দেশে ডিজেলের মূল্য প্রতিবেশী দেশের চেয়ে কম, বিভ্রান্তির অবকাশ নেই তথ্যমন্ত্রী

দেশে ডিজেলের মূল্য প্রতিবেশী দেশের চেয়ে কম এবং এ নিয়ে বিভ্রান্তির অবকাশ নেই। এই অজুহাতে অন্য পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিরও সুযোগ নেই বলেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি একথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে সম্প্রতি ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষিতে বিভিন্ন মহল থেকে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ২০১৩ সালে দেশে ডিজেলের মূল্য ছিল লিটারপ্রতি ৬৮ টাকা, পরবর্তীতে ২০১৬ সালে লিটারপ্রতি ৩ টাকা কমিয়ে ৬৫ টাকা করা হয়। এরপর সাড়ে পাঁচ বছরে দেশে ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্যবৃদ্ধি হয়নি।

চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে ডিজেলের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) ব্যাপক লোকসানের সম্মুখীন হয় উল্লেখ করে ড. হাছান এ সময় তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন। তিনি জানান, এ বছরের জুন মাসে লিটারপ্রতি ২.৯৭ টাকা, জুলাই মাসে ৩.৭০ টাকা, আগস্ট মাসে ১.৫৮ টাকা, সেপ্টেম্বর মাসে ৫.৬২ টাকা এবং অক্টোবর মাসে ১৩.০১ টাকা ভর্তুকি দিয়ে গত সাড়ে পাঁচ মাসে ডিজেলের জন্য বিপিসির লোকসান হয়েছে প্রায় ১১৪৭.৬০ কোটি টাকা। একইসঙ্গে ১ ডলারের মূল্য ২০১৬ সালে ৭৯ টাকা থেকে চলতি মাসে ৮৫.৭৫ টাকায় দাঁড়িয়েছে ফলে ডলারে মূল্য পরিশোধে অতিরিক্ত টাকা গুনতে হচ্ছে।

মন্ত্রী আরও জানান, ভারতে জ্বালানি তেলের মূল্য কমার পরও পশ্চিমবঙ্গে ডিজেলের দাম লিটারপ্রতি ৯০ রুপি বা ১০৪ টাকা, দিল্লিতে ৯৮.৪২ রুপি বা ১১৪ টাকার সমান। নেপালেও এই মূল্য ১১২.৩৯ রুপি বা ৮১ টাকা। প্রতিবেশী এসব দেশের চেয়ে আমাদের মূল্য কম রয়েছে। একারণে আবার চোরাকারবারিরা এখান থেকে প্রতিবেশী দেশে ডিজেল পাচার করছে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, সরকার ক্রমাগতভাবে জ্বালানি তেলের ক্ষেত্রে হাজার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়ে আসছে এবং এদেশে দাম কম থাকায় বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে, যা রোধকল্পে এই মূল্যবৃদ্ধি এবং এনিয়ে বিভ্রান্তির অবকাশ নেই। বাস্তবতার নিরিখে কথা বলা, সাধারণ মানুষের যেন ভোগান্তি না হয় এবং এই অজুহাতে অন্য পণ্যের যেন মূল্যবৃদ্ধি না ঘটে সেদিকে সবার দৃষ্টি রাখতে হবে, অন্যথায় সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে।

এ সময় জ্বালানি তেলের মূল্য ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে বিএনপি মহাসচিবের মন্তব্যে বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তথ্য-উপাত্ত দেখে মন্তব্য করার জন্য মির্জা ফখরুল সাহেবকে অনুরোধ জানাবো। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সবসময় খানিক উত্তেজনা দেখা যায়। এরপরও আশপাশের দেশের তুলনায় এখনও আমাদের দেশের নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণই বলতে হবে।

শনিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২১ , ২১ কার্তিক ১৪২৮ ২৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

দেশে ডিজেলের মূল্য প্রতিবেশী দেশের চেয়ে কম, বিভ্রান্তির অবকাশ নেই তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

দেশে ডিজেলের মূল্য প্রতিবেশী দেশের চেয়ে কম এবং এ নিয়ে বিভ্রান্তির অবকাশ নেই। এই অজুহাতে অন্য পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিরও সুযোগ নেই বলেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি একথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে সম্প্রতি ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষিতে বিভিন্ন মহল থেকে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ২০১৩ সালে দেশে ডিজেলের মূল্য ছিল লিটারপ্রতি ৬৮ টাকা, পরবর্তীতে ২০১৬ সালে লিটারপ্রতি ৩ টাকা কমিয়ে ৬৫ টাকা করা হয়। এরপর সাড়ে পাঁচ বছরে দেশে ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্যবৃদ্ধি হয়নি।

চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে ডিজেলের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) ব্যাপক লোকসানের সম্মুখীন হয় উল্লেখ করে ড. হাছান এ সময় তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন। তিনি জানান, এ বছরের জুন মাসে লিটারপ্রতি ২.৯৭ টাকা, জুলাই মাসে ৩.৭০ টাকা, আগস্ট মাসে ১.৫৮ টাকা, সেপ্টেম্বর মাসে ৫.৬২ টাকা এবং অক্টোবর মাসে ১৩.০১ টাকা ভর্তুকি দিয়ে গত সাড়ে পাঁচ মাসে ডিজেলের জন্য বিপিসির লোকসান হয়েছে প্রায় ১১৪৭.৬০ কোটি টাকা। একইসঙ্গে ১ ডলারের মূল্য ২০১৬ সালে ৭৯ টাকা থেকে চলতি মাসে ৮৫.৭৫ টাকায় দাঁড়িয়েছে ফলে ডলারে মূল্য পরিশোধে অতিরিক্ত টাকা গুনতে হচ্ছে।

মন্ত্রী আরও জানান, ভারতে জ্বালানি তেলের মূল্য কমার পরও পশ্চিমবঙ্গে ডিজেলের দাম লিটারপ্রতি ৯০ রুপি বা ১০৪ টাকা, দিল্লিতে ৯৮.৪২ রুপি বা ১১৪ টাকার সমান। নেপালেও এই মূল্য ১১২.৩৯ রুপি বা ৮১ টাকা। প্রতিবেশী এসব দেশের চেয়ে আমাদের মূল্য কম রয়েছে। একারণে আবার চোরাকারবারিরা এখান থেকে প্রতিবেশী দেশে ডিজেল পাচার করছে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, সরকার ক্রমাগতভাবে জ্বালানি তেলের ক্ষেত্রে হাজার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়ে আসছে এবং এদেশে দাম কম থাকায় বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে, যা রোধকল্পে এই মূল্যবৃদ্ধি এবং এনিয়ে বিভ্রান্তির অবকাশ নেই। বাস্তবতার নিরিখে কথা বলা, সাধারণ মানুষের যেন ভোগান্তি না হয় এবং এই অজুহাতে অন্য পণ্যের যেন মূল্যবৃদ্ধি না ঘটে সেদিকে সবার দৃষ্টি রাখতে হবে, অন্যথায় সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে।

এ সময় জ্বালানি তেলের মূল্য ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে বিএনপি মহাসচিবের মন্তব্যে বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তথ্য-উপাত্ত দেখে মন্তব্য করার জন্য মির্জা ফখরুল সাহেবকে অনুরোধ জানাবো। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সবসময় খানিক উত্তেজনা দেখা যায়। এরপরও আশপাশের দেশের তুলনায় এখনও আমাদের দেশের নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণই বলতে হবে।