সীমান্তে দুই বাংলার মিলনমেলা

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার নবীনগর-বাউরা সীমান্তের মেইন পিলার ৮৮৫-এর সাব পিলার ১১ এস-এর কাছে ভারতীয় কুচলিবাড়ী ৪০ বিএসএফ ক্যাম্পের কাছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কালীপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের মানুষের মধ্যে মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়।

গতকাল সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দুই দেশের হিন্দু ধর্মালম্বী ছাড়াও শত শত মুসলমান মানুষ দুই বাংলার আত্মীয়-স্বজন একে অপরকে একনজর দেখার জন্য ভারতীয় কাঁটাতারের বেড়ার দু’পাশে ভিড় জমান। এ সময় সেখানে তৈরি হয় এক আবেগঘন পরিবেশ। প্রিয়জনকে কাছে পাওয়ার প্রত্যাশায় কাঁটাতারের এপার-ওপারে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন উপস্থিত লোকজন।

ভালোবাসা বিনিময়ের প্রাক্কালে ভারতীয় কুচলিবাড়ী ৪০ বিএসএফ ক্যাম্পের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে আসা শিশু-কিশোরসহ অন্যদের মধ্যে (প্রসাদ) খাবার পরিবেশন করেন। দুই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা লোকজন তাদের আপনজনদের দেখে আবেগে অশ্রুসিক্ত হন। কুশল বিনিময় ও উভয়ে খাবার, ফল বিনিময় করেন।

পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা বাজার এলাকা থেকে আসা নাজমা বেগম বলেন, ভারতে ভাই, ভাবী বসবাস করেন তাই তাদের সঙ্গে দেখা করতে এই কাঁটাতারের বেড়ার কাছে এসেছি। এখনো দেখা হয়নি, তারা আসলে দেখা হবে। করোনা ভাইরাসের কারণে দুই বছর দেখা হয়নি। এবার কালীপূজার কারণে কাঁটাতারের বেড়ার কাছে এসেছি তাদের সঙ্গে দেখা করতে।

হাতীবান্ধার বড়খাতা ইউনিয়ন থেকে আসা শ্রী সুদর্শন বলেন, ভারতে আমার ভাগনী থাকেন তাদের সঙ্গে দুই বছর পর দেখা হলো। অনেক ভালো লাগছে। প্রতিবছর যেন দেখা করার সুযোগ করে দেয়া হয়।

নীলফামারীর জলঢাকা থেকে ভারতে বসবাস করা ছেলেকে দেখতে এসেছিলেন বৃদ্ধা মধুবালা, তিনি কেঁদে কেঁদে জানালেন, টাকার অভাবে ভারতে যেতে পারি না, তাই খবর পেয়ে আসলাম ছেলেকে দেখতে। দেখলামও। কি যে প্রশান্তি আমার হ্নদয়জুড়ে। প্রতিবছর যেন আমাদের মতো অভাবি মানুষদের জন্য সীমান্তে মিলন মেলার আয়োজন করা হয়।

এ বিষয়ে বাউরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বসুনিয়া বলেন, করোনার কারণে দুই বছর মিলন মেলা না হলেও এ বছর দুই বাংলার মিলন মেলা হয়েছে। দুই বাংলার আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে উভয়ে দেখা এবং কুশলবিনিময় করেন। দুই বাংলার এই সম্পর্ক যেন আজীবন থাকে।

image

লালমনিরহাট : গতকাল হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কালীপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের সীমান্তে মানুষের মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয় -সংবাদ

আরও খবর
এখন বঙ্গবন্ধুর নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা যাবে না : প্রধানমন্ত্রী
২৪ শতাংশ বনভূমি থাকায় আমরা প্রস্তাবে সই করিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী
নিয়ন্ত্রণহীন নিত্যপণ্যের বাজার
সন্ত্রাস দমনে রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন : রাবাব ফাতিমা
অনলাইন গ্রুপ খুলে মাদক ব্যবসা
পুলিশ পরিচয়ে গাড়ি ভাড়া নিয়ে ছিনতাই চক্র
দিল্লির নিরাপত্তা বৈঠকে যোগ দিচ্ছে না পাকিস্তান
হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনাটি ছিল পরিকল্পিত : হিন্দু মহাজোট
বেদখল ৩০টি মুজিব কিল্লা

শনিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২১ , ২১ কার্তিক ১৪২৮ ২৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

সীমান্তে দুই বাংলার মিলনমেলা

image

লালমনিরহাট : গতকাল হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কালীপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের সীমান্তে মানুষের মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয় -সংবাদ

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার নবীনগর-বাউরা সীমান্তের মেইন পিলার ৮৮৫-এর সাব পিলার ১১ এস-এর কাছে ভারতীয় কুচলিবাড়ী ৪০ বিএসএফ ক্যাম্পের কাছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কালীপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের মানুষের মধ্যে মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়।

গতকাল সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দুই দেশের হিন্দু ধর্মালম্বী ছাড়াও শত শত মুসলমান মানুষ দুই বাংলার আত্মীয়-স্বজন একে অপরকে একনজর দেখার জন্য ভারতীয় কাঁটাতারের বেড়ার দু’পাশে ভিড় জমান। এ সময় সেখানে তৈরি হয় এক আবেগঘন পরিবেশ। প্রিয়জনকে কাছে পাওয়ার প্রত্যাশায় কাঁটাতারের এপার-ওপারে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন উপস্থিত লোকজন।

ভালোবাসা বিনিময়ের প্রাক্কালে ভারতীয় কুচলিবাড়ী ৪০ বিএসএফ ক্যাম্পের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে আসা শিশু-কিশোরসহ অন্যদের মধ্যে (প্রসাদ) খাবার পরিবেশন করেন। দুই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা লোকজন তাদের আপনজনদের দেখে আবেগে অশ্রুসিক্ত হন। কুশল বিনিময় ও উভয়ে খাবার, ফল বিনিময় করেন।

পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা বাজার এলাকা থেকে আসা নাজমা বেগম বলেন, ভারতে ভাই, ভাবী বসবাস করেন তাই তাদের সঙ্গে দেখা করতে এই কাঁটাতারের বেড়ার কাছে এসেছি। এখনো দেখা হয়নি, তারা আসলে দেখা হবে। করোনা ভাইরাসের কারণে দুই বছর দেখা হয়নি। এবার কালীপূজার কারণে কাঁটাতারের বেড়ার কাছে এসেছি তাদের সঙ্গে দেখা করতে।

হাতীবান্ধার বড়খাতা ইউনিয়ন থেকে আসা শ্রী সুদর্শন বলেন, ভারতে আমার ভাগনী থাকেন তাদের সঙ্গে দুই বছর পর দেখা হলো। অনেক ভালো লাগছে। প্রতিবছর যেন দেখা করার সুযোগ করে দেয়া হয়।

নীলফামারীর জলঢাকা থেকে ভারতে বসবাস করা ছেলেকে দেখতে এসেছিলেন বৃদ্ধা মধুবালা, তিনি কেঁদে কেঁদে জানালেন, টাকার অভাবে ভারতে যেতে পারি না, তাই খবর পেয়ে আসলাম ছেলেকে দেখতে। দেখলামও। কি যে প্রশান্তি আমার হ্নদয়জুড়ে। প্রতিবছর যেন আমাদের মতো অভাবি মানুষদের জন্য সীমান্তে মিলন মেলার আয়োজন করা হয়।

এ বিষয়ে বাউরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বসুনিয়া বলেন, করোনার কারণে দুই বছর মিলন মেলা না হলেও এ বছর দুই বাংলার মিলন মেলা হয়েছে। দুই বাংলার আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে উভয়ে দেখা এবং কুশলবিনিময় করেন। দুই বাংলার এই সম্পর্ক যেন আজীবন থাকে।