তবুও আশায় বুক বাঁধা...

বাংলাদেশের সামনে আজ অস্ট্রেলিয়া

এবারের টি-২০ বিশ্বকাপ অভিযানে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ব্যাটিং লাইনআপের দুর্বলতা প্রকটভাবেই দেখা দিয়েছে। বোলাররা নিজেদের দায়িত্ব অনেকটাই ঠিকঠাকমত পালন করলেও ফিল্ডারদের মনে হয়েছে পাড়ার ক্রিকেটার। সুপার টুয়েলভে টানা চার পরাজয়ই সাক্ষ্য দিচ্ছে টাইগারদের দৈন্যতার। তার ওপরে ইনজুরিতে ছিটকে গেছেন সাকিব আল হাসান। যদিও এবারের আসরে খেলা ম্যাচগুলোতে নিজের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি তিনি। অনেকটাই ব্যাকফুটে থাকা বাংলাদেশ দলের সামনে আজ অস্ট্রেলিয়া। ডেভিড ওয়ার্নার, অ্যারন ফিঞ্চ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের মতো ব্যাটার আর মিচেল স্টার্ক বা জস হেইজেলউড ও অ্যাডাম জাম্পা সমৃদ্ধ অজি বোলিং ডিপার্টমেন্টের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের সাফল্যের আশা করাটাই বোকামি। তারপরও সুপার টুয়েলভে অন্তত একটা জয় দিয়ে চলতি টি-২০ বিশ্বকাপ মিশন শেষ করতে চায় বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। আজ বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায় দুবাইয়ে নিজেদের পঞ্চম ও শেষ ম্যাচে টাইগাররা অজিদের মুখোমুখি হওয়ার সময়ে তবুও আশায় বুক বেঁধে অপেক্ষা টিভি সেটের সামনে বসবেন কোটি কোটি টাইগারভক্ত।

সুপার টুয়েলভে টানা চার ম্যাচে পরাজিত হয়ে ইতোমধ্যেই টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়েছে বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়ার কাছে আরও একটি পরাজয়ের অর্থ হবে টি-২০ বিশ্বকাপের মূলপর্বে টানা ষষ্ঠবারের মতো টাইগারদের জয়হীন থাকা। এখন পর্যন্ত মূল রাউন্ডে বাংলাদেশের একমাত্র জয়টি আসে ২০০৭ সালের টি-২০ বিশ্বকাপের প্রথম আসরে। তবে লজ্জার হাত থেকে বের হতে সর্বাত্মক চেষ্টা করবে বাংলাদেশ। বাছাইপর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের কাছে লজ্জাজনক পরাজয়ের পরও সুপার টুয়েলভে পা রাখে টাইগাররা। কিন্তু এই রাউন্ডে কোন কিছুই পরিকল্পনা মতো হচ্ছে না টাইগারদের। সুপার টুয়েলভে নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে ৫ উইকেটে, দ্বিতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডের কাছে ৮ উইকেটে পরাজিত হয় টাইগাররা। আর তৃতীয় ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে মাত্র ৩ রানে হারতে হয়েছে বাংলাদেশকে। চতুর্থ ম্যাচে গতি ও বাউন্সি উইকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ৬ উইকেটে ম্যাচ হেরে বিদায় নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের।

শ্রীলঙ্কা-ওয়েস্ট ইন্ডিজ, এমনকি দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়ের ভালো সুযোগ থাকলেও গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে কৌশলগত ভুলে হারতে হয়েছে টাইগারদের। গ্রুপের সেরা দল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লড়াই করতে পারেনি বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের পেসার তাসকিন আহমেদ বলেছেন, আসলে আমরা ভালো খেলিনি, আমি বিশ্বাস করি আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারিনি। যেভাবে খেলেছি, আমরা তার চেয়ে ভালো দল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমরা কয়েকটি সহজ ম্যাচ হেরেছি, যে ম্যাচগুলো জয়ের সুযোগ ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তা হয়নি।

বিশ্বকাপ শুরুর আগে মিরপুরের শেরে বাংলায় প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়াকে দ্বিপক্ষীয় সিরিজে পরাজিত করে বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ ৪-১ ব্যবধানে জিতে টাইগাররা। উইকেটের মানের বিচারে ওই জয় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল তখনই। ৪-১ ব্যবধানের জয় টি-২০ ফরম্যাটে বাংলাদেশের র‌্যাংকিংয়ে উন্নতি ঘটালেও বৈশ্বিক আসরে দুর্বলতাগুলো প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে, এছাড়া বাংলাদেশ সফরে আসা অস্ট্রেলিয়ার ওই দলে ছিলেন না বেশ কয়েকজন তারকা ক্রিকেটার। দু’দলের মধ্যে এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ৯টি ম্যাচে পাঁচটিতেই জিতেছে অজিরা, বাংলাদেশের চারটা জয়ই শেরে বাংলায়।

মিরপুরের সর্বশেষ পাঁচ ম্যাচের সিরিজের আগে দুইদলের চারবাররের মোকাবিলার প্রতিটাই ছিল বিশ্বকাপে, আর প্রতিটাতেই জয়ী দলের নাম অস্ট্রেলিয়া।

শক্তি বা পরিসংখ্যান বিবেচনায় আজকের ম্যাচে অজিরাই কাগজে কলমে ফেভারিট হলেও বাংলাদেশ দলের সাফল্য পাওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। কেননা, ইংল্যান্ডের কাছে পরাজয়ের পর সেমির স্বপ্ন টিকিয়ে রাখতে হলে টাইগারদের বিপক্ষে জয়ের বিকল্প নেই অজিদের। স্বাভাবিকভাবেই চাপে থাকবে ক্যাঙারুরা। অন্যদিকে টাইগারদের হারানোর কিছু নেই। সেমির আশা শেষ হবার পর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয় নিয়ে দেশে ফিরতে পারলে কিছুটা হলেও মুখরক্ষা হবে।

অস্ট্রেলিয়ার ওপর চাপ থাকবে অনেক বেশি। সেমিফাইনাল খেলার সুযোগ পেতে হলে বাংলাদেশের বিপক্ষে রান রেটের ব্যবধান বাড়িয়ে ম্যাচ জিততে হবে অজিদের। অর্থাৎ, অস্ট্রেলিয়াকে আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে হবে এবং এটিই বাংলাদেশকে ম্যাচ জেতাতে পারে। সব মিলিয়ে আশায় বুক বাঁধতে দোষ কোথায়।

বৃহস্পতিবার, ০৪ নভেম্বর ২০২১ , ১৯ কার্তিক ১৪২৮ ২৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

তবুও আশায় বুক বাঁধা...

বাংলাদেশের সামনে আজ অস্ট্রেলিয়া

ক্রীড়া বার্তা পরিবেশক

image

শেষ ম্যাচে জয়ের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা থাকবে মাহমুদুল্লাহ বাহিনীর

এবারের টি-২০ বিশ্বকাপ অভিযানে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ব্যাটিং লাইনআপের দুর্বলতা প্রকটভাবেই দেখা দিয়েছে। বোলাররা নিজেদের দায়িত্ব অনেকটাই ঠিকঠাকমত পালন করলেও ফিল্ডারদের মনে হয়েছে পাড়ার ক্রিকেটার। সুপার টুয়েলভে টানা চার পরাজয়ই সাক্ষ্য দিচ্ছে টাইগারদের দৈন্যতার। তার ওপরে ইনজুরিতে ছিটকে গেছেন সাকিব আল হাসান। যদিও এবারের আসরে খেলা ম্যাচগুলোতে নিজের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি তিনি। অনেকটাই ব্যাকফুটে থাকা বাংলাদেশ দলের সামনে আজ অস্ট্রেলিয়া। ডেভিড ওয়ার্নার, অ্যারন ফিঞ্চ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের মতো ব্যাটার আর মিচেল স্টার্ক বা জস হেইজেলউড ও অ্যাডাম জাম্পা সমৃদ্ধ অজি বোলিং ডিপার্টমেন্টের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের সাফল্যের আশা করাটাই বোকামি। তারপরও সুপার টুয়েলভে অন্তত একটা জয় দিয়ে চলতি টি-২০ বিশ্বকাপ মিশন শেষ করতে চায় বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। আজ বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায় দুবাইয়ে নিজেদের পঞ্চম ও শেষ ম্যাচে টাইগাররা অজিদের মুখোমুখি হওয়ার সময়ে তবুও আশায় বুক বেঁধে অপেক্ষা টিভি সেটের সামনে বসবেন কোটি কোটি টাইগারভক্ত।

