ফুলবাড়িয়ায় প্রার্থীদের প্রচার অফিস ভাংচুরের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলায় আগামী ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের দিন যত এগিয়ে আসছে নৌকা-স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রচারণায় সংঘর্ষ, প্রচার কেন্দ্র ভাংচুরের ঘটনা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

গত রোববার রাতে আছিম-পাটুলী ইউনিয়নের ঘুঘুরচালা চৌরাস্তা মোড়ে ও লাঙ্গলশিমুল বাজারে নৌকা প্রতীকের প্রচার কেন্দ্র (অফিস) ভাংচুর করেছে স্বতন্ত্র প্রার্থী (চশমা প্রতিক) ইমরুল কায়েশের লোকজন। এ ঘটনায় গত সোমবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানিয়েছেন নৌকার প্রার্থী এস এম সাইফুজ্জামান। একই রাতে অপর এক ঘটনায় এনায়েতপুর ইউনিয়নের দোলমা সাপমারা এলাকায় নৌকার সমর্থকরা স্বতন্ত্র (ঘোড়া) প্রার্থীর প্রচার কেন্দ্র অফিসে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে এমন অভিযোগ করেছেন স্বতত্র প্রার্থী কবীর হোসেন। এ ঘটনায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর আহত কর্মী মিজানকে মচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে তিনি জানান। নৌকার প্রার্থী বুলবুল হোসেন পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে শুরু থেকেই একটা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে স্বতন্ত্র প্রার্থী কবীর হোসেন। আমি নিজেই ঘটনার পর সেখানে গিয়ে দেখে এসেছি। এটি একটি পরিকল্পিত হামলা।

এনায়েতপুর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী (ঘাড়া) কবীর হোসেন বলেন, আমার লোকজনকে রাতে প্রচার অফিসে নৌকার লোকজন প্রতিদিন হামলা চালিয়ে আহত করছে, অফিস ভাংচুর করছে । এমন হলে নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু হবে কিভাবে।

প্রতীক বরাদ্দের পর মাত্র ২ দিনের ব্যবধানে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ ও ভাংচুরের ঘটনায় অনন্ত ২৫ জন আহত হয়েছে।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ইউনিয়নে ৫টি যার মধ্যে এনায়েতপুর, নওগাঁও, বাকতা, পুটিজানা, কালাদহ ও আছিম পাটুলী ইউনিয়ন।

নাওগাঁও ইউনিয়নের সন্তোষপুর কান্দুর বাজারে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রার্থী আব্দুর রাজ্জাক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আনারস মার্কার মোজাম্মেল হোসেন মোজার সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ৫ থেকে ৬ জন আহত হয়েছে। গত ২৯ অক্টোবর বিকেল ৪টার দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। উভয় পক্ষের আহতদেও মধ্যে গোলাপ হোসেন ও মাওলানা আ. হাকিম, হাবিবুর রহমান, সুলতান আহমেদের নাম জানা গেছে। আহতদের ফুলবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও মচিম হায় ভর্তি করা হয়েছে। পরদিন স্বতন্ত্র প্রার্থী আনারস প্রতীকের পোস্টার ছিরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলে নৌকার সমর্থকরা বলে অভিযোগ করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মোজাম্মেল হক।

স্বতন্ত্র প্রার্থী মোজাম্মেল হোসেন মোজা জানান, আমাদের নির্বাচনী প্রচার অফিস করতে না দেয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আহতদের মধ্যে আমার এক কর্মীর মাথায় গুরুতর আঘাত ও অপর দুই কর্মীর হাত ভেঙ্গে ফেলেছে। আমি থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি।

ফুলবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোল্লা জাকির হোসেন জানান, নাওগাঁও ইউনিয়নের কান্দুরবাজারে নির্বাচনী সংঘর্ষের ঘটনাস্থলে গিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। যারা সহিংসতার ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুল সিদ্দিক বলেন, বিভিন্ন ইউনিয়নের নির্বাচনী সহিংসতার অভিযোগে ওইসব ইউনিয়ন ঘুরে এসেছি এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছি। পরবর্তীতে এ ধরনের অভিযোগ পেলে প্রয়োজনে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বুধবার, ০৩ নভেম্বর ২০২১ , ১৮ কার্তিক ১৪২৮ ২৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

