আখাউড়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের ঘর নির্মাণ নিয়ে অর্থ ভাগাভাগি

ঠিকাদার, ছাত্র ও যুবলীগ-সাংবাদিকরা ভাগের অংশীদার

আখাউড়ায় মুক্তিযোদ্ধা আবাসন প্রকল্পের কাজ সমঝোতায় বাটোয়ারা করা হয়েছে। কাজটি একজন ঠিকাদারের মাধ্যমে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাদেরকে দেয়ার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। গত সোমবার এ কাজের সমঝোতার (নিকু) টাকা বণ্টন হয়। ঠিকাদার প্রতি ১৮ হাজার, সাংবাদিকদের জন্য বরাদ্দ তিন হাজার টাকা করে।

একাধিক সূত্র জানায়, মুক্তিযোদ্ধা আবাসন প্রকল্পের এক কোটি ১৭ লাখ টাকার কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়। সমঝোতার কারণে সরকারের গচ্চা হবে। গত সোমবার সকালে বাটোয়ারার টাকা বিলি হয়। দরপত্র কেনা ৫৮ জন ঠিকাদার জনপ্রতি পেয়েছেন ১৮ হাজার টাকা করে। সাংবাদিকদের দেয়া হয় তিন হাজার টাকা করে। এছাড়া কাজ সংশ্লিষ্টদের মাঝে সব মিলিয়ে ১০ লাখ টাকা বিলানোর কথা জানানো হয়।

এদিকে নির্ধারিত সময়ে মোট ৫৮টি দরপত্র বিক্রি হয়। তবে জমাদানের শেষ দিন গত ২৩ অক্টোবর মাত্র তিনটি দরপত্র জমা পড়ে। ইউএনও’র প্রশ্রয়ে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কয়েক নেতাকর্মী সেদিন দরপত্র জমাদানে বাধা দেন বলে অভিযোগ উঠে।

মুক্তিযোদ্ধাদের ১১টি ঘর নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করেন ইউএনও। যার প্রকল্প ব্যয় এক কোটি ১৭ লাখ টাকা। দরপত্র বিজ্ঞপ্তি জাতীয় ও স্থানীয় দুটি দৈনিক দেয়া হয়। এরমধ্যে স্থানীয় দৈনিকটির মিডিয়াভুক্তি নেই বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

নিয়ম অনুসারে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কমপক্ষে শতকরা পাঁচভাগের নিচে কমে যিনি দরপত্র দিবেন তিনি কাজ পাবেন। ওই দরপত্রের ক্ষেত্রে একজনমাত্র ঠিকাদার শতকরা পাঁচভাগ কমে দরপত্র জমা দেয়। একজন ঠিকাদার সরকার নির্ধারিত মূল্যের সমান ও আরেকজন সাত ভাগ বেশি দিয়ে জমা দেন। অর্থাৎ যিনি পাঁচভাগ কমে জমা দিয়েছেন তাকেই কাজ দিতে বাধ্য হবেন কর্তৃপক্ষ।

মূলত, দরপত্র কেনাদের মধ্যে সমঝোতায় এ কাজটি করা হয়। ঠিকাদারের কাছ থেকে কাজটি নিয়ে নিবে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতারা। এর বিনিময়ে তাদেরকে টাকা দিয়ে দেয়া হবে। ঠিকাদারদের সমঝোতার আলোচনায় ইউএনওকেও আর্থিক সহযোগিতা দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

এ ব্যাপারে আখাউড়ার ইউএনও রুমানা আক্তার বলেন, ‘এ ধরনের বিষয় আমার জানা নেই। কারও অভিযোগ থাকলে লিখিত দিতে বলেন।’

প্রসঙ্গত, কয়েকমাস আগে যোগদানের পরই ইউএনও রুমানা আক্তার বিতর্ক সৃষ্টি করেন। আশ্রয়ণ প্রকল্পে নির্ধারিত বরাদ্দের বাইরে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ইট, বালু, সিমেন্ট নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি করেছেন। সম্প্রতি বিতর্কিত ব্যক্তিকে একটি কমিটির আহ্বায়ক করে নিজের দাম্ভিকতার পরিচয় দেন ওই ইউএনও।

বুধবার, ০৩ নভেম্বর ২০২১ , ১৮ কার্তিক ১৪২৮ ২৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

আখাউড়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের ঘর নির্মাণ নিয়ে অর্থ ভাগাভাগি

ঠিকাদার, ছাত্র ও যুবলীগ-সাংবাদিকরা ভাগের অংশীদার

প্রতিনিধি, আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)

আখাউড়ায় মুক্তিযোদ্ধা আবাসন প্রকল্পের কাজ সমঝোতায় বাটোয়ারা করা হয়েছে। কাজটি একজন ঠিকাদারের মাধ্যমে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাদেরকে দেয়ার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। গত সোমবার এ কাজের সমঝোতার (নিকু) টাকা বণ্টন হয়। ঠিকাদার প্রতি ১৮ হাজার, সাংবাদিকদের জন্য বরাদ্দ তিন হাজার টাকা করে।

একাধিক সূত্র জানায়, মুক্তিযোদ্ধা আবাসন প্রকল্পের এক কোটি ১৭ লাখ টাকার কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়। সমঝোতার কারণে সরকারের গচ্চা হবে। গত সোমবার সকালে বাটোয়ারার টাকা বিলি হয়। দরপত্র কেনা ৫৮ জন ঠিকাদার জনপ্রতি পেয়েছেন ১৮ হাজার টাকা করে। সাংবাদিকদের দেয়া হয় তিন হাজার টাকা করে। এছাড়া কাজ সংশ্লিষ্টদের মাঝে সব মিলিয়ে ১০ লাখ টাকা বিলানোর কথা জানানো হয়।

এদিকে নির্ধারিত সময়ে মোট ৫৮টি দরপত্র বিক্রি হয়। তবে জমাদানের শেষ দিন গত ২৩ অক্টোবর মাত্র তিনটি দরপত্র জমা পড়ে। ইউএনও’র প্রশ্রয়ে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কয়েক নেতাকর্মী সেদিন দরপত্র জমাদানে বাধা দেন বলে অভিযোগ উঠে।

মুক্তিযোদ্ধাদের ১১টি ঘর নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করেন ইউএনও। যার প্রকল্প ব্যয় এক কোটি ১৭ লাখ টাকা। দরপত্র বিজ্ঞপ্তি জাতীয় ও স্থানীয় দুটি দৈনিক দেয়া হয়। এরমধ্যে স্থানীয় দৈনিকটির মিডিয়াভুক্তি নেই বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

নিয়ম অনুসারে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কমপক্ষে শতকরা পাঁচভাগের নিচে কমে যিনি দরপত্র দিবেন তিনি কাজ পাবেন। ওই দরপত্রের ক্ষেত্রে একজনমাত্র ঠিকাদার শতকরা পাঁচভাগ কমে দরপত্র জমা দেয়। একজন ঠিকাদার সরকার নির্ধারিত মূল্যের সমান ও আরেকজন সাত ভাগ বেশি দিয়ে জমা দেন। অর্থাৎ যিনি পাঁচভাগ কমে জমা দিয়েছেন তাকেই কাজ দিতে বাধ্য হবেন কর্তৃপক্ষ।

মূলত, দরপত্র কেনাদের মধ্যে সমঝোতায় এ কাজটি করা হয়। ঠিকাদারের কাছ থেকে কাজটি নিয়ে নিবে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতারা। এর বিনিময়ে তাদেরকে টাকা দিয়ে দেয়া হবে। ঠিকাদারদের সমঝোতার আলোচনায় ইউএনওকেও আর্থিক সহযোগিতা দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

এ ব্যাপারে আখাউড়ার ইউএনও রুমানা আক্তার বলেন, ‘এ ধরনের বিষয় আমার জানা নেই। কারও অভিযোগ থাকলে লিখিত দিতে বলেন।’

প্রসঙ্গত, কয়েকমাস আগে যোগদানের পরই ইউএনও রুমানা আক্তার বিতর্ক সৃষ্টি করেন। আশ্রয়ণ প্রকল্পে নির্ধারিত বরাদ্দের বাইরে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ইট, বালু, সিমেন্ট নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি করেছেন। সম্প্রতি বিতর্কিত ব্যক্তিকে একটি কমিটির আহ্বায়ক করে নিজের দাম্ভিকতার পরিচয় দেন ওই ইউএনও।