বঙ্গবন্ধু ও মুক্তারপুর সেতুর টোল বাড়ল

‘বেড়ে যেতে পারে পণ্য পরিবহন ব্যয়’

বঙ্গবন্ধু ও মুক্তারপুর সেতুর টোলের হার ২০-৩০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। যা অবিলম্বে কার্যক্রমের নির্দেশ দিয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষ। গত মঙ্গলবার এক প্রজ্ঞাপনের মধ্যে এই নির্দেশনা জারি করেছে সংস্থাটি। গুরুত্বপূর্ণ সেতু দুটি টোল বাড়ানো হলে পণ্য পরিবহনে ব্যয় বেড়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন ট্রাক কাভার্ডভ্যান মালিকরা।

এ বিষয়ে ট্রাক কাভার্ডভ্যান প্রাইম মুভার পণ্যবাহী মালিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মকবুল আহমেদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তারপুর সেতুর টোল বৃদ্ধির প্রভাব পড়বে নিত্যপণ্য বাজারে। কারণ দেশের সরকার আমাদের না জানিয়েই দুই সেতুর টোল বাড়িয়েছে। উত্তরবঙ্গ থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার খাদ্যপণ্যবাহী প্রাইভ মুভার, ট্রাক, ট্রেইলার দেশের অন্যান্য এলাকায় যায়। টোল বাড়লে পরিবহনের ভাড়া বাড়বে। এ টাকা জনগণের পকেট থেকেই যাবে। কারণ টোল বৃদ্ধির কারণে দ্রব্যমূল্য বাড়বে।’

প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, বঙ্গবন্ধু সেতুতে মোটরসাইকেলের নতুন টোল হার হবে ৫০ টাকা। এখন এই হার ৪০ টাকা। কার ও জিপের এখন টোল লাগছে ৫৫০ টাকা। আগে এই যানের টোল ছিল ৫০০ টাকা। ছোট বাসের টোল ৬৫০ থেকে বাড়িয়ে ৭৫০ টাকা করা হয়েছে। বড় বাসের টোল হবে ১০০০ টাকা। আগে বড় বাসের টোল ছিল ৯০০ টাকা। ছোট ট্রাকের টোল ৮৫০ থেকে বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ১০০০ টাকা। মাঝারি ট্রাকের টোল বর্তমানে ১ হাজার ১০০ টাকা। নতুন টোল হারে মাঝারি ট্রাকের (৫-৮ টন) টোল ধরা হয়েছে ১ হাজার ২৫০ টাকা। ৮ থেকে ১১ টনের ট্রাকের টোল ২০০ টাকা বাড়িয়ে ১ হাজার ৬০০ টাকা করা হয়েছে। এর চেয়ে বড় ট্রাক ও টেইলরের টোল নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা। ট্রেইলর বা অন্য বড় যানের জন্য আলাদা টোল হার ছিল না। এর বাইরে বঙ্গবন্ধু সেতুতে ট্রেন চলাচল করে। এর জন্য রেল কর্তৃপক্ষ থেকে বছরে এক কোটি টাকা করে পায় সেতু বিভাগ।

মুক্তারপুর সেতুর টোল ১০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর মধ্যে কার/টেম্পোর টোল ধরা হয়েছে ৫০ টাকা। যা আগে ৪০ টাকা ছিল। ছোট ও বড় বাসের টোল ৫০ টাকা করে বাড়িয়ে যথাক্রমে ১৫০ ও ২৫০ টাকা করা হয়েছে। ট্রাকের টোলও ৫০ টাকা বেড়েছে। আগে ট্রেইলরের জন্য আলাদা টোল হার না থাকলেও নতুন করে তা যুক্ত হয়েছে। এগুলোর শ্রেণীভেদে টোলের হার ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

মুক্তারপুর সেতুটির মাধ্যমে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের সঙ্গে মুন্সীগঞ্জের সংযোগ স্থাপিত হয়েছে। এর নাম ষষ্ঠ বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু। এটি ২০০৮ সালে চালু হয়েছে। চালুর পর এই প্রথম এই সেতুর টোলের হার বাড়ানো হচ্ছে। অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু সেতু দেশের উত্তরাঞ্চলকে ঢাকাসহ সারাদেশের সঙ্গে যুক্ত করেছে। এই সেতু দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। এই সেতুর টোল একাধিকবার বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ বর্ধিত টোল হার কার্যকর হয় ২০১২ সালে।

এ বিষয়ে সেতু কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কাজী মো. ফেরদৌস সংবাদকে বলেন, ‘টোল আদায়সংক্রান্ত সফটওয়্যার হালনাগাদ করে নতুন টোলের হার শীঘ্রই কার্যক্রর করা হবে। সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বেড়েছে তাই টোল বাড়ানো হয়েছে।’

বৃহস্পতিবার, ০৪ নভেম্বর ২০২১ , ১৯ কার্তিক ১৪২৮ ২৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

