গোয়ালন্দে প্রতারণা করে প্রতিবন্ধীর জমি হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে

গোয়ালন্দ পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাহিন মোল্লার বিরুদ্ধে এক শারীরিক প্রতিবন্ধীর ১৫ শতাংশ জমি হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতারিত হওয়া ব্যক্তির নাম ওমর আলী (৬০)। তিনি রাজবাড়ী শহরের ৩নং বেড়াডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা।

গত বুধবার দুপুরে গোয়ালন্দ প্রেসক্লাবে এক সাংবাদ সম্মেলনে বৃদ্ধ ওমর আলী লিখিত বক্তব্যে বলেন, গোয়ালন্দ পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের ৮৭নং উত্তর উজানচর মৌজার বিএস প্রস্তাবিত ৮৯২/২নং খতিয়ানের ২২৯৩নং দাগের মধ্যে আমার ২৯ শতাংশ জমি আছে। বছরখানেক আগে জমিটা বিক্রির চেষ্টা করি। জমিটির সীমানা জটিলতা থাকায় কমিশনার শাহিনের কাছে কয়েকবার যাই। কিন্তু তিনি নানা তালবাহানা করে আমাকে হয়রানি করতে থাকেন। এক পর্যায়ে কমিশনার শাহিন নিজেই জমিটি ক্রয় করার ইচ্ছে পোষণ করেন। আমি প্রতি শতাংশ জমির মূল্য দেড় লাখ টাকা ধার্য করলে তিনি তাতেই রাজি হয়ে যান।

এ অবস্থায় গত ১১ এপ্রিল তিনি আমাকে ১ লাখ টাকা দিয়ে জমিটি বেঁচাকেনার বায়না করার কথা বলে গোয়ালন্দ সাব- রেজিস্টার অফিসে নিয়ে যান। সেখানে একজন দলিল লেখকের ঘরে আমাকে বসিয়ে রেখে কমিশনার শাহিন আমার ওই জমির পাওয়ার অব এ্যাটর্নি পেপার প্রস্তুত করে এবং প্রতারণার মাধ্যমে বায়নাপত্রের কথা বলে সেখানে আমার স্বাক্ষর নিয়ে নেয়। পরে সাব রেজিস্টারকে ম্যানেজ করে ওই কাগজ পাকাপোক্ত করে নেয়। এরপর তিনি আরো ভালো দামে আমার জমি বিক্রি করে দেবেন বলে আমাকে আশ্বস্ত করেন।

পরে তিনি ওই পাওয়ার অব এ্যাটর্নির বলে আমাকে বোকা বানিয়ে মোহাম্মদ সাইদুর রহমান নামে এক ব্যাক্তির নিকট ওই জমি ৩২ লাখ টাকায় বিক্রি বাবদ ২০ লাখ টাকা নেন। সেখানে তার পাশাপাশি আমার স্বাক্ষরও নেন। আমাকে সে আপাতত আড়াই লাখ টাকা দেয়ার কথা বলে আইএফআইসি ব্যাংকের একটি চেক দেন। কিন্তু ব্যাংকের রাজবাড়ী শাখার গিয়ে দেখি তার এ্যাকাউন্টে কোন টাকা নেই।

এদিকে আমার অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে সে এ ধরনের ভয়াবহ প্রতারনা করায় আমি গত ২ নভেম্বের গোয়ালন্দ উপজেলা এসিল্যান্ড অফিসে একটি লিখিত অভিযোগ দেই। সহকারী কমিশনার (ভুমি) মো. রফিকুল ইসলাম কমিশনার শাহিনকে দ্রুত তলব করে আনেন। কিন্তু তিনি এসিল্যান্ডকে তোয়াক্কা না করে সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন। এখন সে ও তার সহযোগী পৌরসভার কর্মচারী আকরাম হোসেন আমাকে নানা ধরনের হুমকি ও ভয়ভিতি দেখাচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি জমি ফেরতসহ প্রশাসনের কাছে শাহিনের উপযুক্ত বিচার দাবি করেন।

এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত গোয়ালন্দ পৌরসভার কাউন্সিলর শাহিন মোল্লা জানান, ওমর আলী মোল্লা স্বাভাবিক ভাবে চলাফেরা করতে না পারায় তিনি স্বেচ্ছায় আমাকে পাওয়ার অব এ্যাটর্নি করে দেন। সেই সাথে ওই জমির মূল্য নির্ধারন করে দেন সাড়ে ৩ লাখ টাকা।

নির্ধারিত মূল্যের এক লক্ষ টাকা নগদ ও আড়াই লক্ষ টাকা চেকের মাধ্যমে আমি ওমর আলী মোল্লাকে ইতিমধ্যে দিয়ে দিয়েছি। শহরের মধ্যে ১৫ শতাংশ জমির মূল্য মাত্র সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা হয় নাকি? এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ১৫ শতাংশ জমি বলা হলেও সেখানে মূলত রয়েছে মাত্র ৫ শতাংশ জমি। এছাড়া ওই জমিতে বিভিন্ন আইনী জটিলতা রয়েছে বলে তিনি দাবি করনে।

আরও খবর
সুবর্ণচরে তুচ্ছ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ আহত ১০
সেন্টমার্টিনে ধরা পড়েছে ২০৩টি লাল কোরাল
টঙ্গীতে পাঁচ ঘর পুড়ে ছাই
নওগাঁয় সনদ জাল করে বীর মুক্তিযোদ্ধার ভাতা নিচ্ছেন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা পরিবার
বরিশালে বিএনপির তিন সাংগঠনিক কমিটি ঘোষণা
রুমায় ৩শ ৩৪ বস্তা চাল চুরির অভিযোগ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে
সাগরে কাঙ্খিত ইলিশ না পেয়ে ঘাটে ফিরছেন হতাশ জেলেরা
সীতাকুন্ডে স্ত্রী হত্যাকারী স্বামীর মৃত্যু
সৈয়দপুরে সর্বস্ব পুঁড়ে ছাঁই ৩ পরিবারের
বিজিএমইএ পরিশোধ করবে শ্রমিকের সব দেনা-পাওনা
চাটখিল অডিটোরিয়াম সংস্কারের অভাবে ব্যবহারের অনুপযোগী
গোবিন্দগঞ্জের সরকারি পুকুর সংস্কারে অনিয়মের অভিযোগ

শুক্রবার, ০৫ নভেম্বর ২০২১ , ২০ কার্তিক ১৪২৮ ২৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

গোয়ালন্দে প্রতারণা করে প্রতিবন্ধীর জমি হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে

প্রতিনিধি, গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী)

গোয়ালন্দ পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাহিন মোল্লার বিরুদ্ধে এক শারীরিক প্রতিবন্ধীর ১৫ শতাংশ জমি হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতারিত হওয়া ব্যক্তির নাম ওমর আলী (৬০)। তিনি রাজবাড়ী শহরের ৩নং বেড়াডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা।

গত বুধবার দুপুরে গোয়ালন্দ প্রেসক্লাবে এক সাংবাদ সম্মেলনে বৃদ্ধ ওমর আলী লিখিত বক্তব্যে বলেন, গোয়ালন্দ পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের ৮৭নং উত্তর উজানচর মৌজার বিএস প্রস্তাবিত ৮৯২/২নং খতিয়ানের ২২৯৩নং দাগের মধ্যে আমার ২৯ শতাংশ জমি আছে। বছরখানেক আগে জমিটা বিক্রির চেষ্টা করি। জমিটির সীমানা জটিলতা থাকায় কমিশনার শাহিনের কাছে কয়েকবার যাই। কিন্তু তিনি নানা তালবাহানা করে আমাকে হয়রানি করতে থাকেন। এক পর্যায়ে কমিশনার শাহিন নিজেই জমিটি ক্রয় করার ইচ্ছে পোষণ করেন। আমি প্রতি শতাংশ জমির মূল্য দেড় লাখ টাকা ধার্য করলে তিনি তাতেই রাজি হয়ে যান।