ফুলবাড়িয়ায় প্রার্থীদের প্রচার অফিস ভাংচুরের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

প্রতিনিধি, ফুলবাড়িয়া (ময়মনসিংহ)

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলায় আগামী ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের দিন যত এগিয়ে আসছে নৌকা-স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রচারণায় সংঘর্ষ, প্রচার কেন্দ্র ভাংচুরের ঘটনা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

গত রোববার রাতে আছিম-পাটুলী ইউনিয়নের ঘুঘুরচালা চৌরাস্তা মোড়ে ও লাঙ্গলশিমুল বাজারে নৌকা প্রতীকের প্রচার কেন্দ্র (অফিস) ভাংচুর করেছে স্বতন্ত্র প্রার্থী (চশমা প্রতিক) ইমরুল কায়েশের লোকজন। এ ঘটনায় গত সোমবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানিয়েছেন নৌকার প্রার্থী এস এম সাইফুজ্জামান। একই রাতে অপর এক ঘটনায় এনায়েতপুর ইউনিয়নের দোলমা সাপমারা এলাকায় নৌকার সমর্থকরা স্বতন্ত্র (ঘোড়া) প্রার্থীর প্রচার কেন্দ্র অফিসে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে এমন অভিযোগ করেছেন স্বতত্র প্রার্থী কবীর হোসেন। এ ঘটনায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর আহত কর্মী মিজানকে মচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে তিনি জানান। নৌকার প্রার্থী বুলবুল হোসেন পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে শুরু থেকেই একটা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে স্বতন্ত্র প্রার্থী কবীর হোসেন। আমি নিজেই ঘটনার পর সেখানে গিয়ে দেখে এসেছি। এটি একটি পরিকল্পিত হামলা।

এনায়েতপুর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী (ঘাড়া) কবীর হোসেন বলেন, আমার লোকজনকে রাতে প্রচার অফিসে নৌকার লোকজন প্রতিদিন হামলা চালিয়ে আহত করছে, অফিস ভাংচুর করছে । এমন হলে নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু হবে কিভাবে।

প্রতীক বরাদ্দের পর মাত্র ২ দিনের ব্যবধানে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ ও ভাংচুরের ঘটনায় অনন্ত ২৫ জন আহত হয়েছে।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ইউনিয়নে ৫টি যার মধ্যে এনায়েতপুর, নওগাঁও, বাকতা, পুটিজানা, কালাদহ ও আছিম পাটুলী ইউনিয়ন।

নাওগাঁও ইউনিয়নের সন্তোষপুর কান্দুর বাজারে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রার্থী আব্দুর রাজ্জাক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আনারস মার্কার মোজাম্মেল হোসেন মোজার সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ৫ থেকে ৬ জন আহত হয়েছে। গত ২৯ অক্টোবর বিকেল ৪টার দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। উভয় পক্ষের আহতদেও মধ্যে গোলাপ হোসেন ও মাওলানা আ. হাকিম, হাবিবুর রহমান, সুলতান আহমেদের নাম জানা গেছে। আহতদের ফুলবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও মচিম হায় ভর্তি করা হয়েছে। পরদিন স্বতন্ত্র প্রার্থী আনারস প্রতীকের পোস্টার ছিরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলে নৌকার সমর্থকরা বলে অভিযোগ করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মোজাম্মেল হক।

স্বতন্ত্র প্রার্থী মোজাম্মেল হোসেন মোজা জানান, আমাদের নির্বাচনী প্রচার অফিস করতে না দেয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আহতদের মধ্যে আমার এক কর্মীর মাথায় গুরুতর আঘাত ও অপর দুই কর্মীর হাত ভেঙ্গে ফেলেছে। আমি থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি।

ফুলবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোল্লা জাকির হোসেন জানান, নাওগাঁও ইউনিয়নের কান্দুরবাজারে নির্বাচনী সংঘর্ষের ঘটনাস্থলে গিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। যারা সহিংসতার ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুল সিদ্দিক বলেন, বিভিন্ন ইউনিয়নের নির্বাচনী সহিংসতার অভিযোগে ওইসব ইউনিয়ন ঘুরে এসেছি এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছি। পরবর্তীতে এ ধরনের অভিযোগ পেলে প্রয়োজনে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।