ফেরি উদ্ধারে হামজা-রুস্তম ব্যর্থ

বেসরকারি সংস্থা দায়িত্ব পেল

হামজা ও রুস্তম ব্যর্থ হওয়ায় দায়িত্ব দেয়া হয়েছে জেনুইন এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডকে। মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ায় ডুবে যাওয়া ফেরিটি চারদিনেও উদ্ধার করতে পারেনি অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। তাই বেসরকারি সংস্থাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আজ সকাল থেকে উদ্ধারে কাজ শুরু করবে সংস্থাটি।

মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় ফেরিটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)। ফেরিটি উদ্ধারের পর আর চালানো হবে না বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম।

এ বিষয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘উদ্ধারের পর ফেরিটি নিয়ে কি করা হবে, সে বিষয়ে আমরা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত চাইব। এখনও এটি রিপেয়ার (সংস্কার) করার সিদ্ধান্ত হয়নি। যেহেতু ফেরিটির অনেক বয়স হয়েছে, এটি রিপেয়ার করলে কত দিন চালানো যাবে- তা বলা যাচ্ছে না। আমরা পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে এটিকে নিলামে বিক্রি করে দিতে পারি।’

গত বুধবার সকালে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ঘাটে নোঙর করার পর আমানত শাহ নামে রো রো ফেরিটি কাত হয়ে ডুবে যায়। ফেরিটি কাত হওয়ার আগে তিনটি ট্রাক নামতে পারলেও বাকি ১৪টি ট্রাক-কাভার্ডভ্যান এবং চারটি মোটরসাইকেল নিয়ে ডুবে যায় ফেরিটি। এরপর চারদিন অভিযান চালিয়ে ডুবে যাওয়া সব যান উদ্ধার সম্পন্ন করে উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা এবং রুস্তম। তবে ডুবে যাওয়া ফেরি উদ্ধারে তাদের সক্ষমতা না থাকায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে বলে বিআইডব্লিউটিএর সূত্র জানায়।

এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর পরিচালক (নৌ-সংরক্ষণ ও পরিচালন বিভাগ) মো. শাহজাহান সংবাদকে বলেন, ‘বিআইডব্লিউটিএর দুটি উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা ও রুস্তমের সক্ষমতা হলো ১২০ টন। কিন্তু ফেরি ডুবে থাকার কারণে এর ওজন ১ হাজার টনের বেশি হয়ে গেছে। তাই ফেরিটি উদ্ধারে বেসরকারি একটি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে। তারা সোমবার (আজ) থেকে উদ্ধার কাজ শুরু করবে। উদ্ধার শেষে তাদের খরচের বিষয়ে আলোচনা করা হবে। এখনও এই বিষয়ে কোন ব্যয় নির্ধারণ করা হ নি।’

স্থানীয় সূত্র জানায়, ফেরিটি উদ্ধারে বেসরকারি সংস্থা জেনুইন এন্টারপ্রাইস লিমিটেডের সঙ্গে প্রাথমিক চুক্তি করা হয়েছে। সব ঠিক থাকলে ঘটনাস্থলের সার্বিক পরিস্থিতি দেখে আজ থেকে উদ্ধার তৎপরতা চালানোর কথা রয়েছে। এদিকে গত শনিবার রাতে ফেরির সঙ্গে ডুবে যাওয়া সব যানবাহন উদ্ধারকাজ সম্পন্ন হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্ধার কাজের সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়নি।

জেনুইন এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) বদিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘কাজ পেলে আমাদের কোম্পানির ২৫০ টন করে সক্ষমতার তিনটি উইন্সবার্জ ট্রাক উদ্ধারকাজে অংশ নেবে। তবে প্রয়োজনে (ইকুয়েপমেন্ট) যন্ত্রাংশ বাড়ানো হতে পারে। এই কাজে ৩০ জন উদ্ধারকর্মী অংশ নিতে পারে। আমাদের সঙ্গে প্রাথমিক চুক্তি হয়েছে। আমরা আমাদের প্রাথমিক খরচের চাহিদাপত্র দিয়েছি দুই কোটি টাকা। এখন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে আমাদের জানাবেন।’

ফেরি দুর্ঘটনার কারণে পাটুরিয়া ৫ নম্বর ঘাটটি বন্ধ রয়েছে। এছাড়া শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুট বন্ধ থাকার কারণে পাটুরিয়া ঘাটে ঘানবাহনের দীর্ঘ সারির সৃষ্টি হয়েছে। এ সময় অন্তত ছয় শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক ও শতাধিক যানবাহন পারের অপেক্ষায় রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান।

সোমবার, ০১ নভেম্বর ২০২১ , ১৬ কার্তিক ১৪২৮ ২৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

