সুবর্ণচরে আ’লীগ নেতা হত্যা নরসিংদীর চরাঞ্চলে ফের সংঘর্ষ

আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে আওয়ামী লীগের সভাপতিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীর বাড়িতে গুলিবর্ষণসহ নানা ধরনের নির্বাচনী সহিংসতা, বাড়িঘরে হামলা ও হত্যা চেষ্টা চালানোর অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও দেশের বরিশাল, নারায়ণগঞ্জ, মাদারীপুর, নরসিংদীসহ বিভিন্ন জেলায় এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হামলা, ভাঙচুর ও সহিংসতায় নির্বাচনী এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় বিদ্রোহী প্রার্থীদের বহিষ্কারও করা হয়েছে।

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে আওয়ামী লীগ নেতাকে হত্যা

নোয়াখালী, প্রতিনিধি জানান, নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ইউপি নির্বাচনে নৌকার ভোট করায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৭নং ওয়ার্ড সভাপতি ফরিদ সর্দারকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ ওঠেছে। এ ঘটনায় চান মিয়া (৩৫) নামে আরও এক ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়েছে। নিহত ফরিদ সর্দার (৪৫) উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের কালা মিয়ার ছেলে। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার চরক্লার্ক ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইসমাইল মেম্বারের বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতের ছেলে জাকের অভিযোগ করেন, সকালে তার বাবা বন্ধু চান মিয়াকে নিয়ে স্থানীয় বাংলাবাজারে ইরি ধান ক্রয় করতে যায়। এক পর্যায়ে বাংলাবাজার থেকে তিনি মোটরসাইকেল যোগে নিজ বাড়ির উদ্দেশে যাত্রা করে। যাত্রাপথে তিনি উপজেলার চরক্লার্ক ইউনিয়নের ইসমাইল মেম্বারের বাড়ির সামনে পৌঁছলে আগে থেকে ওঁৎপেতে থাকা মহিউদ্দিন চেয়ারম্যানের লোকজন বাবাকে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে মাথায় কুপিয়ে এবং পায়ে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুত্বর জখম করে হত্যা করে। বাবা নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের ভোট করায় মহিউদ্দিন চেয়ারম্যানের লোকজন এ হত্যাকা- ঘটিয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

পুলিশ জানায়, নিহত ফরিদ সর্দার স্থানীয় বনদস্যু নোব্বা চোরা হত্যা মামলার আসামি। পিতা হত্যার প্রতিশোধ নিতে মৃত নোব্বা চোরার তৃতীয় সংসারের ছেলে সোহাগ, আকবরসহ ১০-১৫ জন ফরিদকে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে মাথায় কুপিয়ে এবং লোহার রড দিয়ে পায়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়। নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ জানায়, নিহত ফরিদ সর্দার মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৭নং ওয়ার্ড সভাপতি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন চৌধুরীর ফোনে বিকেল পৌনে ৫টার দিকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

চরজব্বার থানার ওসি মো. জিয়াউল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ইউপি নির্বাচন ও পূর্ব শক্রতার জের ধরে ফরিদ সর্দারের প্রতিপক্ষ নোব্বা চোরার ছেলেরা তাকে কুপিয়ে, পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে দুপুর ৩টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ওসি মো. জিয়াউল হক আরও জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালাচ্ছে। লাশ নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। এ হত্যাকা-ে স্থানীয় সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী ও জেলা আওয়ামী লীগ আহ্বায়ক ও সুবর্ণচর উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম গভীর শোক প্রকাশ করে হত্যাকা-ে জড়িতদের গ্রেপ্তার করার জন্য দাবি জানিয়েছেন।

বেগমগঞ্জে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমন্বয়কের বাড়িতে গুলি

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার ছয়ানী ইউনিয়নে ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ওহিদুজ্জামান অহিদের আনারস মার্কার প্রধান সমন্বয়ক মোতাহের রশিদ অভিযোগ করেন গতকাল ভোর রাতে একদল সন্ত্রাসী তার বাড়িতে বৃষ্টির মতো গুলি চালায়। এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা কেউ ঘর থেকে বের হয়নি তা ছাড়া বিল্ডিয়ের কারণে গুলি ঘরে ঢুকতে পারিনি।

এ বিষয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী (নৌকা) শাহাদাত হোসেন রশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে এটা সাজানো নাটক বলে দাবি করেন।

এ বিষয় বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি মীর জাহিদুল হক রনির ফোনে কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে থানার ডিউটি অফিসার বলেন, এ ব্যাপারে থানায় কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

চেয়ারম্যান প্রার্থী ওহিদুজ্জামান অভিযোগ করেন তার প্রতিপক্ষ নৌকার প্রার্থী শাহাদাত হোসেন রশিদ ও তার সমর্থকরা আমার নির্বাচনী প্রধান সমন্বয়কারী মোতাহারের বাড়িতে রাতে হামলা ও ভাঙচুর করে এবং তাকে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার জন্য সন্ত্রাসী দিয়ে হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে। এছাড়াও মঙ্গলবার রাতে তার নৌকার তোরণ নিজেরা পুড়িয়ে আমি ও আমার লোকজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার করছে। আমি প্রশাসনের মাধ্যমে সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি এবং আগামী ১১ তারিখের নির্বাচনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ সন্ত্রাসমুক্ত করার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।

নরসিংদীর চরাঞ্চলের ফের সংঘর্ষ

প্রতিনিধি, নরসিংদী

গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নরসিংদীর দুর্গম চরাঞ্চল আলোকবালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দীপুর সমর্থক ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার প্রার্থী মামুন সমর্থক ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ’র সমর্থক ইউপি মেম্বার প্রার্থীর সঙ্গে জব্বর মিয়ার সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় ২ জন আহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলাচ্ছে।

গত বৃহস্পতিবার সকালে সদর উপজেলার মেঘনা নদী বেষ্টিত দুর্গম চরাঞ্চল আলোকবালী ইউনিয়নের নেকজানপুর গ্রামে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ৪ জন নিহত হয়। ঘটনার একদিন পেরিয়ে গেলেও থানায় কোন মামলা দায়ের হয়নি। এ ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। চরঞ্চলগুলোতে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রের মজুদ থাকলেও এসব উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়েছে পুলিশ। এমনকি হত্যাকা-ে ব্যবহৃত অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার হয়নি। এদিকে ৪টি হত্যাকা-ের পর এলাকায় চাপা ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। গ্রাম জুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

নরসিংদী সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) হারুনুর রশিদ বলেন, হত্যাকা-ের ঘটনায় নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় এখনও মামলা দায়ের করেনি। এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ সময় প্রতিপক্ষের হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নেকজানপুর গ্রামের আমির হোসেন (৪৫), একই গ্রামের আশ্রাফুল (২২), খুশি বেগম (৫০) ও খাইরুল ইসলাম নিহত হয়। এ সময় গুলিবিদ্ধ ১০ জনসহ কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়। গুলিবিদ্ধ ৬ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

বরিশালে আ’লীগের সাত বিদ্রোহী প্রার্থীকে বহিষ্কার

প্রতিনিধি, বরিশাল

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে ইউপি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় বরিশাল সদর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে দলীয় বিদ্রোহী সাতজন প্রার্থীকে বহিষ্কার করেছে আওয়ামী লীগ। গতকাল সকালে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হালিম রেজা মোফাজ্জেলের স্বাক্ষরিত বহিষ্কারাদেশ সূত্রে জানা গেছে, দলের সভাপতির নির্দেশ অমান্য করে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিপক্ষে স্বতন্ত্র বা বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় সাতজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃতরা হলেন- রায়পাশা কড়াপুর ইউনিয়নের মো. হাবিবুর রহমান খোকন ও মিজানুর রহমান জাকির, শায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের রুবেল হোসেন মামুন, চরমোনাই ইউনিয়নের গিয়াস উদ্দিন হাওলাদার, চরকাউয়া ইউনিয়নের সুলতান আহমেদ খান ও মো. হারুন-অর রশিদ এবং চঁনপুরা ইউনিয়নের মো. জাহিদ হোসেন।

