প্রোটিয়া ম্যাচের আগে বিশ্রামে টাইগাররা

অর্জনের খাতায় নাম লেখানোর আশা ছাড়েনি

বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বকাপের বিমান ধরেছিল অনেক উঁচু আশা নিয়ে। এখন এসব চিন্তা-ভাবনা অতীতে, সুপার টুয়েলভে টানা তিন ম্যাচ হেরে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে যাওয়ার আশা শেষ টাইগারদের, শুধু নিয়ম রক্ষার জন্য মাহমুদুল্লাহরা এখন বাকি দুই ম্যাচ খেলবে।

শ্রীলঙ্কা, ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে ম্যাচ শেষ। এবার সামনে দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া। ২ নভেম্বর আবুধাবিতে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। আর একদিন পর দুবাইতে খেলতে হবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে।

প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ম্যাচের আগে তিনদিন সময় থাকলেও বাংলাদেশ দুদিন বিশ্রামে করবে। কোন অনুশীলন নেই। ম্যাচের আগের দিন ১ নভেম্বর আইসিসি একাডেমি মাঠে অনুশীলনের কথা রয়েছে মাহমুদুল্লাহ দলের।

এদিকে তলপেটে বলের আঘাত পাওয়া নুরুল হাসান সোহান এখনও সুস্থ হননি। ব্যথার কারণে খেলতে পারেননি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। তবে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ম্যাচের আগে সুস্থ হয়ে যাবেন বলে দলের সঙ্গে থাকা নির্বাচক হাবিবুল বাশার জানিয়েছেন। এছাড়া সাকিব আল হাসান ভুগছেন হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে। তাকে রাখা হয়েছে পর্যবেক্ষণে।

সেমিফাইনালের প্রত্যাশা না থাকলেও সামনের দুই ম্যাচে জয় পেতে চায় বাংলাদেশ। অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ বলেন, ‘এই দুইটা ম্যাচ যদি জিততে পারি, ইনশাআল্লাহ দলের জন্য ভালো কিছু একটা হবে এবং আমরা চেষ্টা করছি সবাই, মরিয়া হয়েই চেষ্টা করছি। মাঠে শতভাগ দেয়ার চেষ্টা করছি, তবে ভুল হচ্ছে, কিন্তু পরের দুটি ম্যাচ জেতার চেষ্টা করব।’

উইন্ডিজ ম্যাচে বাজে বোলিং কিংবা মিসফিল্ডিংয়ে ফসকে গেছে ম্যাচ। পুরো ম্যাচ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখে শেষ দিকে এসে হারতে হলো টাইগারদের। যেন তীরে এসে ডুবল তরী। প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ক্যাচ ফসকে ম্যাচ ফসকে যায়। দুটি ম্যাচে জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেও পারেনি বাংলাদেশ। মাঝে ইংল্যান্ডের কাছে পাত্তা পায়নি মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের দল। টানা তিন ম্যাচে হেরে টি-২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠার স্বপ্ন মাটিতে মিশে গেছে।

বিশ্বকাপের সমীকরণ সামনে আনলে আসন্ন দুই ম্যাচ থেকে বাংলাদেশের পাওয়ার কিছু নেই। তবে নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে অর্জনের খাতায় নাম লেখাতে পারে আর দলের যে মানসিক অবস্থা সেটাও কিছুটা কাটিয়ে উঠতে পারে। এটাই হতে পারে বাংলাদেশের একমাত্র লক্ষ্য।

অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ বলেছেন, ‘এখনও অনেক কিছুই পাওয়ার আছে। যদিও সেমিফাইনালের আশাটা ক্ষীণ হয়ে গেছে কিন্তু দুটি ম্যাচ আছে। দুই ম্যাচ যদি জিততে পারি, ইনশাআল্লাহ দলের জন্য ভালো কিছু একটা হবে।’ উইন্ডিজের বিপক্ষে এমন সহজ ম্যাচ হাতছাড়া হওয়ার পর মানতে পারছেন না কেউ। শারজা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগত প্রবাসী দর্শকরা ক্ষুব্ধ। দলের নিবেদন, শারীরিক ভাষা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। এখনও যদি এমনভাবে হারতে হয়, তাহলে বাংলাদেশ শিখবে কবে- কেউ কেউ করেছেন এমন প্রশ্ন। সিনিয়র ক্রিকেটাররা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে অযাচিত শট খেলে সাজঘরে ফিরবেন, এমন আর কত!

তবে মাহমুদুল্লাহ জানালেন তারা মরিয়া হয়ে চেষ্টা করছেন জয়ের জন্য, ‘আমরা চেষ্টা করছি সবাই, মরিয়া হয়েই চেষ্টা করছি। মাঠে শতভাগ দেয়ার কমিটমেন্ট রাখার চেষ্টা করছি। তবে ভুল হচ্ছে। বাকি দুটি ম্যাচ জেতার চেষ্টা করব।’ স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হার দিয়ে বিশ্বকাপে যাত্রা শুরু। ওমান-পাপুয়া নিউগিনিকে হারিয়ে সুপার টুয়েলভের টিকিট কেটেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু মূলপর্বের লড়াইয়ে এসে তারা যেন অচেনা। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫ উইকেটে হার, ইংলিশদের বিপক্ষে ৮ উইকেট ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে মাত্র ৩ রানে। উইন্ডিজের বিপক্ষে এই ম্যাচটি ছিল ঘুরে দাঁড়ানোর, সেটা তো পারেনি, উল্টো যেন ভেঙে পড়েছে। দলের এমন পারফরম্যান্স, ক্যাচ মিস এসব নিয়ে অধিনায়কের কী পর্যালোচনা? মাহমুদুল্লাহ বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলোতে, বিশেষ করে যারা দলের সেরা ফিল্ডার তারা ক্যাচ মিস করে অনেক সময়, কেউ তো আর ইচ্ছা করে করে না। কিন্তু আমরা তো আশা করি যে ওই সুযোগগুলো ধরা দিবে। যেহেতু আমরা ধারাবাহিকভাবে ওই ভুলগুলো করছি ম্যাচ বাই ম্যাচ, অবশ্যই এগুলো উদ্বেগের। আমার তো মনে হয় যে আমাদের ক্যাচিং আরও ভালো করতে হবে এবং করা উচিত।’ শুধু ক্যাচিং না বাংলাদেশের গ্রাউন্ড ফিল্ডিংও ছিল হতশ্রী। টি-২০ ক্রিকেটে ভালো ব্যাটিং-বোলিংয়ের মতো দুর্দান্ত ফিল্ডিংও খুব জরুরি। আঁটসাঁট ফিল্ডিং করে অল্প কয়েক রান যদি বাঁচানো যায়, ম্যাচ শেষে সেগুলো হয়ে দাঁড়ায় পাহাড়সম। এই অল্প কয় রানই ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দেয়। বাংলাদেশ কবে শিখবে এটা?

বাংলাদেশ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচ দুটি খেলবে ২ নভেম্বর নিউজিল্যান্ড ও ৪ নভেম্বর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে।

রবিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২১ , ১৫ কার্তিক ১৪২৮ ২৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

প্রোটিয়া ম্যাচের আগে বিশ্রামে টাইগাররা

অর্জনের খাতায় নাম লেখানোর আশা ছাড়েনি

ক্রীড়া বার্তা পরিবেশক

image

বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বকাপের বিমান ধরেছিল অনেক উঁচু আশা নিয়ে। এখন এসব চিন্তা-ভাবনা অতীতে, সুপার টুয়েলভে টানা তিন ম্যাচ হেরে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে যাওয়ার আশা শেষ টাইগারদের, শুধু নিয়ম রক্ষার জন্য মাহমুদুল্লাহরা এখন বাকি দুই ম্যাচ খেলবে।

শ্রীলঙ্কা, ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে ম্যাচ শেষ। এবার সামনে দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া। ২ নভেম্বর আবুধাবিতে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। আর একদিন পর দুবাইতে খেলতে হবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে।

প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ম্যাচের আগে তিনদিন সময় থাকলেও বাংলাদেশ দুদিন বিশ্রামে করবে। কোন অনুশীলন নেই। ম্যাচের আগের দিন ১ নভেম্বর আইসিসি একাডেমি মাঠে অনুশীলনের কথা রয়েছে মাহমুদুল্লাহ দলের।

এদিকে তলপেটে বলের আঘাত পাওয়া নুরুল হাসান সোহান এখনও সুস্থ হননি। ব্যথার কারণে খেলতে পারেননি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। তবে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ম্যাচের আগে সুস্থ হয়ে যাবেন বলে দলের সঙ্গে থাকা নির্বাচক হাবিবুল বাশার জানিয়েছেন। এছাড়া সাকিব আল হাসান ভুগছেন হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে। তাকে রাখা হয়েছে পর্যবেক্ষণে।

সেমিফাইনালের প্রত্যাশা না থাকলেও সামনের দুই ম্যাচে জয় পেতে চায় বাংলাদেশ। অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ বলেন, ‘এই দুইটা ম্যাচ যদি জিততে পারি, ইনশাআল্লাহ দলের জন্য ভালো কিছু একটা হবে এবং আমরা চেষ্টা করছি সবাই, মরিয়া হয়েই চেষ্টা করছি। মাঠে শতভাগ দেয়ার চেষ্টা করছি, তবে ভুল হচ্ছে, কিন্তু পরের দুটি ম্যাচ জেতার চেষ্টা করব।’

উইন্ডিজ ম্যাচে বাজে বোলিং কিংবা মিসফিল্ডিংয়ে ফসকে গেছে ম্যাচ। পুরো ম্যাচ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখে শেষ দিকে এসে হারতে হলো টাইগারদের। যেন তীরে এসে ডুবল তরী। প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ক্যাচ ফসকে ম্যাচ ফসকে যায়। দুটি ম্যাচে জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেও পারেনি বাংলাদেশ। মাঝে ইংল্যান্ডের কাছে পাত্তা পায়নি মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের দল। টানা তিন ম্যাচে হেরে টি-২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠার স্বপ্ন মাটিতে মিশে গেছে।

বিশ্বকাপের সমীকরণ সামনে আনলে আসন্ন দুই ম্যাচ থেকে বাংলাদেশের পাওয়ার কিছু নেই। তবে নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে অর্জনের খাতায় নাম লেখাতে পারে আর দলের যে মানসিক অবস্থা সেটাও কিছুটা কাটিয়ে উঠতে পারে। এটাই হতে পারে বাংলাদেশের একমাত্র লক্ষ্য।

অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ বলেছেন, ‘এখনও অনেক কিছুই পাওয়ার আছে। যদিও সেমিফাইনালের আশাটা ক্ষীণ হয়ে গেছে কিন্তু দুটি ম্যাচ আছে। দুই ম্যাচ যদি জিততে পারি, ইনশাআল্লাহ দলের জন্য ভালো কিছু একটা হবে।’ উইন্ডিজের বিপক্ষে এমন সহজ ম্যাচ হাতছাড়া হওয়ার পর মানতে পারছেন না কেউ। শারজা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগত প্রবাসী দর্শকরা ক্ষুব্ধ। দলের নিবেদন, শারীরিক ভাষা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। এখনও যদি এমনভাবে হারতে হয়, তাহলে বাংলাদেশ শিখবে কবে- কেউ কেউ করেছেন এমন প্রশ্ন। সিনিয়র ক্রিকেটাররা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে অযাচিত শট খেলে সাজঘরে ফিরবেন, এমন আর কত!

তবে মাহমুদুল্লাহ জানালেন তারা মরিয়া হয়ে চেষ্টা করছেন জয়ের জন্য, ‘আমরা চেষ্টা করছি সবাই, মরিয়া হয়েই চেষ্টা করছি। মাঠে শতভাগ দেয়ার কমিটমেন্ট রাখার চেষ্টা করছি। তবে ভুল হচ্ছে। বাকি দুটি ম্যাচ জেতার চেষ্টা করব।’ স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হার দিয়ে বিশ্বকাপে যাত্রা শুরু। ওমান-পাপুয়া নিউগিনিকে হারিয়ে সুপার টুয়েলভের টিকিট কেটেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু মূলপর্বের লড়াইয়ে এসে তারা যেন অচেনা। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫ উইকেটে হার, ইংলিশদের বিপক্ষে ৮ উইকেট ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে মাত্র ৩ রানে। উইন্ডিজের বিপক্ষে এই ম্যাচটি ছিল ঘুরে দাঁড়ানোর, সেটা তো পারেনি, উল্টো যেন ভেঙে পড়েছে। দলের এমন পারফরম্যান্স, ক্যাচ মিস এসব নিয়ে অধিনায়কের কী পর্যালোচনা? মাহমুদুল্লাহ বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলোতে, বিশেষ করে যারা দলের সেরা ফিল্ডার তারা ক্যাচ মিস করে অনেক সময়, কেউ তো আর ইচ্ছা করে করে না। কিন্তু আমরা তো আশা করি যে ওই সুযোগগুলো ধরা দিবে। যেহেতু আমরা ধারাবাহিকভাবে ওই ভুলগুলো করছি ম্যাচ বাই ম্যাচ, অবশ্যই এগুলো উদ্বেগের। আমার তো মনে হয় যে আমাদের ক্যাচিং আরও ভালো করতে হবে এবং করা উচিত।’ শুধু ক্যাচিং না বাংলাদেশের গ্রাউন্ড ফিল্ডিংও ছিল হতশ্রী। টি-২০ ক্রিকেটে ভালো ব্যাটিং-বোলিংয়ের মতো দুর্দান্ত ফিল্ডিংও খুব জরুরি। আঁটসাঁট ফিল্ডিং করে অল্প কয়েক রান যদি বাঁচানো যায়, ম্যাচ শেষে সেগুলো হয়ে দাঁড়ায় পাহাড়সম। এই অল্প কয় রানই ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দেয়। বাংলাদেশ কবে শিখবে এটা?

বাংলাদেশ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচ দুটি খেলবে ২ নভেম্বর নিউজিল্যান্ড ও ৪ নভেম্বর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে।