দু’মাসে সড়কে মৃত্যু ৮৪৬ জন

৪১ দশমিক ১৩ শতাংশই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়

সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর দুই মাসে সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৭০৮টি। এতে নিহত হয়েছেন ৮৪৬ জন ও আহত হয়েছেন এক হাজার ৫৭ জন। এ সময় ৩০৭টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ৩৪৮ জনের মৃত্যু হয়ে। যা মোট নিহতের ৪১ দশমিক ১৩ শতাংশ।

গতকাল সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে কাজ করা সংগঠন রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ৭টি জাতীয় দৈনিক, ৫টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন এই প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ সময়ের মধ্যে ৩০৭টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ৩৪৮ জন। যা মোট নিহতের ৪১ দশমিক ১৩ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৪৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ১৯৪ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ২২ দশমিক ৯৩ শতাংশ। এসব দুর্ঘটনায় যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৯১ জন।

সড়ক দুর্ঘটনা ছাড়াও এ সময়ে ১৭টি নৌ-দুর্ঘটনায় ২৮ জন নিহত, ৯ জন আহত ও ১৫ জন নিখোঁজ হন। আর ৩২টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ৩৪ জন নিহত ও ৬ জন আহত হন।

সংগঠনটির পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ৩০১টি জাতীয় মহাসড়কে, ২৩১টি আঞ্চলিক সড়কে, ১০৫টি গ্রামীণ সড়কে, ৬১টি শহরের সড়কে ও অন্য স্থানে ১০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনাগুলোর ১৬২টি মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২৬৫টি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১৯৬টি পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেয়া, ৭২টি যানবাহনের পেছনে আঘাত করা ও ১৩টি অন্য কারণে ঘটেছে।

ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। এই বিভাগে ১৭৮টি দুর্ঘটনায় নিহত ২০১ জন। সবচেয়ে কম রংপুর বিভাগে। সেখানে ৪৬টি দুর্ঘটনায় নিহত ৫৫ জন। একক জেলা হিসেবে ময়মনসিংহ জেলায় সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ময়মনসিংহে ৩৪টি দুর্ঘটনায় ৪৯ জন নিহত হন। সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা ঘটেছে রাঙ্গামাটি জেলায়। সেখানে ৩টি দুর্ঘটনা ঘটলেও কেউ হতাহত হয়নি।

সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, ট্রাক ও মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ ড্রাইভারদের বেপরোয়া গতিতে ট্রাক চালানো এবং অপ্রাপ্ত বয়স্ক ও যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানোর কারণে তারা নিজেরা দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছেন এবং অন্য যানবাহনকে আক্রান্ত করছেন। পথচারী নিহতের মাত্রাও চরম উদ্বেগজনক পর্যায়ে। পথচারীরা যেমন সড়কে নিয়ম মেনে চলেন না, তেমনই যানবাহনগুলোও বেপরোয়া গতিতে চলে। ফলে পথচারী নিহতের ঘটনা বাড়ছে।

তিনি বলেন, এই প্রেক্ষাপটে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সরকারের কোন উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়। ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে কোন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না।

শুক্রবার, ০৫ নভেম্বর ২০২১ , ২০ কার্তিক ১৪২৮ ২৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

দু’মাসে সড়কে মৃত্যু ৮৪৬ জন

৪১ দশমিক ১৩ শতাংশই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর দুই মাসে সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৭০৮টি। এতে নিহত হয়েছেন ৮৪৬ জন ও আহত হয়েছেন এক হাজার ৫৭ জন। এ সময় ৩০৭টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ৩৪৮ জনের মৃত্যু হয়ে। যা মোট নিহতের ৪১ দশমিক ১৩ শতাংশ।

গতকাল সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে কাজ করা সংগঠন রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ৭টি জাতীয় দৈনিক, ৫টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন এই প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ সময়ের মধ্যে ৩০৭টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ৩৪৮ জন। যা মোট নিহতের ৪১ দশমিক ১৩ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৪৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ১৯৪ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ২২ দশমিক ৯৩ শতাংশ। এসব দুর্ঘটনায় যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৯১ জন।

সড়ক দুর্ঘটনা ছাড়াও এ সময়ে ১৭টি নৌ-দুর্ঘটনায় ২৮ জন নিহত, ৯ জন আহত ও ১৫ জন নিখোঁজ হন। আর ৩২টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ৩৪ জন নিহত ও ৬ জন আহত হন।

সংগঠনটির পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ৩০১টি জাতীয় মহাসড়কে, ২৩১টি আঞ্চলিক সড়কে, ১০৫টি গ্রামীণ সড়কে, ৬১টি শহরের সড়কে ও অন্য স্থানে ১০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনাগুলোর ১৬২টি মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২৬৫টি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১৯৬টি পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেয়া, ৭২টি যানবাহনের পেছনে আঘাত করা ও ১৩টি অন্য কারণে ঘটেছে।

ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। এই বিভাগে ১৭৮টি দুর্ঘটনায় নিহত ২০১ জন। সবচেয়ে কম রংপুর বিভাগে। সেখানে ৪৬টি দুর্ঘটনায় নিহত ৫৫ জন। একক জেলা হিসেবে ময়মনসিংহ জেলায় সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ময়মনসিংহে ৩৪টি দুর্ঘটনায় ৪৯ জন নিহত হন। সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা ঘটেছে রাঙ্গামাটি জেলায়। সেখানে ৩টি দুর্ঘটনা ঘটলেও কেউ হতাহত হয়নি।

সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, ট্রাক ও মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ ড্রাইভারদের বেপরোয়া গতিতে ট্রাক চালানো এবং অপ্রাপ্ত বয়স্ক ও যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানোর কারণে তারা নিজেরা দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছেন এবং অন্য যানবাহনকে আক্রান্ত করছেন। পথচারী নিহতের মাত্রাও চরম উদ্বেগজনক পর্যায়ে। পথচারীরা যেমন সড়কে নিয়ম মেনে চলেন না, তেমনই যানবাহনগুলোও বেপরোয়া গতিতে চলে। ফলে পথচারী নিহতের ঘটনা বাড়ছে।

তিনি বলেন, এই প্রেক্ষাপটে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সরকারের কোন উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়। ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে কোন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না।