৯ সদস্যের সার্চ কমিটি গঠনের প্রস্তাব ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের

সংবিধান, রাষ্ট্রপতি ও আদালতের প্রতি আস্থা রেখে সার্চ কমিটি গঠন করতে হবে। এই নিয়ে বির্তক করার কোন সুযোগ নেই। সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন করে আগামী ২০২৩ সালের নির্বাচন পরিচালনা করতে হবে। নির্বাচন কমিশন এমন ব্যক্তিদের নিয়ে গঠন করতে হবে যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, বলে দাবি জানিয়েছে ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম। এ সময় নির্বাচন কমিশনের কমিশনারদের নিয়োগ ও সার্চ কমিটি গঠনের বিষয়ে ৫টি প্রস্তাব দেয় সংগঠনটি।

গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম আয়োজিত ‘নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন, সার্চ কমিটির ভূমিকা ও নাগরিক প্রত্যাশা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এ সব কথা বলেন।

সংগঠনটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মাওলানা আবেদ আলীর সভাপতিত্বে ‘নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন, সার্চ কমিটির ভূমিকা ও নাগরিক প্রত্যাশা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন বুয়েটের প্রো-ভিসি ও ফোরামের পরিচালক ড. আবদুল জব্বার খান। এতে বক্তব্য রাখেন, সার্ক মানবাধিকার ফোরামের সভাপতি বিচারপতি সিদ্দিকুর রহমান মিয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান, সিনিয়র সাংবাদিক অজয় দাসগুপ্ত, মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক, অধ্যাপক ড. আহমেদ আবুল কালাম প্রমুখ।

গোলটেবিল বৈঠকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, বিতর্কিত করা খুব সহজ। কিন্তু বিতর্ক করা কঠিন। সবাই একই মত পোষণ করবেন বিষয়টি এমন নয়। কিছু মানুষ ভিন্নমত পোষণ করবেন, এটাই সমাজের সৌন্দর্য। সংবিধানে নির্বাচন সম্পর্কে স্পষ্ট বলা আছে। এখন আমাদের প্রেসিডেন্ট ও সংবিধানের ওপর আস্থা রাখা উচিত। তিনি বলেন, সার্চ কমিটি আর সিলেকশন কমিটি এক নয়। একটি প্রস্তাব থেকে যোগ্য একজনকে বেছে নেয়াই হলো সার্চ কমিটি। সার্চ কমিটি একটা প্রস্তাব দেবেন ও সেখান থেকে প্রেসিডেন্ট একজনকে বেছে নেবেন, সে কাজে একটি সুন্দর সার্চ কমিটি তাকে সহায়তা করবে।

একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত বলেন, বাংলাদেশ উন্নত দেশের সারিতে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে। সেই পরিস্থিতিতে যাওয়ার জন্য নির্বাচন অবশ্যই পূর্ব শর্ত। নির্বাচন হতেই হবে।

সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন সভাপতি বিচারপতি ছিদ্দিকুর রহমান মিয়া বলেন, আমাদের একটা বিষয় চিন্তা করতে হবে, কে এই সার্চ কমিটি নির্বাচন করবে। আমাদের রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতিকে দায়িত্ব দিবেন এই সার্চ কমিটি গঠনের। তিনি যে সার্চ কমিটি নির্ধারণ করবেন তা রাষ্ট্রপতি অনুমতি দিবেন।

বৈঠক শেষে আগামী নির্বাচন কমিশনের কমিশনারদের নিয়োগ কিভাবে হবে এবং সার্চ কমিটি কাদের সমন্বয়ে গঠিত হতে পারে সে বিষয়ে ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম ৫টি প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাবগুলো হলোÑ সার্চ কমিটি ৫ সদস্য হতে ৯ সদস্য বিশিষ্ট হওয়া। নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে সার্চ কমিটিতে সাবেক জ্যেষ্ঠতম প্রধান বিচারপতি, সাবেক সফল নির্বাচন কমিশনার, ধর্মীয় গুণাবলী সম্পন্ন ব্যক্তিদের প্রাধান্য দেয়া। সার্চ কমিটির প্রতিনিধির বিষয়ে কমিটি গঠনপূর্বে অধিকতর তদন্ত করা। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপকালে সার্চ কমিটির প্রতিনিধিদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা এবং নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য সার্চ কমিটি কর্তৃক প্রস্তাবিত তালিকা থেকে রাষ্ট্রপতি সর্বাধিক অনুসন্ধান রিপোর্ট সমন্বয় করে সৎ, গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ, বিচক্ষণ, ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ও পূর্বের কর্মকা- সর্বাধিক বিশ্লেষণ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেবেন।

