রাজশাহীতে অপসাংবাদিকতার বিরুদ্ধে সোচ্চার সাংবাদিকরা

নামসর্বস্ব অনলাইন আর নিজেদের ফেসবুকের টাইমলাইনে কিছু লেখা পোস্ট করেই এক শ্রেণীর লোক নিজেদের সাংবাদিক দাবি করে বসেন।

এদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন রাজশাহীর পেশাদার সাংবাদিকরা। গত রোববার বেলা ১১টায় নগরীর অন্যতম প্রধান ব্যস্ততম এলাকা শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান চত্বরে-এই অভিযোগ এনে রাস্তা অবরোধ করে সাংবাদিকরা অবস্থান নেন। বিকেল পৌনে ৫টায় এই অবরোধ তুলে নেয়া হয়।

ঘটনার সূত্রপাত সকাল সাড়ে ১০টার দিকে। রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবের ব্যানারে কয়েকজন কথিত সাংবাদিক মানববন্ধন করতে যান শহীদ কামারুজ্জামান চত্বরে। এরা রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের সচিব ও আঞ্চলিক শিক্ষা ভবনের পরিচালক এবং সহকারী পরিচালকের অপসারণের দাবিতে এ মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এসব কর্মকর্তাদের অভিযোগ, সাংবাদিক পরিচয়ে কিছু ব্যক্তি চাঁদা চাইতে এসেছিলেন। তা না পেয়ে তাদের বিরুদ্ধে মানববন্ধনের আয়োজন করা হচ্ছে। তারা রাজশাহীর পেশাদার সাংবাদিকদের এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রফিকুল ইসলামসহ কয়েকজন সাংবাদিক। তিনি আয়োজকদের সাংবাদিকতার নামে এসব কর্মকা- থেকে বিরত থাকার জন্য বলেন। আর তখনই পুলিশের সামনেই রফিকুল ইসলামের ওপর চড়াও হন কথিত সাংবাদিকরা। তাকে রক্ষায় এগিয়ে গেলে সিনিয়র ফটোসাংবাদিক সেলিম জাহাঙ্গীর, স্থানীয় সাংবাদিক রাজু আহমেদ এবং কাবিল হোসেনকেও লাঞ্ছিত করা হয়।

ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, মাজহারুল ইসলাম চপল, আবু কাউসার মাখন, হারুন, সুমন, রাজন, সোনা, লিয়াকত, রেজাউল করিম, রকি ও ফারুক হোসেনসহ তাদের ওপর হামলা চালায়। এ বিষয়ে তারা মামলা দায়ের করবেন। এদিকে চার সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে বেলা ১১টায় কামারুজ্জামান চত্বরে রাস্তায় বসে পড়েন ক্ষুব্ধ সাংবাদিকরা। বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। সাংবাদিকরা হামলাকারী কথিত সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার এবং নগরীর বোয়ালিয়া থানার ওসি নিবারণচন্দ্র বর্মণের প্রত্যাহারের দাবিতে নানা সেøাগান দিতে থাকেন। দুপুরের দিকে পুলিশের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার সাংবাদিক নেতৃবৃন্দকে এ বিষয়ে নগর পুলিশের কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিকের সঙ্গে বসার অনুরোধ জানান।

আহ্বানে সাড়া দিয়ে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি, সাধারণ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম-মহাসচিবসহ সাংবাদিক নেতারা পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। পুলিশ কমিশনার দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দিলেও তাৎক্ষণিক কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় সাংবাদিকরা বৈঠক থেকে বেরিয়ে যান।

এদিকে সাংবাদিকদের একটি প্রতিনিধি দল পুলিশ কমিশনারের কাছে গেলেও অন্য সাংবাদিকরা সড়ক অবরোধ করেই ছিলেন। প্রতিনিধিদল ফিরে আসার পরও ওই আন্দোলন চলছিল। বিকেল পৌনে ৫টার দিকে পুলিশের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের জানানো হয়, হামলাকারী কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরপর অবরোধ তুলে নেয়া হয়।

মঙ্গলবার, ০২ নভেম্বর ২০২১ , ১৭ কার্তিক ১৪২৮ ২৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

রাজশাহীতে অপসাংবাদিকতার বিরুদ্ধে সোচ্চার সাংবাদিকরা

জেলা বার্তা পরিবেশক, রাজশাহী

image

নামসর্বস্ব অনলাইন আর নিজেদের ফেসবুকের টাইমলাইনে কিছু লেখা পোস্ট করেই এক শ্রেণীর লোক নিজেদের সাংবাদিক দাবি করে বসেন।

এদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন রাজশাহীর পেশাদার সাংবাদিকরা। গত রোববার বেলা ১১টায় নগরীর অন্যতম প্রধান ব্যস্ততম এলাকা শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান চত্বরে-এই অভিযোগ এনে রাস্তা অবরোধ করে সাংবাদিকরা অবস্থান নেন। বিকেল পৌনে ৫টায় এই অবরোধ তুলে নেয়া হয়।

ঘটনার সূত্রপাত সকাল সাড়ে ১০টার দিকে। রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবের ব্যানারে কয়েকজন কথিত সাংবাদিক মানববন্ধন করতে যান শহীদ কামারুজ্জামান চত্বরে। এরা রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের সচিব ও আঞ্চলিক শিক্ষা ভবনের পরিচালক এবং সহকারী পরিচালকের অপসারণের দাবিতে এ মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এসব কর্মকর্তাদের অভিযোগ, সাংবাদিক পরিচয়ে কিছু ব্যক্তি চাঁদা চাইতে এসেছিলেন। তা না পেয়ে তাদের বিরুদ্ধে মানববন্ধনের আয়োজন করা হচ্ছে। তারা রাজশাহীর পেশাদার সাংবাদিকদের এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রফিকুল ইসলামসহ কয়েকজন সাংবাদিক। তিনি আয়োজকদের সাংবাদিকতার নামে এসব কর্মকা- থেকে বিরত থাকার জন্য বলেন। আর তখনই পুলিশের সামনেই রফিকুল ইসলামের ওপর চড়াও হন কথিত সাংবাদিকরা। তাকে রক্ষায় এগিয়ে গেলে সিনিয়র ফটোসাংবাদিক সেলিম জাহাঙ্গীর, স্থানীয় সাংবাদিক রাজু আহমেদ এবং কাবিল হোসেনকেও লাঞ্ছিত করা হয়।

ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, মাজহারুল ইসলাম চপল, আবু কাউসার মাখন, হারুন, সুমন, রাজন, সোনা, লিয়াকত, রেজাউল করিম, রকি ও ফারুক হোসেনসহ তাদের ওপর হামলা চালায়। এ বিষয়ে তারা মামলা দায়ের করবেন। এদিকে চার সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে বেলা ১১টায় কামারুজ্জামান চত্বরে রাস্তায় বসে পড়েন ক্ষুব্ধ সাংবাদিকরা। বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। সাংবাদিকরা হামলাকারী কথিত সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার এবং নগরীর বোয়ালিয়া থানার ওসি নিবারণচন্দ্র বর্মণের প্রত্যাহারের দাবিতে নানা সেøাগান দিতে থাকেন। দুপুরের দিকে পুলিশের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার সাংবাদিক নেতৃবৃন্দকে এ বিষয়ে নগর পুলিশের কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিকের সঙ্গে বসার অনুরোধ জানান।

আহ্বানে সাড়া দিয়ে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি, সাধারণ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম-মহাসচিবসহ সাংবাদিক নেতারা পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। পুলিশ কমিশনার দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দিলেও তাৎক্ষণিক কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় সাংবাদিকরা বৈঠক থেকে বেরিয়ে যান।

এদিকে সাংবাদিকদের একটি প্রতিনিধি দল পুলিশ কমিশনারের কাছে গেলেও অন্য সাংবাদিকরা সড়ক অবরোধ করেই ছিলেন। প্রতিনিধিদল ফিরে আসার পরও ওই আন্দোলন চলছিল। বিকেল পৌনে ৫টার দিকে পুলিশের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের জানানো হয়, হামলাকারী কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরপর অবরোধ তুলে নেয়া হয়।