গোপালগঞ্জ বিসিকে ২৭ বছর বিকল পানি সরবরাহ ব্যবস্থা

কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ

২৭ বছর ধরে বিকল গোপালগঞ্জ বিসিক শিল্পনগরীর পানি সরবরাহ ব্যবস্থা। এটি সচল করতে বিসিক কর্তৃপক্ষ কখানো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। অবহেলায় পানি সরবরাহ ব্যবস্থায় বেহাল দশা বিরাজ করায় শিল্পনগরীতে বর্তমানে পানি সংকট মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। এজন্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পানি এনে উৎপাদন কাজ চালিয়ে যেতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিসিক শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি। খাবার পানিও সংগ্রহ করতে হয় বাইরে থেকে।

গোপালগঞ্জ বিসিক শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি মোশাররফ হোসেন বলেন, বিসিকে পানির কষ্ট মারাত্মক। শিল্প উৎপাদন কাজে পানি একটি অপরিহার্য উপাদান। তাই বাধ্য হয়ে আমাদের ব্যবস্থাপনায় পানি এনে উৎপাদন কাজে ব্যবহার করতে হয়। শ্রমিকদের জন্য এখানে সুপেয় পানির কোন ব্যবস্থা নেই। তাই বাইরে থেকে পানি কিনে এনে শ্রমিকদের খাওয়াতে হচ্ছে। অথচ পানি সরবরাহ করার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু অযতœ আর অবহেলায় পানি সরবরাহ ব্যবস্থাটি বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। বিসিকের পাশ দিয়ে পৌরসভা নতুন পানির লাইন করেছে। এ লাইনের সঙ্গে বিসিকের পানি সরবরাহ ব্যবস্থার সংযোগ দিলে গোপালগঞ্জ বিসিক শিল্প নগরীর পানি সংকট কেটে যাবে।

গোপালগঞ্জ বিসিক শিল্প নগরী অফিস সুত্রে জানা গেছে, ১৯৮৮ সালে বিসিক শিল্পনগরীতে পানি সরবারাহের জন্য ১২ হাজার লিটার ধারনক্ষমতা সম্পন্ন একটি ওভারহেড পানির ট্যাঙ্ক নির্মাণ করা হয়। এরপর সেখানে ১৯৯৪ সালে গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়। সেই সঙ্গে পাম্প হাউস এবং পাম্পহাউস চালক ও গার্ডের কোয়ার্টার নির্মাণ করা হয়। বসানো হয় পাইপ লাইন। বর্তমানে বিসিক শিল্প নগরীর পানি সরবরাহের স্থাপনা অকেজো, জরাজীর্ণ ও পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে বলে ওই সূত্র জানিয়েছে।

বিসিকের শ্রমিক তানজের আলী (৪৫) বলেন, বিসিকে পানির সমস্যা ব্যাপক। পানির অভাবে আমরা শিল্পে কাজ করতে পারি না। এমনকি এখানে খাবার পানির সমস্যা রয়েছে। মালিকরা বাইরে থেকে আমাদের খাবার পানির ব্যবস্থা করেন। তাই এখানে পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।

বিসিকের পাম্প চালক সাইদুজ্জামান বলেন, বিসিকের পাম্পের পানিতে প্রচুর আয়রণ ও লবন রয়েছে। এ পানি শিল্পে ব্যবহারের অনুপযোগি। তাই শিল্পে এ পানি সরবরাহ করা হয়নি। সরবরাহ ব্যবস্থা ২৭ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। পানি সরবরাহ ব্যবস্থার সব কিছু বিকল হয়ে পড়েছে। কোয়ার্টার বসবাসের অযোগ্য। তারপরও আমার বেতন থেকে কোয়ার্টার রেন্ট কাটা হচ্ছে। আমাদের পাম্প সংস্কার করে পৌর পানির লাইনের সঙ্গে সংযোগ দিলে বিসিকে সুপেয় পানি সরবরাহ করা সম্ভব।

গোপালগঞ্জ বিসিক শিল্পনগরী কর্মকর্তা মাসুদ রানা বলেন, এ নিয়ে শিল্প মালিকরা এত দিনে কোন কথা বলেননি। গত ২ অক্টোবর উৎপাদনশীলতা দিবসে তারা বিসিকের পানি সরবরাহ ব্যবস্থা চালুর দাবি করেছেন। তাই বিসিকের পানি সংকট নিরসনে আমরা বিসিক চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছি। সেখানে পৌরসভার পানির লাইনের সঙ্গে বিসিকের পানি সরবরাহ ব্যবস্থার সংযোগ দিয়ে শিল্পনগরীতে পানি সরবরাহ ব্যবস্থা সচলের সুপারিশ করেছি। এটি হলে পানি সমস্যা থাকবে না।

শনিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২১ , ২১ কার্তিক ১৪২৮ ২৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

গোপালগঞ্জ বিসিকে ২৭ বছর বিকল পানি সরবরাহ ব্যবস্থা

কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, গোপালগঞ্জ

image

গোপালগঞ্জ : দীর্ঘদিন এভাবেই পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে পানির ট্যাংক -সংবাদ

২৭ বছর ধরে বিকল গোপালগঞ্জ বিসিক শিল্পনগরীর পানি সরবরাহ ব্যবস্থা। এটি সচল করতে বিসিক কর্তৃপক্ষ কখানো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। অবহেলায় পানি সরবরাহ ব্যবস্থায় বেহাল দশা বিরাজ করায় শিল্পনগরীতে বর্তমানে পানি সংকট মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। এজন্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পানি এনে উৎপাদন কাজ চালিয়ে যেতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিসিক শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি। খাবার পানিও সংগ্রহ করতে হয় বাইরে থেকে।

গোপালগঞ্জ বিসিক শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি মোশাররফ হোসেন বলেন, বিসিকে পানির কষ্ট মারাত্মক। শিল্প উৎপাদন কাজে পানি একটি অপরিহার্য উপাদান। তাই বাধ্য হয়ে আমাদের ব্যবস্থাপনায় পানি এনে উৎপাদন কাজে ব্যবহার করতে হয়। শ্রমিকদের জন্য এখানে সুপেয় পানির কোন ব্যবস্থা নেই। তাই বাইরে থেকে পানি কিনে এনে শ্রমিকদের খাওয়াতে হচ্ছে। অথচ পানি সরবরাহ করার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু অযতœ আর অবহেলায় পানি সরবরাহ ব্যবস্থাটি বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। বিসিকের পাশ দিয়ে পৌরসভা নতুন পানির লাইন করেছে। এ লাইনের সঙ্গে বিসিকের পানি সরবরাহ ব্যবস্থার সংযোগ দিলে গোপালগঞ্জ বিসিক শিল্প নগরীর পানি সংকট কেটে যাবে।

গোপালগঞ্জ বিসিক শিল্প নগরী অফিস সুত্রে জানা গেছে, ১৯৮৮ সালে বিসিক শিল্পনগরীতে পানি সরবারাহের জন্য ১২ হাজার লিটার ধারনক্ষমতা সম্পন্ন একটি ওভারহেড পানির ট্যাঙ্ক নির্মাণ করা হয়। এরপর সেখানে ১৯৯৪ সালে গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়। সেই সঙ্গে পাম্প হাউস এবং পাম্পহাউস চালক ও গার্ডের কোয়ার্টার নির্মাণ করা হয়। বসানো হয় পাইপ লাইন। বর্তমানে বিসিক শিল্প নগরীর পানি সরবরাহের স্থাপনা অকেজো, জরাজীর্ণ ও পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে বলে ওই সূত্র জানিয়েছে।

বিসিকের শ্রমিক তানজের আলী (৪৫) বলেন, বিসিকে পানির সমস্যা ব্যাপক। পানির অভাবে আমরা শিল্পে কাজ করতে পারি না। এমনকি এখানে খাবার পানির সমস্যা রয়েছে। মালিকরা বাইরে থেকে আমাদের খাবার পানির ব্যবস্থা করেন। তাই এখানে পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।

বিসিকের পাম্প চালক সাইদুজ্জামান বলেন, বিসিকের পাম্পের পানিতে প্রচুর আয়রণ ও লবন রয়েছে। এ পানি শিল্পে ব্যবহারের অনুপযোগি। তাই শিল্পে এ পানি সরবরাহ করা হয়নি। সরবরাহ ব্যবস্থা ২৭ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। পানি সরবরাহ ব্যবস্থার সব কিছু বিকল হয়ে পড়েছে। কোয়ার্টার বসবাসের অযোগ্য। তারপরও আমার বেতন থেকে কোয়ার্টার রেন্ট কাটা হচ্ছে। আমাদের পাম্প সংস্কার করে পৌর পানির লাইনের সঙ্গে সংযোগ দিলে বিসিকে সুপেয় পানি সরবরাহ করা সম্ভব।

গোপালগঞ্জ বিসিক শিল্পনগরী কর্মকর্তা মাসুদ রানা বলেন, এ নিয়ে শিল্প মালিকরা এত দিনে কোন কথা বলেননি। গত ২ অক্টোবর উৎপাদনশীলতা দিবসে তারা বিসিকের পানি সরবরাহ ব্যবস্থা চালুর দাবি করেছেন। তাই বিসিকের পানি সংকট নিরসনে আমরা বিসিক চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছি। সেখানে পৌরসভার পানির লাইনের সঙ্গে বিসিকের পানি সরবরাহ ব্যবস্থার সংযোগ দিয়ে শিল্পনগরীতে পানি সরবরাহ ব্যবস্থা সচলের সুপারিশ করেছি। এটি হলে পানি সমস্যা থাকবে না।