শুঁটকির ভরা মৌসুমে মাছের সঙ্কটে চলনবিলে হুমকিতে শুঁটকির উৎপাদন। আগের মতো মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারনে চরম মাছ সংকটে পড়েছে চলনবিলের শুটকির চাতালের মালিকেরা । বর্ষার শেষে আশ্বিন কার্তিন মাসে চলনবিলে প্রচুর মাছ ধরা পরে । কিন্তু এ বছর চাহিদা অনুযায়ী মাছ না পাওয়ায় প্রায় বন্ধ হতে চলেছে শুটকি চাতাল। সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার মহিষটুটি মৎস আড়াৎতের পাশে শুটকি চাতালের মালিক বাবু সেখ, আলমাছ হাওলাদার বলেন, প্রতি বছর আশ্বিন কার্তিন মাসে পানি নামার সময় প্রচুর, ট্যাংরা, পুঠি , খলষে , বাতাসি,চ্যালা, টাকি, বাইম, শৈল, বৈয়াল, গজার, মাগুর, শিং সহ নানা প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। ওই সময় দাম ও কম থাকে। তখন এই সব মাছ দিয়ে চলে শুটকি তৈরির ধুম । অথচ এ বছর বিলে মাছ নেই বললেই চলে। বেশ কিছুদিন যাবত শুটকি তৈরির জন্য পর্যাপ্ত মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থা চলতে থাকলে চাতাল বন্ধ করতে হবে। সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া শুটকি ব্যবসায়ী আব্দুল গফুর, লাহিড়ী মহনপুরের হবি শেখ, চাতালের নারী শ্রমিক সাবিনা, সাজেদা, লায়লীসহ কর্মরত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে একই ধরনের তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের মতে উল্লেখিত এলাকায় ইতোমধ্যেই প্রায় দেড়শত চাতাল বন্ধ হয়ে গেছে । অন্যগুলো বন্ধ হবার পথে। বেকার হওয়ার আশঙ্কায় ভুগছে চলন বিলের প্রায় ৩ শতাধিক শুটকি চাতালের প্রায় ৫ সহস্রাধিক নারী ও পুরুষ শ্রমিক । চাতালের শ্রমিকদের মধ্যে নারী শ্রমিকের সংখ্যাই বেশি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আশ্বিন কার্তিক মাস থেকে মাঘ ফাল্গুন পর্যন্ত চাতালে কার্যক্রম চলে। ৩ মণ তাজা মাছ শুকালে ১ মণ শুটকি পাওয়া যায় বলে তারা জানান। মহিষটুটি এলাকার শুটকি আড়তে সভাপতি মজনু সরকার জানান, চলনবিল এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিগণ বাদাই জাল দিয়ে পোনা মাছ ধরায় এই সঙ্কট দেখা দিয়েছে। তাছাড়াও খড়া মৌসুমে অনেকেই পানি সেচে মাছ ধরে যার কারণে মাছ ও মাছের খাদ্য সমূলে ধ্বংস হচ্ছে। এ সব কারণে চলনবিলে এবার মাছ অনেক কম । তাই অধিকদামে কেনা মাছ দিয়ে শুটকি তৈরির খরচ ও বেড়ে গেছে। তাড়াশ উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা মসগুল আজাদ বলেন, এখনও দই থেকে আড়াই মাস শুটকি মাছ উৎপাদিত হবে । গতবছরের তুলনায় এবারে বন্যার পানি কম সময় অবস্থান করায় মাছ উৎপাদন কিছুটা কম হয়েছে। তবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন তাদের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূর্ণ হবে। এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহেদ আলী জানান, গতবছর জেলায় ১৯৭ মেট্রিক টন শুটকি উৎপাদিত হয়েছিল । এবারে বর্ষার পানি কম সময় অবস্থান করায় মাছ কিছুটা কম হলেও এ বছর ২০০ মেট্রিক টন উৎপাদন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সিরাজগঞ্জ : চাতালে শুঁটকি তৈরিতে ব্যস্ত নারী শ্রমিকরা -সংবাদ
আরও খবরসোমবার, ০৮ নভেম্বর ২০২১ , ২৩ কার্তিক ১৪২৮ ৩১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩
জেলা বার্তা পরিবেশক, সিরাজগঞ্জ
সিরাজগঞ্জ : চাতালে শুঁটকি তৈরিতে ব্যস্ত নারী শ্রমিকরা -সংবাদ
শুঁটকির ভরা মৌসুমে মাছের সঙ্কটে চলনবিলে হুমকিতে শুঁটকির উৎপাদন। আগের মতো মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারনে চরম মাছ সংকটে পড়েছে চলনবিলের শুটকির চাতালের মালিকেরা । বর্ষার শেষে আশ্বিন কার্তিন মাসে চলনবিলে প্রচুর মাছ ধরা পরে । কিন্তু এ বছর চাহিদা অনুযায়ী মাছ না পাওয়ায় প্রায় বন্ধ হতে চলেছে শুটকি চাতাল। সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার মহিষটুটি মৎস আড়াৎতের পাশে শুটকি চাতালের মালিক বাবু সেখ, আলমাছ হাওলাদার বলেন, প্রতি বছর আশ্বিন কার্তিন মাসে পানি নামার সময় প্রচুর, ট্যাংরা, পুঠি , খলষে , বাতাসি,চ্যালা, টাকি, বাইম, শৈল, বৈয়াল, গজার, মাগুর, শিং সহ নানা প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। ওই সময় দাম ও কম থাকে। তখন এই সব মাছ দিয়ে চলে শুটকি তৈরির ধুম । অথচ এ বছর বিলে মাছ নেই বললেই চলে। বেশ কিছুদিন যাবত শুটকি তৈরির জন্য পর্যাপ্ত মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থা চলতে থাকলে চাতাল বন্ধ করতে হবে। সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া শুটকি ব্যবসায়ী আব্দুল গফুর, লাহিড়ী মহনপুরের হবি শেখ, চাতালের নারী শ্রমিক সাবিনা, সাজেদা, লায়লীসহ কর্মরত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে একই ধরনের তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের মতে উল্লেখিত এলাকায় ইতোমধ্যেই প্রায় দেড়শত চাতাল বন্ধ হয়ে গেছে । অন্যগুলো বন্ধ হবার পথে। বেকার হওয়ার আশঙ্কায় ভুগছে চলন বিলের প্রায় ৩ শতাধিক শুটকি চাতালের প্রায় ৫ সহস্রাধিক নারী ও পুরুষ শ্রমিক । চাতালের শ্রমিকদের মধ্যে নারী শ্রমিকের সংখ্যাই বেশি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আশ্বিন কার্তিক মাস থেকে মাঘ ফাল্গুন পর্যন্ত চাতালে কার্যক্রম চলে। ৩ মণ তাজা মাছ শুকালে ১ মণ শুটকি পাওয়া যায় বলে তারা জানান। মহিষটুটি এলাকার শুটকি আড়তে সভাপতি মজনু সরকার জানান, চলনবিল এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিগণ বাদাই জাল দিয়ে পোনা মাছ ধরায় এই সঙ্কট দেখা দিয়েছে। তাছাড়াও খড়া মৌসুমে অনেকেই পানি সেচে মাছ ধরে যার কারণে মাছ ও মাছের খাদ্য সমূলে ধ্বংস হচ্ছে। এ সব কারণে চলনবিলে এবার মাছ অনেক কম । তাই অধিকদামে কেনা মাছ দিয়ে শুটকি তৈরির খরচ ও বেড়ে গেছে। তাড়াশ উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা মসগুল আজাদ বলেন, এখনও দই থেকে আড়াই মাস শুটকি মাছ উৎপাদিত হবে । গতবছরের তুলনায় এবারে বন্যার পানি কম সময় অবস্থান করায় মাছ উৎপাদন কিছুটা কম হয়েছে। তবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন তাদের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূর্ণ হবে। এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহেদ আলী জানান, গতবছর জেলায় ১৯৭ মেট্রিক টন শুটকি উৎপাদিত হয়েছিল । এবারে বর্ষার পানি কম সময় অবস্থান করায় মাছ কিছুটা কম হলেও এ বছর ২০০ মেট্রিক টন উৎপাদন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।