সুপার টুয়েলভে টানা চার ম্যাচে পরাজিত হয়ে ইতোমধ্যেই টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়েছে বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়ার কাছে আরও একটি পরাজয়ের অর্থ হবে টি-২০ বিশ্বকাপের মূলপর্বে টানা ষষ্ঠবারের মতো টাইগারদের জয়হীন থাকা। এখন পর্যন্ত মূল রাউন্ডে বাংলাদেশের একমাত্র জয়টি আসে ২০০৭ সালের টি-২০ বিশ্বকাপের প্রথম আসরে। তবে লজ্জার হাত থেকে বের হতে সর্বাত্মক চেষ্টা করবে বাংলাদেশ। বাছাইপর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের কাছে লজ্জাজনক পরাজয়ের পরও সুপার টুয়েলভে পা রাখে টাইগাররা। কিন্তু এই রাউন্ডে কোন কিছুই পরিকল্পনা মতো হচ্ছে না টাইগারদের। সুপার টুয়েলভে নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে ৫ উইকেটে, দ্বিতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডের কাছে ৮ উইকেটে পরাজিত হয় টাইগাররা। আর তৃতীয় ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে মাত্র ৩ রানে হারতে হয়েছে বাংলাদেশকে। চতুর্থ ম্যাচে গতি ও বাউন্সি উইকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ৬ উইকেটে ম্যাচ হেরে বিদায় নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের।

শ্রীলঙ্কা-ওয়েস্ট ইন্ডিজ, এমনকি দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়ের ভালো সুযোগ থাকলেও গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে কৌশলগত ভুলে হারতে হয়েছে টাইগারদের। গ্রুপের সেরা দল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লড়াই করতে পারেনি বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের পেসার তাসকিন আহমেদ বলেছেন, আসলে আমরা ভালো খেলিনি, আমি বিশ্বাস করি আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারিনি। যেভাবে খেলেছি, আমরা তার চেয়ে ভালো দল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমরা কয়েকটি সহজ ম্যাচ হেরেছি, যে ম্যাচগুলো জয়ের সুযোগ ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তা হয়নি।

বিশ্বকাপ শুরুর আগে মিরপুরের শেরে বাংলায় প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়াকে দ্বিপক্ষীয় সিরিজে পরাজিত করে বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ ৪-১ ব্যবধানে জিতে টাইগাররা। উইকেটের মানের বিচারে ওই জয় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল তখনই। ৪-১ ব্যবধানের জয় টি-২০ ফরম্যাটে বাংলাদেশের র‌্যাংকিংয়ে উন্নতি ঘটালেও বৈশ্বিক আসরে দুর্বলতাগুলো প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে, এছাড়া বাংলাদেশ সফরে আসা অস্ট্রেলিয়ার ওই দলে ছিলেন না বেশ কয়েকজন তারকা ক্রিকেটার। দু’দলের মধ্যে এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ৯টি ম্যাচে পাঁচটিতেই জিতেছে অজিরা, বাংলাদেশের চারটা জয়ই শেরে বাংলায়।

মিরপুরের সর্বশেষ পাঁচ ম্যাচের সিরিজের আগে দুইদলের চারবাররের মোকাবিলার প্রতিটাই ছিল বিশ্বকাপে, আর প্রতিটাতেই জয়ী দলের নাম অস্ট্রেলিয়া।

শক্তি বা পরিসংখ্যান বিবেচনায় আজকের ম্যাচে অজিরাই কাগজে কলমে ফেভারিট হলেও বাংলাদেশ দলের সাফল্য পাওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। কেননা, ইংল্যান্ডের কাছে পরাজয়ের পর সেমির স্বপ্ন টিকিয়ে রাখতে হলে টাইগারদের বিপক্ষে জয়ের বিকল্প নেই অজিদের। স্বাভাবিকভাবেই চাপে থাকবে ক্যাঙারুরা। অন্যদিকে টাইগারদের হারানোর কিছু নেই। সেমির আশা শেষ হবার পর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয় নিয়ে দেশে ফিরতে পারলে কিছুটা হলেও মুখরক্ষা হবে।

অস্ট্রেলিয়ার ওপর চাপ থাকবে অনেক বেশি। সেমিফাইনাল খেলার সুযোগ পেতে হলে বাংলাদেশের বিপক্ষে রান রেটের ব্যবধান বাড়িয়ে ম্যাচ জিততে হবে অজিদের। অর্থাৎ, অস্ট্রেলিয়াকে আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে হবে এবং এটিই বাংলাদেশকে ম্যাচ জেতাতে পারে। সব মিলিয়ে আশায় বুক বাঁধতে দোষ কোথায়।