রাজৈর পৌরশহরে ৫ কোটি টাকার সড়কবাতি কাজে আসছে না, ভোগান্তিতে পৌরবাসী

মাদারীপুরের রাজৈর পৌর শহরের নাগরিকদের অন্ধকার পথ আলোকিত করতে পাঁচ কোটি টাকার খরচ করে সড়কে সৌরবাতি স্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু স্থাপনের মাত্র ৬ বছর পরেই সড়ক বাতির অধিকাংশই এখন অকেজো। আর যেগুলো এখনো জ¦লছে তাও প্রায় নিভু নিভু। রাজৈর পৌরবাসীর অভিযোগ, পুরো পৌর এলাকার সড়কে সৌর বাতিগুলো স্থাপন করা হয়নি। আর যেগুলো স্থাপন করা হয়েছিল তা রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এখন অকেজো। কিছু বাতি ভেঙেচুরে গেছে। ফলে পৌর শহরের সড়কে আলো না থাকায় বেড়েছে চুরি-ছিনতাইর মতো ঘটনাও। এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত সড়কে নতুন করে আবারও টেকসইভাবে বাতি স্থাপন করা হোক।

রাজৈর পৌরসভার কার্যালয় থেকে জানা গেছে, গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের অর্থায়নে পৌর এলাকার বিভিন্ন সড়কের পাশে ৫১৭টি স্থানে সৌরবাতি স্থাপন করে পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশন নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এই প্রকল্পে ব্যয় হয় ৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। ২০১৫ সালের ৩০ জুনের মধ্যে সৌর বাতিগুলো স্থাপন হয়। এরপর দুই বছর নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের মেরামতের দায়িত্ব ছিল। তারপর থেকে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে পৌর কর্তৃপক্ষ।

রাজৈর পৌর নাগরিকদের অভিযোগ, সৌরবাতিগুলো স্থাপনের পাঁচ থেকে ছয় মাস পর থেকেই নষ্ট হতে থাকে। এরই মধ্যে বেশ কিছু সড়কের বাতি ভেঙে পড়ে রয়েছে। সৌরবাতি ঠিকমতো জ্বলছে কি না, মাঝে মাঝে তা পরীক্ষা করার কথা থাকলেও স্থাপনের পর কাউকে আমরা বাতিগুলো মেরামত করতে দেখিনি।

পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কুন্ডুপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সড়কের পাশে কয়েকটি সৌরবাতির খুঁটি মাটিতে পড়ে আছে। খুঁটির সঙ্গে বাতি, তার ও আনুষঙ্গিক অন্য যন্ত্রাংশও পানি-কাদার সঙ্গে লেপ্টে আছে। দেখে বোঝার উপায় নেই, এসব খুঁটিতে বাতি জ্বলেছে। কিছু খুঁটি দাঁড়িয়ে থাকলেও সেখানে বাতি অকেজো হয়ে পড়ে আছে। কোনোটাতেই আলো জ্বলার অবস্থা নেই।

শানেরপাড় মোড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, একটি সৌর বাতির খুঁটির উপরে বাতির একটি ভাঙ্গা অংশ ঝুলে পড়ে আছে। কয়েক বছর ধরে রাতে তা জ¦লে না। এমনচিত্র পুরো পৌর শহরের বিভিন্ন অলিগলিতে।

এই বিষয়ে রাজৈর পৌর মেয়র নাজমা রশিদ বলেন, শহরের সড়কের বাতি স্থাপনের কাজ আগের মেয়রের আমলে হয়েছিল। বর্তমানে পৌরসভায় জনবলের অভাব রয়েছে। তারপরও দায়িত্ব নেয়ার পর যে কোম্পানি বাতিগুলো স্থাপন করেছিল, আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তাদের টেকনিশিয়ান দিয়ে নষ্ট হওয়া বাতিগুলো ঠিক করা যায় কি না, সেটি দেখছি। তবে আমি নতুনভাবে সড়কবাতি স্থাপন করার জন্য আরও একটি প্রকল্প দিয়েছি।