কালকিনিতে নৌকা প্রার্থীর বিরুদ্ধে

হত্যার হুমকির অভিযোগ

প্রতিনিধি, কালকিনি

গতকাল সকাল ১১টায় মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার আলীনগরে নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে নৌকার প্রার্থী সাহীদ পারভেজের বিরুদ্ধে মিলন সরদার বলেন, ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সাহীদ পারভেজের লোকজন গত ২৮ অক্টোবর আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার বাড়িঘরে ব্যাপক হামলা চালিয়ে আমার সমর্থকদের ১০টি মোটরসাইকেল, আমার ১টি প্রাইভেট কারসহ কোটি টাকার ক্ষতিসাধন করেছে। আমি অবরুদ্ধ থাকা অবস্থায় আমার ভাইকে দিয়ে মামলা করতে গেলে, থানার সামনে সাহীদ পারভেজের লোকজন আমার ভাইকে বাধাগ্রস্ত করে। পরবর্তীতে আমি আদালতে মামলা দায়ের করি। তবে এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি কালকিনি থানা পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, নৌকা প্রার্থীর কয়েকজন সন্ত্রাসী ইলিয়াছ হাওলাদার, মানিক সরদার, জসিম বেপারী, নুর মাতুব্বর, মাহবুব সরদার, পরাগ মোল্লা, শহিদ মোল্লা, কালু হাওলাদারসহ আরও কয়েকজন রয়েছে। তাদের যদি আইনের আওতায় নেয়া যায় তাহলে এই নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। এছাড়া নির্বাচনী মাঠে ৮৫ ভাগ ভোটার আমার পক্ষে এটা আমার কথা না এটা জনগণের কথা। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমি নির্বাচিত হবো ইনশাআল্লাহ। তিনি আমার বাড়িতে হামলার ঘটনাকে মিথ্যা প্রমাণিত করতে তার লোকজন দিয়ে নিজেরাই এলাকার একটি মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ঘর ভাঙচুর করেন আমার বিরুদ্ধে মামলা করার পাঁয়তারা করছে। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং প্রশাসনের কাছে আমার জীবনের নিরাপত্তা চাচ্ছি।

রূপগঞ্জে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা ভাঙচুর

প্রতিনিধি, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকরা আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের নির্বাচনী ক্যাম্প ও বাড়িঘরে ফের হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় হামলকারীদের মধ্যে দুই জনকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। গত বৃহস্পতিবার মধ্যে রাতে উপজেলার ভোলাব ইউনিয়নের বাসন্দা ও পাইস্কা এলাকায় ঘটে এ ঘটনা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভোলাব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসাবে রয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী (নৌকা) অ্যাডভোকেট তায়েবুর রহমান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন টিটু (আনারস)। রাত ১২টার দিকে চেয়ারম্যান প্রার্থী আলমগীর হোসেন টিটুর পাইস্কা নির্বাচনী ক্যাম্পে অ্যাডভোকেট তায়েবুর রহমানের সমর্থক আজিজ, আনোয়ার, জুলহাস, ছনেট, পলাশ, সোহেলসহ ৩০ থেকে ৪০ জনের একদল ধারালো অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ফের হামলা চালিয়ে চেয়ারটেবিল ভাঙচুর করে। পরে হামলাকারীরা আলমগীর হোসেন টিটুর সমর্থক আবদুল গফুর, দেলোয়ার হোসেন জন্টু, লোকমান ও শামিম কাজীর বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর চালায় এবং প্রাণনাশের হুমকি দেন। এক পর্যায়ে আলমগীর হোসেন টিটুর সমর্থকরা উত্তেজিত হয়ে হামলাকারীদের মধ্যে জুলহাস ও বারেক নামের দুই জনকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আমির খসরু ও সহকারী পুলিশ সুপার (গ সার্কেল) আবির হোসেনের নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী (নৌকা) অ্যাডভোকেট তায়েবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি উল্টো অভিযোগ করে বলেন, আমার সমর্থকদের কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করেছে আলমগীর হোসেন টিটুর সমর্থকরা। এছাড়া তারা নিজেরা নিজেদের বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়ে নাটক সাজিয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আমির খসরু বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পরবর্তীতে এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে সে ব্যপারে প্রশাসনের সজাগ দৃষ্টি রয়েছে।

শনিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২১ , ২১ কার্তিক ১৪২৮ ২৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

ইউপি নির্বাচন নিয়ে সহিংসতা চলছে

সুবর্ণচরে আ’লীগ নেতা হত্যা নরসিংদীর চরাঞ্চলে ফের সংঘর্ষ

সংবাদ ডেস্ক

আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে আওয়ামী লীগের সভাপতিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীর বাড়িতে গুলিবর্ষণসহ নানা ধরনের নির্বাচনী সহিংসতা, বাড়িঘরে হামলা ও হত্যা চেষ্টা চালানোর অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও দেশের বরিশাল, নারায়ণগঞ্জ, মাদারীপুর, নরসিংদীসহ বিভিন্ন জেলায় এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হামলা, ভাঙচুর ও সহিংসতায় নির্বাচনী এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় বিদ্রোহী প্রার্থীদের বহিষ্কারও করা হয়েছে।

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে আওয়ামী লীগ নেতাকে হত্যা

নোয়াখালী, প্রতিনিধি জানান, নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ইউপি নির্বাচনে নৌকার ভোট করায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৭নং ওয়ার্ড সভাপতি ফরিদ সর্দারকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ ওঠেছে। এ ঘটনায় চান মিয়া (৩৫) নামে আরও এক ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়েছে। নিহত ফরিদ সর্দার (৪৫) উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের কালা মিয়ার ছেলে। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার চরক্লার্ক ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইসমাইল মেম্বারের বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতের ছেলে জাকের অভিযোগ করেন, সকালে তার বাবা বন্ধু চান মিয়াকে নিয়ে স্থানীয় বাংলাবাজারে ইরি ধান ক্রয় করতে যায়। এক পর্যায়ে বাংলাবাজার থেকে তিনি মোটরসাইকেল যোগে নিজ বাড়ির উদ্দেশে যাত্রা করে। যাত্রাপথে তিনি উপজেলার চরক্লার্ক ইউনিয়নের ইসমাইল মেম্বারের বাড়ির সামনে পৌঁছলে আগে থেকে ওঁৎপেতে থাকা মহিউদ্দিন চেয়ারম্যানের লোকজন বাবাকে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে মাথায় কুপিয়ে এবং পায়ে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুত্বর জখম করে হত্যা করে। বাবা নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের ভোট করায় মহিউদ্দিন চেয়ারম্যানের লোকজন এ হত্যাকা- ঘটিয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

পুলিশ জানায়, নিহত ফরিদ সর্দার স্থানীয় বনদস্যু নোব্বা চোরা হত্যা মামলার আসামি। পিতা হত্যার প্রতিশোধ নিতে মৃত নোব্বা চোরার তৃতীয় সংসারের ছেলে সোহাগ, আকবরসহ ১০-১৫ জন ফরিদকে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে মাথায় কুপিয়ে এবং লোহার রড দিয়ে পায়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়। নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ জানায়, নিহত ফরিদ সর্দার মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৭নং ওয়ার্ড সভাপতি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন চৌধুরীর ফোনে বিকেল পৌনে ৫টার দিকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

চরজব্বার থানার ওসি মো. জিয়াউল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ইউপি নির্বাচন ও পূর্ব শক্রতার জের ধরে ফরিদ সর্দারের প্রতিপক্ষ নোব্বা চোরার ছেলেরা তাকে কুপিয়ে, পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে দুপুর ৩টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ওসি মো. জিয়াউল হক আরও জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালাচ্ছে। লাশ নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। এ হত্যাকা-ে স্থানীয় সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী ও জেলা আওয়ামী লীগ আহ্বায়ক ও সুবর্ণচর উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম গভীর শোক প্রকাশ করে হত্যাকা-ে জড়িতদের গ্রেপ্তার করার জন্য দাবি জানিয়েছেন।

বেগমগঞ্জে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমন্বয়কের বাড়িতে গুলি

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার ছয়ানী ইউনিয়নে ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ওহিদুজ্জামান অহিদের আনারস মার্কার প্রধান সমন্বয়ক মোতাহের রশিদ অভিযোগ করেন গতকাল ভোর রাতে একদল সন্ত্রাসী তার বাড়িতে বৃষ্টির মতো গুলি চালায়। এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা কেউ ঘর থেকে বের হয়নি তা ছাড়া বিল্ডিয়ের কারণে গুলি ঘরে ঢুকতে পারিনি।

এ বিষয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী (নৌকা) শাহাদাত হোসেন রশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে এটা সাজানো নাটক বলে দাবি করেন।

এ বিষয় বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি মীর জাহিদুল হক রনির ফোনে কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে থানার ডিউটি অফিসার বলেন, এ ব্যাপারে থানায় কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

চেয়ারম্যান প্রার্থী ওহিদুজ্জামান অভিযোগ করেন তার প্রতিপক্ষ নৌকার প্রার্থী শাহাদাত হোসেন রশিদ ও তার সমর্থকরা আমার নির্বাচনী প্রধান সমন্বয়কারী মোতাহারের বাড়িতে রাতে হামলা ও ভাঙচুর করে এবং তাকে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার জন্য সন্ত্রাসী দিয়ে হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে। এছাড়াও মঙ্গলবার রাতে তার নৌকার তোরণ নিজেরা পুড়িয়ে আমি ও আমার লোকজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার করছে। আমি প্রশাসনের মাধ্যমে সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি এবং আগামী ১১ তারিখের নির্বাচনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ সন্ত্রাসমুক্ত করার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।

নরসিংদীর চরাঞ্চলের ফের সংঘর্ষ

প্রতিনিধি, নরসিংদী

গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নরসিংদীর দুর্গম চরাঞ্চল আলোকবালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দীপুর সমর্থক ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার প্রার্থী মামুন সমর্থক ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ’র সমর্থক ইউপি মেম্বার প্রার্থীর সঙ্গে জব্বর মিয়ার সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় ২ জন আহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলাচ্ছে।

গত বৃহস্পতিবার সকালে সদর উপজেলার মেঘনা নদী বেষ্টিত দুর্গম চরাঞ্চল আলোকবালী ইউনিয়নের নেকজানপুর গ্রামে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ৪ জন নিহত হয়। ঘটনার একদিন পেরিয়ে গেলেও থানায় কোন মামলা দায়ের হয়নি। এ ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। চরঞ্চলগুলোতে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রের মজুদ থাকলেও এসব উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়েছে পুলিশ। এমনকি হত্যাকা-ে ব্যবহৃত অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার হয়নি। এদিকে ৪টি হত্যাকা-ের পর এলাকায় চাপা ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। গ্রাম জুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

নরসিংদী সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) হারুনুর রশিদ বলেন, হত্যাকা-ের ঘটনায় নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় এখনও মামলা দায়ের করেনি। এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ সময় প্রতিপক্ষের হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নেকজানপুর গ্রামের আমির হোসেন (৪৫), একই গ্রামের আশ্রাফুল (২২), খুশি বেগম (৫০) ও খাইরুল ইসলাম নিহত হয়। এ সময় গুলিবিদ্ধ ১০ জনসহ কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়। গুলিবিদ্ধ ৬ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

বরিশালে আ’লীগের সাত বিদ্রোহী প্রার্থীকে বহিষ্কার

প্রতিনিধি, বরিশাল

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে ইউপি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় বরিশাল সদর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে দলীয় বিদ্রোহী সাতজন প্রার্থীকে বহিষ্কার করেছে আওয়ামী লীগ। গতকাল সকালে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হালিম রেজা মোফাজ্জেলের স্বাক্ষরিত বহিষ্কারাদেশ সূত্রে জানা গেছে, দলের সভাপতির নির্দেশ অমান্য করে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিপক্ষে স্বতন্ত্র বা বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় সাতজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃতরা হলেন- রায়পাশা কড়াপুর ইউনিয়নের মো. হাবিবুর রহমান খোকন ও মিজানুর রহমান জাকির, শায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের রুবেল হোসেন মামুন, চরমোনাই ইউনিয়নের গিয়াস উদ্দিন হাওলাদার, চরকাউয়া ইউনিয়নের সুলতান আহমেদ খান ও মো. হারুন-অর রশিদ এবং চঁনপুরা ইউনিয়নের মো. জাহিদ হোসেন।

কালকিনিতে নৌকা প্রার্থীর বিরুদ্ধে

হত্যার হুমকির অভিযোগ

প্রতিনিধি, কালকিনি

গতকাল সকাল ১১টায় মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার আলীনগরে নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে নৌকার প্রার্থী সাহীদ পারভেজের বিরুদ্ধে মিলন সরদার বলেন, ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সাহীদ পারভেজের লোকজন গত ২৮ অক্টোবর আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার বাড়িঘরে ব্যাপক হামলা চালিয়ে আমার সমর্থকদের ১০টি মোটরসাইকেল, আমার ১টি প্রাইভেট কারসহ কোটি টাকার ক্ষতিসাধন করেছে। আমি অবরুদ্ধ থাকা অবস্থায় আমার ভাইকে দিয়ে মামলা করতে গেলে, থানার সামনে সাহীদ পারভেজের লোকজন আমার ভাইকে বাধাগ্রস্ত করে। পরবর্তীতে আমি আদালতে মামলা দায়ের করি। তবে এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি কালকিনি থানা পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, নৌকা প্রার্থীর কয়েকজন সন্ত্রাসী ইলিয়াছ হাওলাদার, মানিক সরদার, জসিম বেপারী, নুর মাতুব্বর, মাহবুব সরদার, পরাগ মোল্লা, শহিদ মোল্লা, কালু হাওলাদারসহ আরও কয়েকজন রয়েছে। তাদের যদি আইনের আওতায় নেয়া যায় তাহলে এই নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। এছাড়া নির্বাচনী মাঠে ৮৫ ভাগ ভোটার আমার পক্ষে এটা আমার কথা না এটা জনগণের কথা। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমি নির্বাচিত হবো ইনশাআল্লাহ। তিনি আমার বাড়িতে হামলার ঘটনাকে মিথ্যা প্রমাণিত করতে তার লোকজন দিয়ে নিজেরাই এলাকার একটি মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ঘর ভাঙচুর করেন আমার বিরুদ্ধে মামলা করার পাঁয়তারা করছে। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং প্রশাসনের কাছে আমার জীবনের নিরাপত্তা চাচ্ছি।

রূপগঞ্জে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা ভাঙচুর

প্রতিনিধি, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকরা আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের নির্বাচনী ক্যাম্প ও বাড়িঘরে ফের হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় হামলকারীদের মধ্যে দুই জনকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। গত বৃহস্পতিবার মধ্যে রাতে উপজেলার ভোলাব ইউনিয়নের বাসন্দা ও পাইস্কা এলাকায় ঘটে এ ঘটনা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভোলাব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসাবে রয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী (নৌকা) অ্যাডভোকেট তায়েবুর রহমান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন টিটু (আনারস)। রাত ১২টার দিকে চেয়ারম্যান প্রার্থী আলমগীর হোসেন টিটুর পাইস্কা নির্বাচনী ক্যাম্পে অ্যাডভোকেট তায়েবুর রহমানের সমর্থক আজিজ, আনোয়ার, জুলহাস, ছনেট, পলাশ, সোহেলসহ ৩০ থেকে ৪০ জনের একদল ধারালো অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ফের হামলা চালিয়ে চেয়ারটেবিল ভাঙচুর করে। পরে হামলাকারীরা আলমগীর হোসেন টিটুর সমর্থক আবদুল গফুর, দেলোয়ার হোসেন জন্টু, লোকমান ও শামিম কাজীর বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর চালায় এবং প্রাণনাশের হুমকি দেন। এক পর্যায়ে আলমগীর হোসেন টিটুর সমর্থকরা উত্তেজিত হয়ে হামলাকারীদের মধ্যে জুলহাস ও বারেক নামের দুই জনকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আমির খসরু ও সহকারী পুলিশ সুপার (গ সার্কেল) আবির হোসেনের নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী (নৌকা) অ্যাডভোকেট তায়েবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি উল্টো অভিযোগ করে বলেন, আমার সমর্থকদের কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করেছে আলমগীর হোসেন টিটুর সমর্থকরা। এছাড়া তারা নিজেরা নিজেদের বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়ে নাটক সাজিয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আমির খসরু বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পরবর্তীতে এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে সে ব্যপারে প্রশাসনের সজাগ দৃষ্টি রয়েছে।