শ্যামপুর-পাগলা এলাকায় কারখানার বর্জ্যে ক্ষতিগ্রস্ত রেলপথ

ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেলপথে ফেলা হচ্ছে শিল্প কারখানার তরল বর্জ্য। এতে ব্যাহত হচ্ছে পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ। বিষয়টি সমাধানে শিল্প মালিক সমিতির সঙ্গে একাধিকবার মিটিং হলেও কোন সমাধান হয়নি বলে রেলওয়ে সূত্র জানায়। বিষয়টি সমাধানে বুধবার আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা ডেকেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন সংবাদকে বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ রেলপথের পাশে শ্যামপুর ও পাগলা এলাকায় বেশকিছু শিল্প কারখানার তলর বর্জ্য ফেলে নোংরা করে রাখা হয়েছে। এতে পদ্মা রেল সংযোগ কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। সাধারণত কারখানাগুলোর ময়লা পানির ড্রেনের মুখ থাকবে নদীর দিকে। তা না করে তারা রেললাইনের পাশে ফেলা হচ্ছে। এই বিষয়টি সমাধানে পরিবেশ অধিদপ্তর, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও ওয়াসার প্রতিনিধিসহ একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বুধবার এটি অনুষ্ঠিত হবে।’

রেলওয়ে সূত্র জানায়, শিল্প-কারখানার এই তরল বর্জ্যরে কারণে সরকারের অগ্রাধিকারভুক্ত (ফাস্ট ট্র্যাক) প্রকল্প পদ্মা সেতু রেল সংযোগের কাজ পিছিয়ে যাচ্ছে। এই প্রকল্পের ঢাকা-মাওয়া অংশের সার্বিক অগ্রগতি প্রায় ৪১ শতাংশ। এর মধ্যে শ্যামপুর থেকে পাগলা অংশের অগ্রগতি সবচেয়ে কম। কারণ প্রকল্প এলাকার পশ্চিম দিকে অবস্থিত কল-কারখানা থেকে তরল বর্জ্য সরাসরি নির্মাণাধীন পদ্মারেল সংযোগ লাইনের উপর ফেলা হচ্ছে।

এই তরল বর্জ্য কোনরূপ পরিশোধন না করে সরাসরি কারখানা থেকে রেল লাইনের মাটির উপর ফেলা হচ্ছে। এতে চলমান প্রকল্পের কাজ যেমন বিঘিœত হচ্ছে তেমনি প্রকল্প আশপাশ এলাকার বসবাসরত বাসিন্দারের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে।

শিল্প কারখানার পানি প্রকল্প এলাকায় প্রবাহিত হওয়ায় ১ নম্বর কালভার্টের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। শ্যামপুর ও পাগলা এলাকায় অবস্থিত প্রায় ২০টি শিল্প কারখানা থেকে এই সব তরল বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। এর মধ্যে কদমতলী স্টিল মিল, সালাম স্টিল মিল, শাপলা ডাইং, শারমিন ডাইং, ফুমিলা ডাইং, এইচআরবি রোলিং, নূর মদীনা ডাইং, লামিয়া টেক্সটাইল, মদীনা রোলিং মিল, সিফাত ডাইং, এশিয়া ডাইং, মিতা ডাইং, চাঁদপুর ডাইং, হাসান ডাইং, ফুজি ডাইং, এরিস্টো ফার্মা, গাজী ট্যাংক ও এইন আর ডাইং কারখানা থেকে সরাসরি তরল বর্জ্য প্রকল্পের চারপাশ এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। এতে প্রকল্পের মাটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কাজ ব্যাহত হচ্ছে।

এ বিষয়টি পরিবেশ অধিদপ্তর ও শ্যামপুর শিল্প মালিক সমিতির সঙ্গে রেলওয়ে, ঢাকা ওয়াসা, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের পরামর্শ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সদস্যদের নিয়ে একাধিক বার বৈঠক করা হয়েও কোন কাজ হচ্ছে না বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকতারা জানান।

এ বিষয়ে পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক আফজাল হোসেন সংবাদকে বলেন, ‘কোন প্রকার পরিশোধন না করে কারখানার তরল বর্জ্য রেল লাইনের উপর ফেলা হচ্ছে। এতে প্রকল্পের কাজে অনেক সমস্যা হচ্ছে। এই বিষয়টি সমাধানে সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সবাই মিটিং করে একটি সমাধান বের করার জন্য রেলমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন।

মঙ্গলবার, ০২ নভেম্বর ২০২১ , ১৭ কার্তিক ১৪২৮ ২৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

শ্যামপুর-পাগলা এলাকায় কারখানার বর্জ্যে ক্ষতিগ্রস্ত রেলপথ

ইবরাহীম মাহমুদ আকাশ

image

ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেলপথে ফেলা হচ্ছে শিল্প কারখানার তরল বর্জ্য। এতে ব্যাহত হচ্ছে পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ। বিষয়টি সমাধানে শিল্প মালিক সমিতির সঙ্গে একাধিকবার মিটিং হলেও কোন সমাধান হয়নি বলে রেলওয়ে সূত্র জানায়। বিষয়টি সমাধানে বুধবার আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা ডেকেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন সংবাদকে বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ রেলপথের পাশে শ্যামপুর ও পাগলা এলাকায় বেশকিছু শিল্প কারখানার তলর বর্জ্য ফেলে নোংরা করে রাখা হয়েছে। এতে পদ্মা রেল সংযোগ কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। সাধারণত কারখানাগুলোর ময়লা পানির ড্রেনের মুখ থাকবে নদীর দিকে। তা না করে তারা রেললাইনের পাশে ফেলা হচ্ছে। এই বিষয়টি সমাধানে পরিবেশ অধিদপ্তর, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও ওয়াসার প্রতিনিধিসহ একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বুধবার এটি অনুষ্ঠিত হবে।’

রেলওয়ে সূত্র জানায়, শিল্প-কারখানার এই তরল বর্জ্যরে কারণে সরকারের অগ্রাধিকারভুক্ত (ফাস্ট ট্র্যাক) প্রকল্প পদ্মা সেতু রেল সংযোগের কাজ পিছিয়ে যাচ্ছে। এই প্রকল্পের ঢাকা-মাওয়া অংশের সার্বিক অগ্রগতি প্রায় ৪১ শতাংশ। এর মধ্যে শ্যামপুর থেকে পাগলা অংশের অগ্রগতি সবচেয়ে কম। কারণ প্রকল্প এলাকার পশ্চিম দিকে অবস্থিত কল-কারখানা থেকে তরল বর্জ্য সরাসরি নির্মাণাধীন পদ্মারেল সংযোগ লাইনের উপর ফেলা হচ্ছে।

এই তরল বর্জ্য কোনরূপ পরিশোধন না করে সরাসরি কারখানা থেকে রেল লাইনের মাটির উপর ফেলা হচ্ছে। এতে চলমান প্রকল্পের কাজ যেমন বিঘিœত হচ্ছে তেমনি প্রকল্প আশপাশ এলাকার বসবাসরত বাসিন্দারের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে।

শিল্প কারখানার পানি প্রকল্প এলাকায় প্রবাহিত হওয়ায় ১ নম্বর কালভার্টের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। শ্যামপুর ও পাগলা এলাকায় অবস্থিত প্রায় ২০টি শিল্প কারখানা থেকে এই সব তরল বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। এর মধ্যে কদমতলী স্টিল মিল, সালাম স্টিল মিল, শাপলা ডাইং, শারমিন ডাইং, ফুমিলা ডাইং, এইচআরবি রোলিং, নূর মদীনা ডাইং, লামিয়া টেক্সটাইল, মদীনা রোলিং মিল, সিফাত ডাইং, এশিয়া ডাইং, মিতা ডাইং, চাঁদপুর ডাইং, হাসান ডাইং, ফুজি ডাইং, এরিস্টো ফার্মা, গাজী ট্যাংক ও এইন আর ডাইং কারখানা থেকে সরাসরি তরল বর্জ্য প্রকল্পের চারপাশ এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। এতে প্রকল্পের মাটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কাজ ব্যাহত হচ্ছে।

এ বিষয়টি পরিবেশ অধিদপ্তর ও শ্যামপুর শিল্প মালিক সমিতির সঙ্গে রেলওয়ে, ঢাকা ওয়াসা, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের পরামর্শ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সদস্যদের নিয়ে একাধিক বার বৈঠক করা হয়েও কোন কাজ হচ্ছে না বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকতারা জানান।

এ বিষয়ে পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক আফজাল হোসেন সংবাদকে বলেন, ‘কোন প্রকার পরিশোধন না করে কারখানার তরল বর্জ্য রেল লাইনের উপর ফেলা হচ্ছে। এতে প্রকল্পের কাজে অনেক সমস্যা হচ্ছে। এই বিষয়টি সমাধানে সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সবাই মিটিং করে একটি সমাধান বের করার জন্য রেলমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন।