১৯ মাস পর করোনায় একদিনে এক মৃত্যু

দেশে করোনা সংক্রমণে মৃত্যু একজনে নেমেছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় শুধু ঢাকায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। ৬৩ জেলায় কারও মৃত্যু হয়নি। এটি দেশে করোনা সংক্রমণ শুরুর পর গত ১৯ মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম মৃত্যু। সার্বিকভাবে দেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

এদিন ৪২ জেলায় নতুন করে কারও দেহে করোনাভাইরাসের জীবাণুও শনাক্ত হয়নি। একদিনে ঢাকা মহানগরীতে সর্বোচ্চ ১০১ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। বাকি ২২ জেলায় মাত্র ৫৩ জনের দেহে সংক্রমণ পেয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এ নিয়ে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ১৫৪ জনের শরীরে করোনার জীবাণু পাওয়া গেছে।

গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা শনাক্তের দশদিন পর ১৮ মার্চ করোনায় প্রথম একজনের মৃত্যুর কথা জানায় সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)।

এরপর ওই বছরের ২৪ মার্চ, ১ এপ্রিল এবং ৫ এপ্রিল একজন করে করোনা আক্রান্তের মৃত্যুর তথ্য জানায় সংস্থাটি। তবে গত বছরের ৫ এপ্রিলের পর ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুর সংখ্যা একজনে নামেনি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক গতকাল মানিকগঞ্জে এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘করোনা আমাদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে চলে এসেছে। করোনা নিয়ন্ত্রণে টিকার একটি বড় ভূমিকা রয়েছে। দেশে করোনায় মৃত্যুর হার অনেক দিন ধরেই সিঙ্গেল ডিজিটে নেমে এসেছে। আমাদের এখন টিকা নেয়ার পাশাপাশি সব ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। তা হলে একদিন আমাদের দেশে মৃত্যু শূন্যে নেমে আসবে।’

গতকাল সকাল আটটা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় একজনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ২৭ হাজার ৮৯১ জনে। এর মধ্যে পুরুষ ১৭ হাজার ৮৫৩ জন এবং নারী দশ হাজার ৩৮ জন।

একদিনে নতুন শনাক্ত হওয়া ১৫৪ জনকে নিয়ে দেশে মোট করোনা সংক্রমণ শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১৫ লাখ ৭০ হাজার ৮৩৫ জনে।

গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় সরকারি-বেসরকারি ৮৩৩টি ল্যাবরেটরিতে ১৩ হাজার ৭২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ নিয়ে এ পর্যন্ত মোট এক কোটি চার লাখ ৫৮ হাজার ৩৬৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়।

একদিনে সংক্রমণ পাওয়া যায় ১৫৪ জনের দেহে। এদিন নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে রোগী শনাক্তের হার এক দশমিক ১৮ শতাংশ। আর এ পর্যন্ত মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৫ লাখ ৭০ হাজার ৮৩৫ জনের দেহে। এ হিসেবে শনাক্তের হার ১৫ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টায় যার মৃত্যু হয়েছে তিনি পুরুষ। বয়স ছিল ৭০ বছরের বেশি।

গত একদিনে করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৫৭ জন। এ নিয়ে করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ১৫ লাখ ৩৪ হাজার ৬৩৫ জনে। শনাক্ত অনুপাতে সুস্থতার হার ৯৭ দশমিক ৭০ শতাংশ।

দেশে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয় গত ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা তিনশর’ কাছাকাছি নেমে এসেছিল, ওই সময় সংক্রমণ হারও তিন শতাংশের কাছাকাছি নেমে এসেছিল। দৈনিক মৃত্যুও ৮-১০ জনে নেমে এসেছিল।

কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউয়ে গত জুন, জুলাই ও আগস্টে নিয়মিত ভাঙতে থাকে মৃত্যু ও শনাক্তের রেকর্ড। গত ২৮ জুলাই একদিনে সর্বোচ্চ ১৬ হাজার ২৩০ জনের দেহে করোনার জীবাণু শনাক্ত হয়। আগে দু’দিনে সর্বোচ্চ ২৬৪ জনের করে মৃত্যু হয়।

রবিবার, ০৭ নভেম্বর ২০২১ , ২২ কার্তিক ১৪২৮ ৩০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

১৯ মাস পর করোনায় একদিনে এক মৃত্যু

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

দেশে করোনা সংক্রমণে মৃত্যু একজনে নেমেছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় শুধু ঢাকায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। ৬৩ জেলায় কারও মৃত্যু হয়নি। এটি দেশে করোনা সংক্রমণ শুরুর পর গত ১৯ মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম মৃত্যু। সার্বিকভাবে দেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

এদিন ৪২ জেলায় নতুন করে কারও দেহে করোনাভাইরাসের জীবাণুও শনাক্ত হয়নি। একদিনে ঢাকা মহানগরীতে সর্বোচ্চ ১০১ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। বাকি ২২ জেলায় মাত্র ৫৩ জনের দেহে সংক্রমণ পেয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এ নিয়ে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ১৫৪ জনের শরীরে করোনার জীবাণু পাওয়া গেছে।

গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা শনাক্তের দশদিন পর ১৮ মার্চ করোনায় প্রথম একজনের মৃত্যুর কথা জানায় সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)।

এরপর ওই বছরের ২৪ মার্চ, ১ এপ্রিল এবং ৫ এপ্রিল একজন করে করোনা আক্রান্তের মৃত্যুর তথ্য জানায় সংস্থাটি। তবে গত বছরের ৫ এপ্রিলের পর ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুর সংখ্যা একজনে নামেনি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক গতকাল মানিকগঞ্জে এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘করোনা আমাদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে চলে এসেছে। করোনা নিয়ন্ত্রণে টিকার একটি বড় ভূমিকা রয়েছে। দেশে করোনায় মৃত্যুর হার অনেক দিন ধরেই সিঙ্গেল ডিজিটে নেমে এসেছে। আমাদের এখন টিকা নেয়ার পাশাপাশি সব ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। তা হলে একদিন আমাদের দেশে মৃত্যু শূন্যে নেমে আসবে।’

গতকাল সকাল আটটা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় একজনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ২৭ হাজার ৮৯১ জনে। এর মধ্যে পুরুষ ১৭ হাজার ৮৫৩ জন এবং নারী দশ হাজার ৩৮ জন।

একদিনে নতুন শনাক্ত হওয়া ১৫৪ জনকে নিয়ে দেশে মোট করোনা সংক্রমণ শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১৫ লাখ ৭০ হাজার ৮৩৫ জনে।

গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় সরকারি-বেসরকারি ৮৩৩টি ল্যাবরেটরিতে ১৩ হাজার ৭২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ নিয়ে এ পর্যন্ত মোট এক কোটি চার লাখ ৫৮ হাজার ৩৬৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়।

একদিনে সংক্রমণ পাওয়া যায় ১৫৪ জনের দেহে। এদিন নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে রোগী শনাক্তের হার এক দশমিক ১৮ শতাংশ। আর এ পর্যন্ত মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৫ লাখ ৭০ হাজার ৮৩৫ জনের দেহে। এ হিসেবে শনাক্তের হার ১৫ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টায় যার মৃত্যু হয়েছে তিনি পুরুষ। বয়স ছিল ৭০ বছরের বেশি।

গত একদিনে করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৫৭ জন। এ নিয়ে করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ১৫ লাখ ৩৪ হাজার ৬৩৫ জনে। শনাক্ত অনুপাতে সুস্থতার হার ৯৭ দশমিক ৭০ শতাংশ।

দেশে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয় গত ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা তিনশর’ কাছাকাছি নেমে এসেছিল, ওই সময় সংক্রমণ হারও তিন শতাংশের কাছাকাছি নেমে এসেছিল। দৈনিক মৃত্যুও ৮-১০ জনে নেমে এসেছিল।

কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউয়ে গত জুন, জুলাই ও আগস্টে নিয়মিত ভাঙতে থাকে মৃত্যু ও শনাক্তের রেকর্ড। গত ২৮ জুলাই একদিনে সর্বোচ্চ ১৬ হাজার ২৩০ জনের দেহে করোনার জীবাণু শনাক্ত হয়। আগে দু’দিনে সর্বোচ্চ ২৬৪ জনের করে মৃত্যু হয়।