রী ব্যবহার অব্যাহত রেখে শনিবার সকাল থেকে আবার কাজ শুরু করে।

রবিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২১ , ১৫ কার্তিক ১৪২৮ ২৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

সড়ক মেরামতে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

প্রতিনিধি, মহাদেবপুর (নওগাঁ)

image

মহাদেবপুর (নওগাঁ) : জয়পুরহাট আঞ্চলিক মহাসড়কে তিন ইঞ্চি ফাঁক করে বসানো হচ্ছে ইট -সংবাদ

নওগাঁর মহাদেবপুরে সড়ক জনপদ বিভাগের মেরামত কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে।

জানা যায়, গত বর্ষা মওসুমে নওগাঁ-মহাদেবপুর-পতœীতলা-ধামইরহাট-জয়পুরহাট আঞ্চলিক মহাসড়কের স্থানে স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। সেগুলোতে পানি জমে কাদাপানিতে সয়লাব হয়ে থাকে। মহাদেবপুর উপজেলা সদরের আখেড়া, বাসস্ট্যান্ড, ঘোষপাড়া মোড়, হাসপাতাল মোড়, লিচুতলা থেকে ব্র্যাকমোড় পর্যন্ত দীর্ঘ রাস্তার অবস্থা ছিল অত্যন্ত করুণ। এই সড়কে প্রায়ই যানবাহন উল্টে দুর্ঘটনা ঘটতো।

সম্প্রতি সড়ক ও জনপথ বিভাগ এই সড়কের ভাঙ্গা অংশে মাটি ফেলে উঁচু করে ইট দিয়ে হেরিং বোন বন্ড করার কাজ শুরু করে। এ কাজে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা। গত শুক্রবার বিকেলে উপজেলা সদরের বরেন্দ্র মোড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, হেরিং বোন বন্ড করার জন্য যে ইট ব্যবহার করা হচ্ছে তা নিম্নœমানের। নিচের এক ইটের যে সোলিং দেয়া হচ্ছে তা গায়ে গায়ে না লাগিয়ে কয়েক ইঞ্চি ফাঁক ফাঁক স্থাপন করা হয়েছে। ইট সাজানোর কাজ করছিলেন অসংখ্য লেবার। তাদের মধ্যে নিজেকে সরদার বলে পরিচয় দিলেন নওগাঁ শহরের কোমাইগাড়ী এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে চঞ্চল ম-ল। তিনি জানালেন, ভাঁটায় ১নং ইটের যোগান না থাকায় তারা এই ইট ব্যাবহার করছেন।

অপর মিস্ত্রি নওগাঁ সদর উপজেলার বাচারীগ্রাম গ্রামের বছির উদ্দিনের ছেলে আনোয়ার হোসেন জানালেন, সোলিংয়ে বালু দিয়ে জয়েন্টের জন্য প্রতিটি ইটের মাঝে ২ ইঞ্চি করে ফাঁকা রাখতে বলা হয়েছে। কিন্তু তারা ভুল করে ৩ ইঞ্চি করে ফাঁকা রেখেছেন। তিনি জানান, ঠিকাদার যে ইট সরবরাহ করেছে, তাই দিয়ে তারা কাজ করছেন। তবে যারা দেখবেন তারাই বলবেন যে এটা ১নং ইট নয়।

মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে ঠিকাদার মাসুদ জানান, কাজে যেগুলো ভুল হয়েছে সেগুলো ঠিক করা হবে। সওজ পতœীতলা উপবিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নুর আহমেদ জানান, এই উপবিভাগের আওতায় বেশ কয়েক জায়গায় কাজ চলছে। ফলে তিনি ইচ্ছা করলেও সব জায়গায় উপস্থিত থাকতে পারেন না।

তবে ঠিকাদার কাজ খারাপ করলে তার বিল দেয়া হবে না বলে তিনি জানান। নওগাঁ জেলা সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজেদুর রহমান জানান, বিষয়টি তিনি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

স্থানীয়রা জানান, নিম্নœমানের কাজের অভিযোগে গত শুক্রবার বিকেলে তারা কাজ বন্ধ করে দেন। কিন্তু ঠিকাদারের লোকেরা কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে নিম্নœমানের সামগ্রী ব্যবহার অব্যাহত রেখে শনিবার সকাল থেকে আবার কাজ শুরু করে।