বঙ্গবন্ধু ও মুক্তারপুর সেতুর টোল বাড়ল

‘বেড়ে যেতে পারে পণ্য পরিবহন ব্যয়’

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

বঙ্গবন্ধু ও মুক্তারপুর সেতুর টোলের হার ২০-৩০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। যা অবিলম্বে কার্যক্রমের নির্দেশ দিয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষ। গত মঙ্গলবার এক প্রজ্ঞাপনের মধ্যে এই নির্দেশনা জারি করেছে সংস্থাটি। গুরুত্বপূর্ণ সেতু দুটি টোল বাড়ানো হলে পণ্য পরিবহনে ব্যয় বেড়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন ট্রাক কাভার্ডভ্যান মালিকরা।

এ বিষয়ে ট্রাক কাভার্ডভ্যান প্রাইম মুভার পণ্যবাহী মালিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মকবুল আহমেদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তারপুর সেতুর টোল বৃদ্ধির প্রভাব পড়বে নিত্যপণ্য বাজারে। কারণ দেশের সরকার আমাদের না জানিয়েই দুই সেতুর টোল বাড়িয়েছে। উত্তরবঙ্গ থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার খাদ্যপণ্যবাহী প্রাইভ মুভার, ট্রাক, ট্রেইলার দেশের অন্যান্য এলাকায় যায়। টোল বাড়লে পরিবহনের ভাড়া বাড়বে। এ টাকা জনগণের পকেট থেকেই যাবে। কারণ টোল বৃদ্ধির কারণে দ্রব্যমূল্য বাড়বে।’

প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, বঙ্গবন্ধু সেতুতে মোটরসাইকেলের নতুন টোল হার হবে ৫০ টাকা। এখন এই হার ৪০ টাকা। কার ও জিপের এখন টোল লাগছে ৫৫০ টাকা। আগে এই যানের টোল ছিল ৫০০ টাকা। ছোট বাসের টোল ৬৫০ থেকে বাড়িয়ে ৭৫০ টাকা করা হয়েছে। বড় বাসের টোল হবে ১০০০ টাকা। আগে বড় বাসের টোল ছিল ৯০০ টাকা। ছোট ট্রাকের টোল ৮৫০ থেকে বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ১০০০ টাকা। মাঝারি ট্রাকের টোল বর্তমানে ১ হাজার ১০০ টাকা। নতুন টোল হারে মাঝারি ট্রাকের (৫-৮ টন) টোল ধরা হয়েছে ১ হাজার ২৫০ টাকা। ৮ থেকে ১১ টনের ট্রাকের টোল ২০০ টাকা বাড়িয়ে ১ হাজার ৬০০ টাকা করা হয়েছে। এর চেয়ে বড় ট্রাক ও টেইলরের টোল নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা। ট্রেইলর বা অন্য বড় যানের জন্য আলাদা টোল হার ছিল না। এর বাইরে বঙ্গবন্ধু সেতুতে ট্রেন চলাচল করে। এর জন্য রেল কর্তৃপক্ষ থেকে বছরে এক কোটি টাকা করে পায় সেতু বিভাগ।

মুক্তারপুর সেতুর টোল ১০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর মধ্যে কার/টেম্পোর টোল ধরা হয়েছে ৫০ টাকা। যা আগে ৪০ টাকা ছিল। ছোট ও বড় বাসের টোল ৫০ টাকা করে বাড়িয়ে যথাক্রমে ১৫০ ও ২৫০ টাকা করা হয়েছে। ট্রাকের টোলও ৫০ টাকা বেড়েছে। আগে ট্রেইলরের জন্য আলাদা টোল হার না থাকলেও নতুন করে তা যুক্ত হয়েছে। এগুলোর শ্রেণীভেদে টোলের হার ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

মুক্তারপুর সেতুটির মাধ্যমে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের সঙ্গে মুন্সীগঞ্জের সংযোগ স্থাপিত হয়েছে। এর নাম ষষ্ঠ বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু। এটি ২০০৮ সালে চালু হয়েছে। চালুর পর এই প্রথম এই সেতুর টোলের হার বাড়ানো হচ্ছে। অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু সেতু দেশের উত্তরাঞ্চলকে ঢাকাসহ সারাদেশের সঙ্গে যুক্ত করেছে। এই সেতু দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। এই সেতুর টোল একাধিকবার বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ বর্ধিত টোল হার কার্যকর হয় ২০১২ সালে।

এ বিষয়ে সেতু কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কাজী মো. ফেরদৌস সংবাদকে বলেন, ‘টোল আদায়সংক্রান্ত সফটওয়্যার হালনাগাদ করে নতুন টোলের হার শীঘ্রই কার্যক্রর করা হবে। সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বেড়েছে তাই টোল বাড়ানো হয়েছে।’