বেপারীপাড়া এলাকার রিফাত হোসেন বলেন, পৌরসভার সাবেক মেয়র শামীম নেওয়াজ মুন্সির আমলে কাজটি হয়েছিল। স্থাপনের পর এসব বাতি খুব বেশি দিন জ্বলেনি। বিভিন্ন স্থানে সৌরবাতির খুঁটি পড়ে আছে। কোথাও সৌরবাতির খুঁটি চুরি হয়ে গেছে।

টেকেরহাট এলাকার বাসিন্দা বিনয় ও সবুজ বালা বলেন, সড়কের পাশে পৌর শহরবাসীর সুবিধার্থে স্থাপন করা সৌরবাতিগুলোর অনেক বাতিই এখন জ¦লে না। কোনটি জ¦ললেও নিভু নিভু। এসব এখন কেউ দেখে না। আমাদের পৌর নাগরিকদের অনেক সমস্যা হচ্ছে। এতে চুরি-ছিনতাইও বেড়েছে।

রাজৈর পৌরসভার সাবেক মেয়র শামীম নেওয়াজ মুন্সী সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওই সড়কবাতি স্থাপন প্রকল্পটি পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান করেছিল। তাদের দুই বছর পর্যন্ত সার্ভিস করার কথা ছিল। কিন্তু এগুলো এখন ৬ বছরের বেশি সময় হয়ে গেছে। আমি মেয়র দায়িত্বে থাকার সময় অনেকবার তাদের খবর দিয়েছি কিন্তু তারা তেমন সাড়া দেয়নি।

আরও খবর
কোন টাকা দেশে থাকছে না, বিদেশে চলে যাচ্ছে আমীর খসরু
পুলিশ সুপারের সহায়তায় চোখের আলো ফিরে পেয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা ইউসুফ
প্রতিবাদে নোয়াখালীতে মানববন্ধন-সমাবেশ
এবার নন্দিনী হয়ে আসছেন অর্ষা
ভোলায় কালীপূজায় মুখে কালো কাপড় বেঁধে মৌন অবস্থান
মেকিং কম্পিটিশনের চূড়ান্ত অনুষ্ঠান
চাঁদপুরে লঞ্চের ধাক্কায় যাত্রীবাহী ট্রলার ডুবে নিখোঁজ-১, লঞ্চ আটক!
ব্লাক রাইস ও রেড রাইস চাষ করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন তরুণ উদ্যোক্তা গিয়াস
লঞ্চভাড়া সবজির দামও বেড়েছে
৩০ নভেম্বরের মধ্যে হোটেল সোনারগাঁওয়ের কর্মচারী ইউনিয়নের নির্বাচনের নির্দেশ
গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতাল-হত্যা অগ্নিসংযোগ লুটপাট নির্যাতনের বিচার ও ইপিজেড নির্মাণ বন্ধের দাবি

শনিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২১ , ২১ কার্তিক ১৪২৮ ২৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

রাজৈর পৌরশহরে ৫ কোটি টাকার সড়কবাতি কাজে আসছে না, ভোগান্তিতে পৌরবাসী

জেলা বার্তা পরিবেশক, মাদারীপুর

মাদারীপুরের রাজৈর পৌর শহরের নাগরিকদের অন্ধকার পথ আলোকিত করতে পাঁচ কোটি টাকার খরচ করে সড়কে সৌরবাতি স্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু স্থাপনের মাত্র ৬ বছর পরেই সড়ক বাতির অধিকাংশই এখন অকেজো। আর যেগুলো এখনো জ¦লছে তাও প্রায় নিভু নিভু। রাজৈর পৌরবাসীর অভিযোগ, পুরো পৌর এলাকার সড়কে সৌর বাতিগুলো স্থাপন করা হয়নি। আর যেগুলো স্থাপন করা হয়েছিল তা রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এখন অকেজো। কিছু বাতি ভেঙেচুরে গেছে। ফলে পৌর শহরের সড়কে আলো না থাকায় বেড়েছে চুরি-ছিনতাইর মতো ঘটনাও। এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত সড়কে নতুন করে আবারও টেকসইভাবে বাতি স্থাপন করা হোক।

রাজৈর পৌরসভার কার্যালয় থেকে জানা গেছে, গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের অর্থায়নে পৌর এলাকার বিভিন্ন সড়কের পাশে ৫১৭টি স্থানে সৌরবাতি স্থাপন করে পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশন নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এই প্রকল্পে ব্যয় হয় ৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। ২০১৫ সালের ৩০ জুনের মধ্যে সৌর বাতিগুলো স্থাপন হয়। এরপর দুই বছর নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের মেরামতের দায়িত্ব ছিল। তারপর থেকে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে পৌর কর্তৃপক্ষ।

রাজৈর পৌর নাগরিকদের অভিযোগ, সৌরবাতিগুলো স্থাপনের পাঁচ থেকে ছয় মাস পর থেকেই নষ্ট হতে থাকে। এরই মধ্যে বেশ কিছু সড়কের বাতি ভেঙে পড়ে রয়েছে। সৌরবাতি ঠিকমতো জ্বলছে কি না, মাঝে মাঝে তা পরীক্ষা করার কথা থাকলেও স্থাপনের পর কাউকে আমরা বাতিগুলো মেরামত করতে দেখিনি।

পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কুন্ডুপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সড়কের পাশে কয়েকটি সৌরবাতির খুঁটি মাটিতে পড়ে আছে। খুঁটির সঙ্গে বাতি, তার ও আনুষঙ্গিক অন্য যন্ত্রাংশও পানি-কাদার সঙ্গে লেপ্টে আছে। দেখে বোঝার উপায় নেই, এসব খুঁটিতে বাতি জ্বলেছে। কিছু খুঁটি দাঁড়িয়ে থাকলেও সেখানে বাতি অকেজো হয়ে পড়ে আছে। কোনোটাতেই আলো জ্বলার অবস্থা নেই।

শানেরপাড় মোড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, একটি সৌর বাতির খুঁটির উপরে বাতির একটি ভাঙ্গা অংশ ঝুলে পড়ে আছে। কয়েক বছর ধরে রাতে তা জ¦লে না। এমনচিত্র পুরো পৌর শহরের বিভিন্ন অলিগলিতে।

এই বিষয়ে রাজৈর পৌর মেয়র নাজমা রশিদ বলেন, শহরের সড়কের বাতি স্থাপনের কাজ আগের মেয়রের আমলে হয়েছিল। বর্তমানে পৌরসভায় জনবলের অভাব রয়েছে। তারপরও দায়িত্ব নেয়ার পর যে কোম্পানি বাতিগুলো স্থাপন করেছিল, আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তাদের টেকনিশিয়ান দিয়ে নষ্ট হওয়া বাতিগুলো ঠিক করা যায় কি না, সেটি দেখছি। তবে আমি নতুনভাবে সড়কবাতি স্থাপন করার জন্য আরও একটি প্রকল্প দিয়েছি।

বেপারীপাড়া এলাকার রিফাত হোসেন বলেন, পৌরসভার সাবেক মেয়র শামীম নেওয়াজ মুন্সির আমলে কাজটি হয়েছিল। স্থাপনের পর এসব বাতি খুব বেশি দিন জ্বলেনি। বিভিন্ন স্থানে সৌরবাতির খুঁটি পড়ে আছে। কোথাও সৌরবাতির খুঁটি চুরি হয়ে গেছে।

টেকেরহাট এলাকার বাসিন্দা বিনয় ও সবুজ বালা বলেন, সড়কের পাশে পৌর শহরবাসীর সুবিধার্থে স্থাপন করা সৌরবাতিগুলোর অনেক বাতিই এখন জ¦লে না। কোনটি জ¦ললেও নিভু নিভু। এসব এখন কেউ দেখে না। আমাদের পৌর নাগরিকদের অনেক সমস্যা হচ্ছে। এতে চুরি-ছিনতাইও বেড়েছে।

রাজৈর পৌরসভার সাবেক মেয়র শামীম নেওয়াজ মুন্সী সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওই সড়কবাতি স্থাপন প্রকল্পটি পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান করেছিল। তাদের দুই বছর পর্যন্ত সার্ভিস করার কথা ছিল। কিন্তু এগুলো এখন ৬ বছরের বেশি সময় হয়ে গেছে। আমি মেয়র দায়িত্বে থাকার সময় অনেকবার তাদের খবর দিয়েছি কিন্তু তারা তেমন সাড়া দেয়নি।