রবিবার, ০৭ নভেম্বর ২০২১ , ২২ কার্তিক ১৪২৮ ৩০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

৯ সদস্যের সার্চ কমিটি গঠনের প্রস্তাব ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

সংবিধান, রাষ্ট্রপতি ও আদালতের প্রতি আস্থা রেখে সার্চ কমিটি গঠন করতে হবে। এই নিয়ে বির্তক করার কোন সুযোগ নেই। সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন করে আগামী ২০২৩ সালের নির্বাচন পরিচালনা করতে হবে। নির্বাচন কমিশন এমন ব্যক্তিদের নিয়ে গঠন করতে হবে যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, বলে দাবি জানিয়েছে ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম। এ সময় নির্বাচন কমিশনের কমিশনারদের নিয়োগ ও সার্চ কমিটি গঠনের বিষয়ে ৫টি প্রস্তাব দেয় সংগঠনটি।

গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম আয়োজিত ‘নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন, সার্চ কমিটির ভূমিকা ও নাগরিক প্রত্যাশা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এ সব কথা বলেন।

সংগঠনটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মাওলানা আবেদ আলীর সভাপতিত্বে ‘নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন, সার্চ কমিটির ভূমিকা ও নাগরিক প্রত্যাশা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন বুয়েটের প্রো-ভিসি ও ফোরামের পরিচালক ড. আবদুল জব্বার খান। এতে বক্তব্য রাখেন, সার্ক মানবাধিকার ফোরামের সভাপতি বিচারপতি সিদ্দিকুর রহমান মিয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান, সিনিয়র সাংবাদিক অজয় দাসগুপ্ত, মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক, অধ্যাপক ড. আহমেদ আবুল কালাম প্রমুখ।

গোলটেবিল বৈঠকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, বিতর্কিত করা খুব সহজ। কিন্তু বিতর্ক করা কঠিন। সবাই একই মত পোষণ করবেন বিষয়টি এমন নয়। কিছু মানুষ ভিন্নমত পোষণ করবেন, এটাই সমাজের সৌন্দর্য। সংবিধানে নির্বাচন সম্পর্কে স্পষ্ট বলা আছে। এখন আমাদের প্রেসিডেন্ট ও সংবিধানের ওপর আস্থা রাখা উচিত। তিনি বলেন, সার্চ কমিটি আর সিলেকশন কমিটি এক নয়। একটি প্রস্তাব থেকে যোগ্য একজনকে বেছে নেয়াই হলো সার্চ কমিটি। সার্চ কমিটি একটা প্রস্তাব দেবেন ও সেখান থেকে প্রেসিডেন্ট একজনকে বেছে নেবেন, সে কাজে একটি সুন্দর সার্চ কমিটি তাকে সহায়তা করবে।

একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত বলেন, বাংলাদেশ উন্নত দেশের সারিতে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে। সেই পরিস্থিতিতে যাওয়ার জন্য নির্বাচন অবশ্যই পূর্ব শর্ত। নির্বাচন হতেই হবে।

সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন সভাপতি বিচারপতি ছিদ্দিকুর রহমান মিয়া বলেন, আমাদের একটা বিষয় চিন্তা করতে হবে, কে এই সার্চ কমিটি নির্বাচন করবে। আমাদের রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতিকে দায়িত্ব দিবেন এই সার্চ কমিটি গঠনের। তিনি যে সার্চ কমিটি নির্ধারণ করবেন তা রাষ্ট্রপতি অনুমতি দিবেন।

বৈঠক শেষে আগামী নির্বাচন কমিশনের কমিশনারদের নিয়োগ কিভাবে হবে এবং সার্চ কমিটি কাদের সমন্বয়ে গঠিত হতে পারে সে বিষয়ে ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম ৫টি প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাবগুলো হলোÑ সার্চ কমিটি ৫ সদস্য হতে ৯ সদস্য বিশিষ্ট হওয়া। নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে সার্চ কমিটিতে সাবেক জ্যেষ্ঠতম প্রধান বিচারপতি, সাবেক সফল নির্বাচন কমিশনার, ধর্মীয় গুণাবলী সম্পন্ন ব্যক্তিদের প্রাধান্য দেয়া। সার্চ কমিটির প্রতিনিধির বিষয়ে কমিটি গঠনপূর্বে অধিকতর তদন্ত করা। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপকালে সার্চ কমিটির প্রতিনিধিদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা এবং নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য সার্চ কমিটি কর্তৃক প্রস্তাবিত তালিকা থেকে রাষ্ট্রপতি সর্বাধিক অনুসন্ধান রিপোর্ট সমন্বয় করে সৎ, গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ, বিচক্ষণ, ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ও পূর্বের কর্মকা- সর্বাধিক বিশ্লেষণ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেবেন।