হারের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসার লক্ষ্য টাইগারদের

আজ বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ

রেকর্ড বই জানাচ্ছে যে, বাংলাদেশের বিপক্ষে শেষ ছয়টা টি-২০ ম্যাচের প্রতিটাই জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ২০০৭ সালের প্রথম টি-২০ বিশ্বকাপেও প্রোটিয়াদের কাছে পরাজিত হয়েছিল বাংলাদেশ দল। ২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে পচেফস্ট্রমে শেষবার টি-২০ ফরম্যাটে প্রোটিয়াদের মোকাবিলা করেছিল টাইগাররা। ওই ম্যাচে বাংলাদেশের পেসার শরিফুল এক ওভারে দিয়েছিলেন ৩১ রান, যার মধ্যে আছে ডেভিড মিলারের পাঁচটি ছক্কা। সেই ম্যাচে ৩৬ বলে ১০১ রানে করেছিলেন এই প্রোটিয়া ব্যাটার।

এরপর কেটেছে চারটি বছর। পরিবর্তন এসেছে দুটো দলেই। সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবি আলাদা একটা ভেন্যু। কিন্তু এই ভেন্যুতে টি-২০ বিশ্বকাপের সপ্তম আসরে টাইগাররা আজ বিকেল ৪টায় প্রোটিয়াদের মুখোমুখি হওয়ার সময়ে খুব বেশি আশাবাদী হওয়া যাচ্ছে না। যদিও কাগজে কলমে অন্তত প্রোটিয়াদের পরাজিত করার সামর্থ্যরে কমতি নেই বাংলাদেশ দলের। খুব বেশি আশাবাদী হতে না পারার কারণের অভাব নেই। টাইগারদের মাঠের পারফরম্যান্স কেমন যেন ছন্নছাড়া। এই অবস্থার সমালোচনা হচ্ছে মাঠের বাইরেও। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে রীতিমত কাঁদা-ছোঁড়াছুড়ি চলছে। এতে যোগ দিয়েছেন নামিদামি ক্রিকেটারদের সহধর্মীনিরাও। আবার বিসিবি এবং ক্রিকেটারদের মাঝেও দূরত্ব তৈরি হওয়ার ব্যাপারটা অস্বীকার করা যাচ্ছে না। চলতি আসরে তিন ম্যাচে পরাজয় ছাড়াও এসব বিষয় নিয়ে মানসিক চাপে যে টাইগাররা ভুগছেন, তা বলা বাহুল্য। যদিও কেউ তা স্বীকার করছে না। মরার ওপর খাড়ার ঘাঁ-এর মতো যোগ হয়েছে বিশ্বসেরা অল রাউন্ডার সাকিব আল হাসানের ইনজুরি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচে হ্যামস্ট্রিংয়ের ইনজুরি নিয়েও ব্যাটে-বলে উজ্জ্বল সাকিব এবারের আসরের বাকি ম্যাচগুলো খেলতে পারছেন না। এরকম একটা অবস্থায় থাকা বাংলাদেশ দলকে পরাজিত করে সেমিফাইনালের দৌড়ে এগিয়ে যাবার সুযোগটা কোনমতেই হাতছাড়া করতে চাইবে না।

ইনজুরির কবলে পড়েছে দক্ষিণ আফ্রিকান দলও। শেষ ওভারে ছক্কা হাঁকিয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় এনে দেয়া ডেভিড মিলারেরও হ্যামস্ট্রিংয়ে টান পড়েছে। চলতি আসরে এ পর্যন্ত প্রোটিয়াদের সেরা বোলার তাবরেজ সামশিও কুঁচকির ইনজুরিতে পড়েছেন।

প্রোটিয়াদের স্কোয়াডে থাকা এইডেন মার্করাম, ভ্যান ডার ডাসেন ও রিজা হেনরিকস ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ভালো করেছেন। রানের মধ্যেই আছেন অধিনায়ক টেম্বা বাভূমা। ডেথ ওভারে ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস যেমন দুর্দান্ত তেমনি ব্যাটিং অর্ডারের আট নম্বরে কাগিসো রাবাদাও বিগ হিটে ওস্তাদ।

এবারের আসরে বাংলাদেশ দলে এককভাবে উজ্জ্বল একজন ক্রিকেটারকেও পাওয়া যায়নি। কেবলমাত্র ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচে শরিফুলের দারুণ একটা স্পেল আছে, মাহেদি হাসান উন্নতির স্বাক্ষর রেখেছেন, আর লিটন দাস ব্যাটিংয়ে ফর্মে ফেরার ইংগিত দিয়েছেন।

কাগজে কলমে বাংলাদেশের সেমিফাইনালে খেলার আশা তিরোহিত হয়নি। নিভু নিভু সলতেটার আলো উজ্জ্বল করতে হলে মিডল অর্ডারে মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ব্যাট থেকে রান আসা চাই। ওপেনার নাঈম শেখ, সৌম্য সরকার এবং আফিফ হোসেনের ব্যাট থেকেও প্রয়োজন বড় ইনিংস। ম্যাচ হেরে ক্যাচ মিসের খেসারত দিয়েছে বাংলাদেশ দল। যার অর্থ হলো, ফিল্ডিংয়ে উন্নতি প্রয়োজন। ডেথ ওভার বোলিং বা পাওয়ার প্লে’তে ব্যাটিংও একেবারেই সাধারণ মানের। সব ডিপার্টমেন্টে উন্নতি না হলে আজ দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে পরাজয়ই লেখা আছে বাংলাদেশের কপালে।

বাংলাদেশের কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো বলেছেন, সাকিব আল হাসানের জায়গায় টাইগার একাদশে থাকবেন শামীম হোসেন। ফিটনেস ফিরে না পাওয়ায় নুরুল হাসান সোহানকেও গ্লাভস হাতে উইকেটের পেছনে দেখা যাবে না। স্বাভাবিকভাবেই লিটন বা মুশফিক দায়িতক্ব পালন করবেন উইকেটের পেছনে। নিজেকে হারিয়ে খুঁজতে থাকা সৌম্য সরকারকেও আজকের একাদশে দেখা যাবে।

মঙ্গলবার, ০২ নভেম্বর ২০২১ , ১৭ কার্তিক ১৪২৮ ২৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

হারের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসার লক্ষ্য টাইগারদের

আজ বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ

ক্রীড়া বার্তা পরিবেশক

image

চলমান বিশ্বকাপে প্রথম জয়ের খোঁজে কঠোর অনুশীলনে টাইগাররা -বিসিবি

রেকর্ড বই জানাচ্ছে যে, বাংলাদেশের বিপক্ষে শেষ ছয়টা টি-২০ ম্যাচের প্রতিটাই জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ২০০৭ সালের প্রথম টি-২০ বিশ্বকাপেও প্রোটিয়াদের কাছে পরাজিত হয়েছিল বাংলাদেশ দল। ২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে পচেফস্ট্রমে শেষবার টি-২০ ফরম্যাটে প্রোটিয়াদের মোকাবিলা করেছিল টাইগাররা। ওই ম্যাচে বাংলাদেশের পেসার শরিফুল এক ওভারে দিয়েছিলেন ৩১ রান, যার মধ্যে আছে ডেভিড মিলারের পাঁচটি ছক্কা। সেই ম্যাচে ৩৬ বলে ১০১ রানে করেছিলেন এই প্রোটিয়া ব্যাটার।

এরপর কেটেছে চারটি বছর। পরিবর্তন এসেছে দুটো দলেই। সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবি আলাদা একটা ভেন্যু। কিন্তু এই ভেন্যুতে টি-২০ বিশ্বকাপের সপ্তম আসরে টাইগাররা আজ বিকেল ৪টায় প্রোটিয়াদের মুখোমুখি হওয়ার সময়ে খুব বেশি আশাবাদী হওয়া যাচ্ছে না। যদিও কাগজে কলমে অন্তত প্রোটিয়াদের পরাজিত করার সামর্থ্যরে কমতি নেই বাংলাদেশ দলের। খুব বেশি আশাবাদী হতে না পারার কারণের অভাব নেই। টাইগারদের মাঠের পারফরম্যান্স কেমন যেন ছন্নছাড়া। এই অবস্থার সমালোচনা হচ্ছে মাঠের বাইরেও। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে রীতিমত কাঁদা-ছোঁড়াছুড়ি চলছে। এতে যোগ দিয়েছেন নামিদামি ক্রিকেটারদের সহধর্মীনিরাও। আবার বিসিবি এবং ক্রিকেটারদের মাঝেও দূরত্ব তৈরি হওয়ার ব্যাপারটা অস্বীকার করা যাচ্ছে না। চলতি আসরে তিন ম্যাচে পরাজয় ছাড়াও এসব বিষয় নিয়ে মানসিক চাপে যে টাইগাররা ভুগছেন, তা বলা বাহুল্য। যদিও কেউ তা স্বীকার করছে না। মরার ওপর খাড়ার ঘাঁ-এর মতো যোগ হয়েছে বিশ্বসেরা অল রাউন্ডার সাকিব আল হাসানের ইনজুরি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচে হ্যামস্ট্রিংয়ের ইনজুরি নিয়েও ব্যাটে-বলে উজ্জ্বল সাকিব এবারের আসরের বাকি ম্যাচগুলো খেলতে পারছেন না। এরকম একটা অবস্থায় থাকা বাংলাদেশ দলকে পরাজিত করে সেমিফাইনালের দৌড়ে এগিয়ে যাবার সুযোগটা কোনমতেই হাতছাড়া করতে চাইবে না।

ইনজুরির কবলে পড়েছে দক্ষিণ আফ্রিকান দলও। শেষ ওভারে ছক্কা হাঁকিয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় এনে দেয়া ডেভিড মিলারেরও হ্যামস্ট্রিংয়ে টান পড়েছে। চলতি আসরে এ পর্যন্ত প্রোটিয়াদের সেরা বোলার তাবরেজ সামশিও কুঁচকির ইনজুরিতে পড়েছেন।

প্রোটিয়াদের স্কোয়াডে থাকা এইডেন মার্করাম, ভ্যান ডার ডাসেন ও রিজা হেনরিকস ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ভালো করেছেন। রানের মধ্যেই আছেন অধিনায়ক টেম্বা বাভূমা। ডেথ ওভারে ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস যেমন দুর্দান্ত তেমনি ব্যাটিং অর্ডারের আট নম্বরে কাগিসো রাবাদাও বিগ হিটে ওস্তাদ।

এবারের আসরে বাংলাদেশ দলে এককভাবে উজ্জ্বল একজন ক্রিকেটারকেও পাওয়া যায়নি। কেবলমাত্র ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচে শরিফুলের দারুণ একটা স্পেল আছে, মাহেদি হাসান উন্নতির স্বাক্ষর রেখেছেন, আর লিটন দাস ব্যাটিংয়ে ফর্মে ফেরার ইংগিত দিয়েছেন।

কাগজে কলমে বাংলাদেশের সেমিফাইনালে খেলার আশা তিরোহিত হয়নি। নিভু নিভু সলতেটার আলো উজ্জ্বল করতে হলে মিডল অর্ডারে মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ব্যাট থেকে রান আসা চাই। ওপেনার নাঈম শেখ, সৌম্য সরকার এবং আফিফ হোসেনের ব্যাট থেকেও প্রয়োজন বড় ইনিংস। ম্যাচ হেরে ক্যাচ মিসের খেসারত দিয়েছে বাংলাদেশ দল। যার অর্থ হলো, ফিল্ডিংয়ে উন্নতি প্রয়োজন। ডেথ ওভার বোলিং বা পাওয়ার প্লে’তে ব্যাটিংও একেবারেই সাধারণ মানের। সব ডিপার্টমেন্টে উন্নতি না হলে আজ দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে পরাজয়ই লেখা আছে বাংলাদেশের কপালে।

বাংলাদেশের কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো বলেছেন, সাকিব আল হাসানের জায়গায় টাইগার একাদশে থাকবেন শামীম হোসেন। ফিটনেস ফিরে না পাওয়ায় নুরুল হাসান সোহানকেও গ্লাভস হাতে উইকেটের পেছনে দেখা যাবে না। স্বাভাবিকভাবেই লিটন বা মুশফিক দায়িতক্ব পালন করবেন উইকেটের পেছনে। নিজেকে হারিয়ে খুঁজতে থাকা সৌম্য সরকারকেও আজকের একাদশে দেখা যাবে।