মেয়রের পিএস বাবু গ্রেপ্তার

রিমান্ডের আবেদন

কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে হামলা ও ভাঙচুরের মামলায় কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) মেয়র মো. মনিরুল হক সাক্কুর ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) হিসেবে পরিচিত মাঈনুদ্দিন আহমেদ বাবুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের সমন্বয়ে একটি টিম রাঙ্গামাটি জেলার পর্যটন এলাকা সাজেক রিসোর্ট থেকে শনিবার বিকেলে তাকে গ্রেপ্তার করে গতকাল ভোরে কুমিল্লা নিয়ে আসে। রোববার বিকেলে তাকে হামলা ও ভাঙচুরের দুই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কুমিল্লা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইরফানুল হক চৌধুরীর আদালতে প্রেরণ করা হলে আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আজ আদালতে ৭ দিনের রিমাণ্ডের আবেদন জানানো হবে। রোববার সন্ধ্যায় আদালত ও পুলিশ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। গ্রেপ্তার বাবু কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আহমেদের ছেলে ও নগরীর মুরাদপুর এলাকার বাসিন্দা।

পুলিশ জানায়, নগরীর নানুয়াদীঘির পাড়ের একটি অস্থায়ী পূজামণ্ডপে গত ১৩ অক্টোবর পবিত্র কোরআন রেখে অবমাননার ঘটনায় ঐদিন ওই পূজামণ্ডপসহ নগরীর বিভিন্ন পূজামণ্ডপে হামলা-ভাঙচুর ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে উস্কানীদাতাদের মধ্যে মাঈনুদ্দিন আহমেদ বাবুর বিষয়টি শনাক্ত হওয়ার পর গত ২৪ অক্টোবর থেকে বাড়িটিতে তালাবদ্ধ করে লাপাত্তা হয়। শনিবার বিকেলে কোতোয়ালি মডেল থানা ও ডিবি পুলিশের একটি দল বাবুকে রাঙ্গামাটির সাজেক এলাকার একটি রিসোর্ট থেকে গ্রেপ্তার করে রোববার ভোরে কুমিল্লা নিয়ে আসে। অভিযানে থাকা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই পরিমল দাস জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের একটি দল শনিবার রাঙ্গামাটির সাজেক পৌঁছে বাবুর অবস্থান নিশ্চিত হয়ে সাজেকে খাসরঙ নামীয় একটি রিসোর্ট ঘেরাও করে। সেখানে বাবু, তার স্ত্রী, দুই সন্তান ও তার ভায়রা হাফিজুর রহমানসহ অবস্থান করছিলেন। সেখান থেকে তাদের কুমিল্লায় নিয়ে আসা হয়। পুলিশের ওই কর্মকর্তা আরও জানান, বাবু গত শুক্রবার ওই রিসোর্টে পরিবার নিয়ে ওঠেন। এর আগে তিনি ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়ান। কুমিল্লা থেকে তার উধাও হওয়ার পর তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ধরে নিয়ে গেছে বলে নগরীতে জোর গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছিল। এছাড়া তার বাড়িটি তালাবদ্ধ ছিল এবং পরিবারও ছিল লাপাত্তা। কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আনওয়ারুল আজিম জানান, ১৩ অক্টোবর নানুয়াদীঘির পাড়ের অস্থায়ী পূজামণ্ডপ ও নগরীর ঠাকুরপাড়া এলাকার কালিতলা মন্দিরের পূজামণ্ডপ ভাঙচুরের মামলায় মাঈনুদ্দিন আহমেদ বাবুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে রোববার কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে আজ আদালতে ৭ দিনের রিমাণ্ডের আবেদন জানানো হবে। এছাড়া হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় রোমান হাসান ও রবিউল ইসলাম নামে আরও দুইজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃত বাবুর বিষয়ে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও কুসিক মেয়র মো. মনিরুল হক সাক্কু বলেন, ‘মাঈনুদ্দিন আহমেদ বাবুর বাবা প্রয়াত জাহাঙ্গীর আহমেদ কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। সেই কারণে বাবু আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দেখভাল করতো, সে আমার পিএস- একথা ঠিক নয়। ঘটনার দিন আমার সঙ্গে বাবুসহ অনেকে ছিল। তবে সে যদি ওইদিনের ঘটনায় জড়িত থেকে থাকে এবং তদন্তে তা প্রমাণীত হয় তাহলে ব্যবস্থা নেয়া হোক।

সোমবার, ০৮ নভেম্বর ২০২১ , ২৩ কার্তিক ১৪২৮ ৩১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে হামলা

মেয়রের পিএস বাবু গ্রেপ্তার

রিমান্ডের আবেদন

জেলা বার্তা পরিবেশক, কুমিল্লা

কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে হামলা ও ভাঙচুরের মামলায় কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) মেয়র মো. মনিরুল হক সাক্কুর ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) হিসেবে পরিচিত মাঈনুদ্দিন আহমেদ বাবুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের সমন্বয়ে একটি টিম রাঙ্গামাটি জেলার পর্যটন এলাকা সাজেক রিসোর্ট থেকে শনিবার বিকেলে তাকে গ্রেপ্তার করে গতকাল ভোরে কুমিল্লা নিয়ে আসে। রোববার বিকেলে তাকে হামলা ও ভাঙচুরের দুই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কুমিল্লা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইরফানুল হক চৌধুরীর আদালতে প্রেরণ করা হলে আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আজ আদালতে ৭ দিনের রিমাণ্ডের আবেদন জানানো হবে। রোববার সন্ধ্যায় আদালত ও পুলিশ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। গ্রেপ্তার বাবু কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আহমেদের ছেলে ও নগরীর মুরাদপুর এলাকার বাসিন্দা।

পুলিশ জানায়, নগরীর নানুয়াদীঘির পাড়ের একটি অস্থায়ী পূজামণ্ডপে গত ১৩ অক্টোবর পবিত্র কোরআন রেখে অবমাননার ঘটনায় ঐদিন ওই পূজামণ্ডপসহ নগরীর বিভিন্ন পূজামণ্ডপে হামলা-ভাঙচুর ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে উস্কানীদাতাদের মধ্যে মাঈনুদ্দিন আহমেদ বাবুর বিষয়টি শনাক্ত হওয়ার পর গত ২৪ অক্টোবর থেকে বাড়িটিতে তালাবদ্ধ করে লাপাত্তা হয়। শনিবার বিকেলে কোতোয়ালি মডেল থানা ও ডিবি পুলিশের একটি দল বাবুকে রাঙ্গামাটির সাজেক এলাকার একটি রিসোর্ট থেকে গ্রেপ্তার করে রোববার ভোরে কুমিল্লা নিয়ে আসে। অভিযানে থাকা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই পরিমল দাস জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের একটি দল শনিবার রাঙ্গামাটির সাজেক পৌঁছে বাবুর অবস্থান নিশ্চিত হয়ে সাজেকে খাসরঙ নামীয় একটি রিসোর্ট ঘেরাও করে। সেখানে বাবু, তার স্ত্রী, দুই সন্তান ও তার ভায়রা হাফিজুর রহমানসহ অবস্থান করছিলেন। সেখান থেকে তাদের কুমিল্লায় নিয়ে আসা হয়। পুলিশের ওই কর্মকর্তা আরও জানান, বাবু গত শুক্রবার ওই রিসোর্টে পরিবার নিয়ে ওঠেন। এর আগে তিনি ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়ান। কুমিল্লা থেকে তার উধাও হওয়ার পর তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ধরে নিয়ে গেছে বলে নগরীতে জোর গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছিল। এছাড়া তার বাড়িটি তালাবদ্ধ ছিল এবং পরিবারও ছিল লাপাত্তা। কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আনওয়ারুল আজিম জানান, ১৩ অক্টোবর নানুয়াদীঘির পাড়ের অস্থায়ী পূজামণ্ডপ ও নগরীর ঠাকুরপাড়া এলাকার কালিতলা মন্দিরের পূজামণ্ডপ ভাঙচুরের মামলায় মাঈনুদ্দিন আহমেদ বাবুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে রোববার কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে আজ আদালতে ৭ দিনের রিমাণ্ডের আবেদন জানানো হবে। এছাড়া হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় রোমান হাসান ও রবিউল ইসলাম নামে আরও দুইজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃত বাবুর বিষয়ে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও কুসিক মেয়র মো. মনিরুল হক সাক্কু বলেন, ‘মাঈনুদ্দিন আহমেদ বাবুর বাবা প্রয়াত জাহাঙ্গীর আহমেদ কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। সেই কারণে বাবু আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দেখভাল করতো, সে আমার পিএস- একথা ঠিক নয়। ঘটনার দিন আমার সঙ্গে বাবুসহ অনেকে ছিল। তবে সে যদি ওইদিনের ঘটনায় জড়িত থেকে থাকে এবং তদন্তে তা প্রমাণীত হয় তাহলে ব্যবস্থা নেয়া হোক।