এ অবস্থায় গত ১১ এপ্রিল তিনি আমাকে ১ লাখ টাকা দিয়ে জমিটি বেঁচাকেনার বায়না করার কথা বলে গোয়ালন্দ সাব- রেজিস্টার অফিসে নিয়ে যান। সেখানে একজন দলিল লেখকের ঘরে আমাকে বসিয়ে রেখে কমিশনার শাহিন আমার ওই জমির পাওয়ার অব এ্যাটর্নি পেপার প্রস্তুত করে এবং প্রতারণার মাধ্যমে বায়নাপত্রের কথা বলে সেখানে আমার স্বাক্ষর নিয়ে নেয়। পরে সাব রেজিস্টারকে ম্যানেজ করে ওই কাগজ পাকাপোক্ত করে নেয়। এরপর তিনি আরো ভালো দামে আমার জমি বিক্রি করে দেবেন বলে আমাকে আশ্বস্ত করেন।

পরে তিনি ওই পাওয়ার অব এ্যাটর্নির বলে আমাকে বোকা বানিয়ে মোহাম্মদ সাইদুর রহমান নামে এক ব্যাক্তির নিকট ওই জমি ৩২ লাখ টাকায় বিক্রি বাবদ ২০ লাখ টাকা নেন। সেখানে তার পাশাপাশি আমার স্বাক্ষরও নেন। আমাকে সে আপাতত আড়াই লাখ টাকা দেয়ার কথা বলে আইএফআইসি ব্যাংকের একটি চেক দেন। কিন্তু ব্যাংকের রাজবাড়ী শাখার গিয়ে দেখি তার এ্যাকাউন্টে কোন টাকা নেই।

এদিকে আমার অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে সে এ ধরনের ভয়াবহ প্রতারনা করায় আমি গত ২ নভেম্বের গোয়ালন্দ উপজেলা এসিল্যান্ড অফিসে একটি লিখিত অভিযোগ দেই। সহকারী কমিশনার (ভুমি) মো. রফিকুল ইসলাম কমিশনার শাহিনকে দ্রুত তলব করে আনেন। কিন্তু তিনি এসিল্যান্ডকে তোয়াক্কা না করে সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন। এখন সে ও তার সহযোগী পৌরসভার কর্মচারী আকরাম হোসেন আমাকে নানা ধরনের হুমকি ও ভয়ভিতি দেখাচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি জমি ফেরতসহ প্রশাসনের কাছে শাহিনের উপযুক্ত বিচার দাবি করেন।

এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত গোয়ালন্দ পৌরসভার কাউন্সিলর শাহিন মোল্লা জানান, ওমর আলী মোল্লা স্বাভাবিক ভাবে চলাফেরা করতে না পারায় তিনি স্বেচ্ছায় আমাকে পাওয়ার অব এ্যাটর্নি করে দেন। সেই সাথে ওই জমির মূল্য নির্ধারন করে দেন সাড়ে ৩ লাখ টাকা।

নির্ধারিত মূল্যের এক লক্ষ টাকা নগদ ও আড়াই লক্ষ টাকা চেকের মাধ্যমে আমি ওমর আলী মোল্লাকে ইতিমধ্যে দিয়ে দিয়েছি। শহরের মধ্যে ১৫ শতাংশ জমির মূল্য মাত্র সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা হয় নাকি? এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ১৫ শতাংশ জমি বলা হলেও সেখানে মূলত রয়েছে মাত্র ৫ শতাংশ জমি। এছাড়া ওই জমিতে বিভিন্ন আইনী জটিলতা রয়েছে বলে তিনি দাবি করনে।