ফেরি উদ্ধারে হামজা-রুস্তম ব্যর্থ

বেসরকারি সংস্থা দায়িত্ব পেল

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক ও প্রতিনিধি, শিবালয় (মানিকগঞ্জ)

image

হামজা ও রুস্তম ব্যর্থ হওয়ায় দায়িত্ব দেয়া হয়েছে জেনুইন এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডকে। মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ায় ডুবে যাওয়া ফেরিটি চারদিনেও উদ্ধার করতে পারেনি অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। তাই বেসরকারি সংস্থাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আজ সকাল থেকে উদ্ধারে কাজ শুরু করবে সংস্থাটি।

মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় ফেরিটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)। ফেরিটি উদ্ধারের পর আর চালানো হবে না বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম।

এ বিষয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘উদ্ধারের পর ফেরিটি নিয়ে কি করা হবে, সে বিষয়ে আমরা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত চাইব। এখনও এটি রিপেয়ার (সংস্কার) করার সিদ্ধান্ত হয়নি। যেহেতু ফেরিটির অনেক বয়স হয়েছে, এটি রিপেয়ার করলে কত দিন চালানো যাবে- তা বলা যাচ্ছে না। আমরা পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে এটিকে নিলামে বিক্রি করে দিতে পারি।’

গত বুধবার সকালে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ঘাটে নোঙর করার পর আমানত শাহ নামে রো রো ফেরিটি কাত হয়ে ডুবে যায়। ফেরিটি কাত হওয়ার আগে তিনটি ট্রাক নামতে পারলেও বাকি ১৪টি ট্রাক-কাভার্ডভ্যান এবং চারটি মোটরসাইকেল নিয়ে ডুবে যায় ফেরিটি। এরপর চারদিন অভিযান চালিয়ে ডুবে যাওয়া সব যান উদ্ধার সম্পন্ন করে উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা এবং রুস্তম। তবে ডুবে যাওয়া ফেরি উদ্ধারে তাদের সক্ষমতা না থাকায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে বলে বিআইডব্লিউটিএর সূত্র জানায়।

এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর পরিচালক (নৌ-সংরক্ষণ ও পরিচালন বিভাগ) মো. শাহজাহান সংবাদকে বলেন, ‘বিআইডব্লিউটিএর দুটি উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা ও রুস্তমের সক্ষমতা হলো ১২০ টন। কিন্তু ফেরি ডুবে থাকার কারণে এর ওজন ১ হাজার টনের বেশি হয়ে গেছে। তাই ফেরিটি উদ্ধারে বেসরকারি একটি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে। তারা সোমবার (আজ) থেকে উদ্ধার কাজ শুরু করবে। উদ্ধার শেষে তাদের খরচের বিষয়ে আলোচনা করা হবে। এখনও এই বিষয়ে কোন ব্যয় নির্ধারণ করা হ নি।’

স্থানীয় সূত্র জানায়, ফেরিটি উদ্ধারে বেসরকারি সংস্থা জেনুইন এন্টারপ্রাইস লিমিটেডের সঙ্গে প্রাথমিক চুক্তি করা হয়েছে। সব ঠিক থাকলে ঘটনাস্থলের সার্বিক পরিস্থিতি দেখে আজ থেকে উদ্ধার তৎপরতা চালানোর কথা রয়েছে। এদিকে গত শনিবার রাতে ফেরির সঙ্গে ডুবে যাওয়া সব যানবাহন উদ্ধারকাজ সম্পন্ন হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্ধার কাজের সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়নি।

জেনুইন এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) বদিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘কাজ পেলে আমাদের কোম্পানির ২৫০ টন করে সক্ষমতার তিনটি উইন্সবার্জ ট্রাক উদ্ধারকাজে অংশ নেবে। তবে প্রয়োজনে (ইকুয়েপমেন্ট) যন্ত্রাংশ বাড়ানো হতে পারে। এই কাজে ৩০ জন উদ্ধারকর্মী অংশ নিতে পারে। আমাদের সঙ্গে প্রাথমিক চুক্তি হয়েছে। আমরা আমাদের প্রাথমিক খরচের চাহিদাপত্র দিয়েছি দুই কোটি টাকা। এখন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে আমাদের জানাবেন।’

ফেরি দুর্ঘটনার কারণে পাটুরিয়া ৫ নম্বর ঘাটটি বন্ধ রয়েছে। এছাড়া শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুট বন্ধ থাকার কারণে পাটুরিয়া ঘাটে ঘানবাহনের দীর্ঘ সারির সৃষ্টি হয়েছে। এ সময় অন্তত ছয় শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক ও শতাধিক যানবাহন পারের অপেক্ষায় রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান।