১৬ বছরেও সংস্কার হয়নি আবাসনের ঘর

বৃষ্টি থেকে রক্ষা পেতে পলিথিন টানিয়ে শত পরিবারের বসবাস

গৌরনদী পৌরসভার বড় কসবায় ১৬ বছর পূর্বে নির্মাণের আর সংস্কার করা হয়নি। ফলে প্রকল্পের শতাধিক বসতঘর এখন বসবাসের জন্য সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়েছ। প্রতিটি ঘরের চালার নিতে বৃষ্টির পানি থেকে রেহাই পেতে অধিকাংশ বাসিন্দারা পলিথিন টানিয়েছেন। যাদের পলিথিন কেনার সামার্থ নেই তারা টিনের চালার ছিদ্রের নিচে পাতিল পেতে রেখেছেন। সবমিলিয়ে ওই আবাসনে বসবাসরত একশ’ পরিবারের প্রায় সাতশ’ সদস্যদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে। ভুক্তভোগীরা জরুরী ভিত্তিতে আবাসন প্রকল্পটি সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

গত সোমবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, ২০০৫ সালে গৌরনদী পৌরসভার টরকী বন্দর সংলগ্ন পালরদী নদীর পূর্ব পাড়ে বড় কসবা আবাসন প্রকল্পটি নির্মাণ করা হয়। ২০০৬ সালে প্রকল্পটি উদ্বোধন করেন তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাহফুজুর রহমান। শুরু থেকেই আবাসনটিতে শতাধিক পরিবার বসবাস করে আসছেন। প্রকল্পের সভাপতি আবুল কাসেম সরদার জানান, ২০০৫ সালে প্রকল্পের বসতঘরগুলো নির্মাণের পর থেকে অদ্যবধি কোন সংস্কার না করায় ঘরগুলো জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। আবাসনের প্রতিটি ঘরে টিনের চালায় অসংখ্য ছোট-বড় ছিদ্র হয়ে গেছে। ফলে একদিকে ঘরে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে যেমন রাতের চাঁদ দেখা যায়, তেমনি বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি নামলেই ঘরের আসবাবপত্র ভিজে একাকার হয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেক ঘরের টিনের বেড়া ও বাথরুমের চালা খসে পড়েছে। আবাসনের একমাত্র কবরস্থানটি পালরদী নদীর ভাঙনের কবলে পরেছে। মসজিদের চুনকাম খসে পড়ছে।

অপরদিকে আবাসন প্রকল্পে স্থায়ীভাবে কোন স্কুল নির্মিত না হওয়ায় শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে আবাসনের শিশুরা। দীর্ঘদিন আবাসনের জরাজীর্ণ কমিউনিটি সেন্টারটিতে অস্থায়ী স্কুল পরিচালনা করা হলেও অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় কমিউনিটি সেন্টারের স্কুলটিও বন্ধ রয়েছে। আবুল কাসেম সরদার আরও জানান, টরকীর চর থেকে আবাসন কেন্দ্রে যাতায়াতের জন্য একমাত্র সড়কটি দীর্ঘদিন যাবত বেহাল অবস্থায় রয়েছে। ফলে তাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এছাড়া সরকারের সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা থেকে আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দারা বঞ্ছিত রয়েছেন। এ আবাসন প্রকল্পে বসবাসরত ভূমিহীন অধিকাংশ পরিবারের গৃহকর্তা রিকসা ও ভ্যান চালিয়ে, দিনমজুরি করে কিংবা ভ্রাম্যমাণ হকার হিসেবে উপার্জন করে কোন মতে চলে। অনেকের নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। আবাসনের সমস্যাগুলো জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানো হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

এ বিষয়ে গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস দৈনিক সংবাদকে বলেন, ইতোমধ্যে আবাসন কেন্দ্রটি পরিদর্শন করা হয়েছে। আবাসনের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছে।

image

গৌরনদী (বরিশাল) : উপজেলার বড় কসবার আবাসন প্রকল্পের জরাজীর্ণ ঘর -সংবাদ

আরও খবর
১৩ বছর ধরে মই বেয়ে ট্রেনে উঠেন যাত্রীরা
চাটখিলে রাস্তা বিবাদে সংঘর্ষ : আহত ২
চাঁদপুর ইলিশের দাম বেশি খায়েস মিটছে পাঙ্গাসে
গৌরনদীতে ইউএনও’র হস্তক্ষেপে বাল্য বিয়ে বন্ধ
সুবর্ণচরে ৪ বাড়িতে ডাকাতি : আটক-১
২০ মাস পর খুলেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
নোবিপ্রবিতে স্নাতক ‘সি’ ইউনিটের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন
বেগমগঞ্জে মন্দিরে হামলা, ৪ জনের রিমান্ড মঞ্জুর
ঘিওরে অবাদে বিক্রি হচ্ছে পলিথিন : প্রশাসন ঘুমিয়ে
ফুলবাড়িয়ায় প্রার্থীদের প্রচার অফিস ভাংচুরের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
সৈয়দপুরে অন্য তরুণীকে বিয়ে করায় ধর্ষণ মামলায় প্রেমিক গ্রেপ্তার
চাটমোহরে ৬০০ লিটার ভেজাল তেল জব্দ

বুধবার, ০৩ নভেম্বর ২০২১ , ১৮ কার্তিক ১৪২৮ ২৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

১৬ বছরেও সংস্কার হয়নি আবাসনের ঘর

বৃষ্টি থেকে রক্ষা পেতে পলিথিন টানিয়ে শত পরিবারের বসবাস

প্রতিনিধি, গৌরনদী (বরিশাল)

image

গৌরনদী (বরিশাল) : উপজেলার বড় কসবার আবাসন প্রকল্পের জরাজীর্ণ ঘর -সংবাদ

গৌরনদী পৌরসভার বড় কসবায় ১৬ বছর পূর্বে নির্মাণের আর সংস্কার করা হয়নি। ফলে প্রকল্পের শতাধিক বসতঘর এখন বসবাসের জন্য সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়েছ। প্রতিটি ঘরের চালার নিতে বৃষ্টির পানি থেকে রেহাই পেতে অধিকাংশ বাসিন্দারা পলিথিন টানিয়েছেন। যাদের পলিথিন কেনার সামার্থ নেই তারা টিনের চালার ছিদ্রের নিচে পাতিল পেতে রেখেছেন। সবমিলিয়ে ওই আবাসনে বসবাসরত একশ’ পরিবারের প্রায় সাতশ’ সদস্যদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে। ভুক্তভোগীরা জরুরী ভিত্তিতে আবাসন প্রকল্পটি সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

গত সোমবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, ২০০৫ সালে গৌরনদী পৌরসভার টরকী বন্দর সংলগ্ন পালরদী নদীর পূর্ব পাড়ে বড় কসবা আবাসন প্রকল্পটি নির্মাণ করা হয়। ২০০৬ সালে প্রকল্পটি উদ্বোধন করেন তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাহফুজুর রহমান। শুরু থেকেই আবাসনটিতে শতাধিক পরিবার বসবাস করে আসছেন। প্রকল্পের সভাপতি আবুল কাসেম সরদার জানান, ২০০৫ সালে প্রকল্পের বসতঘরগুলো নির্মাণের পর থেকে অদ্যবধি কোন সংস্কার না করায় ঘরগুলো জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। আবাসনের প্রতিটি ঘরে টিনের চালায় অসংখ্য ছোট-বড় ছিদ্র হয়ে গেছে। ফলে একদিকে ঘরে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে যেমন রাতের চাঁদ দেখা যায়, তেমনি বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি নামলেই ঘরের আসবাবপত্র ভিজে একাকার হয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেক ঘরের টিনের বেড়া ও বাথরুমের চালা খসে পড়েছে। আবাসনের একমাত্র কবরস্থানটি পালরদী নদীর ভাঙনের কবলে পরেছে। মসজিদের চুনকাম খসে পড়ছে।

অপরদিকে আবাসন প্রকল্পে স্থায়ীভাবে কোন স্কুল নির্মিত না হওয়ায় শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে আবাসনের শিশুরা। দীর্ঘদিন আবাসনের জরাজীর্ণ কমিউনিটি সেন্টারটিতে অস্থায়ী স্কুল পরিচালনা করা হলেও অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় কমিউনিটি সেন্টারের স্কুলটিও বন্ধ রয়েছে। আবুল কাসেম সরদার আরও জানান, টরকীর চর থেকে আবাসন কেন্দ্রে যাতায়াতের জন্য একমাত্র সড়কটি দীর্ঘদিন যাবত বেহাল অবস্থায় রয়েছে। ফলে তাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এছাড়া সরকারের সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা থেকে আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দারা বঞ্ছিত রয়েছেন। এ আবাসন প্রকল্পে বসবাসরত ভূমিহীন অধিকাংশ পরিবারের গৃহকর্তা রিকসা ও ভ্যান চালিয়ে, দিনমজুরি করে কিংবা ভ্রাম্যমাণ হকার হিসেবে উপার্জন করে কোন মতে চলে। অনেকের নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। আবাসনের সমস্যাগুলো জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানো হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

এ বিষয়ে গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস দৈনিক সংবাদকে বলেন, ইতোমধ্যে আবাসন কেন্দ্রটি পরিদর্শন করা হয়েছে। আবাসনের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছে।