পুলিশি নির্যাতনে মৃত্যু, কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে

রংপুরের হারাগাছ থানার পুলিশের নির্যাতনে তাজুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুর অভিযোগে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট। এ বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়ার নজরে আনলে গতকাল বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।

রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাসগুপ্ত। ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া জানান, ঘটনার পুরো বিষয়ে রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলে খবর নিতে রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এ বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, তা উচ্চ আদালতকে জানানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আজ এ বিষয়ে বিস্তারিত শুনানি ও আদেশ দেয়া হবে।

রংপুরের হারাগাছে পুলিশের নির্যাতনে তাজুল ইসলাম নামে এক যুবক নিহত হবার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিক্ষুদ্ধ জনতা থানা ঘেরাও করে। এ ঘটনায় সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশের ফাঁকা গুলিবর্ষণ, রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপে কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী জানায়, গতকাল সন্ধ্যার দিকে হারাগাছ পৌর এলাকার নতুন বাজার পাকার মাথা এলাকা থেকে সাখাওয়াত হোসেনের ছেলে তাজুল ইসলামকে হারাগাছ মেট্রোপলিটন থানা পুলিশ মাদক ব্যবসায়ী সন্দেহে আটক করে হাতে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে নির্যাতন করে। এতে ঘটনাস্থলেই সে মারা যায়। পরে পুলিশ পাহারায় নিহত তাজুল ইসলামের লাশ থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনা জানাজানি হলে শত শত বিক্ষুব্ধ জনতা দায়ী পুলিশ সদস্যদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করে। বিক্ষুব্ধ জনতা হারাগাছ থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করলে পুলিশ শতাধিক রাউন্ড টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ এবং লাঠিপেটা করে। এতে কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়। পরে রংপুর থেকে শতাধিক পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে কয়েক দফা পুলিশের সঙ্গে জনতার ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। একপর্যায়ে পুলিশের বেপরোয়া লাঠিচার্জে জনতা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি (ক্রাইম) মারুফ হোসেন দাবি করেন, তাজুল ইসলাম একজন মাদকসেবী ও ব্যবসায়ী। মাদকবিরোধী অভিযানে তাকে আটক করে থানায় আনার সময় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়। তাকে কোন নির্যাতন করা হয়নি। পরে নিহত তাজুল ইসলামের লাশ উদ্ধার করে থানায় এনে রাতেই ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

তিনি আরও জানান, ঘটনাকে কেন্দ্র করে কিছু সুবিধাবাদী লোক থানায় হামলা করে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছেন। এ ঘটনায় থানায় দুটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে পুলিশের কাজে বাধা, থানায় হামলা ও ভাঙচুরে ঘটনায় একটি এবং অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় আরও একটি মামলা হয়েছে।

বুধবার, ০৩ নভেম্বর ২০২১ , ১৮ কার্তিক ১৪২৮ ২৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

পুলিশি নির্যাতনে মৃত্যু, কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে

আদালত বার্তা পরিবেশক

image

রংপুরের হারাগাছে পুলিশের নির্যাতনে মৃত্যুর ঘটনায় থানা ঘেরাওয়ের পর সংঘর্ষ হলে এলাকায় পুলিশের কড়া পাহারা

রংপুরের হারাগাছ থানার পুলিশের নির্যাতনে তাজুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুর অভিযোগে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট। এ বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়ার নজরে আনলে গতকাল বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।

রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাসগুপ্ত। ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া জানান, ঘটনার পুরো বিষয়ে রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলে খবর নিতে রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এ বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, তা উচ্চ আদালতকে জানানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আজ এ বিষয়ে বিস্তারিত শুনানি ও আদেশ দেয়া হবে।

রংপুরের হারাগাছে পুলিশের নির্যাতনে তাজুল ইসলাম নামে এক যুবক নিহত হবার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিক্ষুদ্ধ জনতা থানা ঘেরাও করে। এ ঘটনায় সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশের ফাঁকা গুলিবর্ষণ, রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপে কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী জানায়, গতকাল সন্ধ্যার দিকে হারাগাছ পৌর এলাকার নতুন বাজার পাকার মাথা এলাকা থেকে সাখাওয়াত হোসেনের ছেলে তাজুল ইসলামকে হারাগাছ মেট্রোপলিটন থানা পুলিশ মাদক ব্যবসায়ী সন্দেহে আটক করে হাতে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে নির্যাতন করে। এতে ঘটনাস্থলেই সে মারা যায়। পরে পুলিশ পাহারায় নিহত তাজুল ইসলামের লাশ থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনা জানাজানি হলে শত শত বিক্ষুব্ধ জনতা দায়ী পুলিশ সদস্যদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করে। বিক্ষুব্ধ জনতা হারাগাছ থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করলে পুলিশ শতাধিক রাউন্ড টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ এবং লাঠিপেটা করে। এতে কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়। পরে রংপুর থেকে শতাধিক পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে কয়েক দফা পুলিশের সঙ্গে জনতার ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। একপর্যায়ে পুলিশের বেপরোয়া লাঠিচার্জে জনতা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি (ক্রাইম) মারুফ হোসেন দাবি করেন, তাজুল ইসলাম একজন মাদকসেবী ও ব্যবসায়ী। মাদকবিরোধী অভিযানে তাকে আটক করে থানায় আনার সময় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়। তাকে কোন নির্যাতন করা হয়নি। পরে নিহত তাজুল ইসলামের লাশ উদ্ধার করে থানায় এনে রাতেই ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

তিনি আরও জানান, ঘটনাকে কেন্দ্র করে কিছু সুবিধাবাদী লোক থানায় হামলা করে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছেন। এ ঘটনায় থানায় দুটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে পুলিশের কাজে বাধা, থানায় হামলা ও ভাঙচুরে ঘটনায় একটি এবং অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় আরও একটি মামলা হয়েছে।